Language, You Can Change!
ভিজিটর/হিট গণনা
- 5,324,922 বার
বার শতের বেশী রেসিপি ও পোষ্টে আপনার পছন্দের খাবারের নাম (বাংলা কিংবা ইংরেজীতে) লিখে রেসিপি খুঁজে নিন
ক্যাটাগরী/বিভাগ অনুসারে দেখুন
- আঞ্চলিক/গ্রামীন রান্না (123)
- আটা/ ময়দা বিষয়ক (12)
- আড্ডা পোষ্ট সমূহ (176)
- আমাদের গ্রামের বাড়ী (9)
- আমাদের পিঠা সমূহ (8)
- ইফতারের আইটেম (43)
- উপহার/ পুরুস্কার, আগ্রহহীন বিষয় (9)
- এক্সক্লুসিভ কুকিং (65)
- এপিটাইজার, খাবারের শুরুতে (7)
- কাঁকড়া রান্না (1)
- কাবাব সমূহ (16)
- কোলের শিশুদের খাবার (2)
- খাবারের ছবি ও অন্যান্ন বিষয় (196)
- গরুর গোশত (বিফ) (84)
- চা/ নাস্তা/ পানীয় (117)
- চাল/ খিচুরি/ পোলাউ/ বিরিয়ানী (48)
- চিকেন ফ্রাই (নানান ধরনের) (12)
- ছাগল/ খাসির গোসত (মাটন) (17)
- জেনে রাখা ভাল (14)
- ডাল/ টক জাতীয় (32)
- ডিম বিষয়ক (37)
- তথ্য ও সাধারন জ্ঞান (46)
- নানান পদের আঁচার সমূহ (10)
- নিরামিষ রান্না (15)
- নোটিশ পত্র/ব্লগ বিষয়ক/কৈফিয়ত (19)
- প্রথম পোষ্ট (1)
- ফলফলাদি/ জুস (5)
- বাংলাদেশের রান্না (6)
- বিকালের নাস্তা (18)
- বিদেশী খাবার (34)
- বিশেষ রান্না (128)
- বিয়ে শাদীর খাবার ও ছবি (21)
- ব্লগে আমাকে নিয়ে লেখা সমূহ (12)
- ভর্তা সমূহ (48)
- ভাজি/ ভূনা (52)
- ভাত রান্না (2)
- ভ্রমন বিষয়ক লেখা (5)
- মধ্যবিত্ত পরিবারের বেলার খাবার (98)
- মাইল ফলক ও রেসিপি (29)
- মাছ ভাজি ও বেক (হরেক রকমের মাছ) (49)
- মাছ সমূহ রান্না (165)
- মাছের ডিম (4)
- মিষ্টান্ন (13)
- মুখোরোচক খাবার (46)
- মোরগ/ মুরগী (চিকেন) (81)
- রাজহাঁসের গোশত (1)
- রোগী পথ্য (11)
- শরবত/ জুস (19)
- শাক/ সবজি/ আলু (250)
- শাহী/মোগলাই (20)
- শুঁটকী রান্না (24)
- ষ্ট্রীট ফুড (12)
- সকালের নাস্তা (18)
- সাধারণ রান্না, সহজ রান্না (83)
- সামুদ্রিক মাছের রান্না (14)
- সোনামনি স্পেশাল (66)
- স্যুপ, বিকেলের বিশেষ আয়োজন (6)
- হাঁসের রকমারি রান্না (6)
- হালুয়া, উৎসবে (5)
- হোটেল সমুহের খাবার দাবার (36)
মাস ভিত্তিক পোষ্ট সমূহ
ক্যালেন্ডার (দিন ভিত্তিক পোষ্ট সমূহ)
আমার ইউটিউব চ্যানেল, আশা করি সাবস্ক্রাইব করে সাথে থাকবেন।
ওয়ার্ডপ্রেস কমিউনিটি/বন্ধুরা
গল্প ১১, সন্তান
গল্পঃ সন্তান
১।
সাইফুল ইসলাম প্রমানিক, গ্রামের বাড়ি পাবনার শাহজাদ পুরে, রেল স্টেশন থেকে হাঁটা পথ, বর্তমানে ঢাকায় বসবাস, ইকোনমিক্সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ দিয়ে দেশের নানান ব্যাংকে কাজ করে এখন একটা বেসরকারী ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিড্রেন্ট, সব কিছু মিলিয়ে, ফ্লাট গাড়ি বেতন নিয়ে বলা চলে সুখেই আছেন, বাস্তব ও চাকুরী জীবনে একদম ছোট থেকে তিনি বড় হয়েছেন নিজের কঠোর অধ্যবসায়, নিয়মানুবর্তিতায় ও নিষ্ঠায়, অফিসে তিনি দ্বায়িত্ব ও নিষ্ঠার জন্য সকলের কাছে অনুপ্রেরনা হয়ে আছেন। আরো কিছু কথা না বললেই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুরা তার প্রমানিক নামটা ছোট করে ‘প্রমান’ বলেই ডাকত! জীবনের এই পর্যায়ে তিনি এখনো প্রমান দিয়েই যাচ্ছেন!
