গতকয়েকদিন আগে আমাদের পাশের বাসার নিপা ভাবী আমার ব্যাটারী সাহেবানীকে এক বাটি তরকারী পাঠান। আমি অফিস থেকে ফিরে এই তরকারীর প্রশংসা শুনি, আমার ব্যাটারী জানালেন যে, তরকারীটা এতই স্বাদের হয়েছিল যে, তিনি কাউকে না দিয়ে একাই এক বাটি সাবাড় করে দিয়েছেন। পরদিন বাজারে যেতে আমি বলেছিলাম, নিপা ভাবি থেকে উক্ত তরকারী রান্নার ফর্মুলা যে জেনে নেন। ঘরে আগে থেকেই চিংড়ী মাছ আছে, শুধু বাজার থেকে লাউ নিয়ে এলেই চলবে! বাজারে গিয়ে লাউয়ের দাম দেখে হতবাক! ছোট একটা লাউ, ৬০ টাকা! (ছোট এই লাউ দিয়ে তিন বেলার তরকারী রান্না হয়েছিল, লাউ ভাজি, লাউ ভুনা, লাউ এর ছিলকা ভাজি) আসলে দেশের এই পরিস্থিতিতে কে আর বাজারের দিকে তাকাবে? ব্যবসাহীরা লুটে নিচ্ছে, সরকারের সেই দিকে খেয়াল নেই!
দেশের এই পরিস্থিতিতে এখন আর রেসিপি পোষ্ট চলে না, এদিকে আমিও বসে থাকতে পারছি না। আমার হাতে বেশ কিছু রেসিপি জমে আছে। রেসিপি গুলো পোষ্ট না করতে পারলে, পুরানো হয়ে যায়। পুরানো রেসিপি দিতে ইচ্ছা হয় না! হা হা হা…
চলুন দেখে ফেলি। আসলেই মজাদার এবং সুস্বাদু। এত কম মশলায় এমন খাবার, বাংলাদেশেই সম্ভব।
উপকরণ ও প্রনালীঃ
ছোট করে এভাবে লাউ কেটে নিন। (আমরা একবেলার জন্য অর্ধেক লাউ নিয়েছিলাম)
মশলা পাতিঃ কাঁচা মরিচ কুচি, সামান্য চিনি, কালি জিরা, সামান্য হলুদ, জিরা গুড়ার পেষ্ট, লবন, তেল, পানি এবং হাফ কাপ চিংড়ী মাছ। (সামান্য ধনিয়া পাতার কুচি নেবেন, ছবিতে নেই)
তেল গরম করে সামান্য লবন যোগে সব মশলা/ভেজষ দিয়ে চিংড়ী গুলো ভাল করে ভেঁজে নিন। চিনি পরে দেবেন।
ভাজিটা এমন দেখাবে। সামান্য পানি দিতে পারেন।
এবার লাউয়ের কুচি দিয়ে দিন।
ভাল করে খুন্তি দিয়ে মাখিয়ে নিন।
এবার হাফ কাপ পানি দিয়ে হাল্কা আঁচে ঢাকনা দিয়ে দিন। মিনিট ২০ লাগতে পারে। মাঝে মাঝে নাড়িয়ে দিতে ভুলবেন না।
অনেকটা এই রকম দেখাবে। এবার এক চিমটি চিনি চিটিয়ে দিন, মিশান। এবং ফাইন্যাল স্বাদ দেখুন। লবন লাগলে দিন।
ধনিয়া কুচি দিন
এবং আর মিনিট খানেক চুলায় রাখুন।
ব্যস পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত।
এই তরকারীর স্বাদ বর্ননার জন্য আমাদের বুলেটের কথা শুনুন, “আমার ভাল লেগেছে, আরো চিংড়ী মাছ দিলে ভাল হত।”
এই রান্নার এক বাটি নিপা ভাবীর জন্য পাঠানো হয়েছিল, কিন্তু স্বাদ কেমন হয়েছে, তা জিজ্ঞেস করা হয় নাই! এই পোষ্ট লিখার সময় আমি আমার ব্যাটারীকে জিজ্ঞেস করতে বলি, কিন্তু এখন আর সেই সময় নেই! দুনিয়াতে সময়ের কাজ সময়েই করতে হয়! সময় গেলে সাধন মিলে না!
কৃতজ্ঞতাঃ নিপা কর
এইটা ইন্টারেস্টিং মনে হচ্ছে, করে দেখবো শীঘ্রই, ধন্যবাদ। মশলার কম্বিনেশনটা বেশ নতুন রকমের(জিরা আছে ধনে নাই, আবার কালোজিরাও আছে)।, কালোজিরা জিনিসটা চমৎকার, আমার এক দাদী ডালে পাঁচফোড়নের বদলে শুধু কালোজিরা দিয়ে রান্না করেন, সেটা আমরা চেটেপুটে খাই!
LikeLike
ধন্যবাদ রনি ভাই। হা, মশলার কম্বিনেশন আমার কাছেও আলাদা মনে হয়েছে। তবে বেশ মজাদার। আশা করি একবার রান্না করে দেখবেন, আপনার রান্নার হাত বেশ, আমার মনে হচ্ছে আরো মজার হবেই।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
এই রান্নাটা আমিও করি। পেঁয়াজ রসুন ছাড়াও অনেক তরকারী খেতে সুস্বাদু হয়। এই তরকারীতে আমি একটু আদা বাটা ও দেই। অনেক ভালো লাগে খেতে।
LikeLike
ধন্যবাদ বোন।
হা, পেঁয়াজ রসুন ছাড়া তরকারী কি করে রান্না হয় তা আমিও এক সময় ভাবতাম। এখন বুঝতে পারি, রান্নায় আসলে সব কিছুই চলে।
হা, আদাতো চলতেই পারে, মাছ যেহেতু আছে।
লাউ ও মুগডালের একটা নিরামিষ রেসিপি আসছে, যেটা আমাদের ছোট বেলায় মজাদার খাবার ছিল।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
wow! wow!
LikeLike
ধন্যবাদ জাভেদ ভাই।
LikeLike
হলুদের গুড়া আর একটু বেশি দিলে দেখতে ভাল হতো!
LikeLike
পিংব্যাকঃ এক নজরে সব পোষ্ট (https://udrajirannaghor.wordpress.com) | BD GOOD FOOD
পিংব্যাকঃ রেসিপিঃ সহজ লাউ রান্না শিক্ষা! | রান্নাঘর (গল্প ও রান্না) / Udraji's Kitchen (Story and Recipe)