কয়েকদিন আগে ঠিক এমনি একটা রান্না আপনাদের দেখিয়েছিলাম। আজ সেটার মত করে মরক্কোর আর একটা রান্না আপনাদের দেখাবো। যদিও এই রান্না গুলো বিদেশী বা আরবীয় তবুও এ গুলো আমাদের দেশে চলতেই পারে। কারন এই রান্না গুলোর সাথে আমাদের রান্নার মিল আছে, মিল আছে উপকরনে (তবে মশলাপাতি ওরা কিছু বেশি দেয়, যেটা আমি পরিহার করেছি, রান্নাটাকে আমাদের মত করে করেছি)। ওরা এই খাবারটা রুটি বা খুবুজের সাথে খেয়ে থাকে, আমরা চাইলে এটা রুটি, পোলাউ বা সাদা ভাতের সাথে খেতে পারি।
আমাদের দেশে কিমা (মাংশের ঝুরি) জনপ্রিয় হয় নাই, মানুষ কিমা খেতে চায় না নাকি দাম বেশি বলে কেনা হয় না! এমন পরিবার (নিম্ম মধ্যবিত্ত ও গরীব) খুব সহজে পাওয়া যাবে এখনো যারা কখনোই কিমা কিনেন নাই বা কিমা দিয়ে প্রস্তুত খাবার খান নাই। তবে আমি নিশ্চিত কিমা একদিন দেশে সব পরিবারের খাবার হবে। অন্য দিকে এই খাবারের আর একটা উপকরন ক্যাপ্সিকামের দাম শুনলে আমি নিজেই ফিট হয়ে যাই! সাড়ে চারশত টাকা কেজি! সাহস করে একটা কিনেছিলাম, ৫০ টাকা দিয়ে (এক কেজি চালের মুল্য!)।
যাই হোক, চলুন দেখে ফেলি।
উপকরনঃ
– গরুর গোসতের কিমা, ২৫০ গ্রাম (৪ জনের খাবারের জন্য)
– ক্যাপ্সিকাম, বড় একটা
– টমেটো, মাঝারি তিনটে
– পেঁয়াজ কুচি, হাফ কাপ
– কাঁচা মরিচ, কয়েকটা
– আদা বাটা, ১ টেবিল চামচ
– রসুন বাটা, ১ টেবিল চামচ
– হলুদ গুড়া, হাফ চা চামচ
– মরিচ গুড়া, হাফ চা চামচ (ঝাল বুঝে)
– চিনি, হাফ চা চামচ
– টক দই, হাফ কাপ
– সয়াসস, ২ চা চামচ
– তেল (পরিমান মত)
– পানি (পরিমান মত)
– লবন (শুরুতে সামান্য দিয়েই রান্না শুরু করতে হবে, পরে সঠিক মাত্রায় দিতে হবে)
(আমি কম তেল এবং মশলা দিয়ে রান্না করেছি, তাই রংটা একটু হাল্কা হয়েছে। আরো কালচে রঙ করতে চাইলে হলুদ ও মরিচের পরিমান হেরফের করতে পারেন।)
প্রনালীঃ (ছবির ধারাবাহিকতা)
ছবি ১
ছবি ২
ছবি ৩
ছবি ৪
ছবি ৫
ছবি ৬
ছবি ৭
ছবি ৮
ছবি ৯
ছবি ১০
ছবি ১১
ছবি ১২
ছবি ১৩
ছবি ১৪
ছবি ১৫, ফাইন্যাল লবন ও স্বাদ দেখে নিন।
ছবি ১৬
ছবি ১৭
দারুন। একবার বানিয়ে খেয়ে দেখতে পারেন।
শুভেচ্ছা সবাইকে।
দেখেই মন ভরে গেল ভাই। এই ধরনের আরো খাবারের রেসিপি চাই।
LikeLike
ধন্যবাদ বোন।
আসছে, আমি আমার চেষ্টা করেই যাব।
শুভেচ্ছা, আশা করি আমাদের সাথেই থাকবেন।
LikeLike