পারভীন আক্তার পারু, গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার হোমনা উপজেলার ঘাগুটিয়া ইউনিয়নে, ছাত্রী হিসাবে খুব একটা জ্ঞানী ছিলেন না তবে নজরকাড়া সুন্দরী ছিলেন। ঢাকায় জন্ম, বাবার খুব আদুরে মেয়ে ছিলেন। বিবাহের পর তিনি এম এ পাস করেছেন, সে অনেক কষ্টকর কাহিনী, আর একদিন জানানো যাবে। তবে চাকুরীর কোন প্রয়োজনীয়তা মনে করেন নাই এবং ব্যবসাহের একটা চিন্তা মাথায় সব সময়েই আছে, সাজ বিষয়ে কয়েকটা কোর্স করেছেন, চাইলেই মহিলাদের জন্য একটা বিউটি ক্লিনিক খুলে ফেলতে পারেন, যদিও এখনো সেই সাহস করছেন না!
উপরের দুই চরিত্রের কথা গুলো পড়ে আপনাদের নিশ্চয় এখন বোঝার বাকী নেই যে, উনারা স্বামী ও স্ত্রী! আপনারা এখনো সঠিক লাইনে আছেন, হ্যাঁ, সঠিক! প্রমানিক তখন একটা ব্যাংকের অফিসার মাত্র, পারুর বাবার চোখে পড়েন! অভিজ্ঞতার আলোকে পারুর বাবা বুঝেছিলেন যে, এই ছেলে একদিন উন্নতি করবে, ফলে তিনি শুধু বলা চলে চেহারা দেখেই মেয়েকে বিবাহ দিয়ে দিয়েছেন! সেই থেকে সাইফুল ইসলাম প্রমানিক ও পারভীন আক্তার পারুর সংসার যাত্রা। নিশ্চিত চাকুরী বলে সাইফুল ইসলাম প্রমানিক কখনো তেমন দুঃখ দেখে নাই, তবে ছোট বেলার কিছু দুঃখের স্মৃতি আছে, পিতার অভাবের সংসারের কথা কখনো ভুলেন না!
সাইফুল ইসলাম প্রমানিক ও পারভীন আক্তার পারু দম্পতির এক ছেলে, এবার ইন্টারমেডিয়েট পরীক্ষা দিল, মেটিক পাশের রেজাল্ট তেমন নয়, টেনে টুনে পাশ অথচ এই ছেলের পিছনে বলা চলে পানির মত টাকা ঢালা হয়েছে, ভাল রেজাল্ট করার জন্য বা ছেলের পড়াশুনার জ্ঞান বাড়ানোর জন্য, কিন্তু কেন জানি ওর পড়াশুনাতেই অনীহা, বাকী সব মাশাআল্লাহ! এদিকে, এই বয়সেই বেশ সুদর্শন, বিধাতার নিজ হাতে গড়া যেন। সাইফুল ইসলাম প্রমানিক ছেলেকে দেখেন আর ভাবেন, ছেলের এই বয়সে তিনি কত কালাছালা ছিলেন, সঠিক পুষ্টি ছিল না দেহে! ছেলেকে দেখে তিনি আনন্দিত হন। পড়াশুনা না করলেও যদি সামান্য পরিশ্রমিও হয় তবে জীবন আনন্দে কাটাতে পারবে কিংবা এই ভাবেন নিজের রেখে যাওয়া টাকা সম্পত্তিও যদি দেখবাহাল করতে পারে তবুও আনন্দে থাকতে পারবে!
তবে যাই হোক, গত চার বছরে ছেলের ব্যক্তি আচরণে তিনি বলা চলে ভরসা হারিয়েছেন, সেই সব ঘটনা এখানে তুলে দিলে আপনারাও কষ্ট পাবেন, ফলে গোপন রাখা হল, এখন বার বার মনে হয় এঁকে দিয়ে আর যাই হোক পড়াশুনা হবে না, বা এটা নিশ্চিত বলা চলে। তবে কাউকে কিছু বলাও যায় না আবার সহ্য করে থাকাও মুস্কিল হয়ে পড়ছে, বুকের ব্যাথ্যা বেড়ে যায়! নানান মনো বিশ্লেষনে সাইফুল ইসলাম প্রমানিকের বার বার মনে হতে থাকে ছেলেটা এই কোথায় যাত্রা শুরু করলো! আজকাল তিনি ছেলেকে নিয়ে বসতে চান এবং তাকে কিছু কথা বলতে চান কিন্তু তার মায়ের কারনে সেটা হয়ে উঠে না!
