- সারাদিন আজ কি করলে?
; এই তো, ঘুম থেকে উঠে চা বানিয়ে বিস্কুট দিয়ে খেলাম। তার পর একটা রেসিপি লিখার চেষ্টা করলাম, জানো আজ গল্প ও রান্না’য় তেইশ লক্ষ হিট হয়ে গেল! - আমরা বাসায় নেই এখন তো তোমাকে লেখায় আর কেহ বাধা দিচ্ছে না!
; না, এখন তোমরা না থাকলেও আর লিখতে পারি না, না লিখতে লিখতে অভ্যাস হয়ে গেছে, তার পর ফেসবুকে এতটা অসক্ত হয়ে পড়ছি যে, লেখার চেয়ে ফেসবুকে থাকতেই আনন্দ পাই। অন্যের লেখা পড়ি আর লাইক কমেন্ট করি! ওহ, আর ফেসবুকের ওয়ালে শুধু সেলফি দেখি! - আজ নামাজ পড়োনি?
; হ্যাঁ, পড়েছি, সেই পুরানো সপ্তাহের মতই। বাসার কাছে মসজিদ, এই ঢাকা শহরে। - দুপুরে খাবার খাও নাই?
; হ্যাঁ, নামাজ থেকে ফিরেই রান্না শুরু করলাম। এক চুলায় ভাত অন্য চুলায় রুই মাছ ঝোল করে রান্না। বড় ছেলের কথা মনে পড়াতে এবার রুই মাছ ভাজি করে রান্না করেছি। জানো এবার তোমার রসুন এবং আদা বাটায় নাম লিখে রাখাতে ভাল হয়েছে, খুঁজে পেতে সুবিধা হয়েছে! এক তরকারী এক ভাত, মোটামুটি তিনটের আগেই খেতে পেরেছি। - এর পর?
; এর পর আবারো সেই পুরানো চেষ্টা! গল্প ও রান্না’য় আবারো রেসিপি পোষ্ট লিখার চেষ্টা। এবারের চেষ্টা সফল হয়েছি। একটা রেসিপি লিখতে পেরেছি, পুটি মাছের রান্না দেখিয়ে দিয়েছি! - তারপর?
; ঘুমে আবারো চোখ বন্ধ হয়ে আসছিলো, ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম। সেই কি কঠিন ঘুম, সন্ধ্যায় উঠে মোবাইলে দেখি ৪২টা মিস কল! হজ্জ অফিস থেকে একাই ২০টা কল! ভয়ে আঁতকে উঠেছিলাম! ফোন ব্যাক করে যা বুঝলাম, সেই কাজ আগামীকাল সকালে করে দিলেও চলবে! মানুষ যে কাজ কাল হলেও চলে, সেই কাজের জন্য আজ কেন হন্য হয়ে উঠে! - বিকেলে কিছু খাওনি!
; না, রুই মাছ দিয়ে এত ভাত খেয়ে ছিলাম যে, ক্ষুধার ধারে কাছেও ছিলাম না! তবুও মন চাইলো, বাইরে বের হবার ইচ্ছা ছিল না, এদিকে মাথার চুল কাটানোর দরকার, এমন বন্ধের দিন আর কবে পাব! - বের হও নাই!
; না, বের না হয়ে পারি নাই! তবে চুল কাটাতে পারি নাই, ইচ্ছা হয় নাই! আল-কাদেরীয়ার শাহী মোগলাই পরোটা আর চা খেয়ে ফিরে এসেছি! - তুমি একা থাকতে পছন্দ করো, এটা আমরা জানি!
; আমি একা কই, সাথে মোবাইল, টিভি, কম্পিউটার আছে না! - আমরা বাসায় না থাকলে তুমি টিভিতে উচ্চুস্বরে গান শুন, এই আভিযোগ পুরানো! পাশের বাসার ভাবীরা বলেন!
; হ্যাঁ, সন্ধ্যায় ফিরেই আজ টিভি দেখতে লেগেছিলাম। অনেক দিন পর, সোফায় সেই ভঙ্গি করে শুয়ে প্রায় ঘন্টা দুয়েক টিভি দেখেছি। আজ মীরাক্কেলের ৭৫তম শো ছিল! প্রক্তানদের নিয়ে করা এই হাসির আড্ডা এত জমজমাট ছিল যে, আমি একাই হেসেছি উচ্চুস্বরে! - রাতে কি আর কিছু খাবে না!
; ওহ, বলতে ভুলে গেছি। মোগলাই খেয়ে বাজারে গিয়েছিলাম, দুই মুট কলমি শাক, কিছু কাঁচা মরিচ ও চারটা লেবু কিনে ফিরেছিলাম। অনেক দিন শাকভাজা খাই নাই, ইচ্ছে হচ্ছিলো! - শাক পরিস্কার করে নিয়েছো তো?
; টিভি দেখার ফাঁকে ফাঁকে কাজটা করেছি, ড্রয়িং রুমের দুই বাতি জালিয়ে! - তা হলে রাতেও খেয়েছো!
; দুই দিনের দুনিয়া। খাবার ছাড়া আর কি আছে এই জীবনে! কম তেলে ভাজি করে নিয়েছি, দুপুরের রুই মাছ এবং কিছু ভাত ছিলো সেটা গরম করে নিয়েছি! হয়ে যাবে। - এখনো খাও নাই!
; না, সব সাজিয়ে বসতে গিয়েছিলাম। তোমার ফোন পেয়ে কথায় লেগে গেলাম! তোমাদের দিন কেমন কাটছে, বুলেট ব্যালট কি করছে! আজ কি কি রান্না হল? - পরে বলবো! যাও, আগে খেয়ে নাও। খাবার গরম খাওয়া ভাল!
(মে ২৮, ২০১৬ইং)
“https://www.facebook.com/udraji/posts/10205416620889900