গ্যালারি

রেসিপিঃ নান রুটি (গ্রামের বাড়ীতে)


আমি বাড়ী গেলেই আমার চাচাত ভাই বোনরা/ চাচা চাচীরা মনে করে রাতে আড্ডা হবে, হবে ভাল খাবার দাবার। এটা এখন অনেকটা সবাই ধরেই নিয়েছে। আমি গেলেই ওরা ওত পেতে থাকে! বিকালের পরপরই ওদের প্যানর প্যানর শুরু হয়ে যায়। আর আমি! ওদের এই আচরণ বেশ উপভোগ করি, মজা পাই। টাকা খরচ ও কষ্ট হলেও আমি মনে আনন্দ পাই। আড্ডা ও খাবার দাবার শেষে ওরা যখন মজা করে তখন সে মুখ দেখে আমি আনন্দিত হই।

এবারেও বাড়ীতে গিয়েও বিশাল এলাহি কারবার করে ফেললাম। মানে প্রায় ৪০ জন লোকের জন্য নান রুটি এবং মুরগীর গোশত। বিষয়টা আমাদের জন্য (আমি ও আমার ব্যাটারীর) সহজ ছিল না। আমি চাইছিলাম, ওদের সবাইকে বাসায় হাতে তৈরি নান রুটি খাইয়ে দিতে। কিন্তু এত মানুষের জন্য এটা বানানো সহজ কাজ নয়। তবুও আমরা পেরেছি। আজ আমি আমাদের সেই চেষ্টার কথাই আপনাদের দেখাবো/ বলবো। বিকালে উপজেলা বাজার থেকেই প্রায় সব আইটেম কিনে নিয়েছিলাম, ইষ্টের মত উপাধানও সহজেই পাওয়া গেল।

তবে এই ধরনের বড় খাবার দাবারে সবাইকে এগিয়ে আসতে হয়। চাচাত বোনরা ও আমাদের চাচীমারা আমাদের সাথে এগিয়ে এসে আমাদের জয়যুক্ত করেছেন। আমাদের বাড়ীর দুই জন জামাতা সহ ভাতিজা, ভাতিজী, ভাগিনা, ভাগনী সবাই এই খাবার এবং আড্ডার তারিফ করেছেন। আমাদের ভাল লেগেছে। চলুন কথা না বলে ছবি দেখি। আজকে শুধু নানরুটির ব্যাপারটা দেখুন। আর একটা পর্বে বাকী কিসসা থাকবে। এটা কিন্তু রেসিপি পোষ্ট! হা হা হা…।


৪০ জনের জন্য নান রুটির কাই বানাতে কত বড় বোল প্রয়োজন। ভাগ্যিস আমাদের তা ছিল। আমার আম্মা রান্নার প্রায় সব কিছুই কিনে সযত্নে রেখে তিনি প্রবাসী হয়ে আছেন!
(যারা নান রুটির রেসিপি দেখতে চান তারা এই পোষ্ট দেখতে পারেন। উক্ত পোষ্টে পরিমাণ ও বানানোর সব ধরন বলে দেয়া আছে।)


আমার ব্যাটারী একাই যথেষ্ট।


নান রুটির খামিরের একটা চমৎকার ঘ্রাণ সবাইকে কাছে নিয়ে এসেছিল। আমার চাচীমারা ও চাচাত ভাইবোনরা অনেকেই শিখতে চেয়েছিল।


প্রায় ঘণ্টা খানেক রেখে দিয়ে তার পর শুরু…


প্রায় ৮৫টি নানের খামির ও রুটি বেলা! আমার ব্যাটারীকে ধন্যবাদ, তিনি প্রায় সব রুটি বেলেছেন।


দুই তাওয়ায় নান বানানো! আমাদের গ্রামের বাড়ীতে গ্যাস সংযোগ ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা আছে, এটা চমৎকার দিক। শহরের সব আমেজ গ্রামেই…। চুলা বেশি ব্যবহার না হওয়াতে মরিচা ধরে পড়ছে!


চাচাত বোন মিলি প্রায় রুটি ভেজেছে। ওকেও ধন্যবাদ।


প্রতিটা নান রুটি অসাধারণ হয়েছিল।


যেহেতু যে যা পারবে তা খাবে তাই পরিবেশনে নান রুটির মাঝে ভাগ করে দেয়া হয়েছিল, যাতে শিশুরা খাবার অপচয় না করে। (এটা ভাল বুদ্দি হয়েছে…।। পেট পুরে খেয়েছে সবাই। শিশুরা এক থেকে দেড় এবং বড়রা দুই থেকে আড়াই/তিন!)


মুরগীর গোশতের সাথে ছিল দুই পদের সালাদ। ভিনোগারে পেঁয়াজ ও কাঁচা মরিচ কুচি ভেজা।


সাধারণ… শসা, পেঁয়াজ, টমাটো ও কাঁচা মরিচ!


এই সেই মুরগীর গোশত রান্না, যার রেসিপিও আসছে!

আসলে দুনিয়ার যে কোন কাজই করা সম্ভব যদি আমরা সবাই মিলে হাত লাগাই, সবাই মিলে উক্ত কাজকে ভালবাসি। আমি বেশ কিছু বড় কাজ করে ইতিমধ্যেই প্রমান পেয়েছি। তবে ১০০ জনের মধ্যে নেগেটিভ একটা লোকই যথেষ্ট একটা ভাল কাজ নষ্ট করে দেবার। সুতারাং সাবধানে এগিয়ে যেতে হবে, যাতে দলে কোন নষ্ট লোক না ঢুকে পড়ে!