২।
প্রমান – ছেলেতো খুব সিগারেট টানে, আজকাল কাছে গেলে গন্ধ পাই।
পারু – তুমিও তো সারা জীবন সিগারেট টেনে টেনে পার করছো!
প্রমান – ছেলে তো মনে হয় প্রেম করে।
পারু – তা তোমার স্বভাব পাবে না, বাপের নাম রওশন করবে না!
প্রমান – ওকে কিছু আইন কানুন নিয়ম শৃংখলা শেখাও।
পারু – ভুল ধরতে পারলেই তুমি আনন্দ পাও!
প্রমান – লেখাপড়াতে কখনো দেখি না।
পারু – তোমার চোখ আন্ধা, ও যখন পড়ে তখন তুমি দেখ না!
প্রমান – নিজের কাজ গুলো তো নিজে করবে, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন চলবে, গোসলে অনীহা।
পারু – ও রাতে গোসল করে!
প্রমান – সময় মত সব কিছু করা শেখাও, জীবনে এখন না শিখলে আর শিখতে পারবে না।
পারু – তুমি বেশি কথা বলো, কথা না বলে থাকতে পার না! অ্যাজাইরা কথা বলাই তোমার অভ্যাস!
প্রমান – গত কয়েক বছরে ও তো খাবার টেবিলে বসলোই না, এক সাথে কখনো খেয়েছে মনে করতেও পারি না।
পারু – তোমার খাবার তুমি খেয়ে ঘুমাতে যাও!
প্রমান – ওর পিছনে যে টাকা খরচ করছি, তা রেখে দিলে বৃদ্ধকালে কারো কাছে হাত পাততে হত না, মনে হয় টাকা গুলো নষ্ট হচ্ছে।
পারু – কিছু করে খোটা দেয়া তোমার অভ্যাসে পরিনত হয়েছে!
প্রমান – বসে বসে নিজের সন্তানের গোলায় যাওয়া দেখছি।
পারু – তোমার নজর লাগছে!
৩।
বাইরে খুব বৃষ্টি হচ্ছে, মুশলধারে। সাইফুল ইসলাম প্রমানিক অফিসে বসে আছেন, জানালা দিয়ে অনেক দুরের গাছগাছালি দেখা যায়, বাতাস ঢেউ খাচ্ছে! কয়েক ঘন্টা পরে বোর্ড অফ ডিরেক্টর্সদের একটা মিটিং আছে, ব্যাংক লোন ডিসভার্স্মেন্ট অফ মিডল ক্লাস! আজকাল দেশের মিডল ক্লাসকে ব্যাপক হারে ব্যাংক লোনে আটকাতে না পারলে ব্যাংক চালানো কঠিন হয়ে পড়ছে। ধনীদের লোন দিলে ফেরত দেয় না, গরীবদের দিলে মরে যায় বা যাচ্ছে! বাকী থাকে মধ্যবিত্ত শ্রেণী, সমাজে এরা এখনো দুই কুলে, দুই নৌকায় পা দিয়ে বসে আছে, এদের এখনো লাজলজ্জা কিছু বাকী আছে মাত্র!
অপরিচিত মোবাইল কলে সাইফুল ইসলাম প্রমানিক নড়ে উঠেন। এখন আর তেমন কোন অপরিচিত কল তার কাছে আসে না, সবাইকে মোটামুটি একটা ক্লাসিফাইড লিষ্টে নিয়ে এসেছেন। তবে ব্যাংকের চাকুরী, অপরিচিত নাম্বার গুলো ধরে অধিক সন্মানের সাথে কথা বলতে হয়, কেন ডাইরেক্টর কখন ফোন করে কি জানতে চায়, কে জানে! এদের সাথে কখনো অসন্মান করে কথা বলা যায় না, এদের যে কোন একজন বাজে রিপোর্ট দিলে, চাকুরীতে আর টিকে থাকা যাবে না। এদের তেল ঘি দিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। এই বয়সে আর নুতন করে চাকুরী খোঁজা যাবে না!
– হ্যালো, প্রমানিক বলছি, কিভাবে আপনাকে হেল্প করতে পারি।
; আমি গুলশান থানা অফিস ইন চার্জ বলছি, আপনাকে এখন একটু থানায় আসতে হবে। রিশাত তো আপনার ছেলে, মটরসাইকেল দূর্ঘটনায় সব শেষ হয়েছে।
(সামুতে প্রকাশিত ৩০ মে, ২০২০ইং)