উদারজী, আপনার মেল আমি সব সময় পড়ে থাকি, কারণ রান্না বান্না আমারও শখের একটি মধ্যে আছে, নিজ হাতে নতুন বা মজাদার কিছু অন্যকে খাওয়াতে আমি বেশ গর্ববোধ করে থাকি।
ভাই আমি মরক্কোতে ছিলাম ১০ বছর, এবং আমার স্ত্রীও মরোক্কান কিন্তু আমি আপনার এই রেসিপি কখনও দেখিনি। কারণ মরক্কানরা শাক সবজি তেমন খেতে অভ্যস্থ নয়। আর সবজি যেগুলো খায় সেগুলোকে আপনার বর্ণিত আকারে কাটা কুটা করেনা। তারা সবজিকে বড় আকারে রাখে কারণ তারা মাংসকে আমাদের মত এক/দু ইঞ্চি কিউব আকারে কাটেনা। তারা কেজি আধা কেজি ওজনের মাংস খন্ড রেখে রান্না করে থাকে। তাদের রান্নায় তাদের ব্যস্ত জীবনের প্রতিচ্ছবি পাওয়া যায়। আমাদের দেশে মানুষের তেমন ব্যস্থতা নেই তাই যত সময় লাগুক তাতে আপত্তি থাকেনা।
তবে আমি বলছিনা এইটি মরক্কান রেসিপি নয়, হতে পারে কোন ওয়েব সাইটে পেয়েছেন বা কোন বন্ধু আপনাকে পরিবেশন করিয়েছে। তবে বলতে পারি এইটি তাদের ট্রাডিশনাল ডিস নয়, কেউ হয়তো নতুন ইনভেন্ট করেছে। যেমন করে ইউরোপ আমেরিকার রেস্টুরেন্টগুলোতে বাংলাদেশী মেনু হিসাবে যে আইটেম গুলো চালু আছে তা কিন্তু বাংলাদেশী খাবার নয়, বাংলাদেশী খাবারকে ইউরোপিয়ানদের রুচি অনুযায়ী অদল বদল করে নতুন ধরণের খাবার বানান হয়েছে, যা বাংলাদেশী বা ইন্ডিয়ান ফুড বলে চালিয়ে দেয়া হচ্ছে। আমার মনে হয় আপনার উল্লেখিত ফুডটিও সে ধরণের হতে পারে। মরক্কানরা কিমা দিয়ে কুপ্তা কবাব বানিয়ে খায়, কানপরা নামক সেকারুটির ভিতরে ঝালের মিশিয়ে পুর হিসাবে ব্যবহার করে থাকে কিংবা ক্যাপসিকামের ভিতর টমেটো,কিমা এবং ডিম দিয়ে পুর ভরে ওভেনে বেক করে দোলমার মত করে খাবে। ধন্যবাদ
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ মুনিম ভাই।
হা হা হা। আমি এই লেখা বা রেসিপি লেখার সময়ে অবশ্যই আপনাকে মনে রাখা উচিত ছিল। আপনি কমেন্টে যা লিখেছেন আমি সব মেনে নিলাম। আপনি সত্য লিখেছেন। কারন আমি ইংল্যান্ড সহ নানা দেশে দেখেছি এবং আপনার কথাই সত্য।
আমি যেহেতু মরক্কো যাই নাই, তাই আমার ধারনা কম। তবে টিভিতে টি এল সি এবং ফক্স ট্রাভেলার চ্যানেলে আমি মরক্কোর অনেক খাবার দেখেছি এবং ওদের খাবার আমার ভাল লেগেছে।
আর এই রেসিপিটা আমি যোগাড় করেছি থাইল্যান্ডের পাতাইয়ার একটা রেস্টুরেন্ট থেকে। উক্ত রেষ্টুরেন্টের মালিক ছিল তার্কিস। আমি সরাসরি শেফ থেকে এই রেসিপি জেনেছি (কিছু আমি বুঝতে পারি নাই, কারন সে ভাল ইংরেজী বলতে পারত না), সেই আমাকে বলেছে এটা মরক্কোর খাবার। সেই রেষ্টুরেন্টে আমরা দুটো ডিস খেয়েছিলাম, তার মধ্যে এটা একটা ছিল। আমার কাছে ভাল লাগায় আমি নোট করে নিয়েছিলাম।