সবাইকে শুভেচ্ছা।

17 responses to “রেসিপিঃ নান রুটি (গ্রামের বাড়ীতে)

  1. সবুজ মোহাইমিনুল

    খাওয়ার লোভ সামলাতে পারছি না….আপনার রেসিপি দেখে বানানোর চেষ্টা করবো
    সময় হলে মাঝে মধ্যে আমার ব্লগে ঘুরে যাবেন

    Like

  2. আমার এখনই নান রুটি বানিয়ে খেতে ইচ্ছে করছে। 🙂

    Like

  3. আহা…ধাপে ধাপে দেখতে দেখতে আমারই খিদা পেয়ে গেল এখন। ভাল লাগসে

    Like

  4. চাইলে কিনা করা যায়। ঘরেই সব তৈরি সম্ভব। আমরা সব সময়ই ভাবি যে নান বা এসব বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার। কিন্তু ঘরে বসেই সহজে তৈরি সম্ভব। আর না পারলে সাহাদাত ভাইয়ের রেসিপি তো রয়েছেই।

    চমৎকার একটি পোস্ট। আর বেশি ভাল লাগলো শেষ প্যারার কথাগুলো।
    শুভকামনা প্রিয় সাহাদাত ভাই।

    Like

  5. আসলে দুনিয়ার যে কোন কাজই করা সম্ভব যদি আমরা সবাই মিলে হাত লাগাই, সবাই মিলে উক্ত কাজকে ভালবাসি। আমি বেশ কিছু বড় কাজ করে ইতিমধ্যেই প্রমান পেয়েছি। তবে ১০০ জনের মধ্যে নেগেটিভ একটা লোকই যথেষ্ট একটা ভাল কাজ নষ্ট করে দেবার। সুতারাং সাবধানে এগিয়ে যেতে হবে, যাতে দলে কোন নষ্ট লোক না ঢুকে পড়ে!

    অতি চমৎকার আর বাস্তবতায় পূর্ণ এই কথগুলো।
    আপনাকে ধন্যবাদ।

    Like

    • হুদা ভাই, আমার মাথায় এটা ধরেই না, কে আমি অন্যের সাথে খারাপ আচরণ করব… তাও বিনা কারনে… হা হা হা…

      দুই দিনের দুনিয়া! ওরা এখনো বুঝতে পারে নাই… আজ মরলে কাল দুইদিন!

      ওদের হুস ফিরবে কবে!

      শুভেচ্ছা।

      Like

  6. নিজে একদিন চেষ্টা করে দেখবো। আপনাকে ফোন করে বিরক্তও করতে পারি। 🙂

    Like

  7. ছবিগুলো দেখে অতিত মনে পড়ে গেলো।
    বিশাল পরিবার, দোকান, ফ্যাকট্রির কর্মচারী সহ অনেক মানুষ।
    ২ মন চালের বস্তায় ৩/৪ দিন যেতো। তখন ঐ ওতোজন মানুষের রান্না, কাটা/বাছা সব করেছি। আর এখন দুজন মানুষের রান্নার জোগাড় করতেই মাঝে মাঝে ক্লান্ত লাগে।

    ভাবী ছাড়া আপনি ভাই অচল। ঠিকই নাম দিয়েছেন, “ব্যাটারী”। ব্যাটারী ছাড়া চলবেন কি করে? আমার ভাবীর/ নাকি ছোট ভাইএর বউকে নাম ধরেই বলবো? তাকে আমার অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা জানিয়ে দিবেন।

    Like

    • হা হা হা… ধন্যবাদ রান্নাতো বোন।
      আপনাদের বিশাল পরিবার ছিল আমাদের মতই। আমার বাবা চাচা ও ফুফুরা মোট ১০ জন, তাদের ঘরে গড়ে তিনজন করে! আমার দাদুকে বিশাল হাড়িতে রান্না করতে দেখেছি…।

      হা, সময়!

      আপনি যা খুশি ডাকতে পারেন। সে আপনাকে ভাল করেই চিনে এবং প্রতিটা রেসিপি পোষ্ট হলেই আমার কাছে জানতে চায়, সুরঞ্জনা আপা কি বলেছেন? উনার নাম মানসুরা হোসেন।

      আপনার এই কমেন্ট পড়ে আমি নিশ্চিত তিনি খুশি হবেন। আমি ব্যাটারী বলি বলে তিনি খুশি। এটা একটা আদুরে শব্দ। আমি বলি মজা করার জন্য। তবে আপনি ঠক বলেছেন, এখন তিনি আমার ব্যাটারীই হয়ে গেছেন…।

      আমি রান্না একা করতে চাই, তিনি এখনো পুরা ছেড়ে দিতে চান না। রান্নাঘরে আমাদের কথা, আড্ডা চলতেই থাকে… গতকাল রাত ১২টার পর গরুর জিহবা রান্না করেছি (আমার বুলেট খেতে চেয়েছে)! একটা আলাদা মজা আছে রান্নায়…।

      তবে এটা ঠিক ছেলেদের স্ত্রীর সাথে রান্নাঘরে টিকে থাকা কঠিন ব্যাপার…।

      শুভেচ্ছা।

      Like

online book এর জন্য একটি উত্তর রাখুন জবাব বাতিল