মাছে ভাতে বাঙ্গালী। ভাত এখনো টিকে থাকলেও মাছ হারিয়ে যাচ্ছে। আমাদের সাধারন মাছ গুলো এখন আর পাওয়া যায় না, অন্যদিকে মাছের যা দাম! দামের কাছে আমাদের হার মানতেই হচ্ছে। অনেক পরিবার আর প্রতিদিন মাছ খেতে পারছে না। সে যাই হোক, দুনিয়া যতদিন থাকবে, মাছের আবেদন তত দিন থাকবে। সারা পৃথিবীর বেশির ভাগ মানুষই মাছ খায়। মাছ দিয়ে কয়েক হাজার আইটেম রান্না করা যায়। মাছের যে দিকটা হৃদয়ে দাগ কাটে তা হচ্ছে, এক এক মাছের এক এক রকম স্বাদ ও ঘ্রাণ। নানান আকার প্রকারের মাছের স্বাদ নানান ধরনের।
আমি মাছ ভালবাসি। মাছ রান্না শিখেছি অনেক দিন হয়ে গেল। এখন মাছ রান্না আমার কাছে জগ থেকে গ্লাসে পানি ঢালার মত ব্যাপার। আমরা প্রতিদিন/প্রত্যহ যে মাছ রান্না করি সে রকমের একটা মাছ রান্না দেখাবো আজ। তবে বুদ্দি করে!
বাড়িতে মেহমান আসলো কিন্তু মাংস জাতীয় কিছু নেই, আপনি ফ্রিজ খুলে দেখলেন মাঝারি সাইজের মাছ আছে। এই মাছ দিয়েই আপনি আপনার মেহমানের কাছে স্বরনীয় হয়ে যেতে পারেন। শুধু বুদ্দি দিয়ে, মাছের টুকরা গুলো লম্বা এবং বড় করে কেটে! এত লম্বা মাছের টুকরা দেখে মেহমান নিশ্চয় টাস্কি খাবে এবং চিরদিন আপনার সুনাম করবে। যারা এই রেসিপি পোষ্ট পড়েছেন তারা বুকে হাত দিয়ে বলেন তো এমন মাছের লম্বা টুকরা কে কে খেয়েছেন! না, নিশ্চয় না! আসলে আমরা কেহ দাগের বাইরে যেতে পারি না। আপনি যদি আপনার পরিবারে বলেন (মা, বোন কিংবা স্ত্রীকে) মাছ লম্বা কেটে রান্না করতে দেখবেন তারা আপনার কথা শুনছেন না। আপনাকে নিয়ে হাসাহাসি করছে!
আর এই জন্যই নিজের রান্না নিজে করা দরকার! নিজের মন যা চায়। হা হা হা… আমার ছেলে বুলেট এই জন্যই আমাকে বলে বাবা তোমার রান্নায় টুইস্ট থাকে। খেতে বসলে প্রতি বেলায়ই নূতনের ছোঁয়া পাওয়া যায়। শুধু একটু এদিক সেদিক করে রান্নায় বিচিত্র আনা দরকার বলে আমি মনে করি। এতে দেখতেও সুন্দর, খেতেও মজা।
চলুন, কথা না বাড়িয়ে দেখে ফেলি। এটা একটা সাধারন মাছ রান্নাই, যা আমাদের পরিবারে হয়ে থাকে। শুধু মাছের লং কাট!
