গ্যালারি

আড্ডাঃ বইমেলার পথের খাবার দাবারের সাথে এক সন্ধ্যা!


অফিস থেকে বের হয়ে পশ্চিম দিকে সোজা হাটা দিলাম, তখন পড়ন্ত রোদ! টার্গেট কাকরাইল, রমনা পার্ক, সোরোয়ার্দী পার্ক হয়ে সোজা বইমেলা ২০১৫! যাই হোক, বইমেলায় প্রবেশ করি নাই তেমন একটা, কাজের কাজ হয়েছে, বইমেলা কেন্দ্র করে গড়ে উঠা ফুটপাতের খাবারের দোকান দেখে এই সন্ধ্যা কাটিয়েছি! বোনাস হিসাবে ছিল, নাট্য মঞ্চে একটা সমবেত নাচ! তবে এবারের এই প্রথম বইমেলায় গেলাম, ছেলেকে নিয়ে আবার যাবার ইচ্ছা আছে, আর বন্ধুদের আড্ডা হলে আবারো যাব বলে ভাবছি!

আগেই পাঠক/পাঠিকা ভাই বোন বন্ধুদের কাছে করজোড়ে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি, ছবি গুলো তেমন ভাল আসে নাই এবং মোবাইলে তোলা বলে তেমন মানের হয় নাই। চলুন, কথা না বাড়িয়ে ছবি দেখি, যারা বইমেলায় গিয়েছেন, তাদের এই সব খাবারের ছবি মনে পড়বে! আর যারা আগামীতে  যাবেন তারা আগেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন, কি খাবেন, কি খাবার কিনবেন।

দরিদ্র এই দেশে আমি মনে করি পথে ধারের খাবারের মান কম বা হাইজেনিক না হলেও, আমি দেখেছি এই দরিদ্র খাবার বিক্রেতারা সাধারণত খাবারে ভেজাল রাসায়নিক দ্রব্য দেয় না, বা চেষ্টা করে খাবার ভাল দিতে। কোন প্রশিক্ষণ ছাড়া এই খাবার বিক্রেতা মানুষ গুলো শুধু জীবিকার টানে পথের ধারে খাবার বিক্রি করে যাচ্ছেন দিনের পর দিন, ঝড় বৃষ্টি রোদ উপেক্ষা করে। তবে এই পথের ধারের খাবার বিক্রেতারদের উপস্থিতি দিনের পর দিন বেড়েই চলছে, দেশে দারিদ্রতার হার বাড়ছে বলেই এমন দেখা যাচ্ছে বলে আমার মনে হয়। গ্রামের একজন আভাবী সাধারন মানুষ কর্মের সন্ধানে এই শহরে এসে, কিছু না পেয়ে এই খাবার বিক্রিতে লেগে পড়ছেন, আমার আমাদের মত কম টাকার ভুভুক্ষ কাষ্টমারতো কম নেই এই শহরে!

কথা বললে মনের অনেক দুঃখের কথা বের হয়ে পড়বে, এই সুন্দর দেশ এখনো একজন সুশাসক পায় নাই, যিনি সুশাসন প্রতিষ্ঠা করে দেশের এই আভাবী মানুষ (বিক্রেতা ও ক্রেতা) গুলোকে সামান্য স্বস্তি দেবে! আফসোস, হয়ত আমরা এমন একটা ব্যবস্থা কখনোই দেখে যেতে পারবো না, জেনারেশনের পর জেনারেশন শেষ হয়ে যাচ্ছে!


১, আমার মনে হয় এই স্থাপনা একদিন সারা বিশ্বে অনেক নাম কামাবে, যদিও এর চার পাশের ব্যবস্থাপনা ও সুরক্ষা এখনো গড়েই উঠে নাই, আর কত সময় নিলে হবে, এটাও বুঝে উঠতে পারি না!


২, উন্মুক্ত এই নাট্যমঞ্চ, আমাদের মত সাধারন মানুষের আনন্দ দিয়ে আসছে অনেক বছর। আমি পথনাট্য পছন্দ করি, এই নাটকের কন্সেপ্ট আমার কাছে ভাল লাগে। যাই হোক, এখানে নাটক দেখা হয় নাই, তবে একটা গানের সাথে নাচ দেখেছি, মনে আনন্দ পেয়েছি!


৩, মঞ্চে দর্শক হিসাবে বসে হালকা মুরি, নারিকেল খেয়েছি, সাথে ছিল চা! বেশ… পরেই পথে নেমে পড়া।


৪, ঝাল মুড়ি, কমন আইটেম।


৫, সন পাপড়ি। বিক্রেতার দোকান সাজানোর কৌশল অসাধারন।


৬, ছাচের পিঠা।


৭, ছোলাবুট


৮,  নানান ভাঁজা


৯, গটিগরম চানাচুর


১০, চিংড়ি ভুজিয়া


১১, চটপটি দোকান গুলো ফাকা দেখে মন খারাপ হয়ে গেল!


১২, সোরোয়ার্দী উদ্যানে বইমেলা অনেকে মেনে নিতে না পারলেও, আমি মনে করি চলুক না, সামান্য জায়গায় ঠেলাঠেলি করার চেয়ে সবাই উন্মুক্ত হয়ে ঘুরে ফিরুক, সবাই নিরাপদ থাকুক।


১৩, দই চিড়া, রোগীদের খাবার নয়। সাথে পুডিং খেয়ে দেখতে পারেন।


১৪, চিকেন ফ্রাই!


১৫, নানান প্রকারের ভাঁজিয়া, আলুচপ, বেগুনী, পুরি, পেঁয়াজু!


