গ্যালারি

রেসিপিঃ ডিমের সাধারন রান্না এবং পোষ্টের ৫০০তম লাইক!


পৃথিবীর সব প্রানী ডিম খেতে ভালবাসে! বিশেষ করে কুমিরের মত বড় বড় প্রানী যে হারে ডিম খেয়ে থাকে তা দেখার বিষয়। কচ্ছপের মাটির নীচের লুকিয়ে রাখা ডিম কুমির খুঁজে বের করে এবং খুব আনন্দের সাথে খেয়ে থাকে। অনেক মানুষের প্রিয় খাদ্য ডিম। ডিম খায় নাই এমন মানুষ দুনিয়াতে বিরল! দুনিয়াতে অনেক নিরামিষ ভোজী মানুষ আছেন কিন্তু তাদেরও ডিম খেতে মানা নেই। আমার এক বন্ধু আছে ডিম খেতে শুরু করলে তাকে থামানো মুশকিল! একবার মালিবাগ মোড়ে এক সিদ্ব ডিম বিক্রেতার কাছ থেকে সে এক সন্ধ্যায় ডিম খেতে শুরু করেছিল, ২০টা হাফ বয়েল দেশী মুরগীর ডিম খাবার পর তাকে আমি জোর করে থামিয়েছিলাম। আর আমার, গোটা ১৪টা ডিম একবারে খাবার একটা হালকা রেকর্ড আছে! সে যাই হোক, ডিম নিয়ে লিখলে সাগরের পানি কালি হলেও ডিমের গুনাগুন লিখে শেষ করা যাবে না! সে দিকে না যাওয়াই ভাল, ডিমের খাবার দাবার নিয়ে আমি একটা আলাদা ক্যাটাগরি খুলে ফেলেছি। খুব সহজে একবেলার খাবার খেতে ডিমের জুড়ি নেই! শুধু ডিম ভেজেই একবেলার খাবার চালিয়ে দেয়া যায়। অনেক পুরুষেরা অন্য কিছু রান্না না করতে পারলেও ডিম ভাজি, ডিম সিদ্ব করতে পারেন। সিদ্ব ডিম পুরুষের কাছে প্রিয়। বিবাহিত পুরুষেরা রাস্তার ধারের সিদ্ব ডিম খেয়ে বাসায় প্রবেশ করেন এবং সেটা পরিবারের সদস্যদের কাছে লুকিয়ে থাকেন!

আমি নিজেও মাঝে মাঝে রাস্তার ধারের হাফ বয়েল ডিম খেয়ে বাসায় ফিরি, কাউকে কিছু বলি না! হা হা হা।। তবে বাসায় মাঝে মাঝে আমিও ডিম রান্না এবং সকালের নাস্তায় ডিম ব্যবহার করাকে পছন্দ করি। শিশুদের জন্য প্রতিদিন একটা করে ডিম দিতে বলি। ডিম দুধ না খেলে আর খাবে কি! বাড়ন্ত শরীরের ডিম দুধের বিকল্প কি! এদিকে বয়স বেড়ে গেলে অনেকে আবার ডিম খাওয়া পছন্দ করেন না, ডিমের হলুদ অংশে নাকি কোলেষ্টরের পরিমান বেশী থাকে।

যাই হোক, ডিম নিয়ে ভাবনার অন্য কারন হচ্ছে, রান্না বান্নায় আমি ওয়ার্ডপ্রেস এ ৫০০তম লাইক পেয়েছি! ৫০০তম লাইক পাওয়া সহজ ব্যাপার নয়, আর এটা সম্বব হয়েছে আপনাদের কারনেই। আপনাদের শুভেচ্ছা ও ভালবাসা জানাই। আমাদের পরিবারের তরফ থেকে ধন্যবাদ নিন। রান্নার রেসিপি ব্লগ আপনাদের কাছে এতই জনপ্রিয় যে, প্রতিদিন প্রায় ৫০০/৬০০ হিটই সেই অবস্থা জানান দেয়। হা হা হা, এই সময় আমি মনে করি আপনাদের একটু ডিম খাওয়ানো দরকার। এস ইট ইজ, সহজ ও হাতের কাছে থাকা মশলা পাতি দিয়েই ডিম সিদ্ব রান্না। চলুন সময় নষত না করে দেখে নেই।

(৫০০তম হিটের মালিক হচ্ছেন আমাদের ব্লগার আফসার নিজাম ভাই। যিনি ওয়ার্ডপ্রেস ব্লগে বেশ জনপ্রিয় এবং এই সময়ে যিনি আবার আমার ব্লগের ব্যানারের মালিক। তিনি একজন ভাল গ্রাফিক্স ডিজাইনার। আমি তার সার্বিক মঙ্গল কামনা করি।)

আর কথা না বাড়িয়ে চলুন, দেখে নেই – ডিমের সাধারন রান্না। এতই সহজ যে, আমার মনে হয় শুধু ডিম কিনে বাসায় নিয়েই রান্না শুরু করা যেতে পারে। চলুন দেখে নেই।

