গ্যালারি

রেসিপিঃ মিক্স সবজি আলু ভাঁজি (সকালের নাস্তায়)


আজকাল আর তেমন লিখতে পারছি না! পরিবার, রাষ্ট্র সব কিছুই ভাল না চললে লেখা বের হয় কি করে! সমাজের মানুষ হিসাবে, সমাজের অবক্ষয়ে মনের উপর যে চাপ পড়ে তাতে লেখা বের করে আনা এবং ভাল কাজ করা অনেক সময়েই কঠিন হয়ে পড়ে! সামাজিক অবক্ষয়ে বা পারিবারিক কটুচালে ভাল মানুষ গুলো ধীরে ধীরে বোবা হয়ে পড়ে! মানষিক বোবারা কি বা করতে পারে?

আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, বাংলাদেশের মানুষকে আর একবার নড়ে উঠা দরকার! হয়ত পূর্বে অনেকবার নড়াচড়া করেছেন বলে এখন আর সেই শক্তি নেই, সেই বিশ্বাস নেই! তবুও যা শক্তি/বিশ্বাস আছে তা দিয়েই আর একবার, শুধু একবার, উঠে দাঁড়ান! আবারো বলছি, নিশ্চিতভাবে আমাদের আর একবার দাঁড়ানো দরকার! খাদ্যে ভেজাল, শিক্ষা, চিকিৎসা, রাষ্ট্রীয় সম্পত্তির চুরি, দখল, প্রায় সব সরকারী প্রতিষ্ঠানের অসৎ ব্যবস্থাপনা, ঘুষ, কমিশন, সরকারী কাজে অবহেলা সহ যে দিকেই তাকাছি, চোখ ফিরে আসছে! দুনিয়ার আর কোন দেশ এমন নষ্ট হিসাবে বেড়ে উঠছে কিনা আমার জানা নেই!

আমাদের মনে রাখা দরকার, এটা আমাদের দেশ, দুনিয়াতে একমাত্র এই দেশেই আমি মাথা উঁচু করে বলতে পারি, এই স্থানের জন্য আমি গর্ব করতে পারি! এই দেশ আমার পিতার ছিলো, এখন আমার এবং আগামীতে আমার সন্তানের হবে, আমরা এই প্রিয় দেশ ছেড়ে কোথায় যাব, কোথায় গিয়ে মনে শান্তি পাব! অনাগত প্রজন্মের কাছে আমরা কি দিয়ে যাব বা যাচ্ছি!

প্রসাঙ্গিকভাবে আমার বলতে ইচ্ছা হয়, কি নেই আমাদের? সবকিছু থাকা সত্ত্বেও দেশ হিসাবে কেন আমরা বা আমাদের নাগরিকগণ নিজ দেশে বা সারা বিশ্বে অসন্মানিত/আপমানিত হয়ে বেঁচে থাকবো/থাকবেন? আমরা কি একজন সত্যকারের দেশ প্রেমিক বিবেকবান নেতা পাব না বা বাধ্য করতে পারি না, যিনি শুধু কোটি কোটি মানুষের জন্য সুষ্টু বিচারব্যবস্থা সহ গনমানুষের সব প্রতিষ্ঠানকে একটা সুন্দর নিদিষ্টমাত্রায় নিয়ে গিয়ে বুক ফুলিয়ে বলতে পারেন, এই নিন আপনাদের গনতন্ত্র, বুক ভরে শ্বাস নিন এই আপনার সুজলা, শ্যামলা বাংলাদেশ!

আবারো বলছি, ঠিক এই সময়ে আমাদের আর একবার নড়ে উঠা দরকার, আমাদের প্রতিবাদ করা দরকার কারন আমরা নিজকে হারিয়ে ফেলছি, হারিয়ে ফেলছি দেশমাতার ভবিষ্যৎ!

যাই হোক, বেঁচে থাকলে তো খেতে হবে! লাশের সামনে বসেও খেতে হয়, উপায় নাই! চলুন, আজ একটা মিক্স সবজি রান্না দেখি! বেঁচে থাকলে কাজে লাগবে!

আপনার প্রয়োজনীয় সবজি গুলো কেটে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে রাখুন। এই রান্নায় আমরা আলু, বেগুন, গাঁজর, কুমড়া ইত্যাদি ব্যবহার করেছি, বিশেষ করে সকালের নাস্তায় রুটি বা পরোটার সাথে বেশ জমিয়ে খাওয়া যাবে! আমাদের দেশের সাধারন মানের হোটেল গুলোতেও এমনি সকালের নাস্তার জন্য সবজি ভাঁজি বা রান্না করা হয়ে থাকে। চলুন, দেখে ফেলি!