প্রস্তুত প্রণালীঃ
বেশি দিন ফ্রিজে মাছ রেখে দিলে, মাছের চোহারা পালটে যায়।
পরিমাণ মত মাছ লম্বা করে কাটুন। মাছের কাঁটা যত সম্ভব বাদ দিন।
কড়াইতে তেল গরম করে তাতে পেঁয়াজ বাটা, রসুন বাটা ও সামান্য লবণ দিয়ে ভাল করে ভেজে নিন। এবং কিছুক্ষণ পর সামান্য মরিচ গুড়া, হলুদ গুড়া এবং এক চিমটি জিরা গুড়া দিন। ভাল করে ভেজে নিন।
চমৎকার একটা রং এসে যাবে। কয়েকটা কাঁচা মরিচ দিয়ে দিন। যত ভাল কষানো বা ভাজা হবে তত তরকারী স্বাদ হবে।
এবার প্রয়োজনীয় পরিমাণ মত পানি দিন (গরম হলে ভাল, না হলে নাই)। একটা চমৎকার ঝোল দাঁড়িয়ে যাবে।
ঝোলে ধুয়ে পরিষ্কার করে রাখা মাছের টুকরা গুলো দিয়ে দিন।
ঢাকনা দিয়ে মিনিট ২০শেক জ্বাল দিন।
মাঝে মাঝে মাছ গুলো উল্ট পালট করে দিন। মাছ উল্টাতে হালকা সাবধানতা রাখতে হবে যাতে মাছ না ভেঙ্গে যায়।
কাঁচা ধনিয়া পাতা থাকলে ভাল হত, তবে না থাকলে নাই! শেষবারের মত ফাইন্যাল লবণ দেখুন। লাগলে দিন।
ব্যস, পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত।
গরম ভাতের সাথে পরিবেশন, বেশ জমবে।
মাছ রান্না আসলেই সোজা! একবার চেষ্টা করে দেখুন।
হাহাহাহা, আপনার “লং কাট” সিস্টেম দেখে মজা পেলাম 🙂
বাসায় দেখতাম অনেক মাছে রসুন দেয়া হতনা—কৈ/পাবদা এগুলো শুধু পেঁয়াজ মরিচ হলুদ দিয়েই কারী করে ফেলা হত, আবার বড় পাঙ্গাস টাইপের মাছ হলে রসুন-জিরা এইগুলাও যোগ হতো। আপনি ঠিকই বলেছেন, “মাছের যে দিকটা হৃদয়ে দাগ কাটে তা হচ্ছে, এক এক মাছের এক এক রকম স্বাদ ও ঘ্রাণ।”
LikeLike
ধন্যবাদ রনি ভাই,
আমি লং কাটের আইডিয়াটাই এখানে হাইলাইট করতে চেয়েছি। প্রতি নিয়ত আমরা তো সাধারন কাটেই চালাই। হা হা হা…
আপনার কথা সত্য। আমাদের একেরাবে গ্রামীণ মাছ গুলো যত কম মশলা দিয়ে রান্না করা যায় তত স্বাদ।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
মাঝারি মাছকে বড় মাছ বলে চালিয়ে দেবার ফন্দী!!! আড়াআড়ি না কেটে লম্বা করে বড় আকারের টুকরা বানিয়ে মেহমানদের ধোঁকা দিতে চান!! না ভাই, মাছের টুকরা যত বড়ই দেন মাংস ছাড়া চলবে না। গরু/খাসী না দেন, মুরগি তো অবশ্যই থাকতে হবে।
সহজ রান্না ভালো লাগলো। দ্রুত রান্না সেরে মেহমান বিদায়ই শুধু নয়, নিজেদের জন্যও দারুন উপকারী!!
LikeLike
হা হা হা…।। আপনি নিজে বাজার করেন। আপনি সব জানেন, আমাকে আর কি বলছেন? আজকাল বড় মাছের কাছে যেতেও সাহস হয় না।
LikeLike
দারুন!
দেশী মাছের লং কাট স্টাইলের তরকারি চমৎকার লাগে খেতে।
সুন্দর একটি রেসিপি দিয়েছেন সাহাদাত ভাই।
LikeLike
হা হা হা…
শুভেচ্ছা দাইফ ভাই।
LikeLike
বাহ! ভাল বুদ্ধি! মাছ না-ভেজেই বেশ রান্না তো! আমিও মাছ খেতে খুব ভালোবাসি।
LikeLike
ধন্যবাদ বোন। সব মাছ না ভাজাই ভাল। ভাজলে মাছের আসল ঘ্রাণ চলে যায়। তবে অনেক লোকের জন্য মাছ রান্না করতে গেলে এবং টুকরা না ভেঙ্গে যাবার জন্য ভাজাই উত্তম।
আমাদের দেশে কুমিল্লা অঞ্চলের লোকেররা মাছ না ভেজে খেতে পারেন না।
শুভেচ্ছা।
LikeLike