গ্যালারি

রেসিপিঃ ছোট মাছ ভাঁজা (জাপানি স্টাইল)


আমার একজন জাপানী বন্ধু আছে। কতকাতা এয়ারপোর্টে আমাদের প্রথম পরিচয় হয়েছিল এবং সেই থেকে সে আমার ফেবু বন্ধু এবং সে যেমন আমাকে লিখে আমিও তাকে লিখি/দেখি। সে ভারত দেখতে গিয়েছিল আমিও গিয়েছিলাম। পরিচয়ের পর বাংলাদেশের নাম বলাতে চিন্তে পেরেছিল বলে মনে হল না, পরে মানচিত্রে একে বুঝিয়ে দেয়াতে বুঝতে পেরেছিল এবং পরে জানালো জাপানে অনেক বাংলাদেশী থাকে। তবে কারো সাথে তেমন পরিচয় নেই, যাই হোক আমি তাকে আমাদের দেশের ওপেন দাওয়াত দিয়ে রেখেছি। পেশায় সে জাপানের একটা হসপিটালে কাজ করে, সম্ভবত মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট। আগামীতে হয়ত কোন একদিন সে আসবে, আসুক দেখে যাক আমাদের সোনার বাংলা!

এই হচ্ছে ‘কাজুমাসা সাসাকি’। সে এখনো ব্যাচেলর, নিজের হাতে রান্না করে খায়। গত কয়েকদিন আগে ওর ফিডে দেখলাম, ছোট মাছ ভাঁজা, অনেকটা ফিস ফিংগার টাইপ। মাছ গুলো সে নিজে ধরেছে এবং ভাঁজা করে ছবি দিয়েছে।

এই হচ্ছে ‘সাসাকির স্মল ফিস’ ফ্রাই! ছোট মাছ গুলোর নাড়ি ভুড়ি ফেলেছে কি না তা জানতে পারি নাই! হা হা হা, এটা অবশ্য ওদের জন্য ব্যাপার না! এদিকে এই ছবি দেখে আমি অফিস ফেরার পথে মাছ বাজার চক্কর দিতে গিয়ে সেইম মাছ পেয়ে যাই, ছোট ব্যাইলা মাছের বাচ্চা হবে হয়ত, মাছের নাম জানতে পারি নাই বা চেষ্টাও করি নাই! কিনে নিয়ে এসে ওর মত করে ফ্রাই করি এবং ওর ফিডে ছবি দেই, ছবি দেখে সাসাকি খুব খুশি হয়! আর এদিকে আমি আমরা নিজেরা খেয়েও খুশি হই।

এটা অবশ্য তেমন কঠিন রান্না নয়। তবে ছোট মাছ কেটে পরিস্কার করা কঠিন আর এই রাতেই কাজটা  করে দিয়েছেন আমার ব্যাটারী (আগামীতে মাছ কাটাও শিখে নিব) এবং বাদ বাকী কাজ আমি নিজে। চলুন দেখে নেই, সেই মজার ছোট মাছ ভাঁজা! জাপানী স্টাইলে এবং দেশী ভাব্বে! হা হা হা।

প্রয়োজনীয় উপকরনঃ
– ছোট মাছ (আপনার ইচ্ছানুযায়ী)
– সামান্য হলুদ গুড়া (এটা আমি ইচ্ছা করেই দিয়েছি, না দিলেও চলত)
– সামান্য ফিস সস
– সামান্য ওয়েষ্টার সস
– লবন (পরিমান বুঝে)
– চালের গুড়া
– তেল (ভাঁজার জন্য, ডুবো তেলে ভাঁজা হলে ভাল হত, কিন্তু আমি সেটা করি নাই, কম তেলে সময় নিয়ে ভেঁজেছি)

প্রনালীঃ  (ছবি কথা বলে)

এই হচ্ছে আমার কেনা মাছ।


কেটে পরিস্কার করার পরের ছবি।


লবন, হলুদ, ফিস সস ও ওয়েষ্টার সস দিয়ে নিলাম।


মিশিয়ে কিছুক্ষনের জন্য নরমাল ফ্রীজে রেখে দিলাম, সময় ছিল না বলে মাত্র ১০ মিনিট রেখেছি, মিনিট ২০/৩০ রাখলে আরো ভাল হত।


এবার একটা প্লেটে চালের গুড়া নিলাম।


মাছ গুলো দিয়ে দিলাম।


ভাল করে মাখিয়ে নিলাম।


এবার গরম তেলে ভাঁজা। এই ধরনের ভাঁজা আসলে বেশী বা ডুবো তেলে ভাঁজতে হয়। আমি তেল অপচয় করি নাই (হা হা হা), সামান্য তেলে সময় নিয়ে ভেঁজেছি।


কম জ্বালে, কম আঁচে!


যাতে না পুড়ে ভিতরটাও ভাল সিদ্ধ হয়।


খুন্তি দিয়ে নয়, ফ্রাই ফ্যান নাড়িয়েই উলটে দিয়েছি যেন মাছ না ভেঙ্গে যায়।


হয়ে আসছে!


তুলে ফেলুন এবং জমিয়ে রাখুন। আবার আমার মত রান্না করতে করতেই খেয়ে খতম করে ফেলবেন না!


এই কটাই টেবিলে আনতে পেরেছিলাম। আমার রান্না টেষ্টার বুলেট খেয়ে দারুন প্রশংসা করল। আমি নিজেও মজা পেয়েছি! তবে রাত বেশি হয়ে যাওয়াতে ব্যাটারী সাহেবান মনে হয় রেগে গেছেন!

দেখা ও পড়ার জন্য ধন্যবাদ সবাইকে। আসছি আরো নুতন নুতন রেসিপি নিয়ে। আশা করছি আপনাদের ভাল লাগবে।

শুভেচ্ছা।

4 responses to “রেসিপিঃ ছোট মাছ ভাঁজা (জাপানি স্টাইল)

  1. বাবা ছেলে মিলে রাত দুপুরে ভালই মজা করলেন। সহজ রেসিপি, দেখি ট্রাই করতেও পারি…। কি মাছ ছিল??

    Liked by 1 person

    • ধন্যবাদ বোন।
      হ্যাঁ, সময় কাটাতে রান্নার জুড়ি নেই। আমার ছেলে মনে হয় আমার ছেয়েও ভাল রান্না করবে একদিন। এখনি সে তার নিজের মেনু বানায়! হা হা হা।

      এগুলো বাইল্যা মাছের বাচ্চা ছিল। মাঝে মাঝে বাজারে পাওয়া যায়। সব সময় দেখা যায় না।

      শুভেচ্ছা।

      Like

[প্রিয় খাদ্যরসিক পাঠক/পাঠিকা, পোষ্ট দেখে যাবার জন্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা। নিম্মে আপনি আপনার মন্তব্য/বক্তব্য কিংবা পরামর্শ দিয়ে যেতে পারেন। আপনার একটি একটি মন্তব্য আমাদের অনুপ্রাণিত করে কয়েক কোটি বার। আপনার মন্তব্যের জন্য শুভেচ্ছা থাকল। অনলাইনে ফিরলেই আপনার উত্তর দেয়া হবে।]