উপকরন ও পরিমানঃ
– সবজি মিক্সঃ আলু, পটল, বেগুন, কুমড়া, গাঁজর ইত্যাদি (তবে বেগুনটা মাষ্ট, এতে ভাঁজি খেতে সুস্বাদু হয় বেশী)
– পেঁয়াজ কুঁচিঃ মাঝারি কয়েকটা (বেরেস্তা করে নিতে হবে আগে)
– পাঁচ ফোড়নঃ এক চা চামচ
– আদা বাটাঃ এক চা চামচ
– গুড়া মরিচঃ হাফ চা চামচ (ঝাল বুঝে)
– হলুদ গুড়াঃ হাফ চা চামচ বা কম
– কাঁচা মরিচঃ কয়েকটা
– চিনিঃ হাফ চা চামচ
– লবনঃ পরিমান মত (বুঝে শুনে)
– তেলঃ ৬/৭ টেবিল চামচ
– পানিঃ হাফ কাপ বা কম
– ধনিয়া পাতার কুচিঃ ৩/৪ টেবিল চামচ (যদি হয় ভাল, না থাকলে নাই, আমরা দেই নাই ছিল না)

প্রনালীঃ (ছবি কথা বলে)

ছবি ১, তেলে পেঁয়াজ কুঁচি ভেঁজে তুলে রাখুন।


ছবি ২, রান্নার শেষে কাজে লাগবে।

মুল রান্নাঃ

ছবি ৩, সেই তেলে পাঁচ ফোড়ন দিন ভাঁজুন।


ছবি ৪, আদা ও সামান্য লবন দিন, ভাল করে ভেঁজে নিন।


ছবি ৫, এবার সবজি গুলো দিয়ে দিন।


ছবি ৬, মরিচ গুড়া ও হলুদ গুড়া দিন।


ছবি ৭, মিশিয়ে নিন। আগুন মাধ্যম আঁচে রাখুন।


ছবি ৮, সামান্য পানি দিন।


ছবি ৯, ব্যস!


ছবি ১০, এবার একটা ঢাকনা দিয়ে মিনিট ১০ মাঝারি আঁচে রাখুন।


ছবি ১১, মাঝে একবার নাড়িয়ে দিন।


ছবি ১২, আলু নরম হল কি না দেখুন।


ছবি ১৩, না হলে আরো কিছু সময় মাঝারি আঁচে রাখুন।


ছবি ১৪, এবার চিনি দিন।


ছবি ১৫, একটা ঘুটনি দিয়ে হালকা করে আলু গাঁজর ভেঙ্গে দিন, বেশি না সামান্য।


ছবি ১৬, আগুন এবার বাড়িয়ে দিন।


ছবি ১৭, বেরেস্তা ছিটিয়ে দিন।


ছবি ১৮, ফাইন্যাল লবন দেখুন। লাগলে দিন না লাগলে আগে বাড়ুন। ঝোল কমিয়ে গেলেই চুলা বন্ধ করে দিন।


ছবি ১৯, আপনার ইচ্ছা মত নিয়ে নিন।


ছবি ২০, পরোটা বা রুটির সাথে চলুক!

সবাইকে শুভেচ্ছা।

কৃতজ্ঞতাঃ মানসুরা হোসেন

6 responses to “রেসিপিঃ মিক্স সবজি আলু ভাঁজি (সকালের নাস্তায়)

  1. chini daoata ki must? na dile kemon lagbe khete?

    Liked by 1 person

  2. বছর খানেক হয়ে গেলো। এই রেসিপি পোস্টের পর থেকে প্রতি সপ্তাহে একবার করে এই সবজি রান্না করি। এই কমেন্ট লিখতে লিখতে এখনও চুলায় এই সবজি রান্না করছি। কোনোদিন খেতে বোরিং লাগেনি। বেস্ট সবজি রেসিপি এভার!!!

    Like

[প্রিয় খাদ্যরসিক পাঠক/পাঠিকা, পোষ্ট দেখে যাবার জন্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা। নিম্মে আপনি আপনার মন্তব্য/বক্তব্য কিংবা পরামর্শ দিয়ে যেতে পারেন। আপনার একটি একটি মন্তব্য আমাদের অনুপ্রাণিত করে কয়েক কোটি বার। আপনার মন্তব্যের জন্য শুভেচ্ছা থাকল। অনলাইনে ফিরলেই আপনার উত্তর দেয়া হবে।]