উক্ত খাবার গুলোর ছবি আছে আমার এক বন্ধু ক্যামেরায়। আমি হাতে পেলে সে রেস্টুরেন্ট নিয়েও লিখবো।
যাই হোক, আমাদের মরক্কোর ভাবীকে সালাম জানাবেন, ইউ আর এ লাকি ম্যান। আমরা আপনাদের সাফল্য কামনা করি, দোয়া করি।
ভাবী থেকে টুকটাক দুই একটা মরক্কোর রেসিপি চাই, দুই কলমের রেসিপি।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
valo laglo
LikeLike
ধন্যবাদ বোন।
আপনাদের ভাল্বাসাই আমাদের পাথেয়।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
খুব সুন্দর!!!
রুটির সাথে খেতে অসাধারণ লাগবে!
রান্নার মেথড টা ভালো লেগেছে!!
তবে ঝোল না রেখে একদম শুকিয়ে ফেললে আলাদা ফ্লেভার পাওয়া যেত।
একটা সংশোধনী আঙ্কেল, ক্যাপসিকামের ইংরেজি আপনি capsicum ই রাখতে পারেন আর সব থেকে প্রচলিত হল bell pepper । green pepper এর বাংলা কাচা মরিচ। যাই হোক, এতে তো কাচা মরিচ ও ব্যবহার হয়েছে!! ব্যাপার না।
আচ্ছা আঙ্কেল,আমি কখনো কসাই এর কাছে মাংস কিমা করা দেখিনাই।সিস্টেম টা কিরকম?? কোনো যন্ত্র দিয়ে করে?? এক্সট্রা টাকা নেয়??
শুভেচ্ছা ও ভালোলাগা
LikeLike
ধন্যবাদ আংকেল।
হ্যাঁ এটা রুটি বা ব্রেডের সাথেই ভাল জম্বে।
শুকিয়েও ফেলা যেতে পারি, আমি তো আবার ঝোল মাষ্টার (! আমার বড় ছেলে বলে) হা হা হা।
Bell Pepper করে দিলাম। শুনতে ভাল লাগে।
কিমা সাধারন মাংশের দোকানে পাওয়া যায় তবে অনেক কসাই রাজি হয় না। আবার অনেক কসাই রাজী হয়ে যায়। দাম কিছুটা বেশি নেয় কারন কিমাতে হাড্ডি/চর্বি দেয়া চলে না। মুলত কিমা হল, মাংশের ঝুরা (ছোট ছোট টুকরা) কসাইরা মাংসকে বার বার কেটে কেটে (চাপাতি দিয়ে) ছোট ছোট করে ফেলে। বাসায় এনে পানিতে ভিজিয়ে ধুয়ে নিতে হয়। তার পর রান্না। কিমা দিয়ে অনেক কিছু রান্না করা যায়। মধ্যপ্রাচ্যে কিমা ছাড়া চলে না।
আর মেশিনে কাটা কিমাও এখন পাওয়া যায়। স্বপ্ন বা আগোরায় মেশিনে কাটা কিমা পাওয়া যায়, দাম একটু বেশী। আমি আগে আগোরা থেকে কিনতাম।
আশা করি কিমার একটা আইটেম খেয়ে দেখবেন।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
পিংব্যাকঃ থাইল্যান্ডঃ ডোনারকিং রেস্টুরেন্ট, পাতাইয়া | রান্নাঘর (গল্প ও রান্না)