গ্যালারি

রেসিপিঃ পুঁটিমাছ মুলাশাকের গোড়া (একটি উৎসাহ মূলক সাধারন রান্না)


বাসায় থাকলে রান্না নিয়ে একটা চিন্তা করতেই থাকি! হা হা হা।। আর আমার ব্যাটারী এবং টেষ্টার বুলেট, হা ওরা আমার দিকে চেয়েই থাকে! আমি রান্নাঘরে গেলেই ওরা মনে করে আজ ভাল খাবার দাবার হবেই। আমি রান্নাঘরে প্রবেশ করলেই ওরা ধরে নেই যেহেতু এটা রেসিপি হিসাবে কাউন্ট হবে তাই রান্নায় অধিক যত্ন এবং স্বাদ হবেই। অফিস ফিরে তাড়াতাড়ি ঘরে প্রবেশ মানেই আমার রান্নার এক্সপ্রেরিমেন্ট শুরু। আজকাল আমিও ওদের মত হয়ে গেছি! দিনে একটা রান্না না করলে আমারও পেটের ভাত হজম হয় না! ঘরে নানান তরকারী বা ভাল খাবার থাকলেও আমিও কিছু না কিছু করতে লেগে যাই। আমার ব্যাটারিরও অবস্থা অনেকটা সেইরাম! তিনি আমার সাথে রান্নায় হেল্প এবং আড্ডা দিতে আজকাল বেশী বেশী পছন্দ করছেন!

যাই হোক, অফিস ফেরার পথে আমি মুলার শাক ভাজি খাব বলে কিছু মুলার শাক নিয়ে ঘরে প্রবেশ করেছিলাম। মুলার শাক কাটার সময় আমি খেয়াল করলাম কচি মুলা শাকের গোড়ায় সামান্য করে মুলা জমেছে, যা শাকের ভাজিতে দেয়া যায় না এবং তা ফেলে দিতে হবে। ভাবলাম এই গোড়ার সাথে কান্ডের সামান্য রেখে একটা আইটেম করা যেতে পারে। ঘরে কিছু পুঁটি মাছ ছিল বলে আগেই জানিয়েছিলেন আমার ব্যাটারী সাহেবান। ব্যস এই নিয়েই রান্না শুরু।

এই কম্বিনেশনের রান্না আপনারা খেয়েছেন কিনা আমি জানি না, তবে এটা আমার একটা এক্সপেরিমেন্ট। অভাবের সংসারের আমাদের দাদী, মা, চাচীরা, ফুফুরা যে চেষ্টা করেন এবং পরিবারের সবাইকে যেভাবে খুশি করেন। এই রান্নাটা সেই চেষ্টাই, ঘরে যা আছে তা নিয়েই রান্নাঘরে যুদ্ব করা যেতে পারে। তবে বলে ফেলি, রান্নাটা কিন্তু ‘জোস’ হয়েছিল! চলুন দেখে ফেলি… আপনিও হাতের কাছে যা পাবেন তা দিয়েই কিছু একটা রান্না করুন।

উপকরনঃ
– কিছু পুটি মাছ
– বেছে যাওয়া কিছু মুলা শাকের গোড়া
– একটা আলু কুঁচি (বড় কাট)
– পেঁয়াজ কুঁচি
– সামান্য রসুন বাটা বা কুঁচি
– কয়েকটা কাঁচা মরিচ
– হাফ চামচ হলুদ গুড়া
– পরিমান মত লাল মরিচ গুড়া
– এক চিমটি জিরা গুড়া
– পরিমান মত লবন/ পানি
– পরিমান মত তেল
– কাঁচা ধনিয়া পাতার কুঁচি

প্রনালীঃ

মুলা শাকের গোড়া গুলো এবং আলু কেটে ধুয়ে লবন যোগে সিদ্ব করে নিন।


সামান্য লবন/হলুদ মেখে পুঁটি মাছ গুলোকে ভেজে উঠিয়ে রাখুন। এবং একি তেলে পেঁয়াজ কুঁচি দিয়ে রান্না শুরু করুন।


পেঁয়াজ কুঁচি ভেজে তাতে একে একে উপরে উল্লেখিত  সব মশলা দিয়ে দিন, কাঁচা মরিচও দিয়ে দেবেন। এই ধরনের ঝোল আমি আপনাদের অনেক বার দেখিয়েছি…। হা হা হা।। এই ঝোল যত স্বাদ হবে তরকারী তত স্বাদের হবে।


এবার ঝোলে সিদ্ব মুলা গোড়া এবং আলু দিয়ে দিন।


মাছ গুলো এবার বিছিয়ে দিন।


এক কাপ পানি দিন।


ঝোল কেমন রাখবেন তা আপনি সিদ্বান্ত নিবেন।


এবার হালকা আঁচে ঢাকনা দিয়ে মিনিট বিশেক রেখে দিন এবং ফাইন্যাল লবন দেখে নিন।


আমি একটু ঝোল রেখেছিলাম। কাঁচা ধনিয়া পাতা দিন, স্বাদ অনেক অনেক বেড়ে যাবেই।


ব্যস হয়ে গেল মুলা শাকের গোড়া পুঁটি মাছ দিয়ে। কি, আপনিই বলুন, এমন রান্না পেলে না খেয়ে থাকবেন!