১৬, বাখরখানি ও জিলাপি।


১৭, ভাপা পিঠা।


১৮, এই বছরই মনে হয় সব চেয়ে বেশী খাবারের দোকান বসেছে।


১৯, চিংড়ি মাথা ভাঁজিয়া। (এই খাবার নিয়ে অনেক গল্প আছে, অন্য কোন পোষ্টে আলাপ জমাবো, আমাদের এক বন্ধু আছে, সে এই খাবার খুব পছন্দ করে, ওর সাথে থেকে আমিও ঢাকা স্টেড়িয়াম এলাকায় অনেকবার খেয়েছি!)


২০, ফুছকা।


২১, বেল পুরি।


২২, মুরি নারিকেল চিনি, গ্রামের সকালের নাস্তা এই শহরে চলে এসেছে!


২৩, নারিকেলি, নারিকেল চিড়ার মিশ্রনে একটা মজাদার খাবার।


২৪, বাদাম বুট!


২৫, পেয়ারা কাসুন্দি, কামরাঙ্গা কাসুন্দি।


২৬, ভুট্টা পোড়া।


২৭, আমস্বত্ব, পেয়ারা


২৮, কিছু না!


২৯, জিবে জল!


৩০, দেশী বরই।


৩১, গাছ পাকা তেতুল!

আরো অনেক অনেক খাবার আমার দেখা থেকে বাদ গেছে, আশা করি আগামীতে গেলে এবং আবারো চোখে পড়লে আপনাদের দেখাবো।

আশা করি, আপনার যা ইচ্ছা খাবেন, তবে এই এলাকায় খাবারের পানির ব্যাপারে  সতর্ক থাকার দরকার আছে। আপনি চাইলে  কিছু পানি নিয়ে বাসা থেকে বের হতে পারেন।

বইমেলাকে ঘিরে এই খাবারের আয়োজন বা দরিদ্র মানুষের উপার্জঙ্কে আমি আনন্দের চোখে দেখি, তবে যদি এই বিক্রেতাদের সামান্য শিক্ষা এবং এদের জন্য যদি একটা গাইডেন্স থাকত তবে, সবার জন্যই মঙ্গল হত।

সবাইকে শুভেচ্ছা।

8 responses to “আড্ডাঃ বইমেলার পথের খাবার দাবারের সাথে এক সন্ধ্যা!

  1. বইমেলার বাইরের খাবার দেখে শুধু জীভে জলই টেনেছি। খাইনি। এখন আর যচ্ছেতার করে শরীরে কুলোয়না। চিংড়ীর মাথা ভাজা ব্লগার আরিয়ানার খুব প্রিয়।

    Liked by 1 person

    • ধন্যবাদ রান্নাতো বোন।
      এবারে আমার কাছে মনে হয়েছে এই ধরনের খাবারের দোকান বেশি বসেছে। এই চিংড়ি মাথার ভাজি আগে সাধারণত গুলিস্তান এলাকায় দেখতাম, এবার বইমেলা এলাকেতেও দেখলাম। হ্যাঁ, শরীর এক সময়ে বাইরের খাবার আর নিতে চায় না, আমারো এখন তেমন হয়, আগের মত খেতে পারি না। শুভেচ্ছা নিন।

      Like

  2. চিংড়ীর মাথা ভাজাটা কখনো খাইনি। খেতে কেমন কে জানে!

    Liked by 1 person

    • ধন্যবাদ অজ্ঞাত ভাই বা বোন।
      এটা আসলে আমাদের স্ট্রীট ফুড হিসাবে অনেক দিন ধরে চালু আছে, তবে এটা আগে দেখা যেত ঢাকা স্টেডিয়াম এলাকায় বা গুলিস্থান এলাকায়। এখন এর বিস্তৃতি বেড়েছে, আমি কয়েকবার খেয়েছি, আমার এক বন্ধুর সাথে। আমার কাছে ভাল লেগেছে, অবশ্য আমি সব খাবারই ভাল পাই। এবারের বই মেলায় চলে আসুন, টি এস সির মোড়েই পাবেন।
      শুভেচ্ছা।

      Like

  3. চিংড়ীর মাথা ভাজার রেসিপিটা দয়া করে শেয়ার করবেন ভাই?????

    Liked by 1 person

  4. On Monday, February 9, 2015, “রান্নাঘর (গল্প ও রান্না) / Udraji’s Kitchen
    (Story and Recipe)” wrote:

    > Shahadat Udraji (সাহাদাত উদরাজী) posted: “অফিস থেকে বের হয়ে পশ্চিম
    > দিকে সোজা হাটা দিলাম, তখন পড়ন্ত রোদ! টার্গেট কাকরাইল, রমনা পার্ক,
    > সোরোয়ার্দী পার্ক হয়ে সোজা বইমেলা ২০১৫! যাই হোক, বইমেলায় প্রবেশ করি নাই তেমন
    > একটা, কাজের কাজ হয়েছে, বইমেলা কেন্দ্র করে গড়ে উঠা ফুটপাতের খাবারের দোকান
    > দেখে এই সন্ধ্যা”

    Liked by 1 person

[প্রিয় খাদ্যরসিক পাঠক/পাঠিকা, পোষ্ট দেখে যাবার জন্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা। নিম্মে আপনি আপনার মন্তব্য/বক্তব্য কিংবা পরামর্শ দিয়ে যেতে পারেন। আপনার একটি একটি মন্তব্য আমাদের অনুপ্রাণিত করে কয়েক কোটি বার। আপনার মন্তব্যের জন্য শুভেচ্ছা থাকল। অনলাইনে ফিরলেই আপনার উত্তর দেয়া হবে।]