পুরা বাটি শেষ হতে বেশী সময় লাগে নাই!

রেসিপি প্রিয় বন্ধুরা, রান্না একবার শিখে গেলেই হল, আপনি নিজেও এমন এক্সপেরিমেন্ট করতে পারবেন। আপনার মন যা চাইবে তা ই খেতে পারবেন। রান্না শিখুন এবং স্বাধীন হয়ে পড়ুন। নিজে ভাল খাবার খান এবং অন্যকেও সাহায্য করুন। দুই দিনের দুনিয়ায় কে আপন কে পর ভেবে কি হবে!

20 responses to “রেসিপিঃ পুঁটিমাছ মুলাশাকের গোড়া (একটি উৎসাহ মূলক সাধারন রান্না)

  1. Darun! Shitkale bohu shobji paoa jaay. Erokom aaro recipe din Udraji vai.

    Like

    • ধন্যবাদ বোন। কেমন আছেন? অনেকদিন পর আপনাকে দেখে ভাল লাগল। গতকাল আপনার একটা কমেন্ট দেখেছিলাম। আপনি বাংলাদেশ প্রতিদিনে আছেন জেনে অনেক অনেক খুশি হয়েছি।

      আমি সাধারণত যে ধরনের রেসিপি লিখি তা আপনাদের প্রত্রিকার পাতায় চলে না। আমাদের চেষ্টা হচ্ছে, রান্না যা জানেন না বা রান্না করতে চান না তাদের উৎসাহিত করা এবং লোভ দেখানো। পাশাপাশি স্বামীদের রান্না ঘরে নিয়ে যাবার চেষ্টা। হা হা হা।

      ব্যস্ততার জন্য উত্তর দিতে দেরী হল, আশা করি ক্ষমা করবেন। এবং আগামীতে মাঝে মাঝে দেখে যাবেন বলে আশা করছি। দুলাভাইকে সালাম ও আপনি আপনার প্রতি যত্ন নেবেন।

      শুভেচ্ছা।

      Like

  2. মুলা দিয়ে পুটি মাছের পাতলা ঝোল তো খুবই জনপ্রিয়।

    আমি এমন কচি মুলা সহ শাক দিয়ে শুটকি রান্না করি। রান্না করে দেখবেন। ভালোই লাগবে।

    Like

  3. দাদা, আপনি যা করছেন না! আপনার পাল্লায় পড়ে আমার মতন ফাঁকিবাজের কপালেও ভালো রাঁধুনির তকমা জুটে যাচ্ছে। আজকাল বাড়িতেই আছি, তাই আপনার সব রেসিপি রোজ একটা একটা করে বানাচ্ছি আর বাড়ির লোকেদের প্রশংসা কুড়োচ্ছি। আপনার প্রত্যেকটা রেসিপি দারুণ ভালো লাগছে সবার। আমায়্য জিজ্ঞেস করলে বলছি, “আমার বিখ্যাত শেফ দাদার রেসিপি”। সব্বাই খুব অবাক হচ্চে।আপনাকে ও বৌদিকে আমার অনেক আন্তরিক ধন্যবাদ। 😀

    Like

  4. এই রেসিপিটা আজকেই বানিয়ে ফেলবো, কারণ ভাগ্যক্রমে ফ্রিজে পুঁটিমাছ আর মুলাশাক দুইই উপস্থিত 🙂

    Like

  5. ঝোল যত স্বাদ হবে তরকারী তত স্বাদের হবে।

    আসল রহস্য লুকিয়ে আছে এখানেই!

    চলুক।

    Like

  6. পিংব্যাকঃ এক নজরে সব পোষ্ট (https://udrajirannaghor.wordpress.com) | BD GOOD FOOD

  7. মাছটি না ভেজে দিলে আরও সুস্বাদু হয়

    Liked by 1 person

Shahadat Udraji (সাহাদাত উদরাজী) এর জন্য একটি উত্তর রাখুন জবাব বাতিল