উপকরনঃ
– ৪/৬ টা ডিম (আপনার যে ডিম পছন্দ তবে হাঁসের ডিম হলে স্বাদ আরো বেড়ে যাবে)
– পেঁয়াজ কুঁচি হাফ কাপ
– কয়েকটা কাঁচা মরিচ
– হাফ চামচ হলুদ গুড়া
– পরিমান মত লাল মরিচ গুড়া
– এক চিমটি জিরা গুড়া
– পরিমান মত লবন
– পরিমান মত তেল
– কাঁচা ধনিয়া পাতার কুঁচি

প্রনালীঃ

ডিম সিদ্ব করে নিন। পানিতে লবন দিয়ে সিদ্ব করতে হবে।


হালকা তেলে খোসা ছড়ানো সিদ্ব ডিম গুলো ভেজে নিন। ডিম গুলো কাটা চামচ দিয়ে একটু খুঁচিয়ে নিবেন এবং সামান্য হলুদ/লবন দিয়ে মেখে নিতে পারেন (আমি এটা করি নাই, সাদা রাখতে চাইছিলাম)।


ডিম গুলো তুলে রাখুন এবং সেই তেলেই পেঁয়াজ কুঁচি, লবন, কয়েকটা কাঁচা মরিচ, হাফ চামচ হলুদ, পরিমান মত গুড়া মরিচ (ঝাল বুঝে) ও এক চিমটি জিরা গুড়া দিয়ে ভাল করে ভেজে তেল উঠিয়ে নিন।


এর পর এক কাপ পানি দিন। ব্যস ডিমের ঝোল হয়ে গেল। এই ঝোল যত স্বাদ হবে রান্না ততই সুস্বাদু হবে।


তেল উপরে উঠে গেলে ডিম গুলো দিয়ে দিন।


ঝোলের উপর কিছু কাঁচা ধনিয়া পাতার কুঁচি বিছিয়ে দিন।


এবার ঢাকনা দিয়ে মিনিট ১৫ হালকা আঁচের আগুনে জ্বাল দিন। ঝোলের ফাইন্যাল লবন দেখে নিন, লাগলে দিন।


এমন অবস্থায় এসে যাবে।


পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত।


ধারালো ছুরি দিয়ে ডিম গুলো মাঝামাঝি কেটে দিন। এতে একটা আলাদা পরিবেশন হবে, দেখতেও ভাল লাগবে।


আর যদি পারেন তবে সামান্য কাঁচা ধনিয়া পাতার কুঁচি ডিমের উপর ছিটিয়ে দিন। দেখতে যেমন লাগবে, আর খেতেও অসাধারণ লাগবে। গরম ভাতের সাথে ঝোল মাখলে যে রং ফুটে উঠবে তা না দেখলে বোঝানো যাবে না!

কি ভাবছেন কি! খাবেন নাকি! এইভাবে খাবার টেবিলে রাখলে না খেয়ে চলে যাবেন! আমার রান্না টেষ্টার বুলেট একাই অনেক গুলো পিস সাবার করে দিয়েছে আর বলছিল, বাবা ইউ আর রিয়েলি গ্রেট। আপনি কি আপনার সন্তানের কাছে এমন সুনাম শুনতে চান, তবে রান্না করেই ফেলুন।

এখন ভেবে দেখুন, এর চেয়ে আর সাধারন রান্না কি হতে পারে?

13 responses to “রেসিপিঃ ডিমের সাধারন রান্না এবং পোষ্টের ৫০০তম লাইক!

  1. ডিম ভুনা কার না পছন্দের। ভুনা খিঁচুড়ী, ডিম ভুনা, আর একটু জলপাইয়ের আচার! তোফা খাবার!

    ৫০০তম লাইকের শুভেচ্ছা রইল প্রিয় সাহাদাত ভাই।

    বি:দ্র: আবার এলাম ফিরে………… ( ব্যস্ত ছিলাম ঈদুল আযহার পর হতে )

    Like

    • ধন্যবাদ দাইফ ভাই, অনেকদিন আপনাদের না দেখে অস্থির হয়ে পড়ছিলাম। যাক, হাফ ছেড়ে বাচালেন। এভাবে উদাও হয়ে যাবেন না, রেগুলার না হলেও মাঝে মাঝে দেখা দিয়ে যাবেন।

      আপনারা কয়েকজন আছেন যাদের আমি আমার রেসিপি ব্লগে চাই কারন আপনাদের উৎসাহ আর কমেন্টেই এই রেসিপি ব্লগ এতদুর এগিয়েছে। আপনাদের ভুলে থাকি কি করে?

      শুভেচ্ছা নিন।

      Like

  2. ডিম আমার খুবই প্রিয়। তা সেটা ভুনা, ভাজি, পোচই হোকনা কেনো। শুধু ডিম ডিম পোচ দিয়েই আমি ্ভাত খেয়ে নিতে পারি।
    গত ২ দিন অনেক চেষ্টা করেও আপনার ব্লগে ঢুকতে পারিনি। আজও ৫/৬ বারের চেষ্টায় পারলাম।

    রোষ্টের পোস্টে কমেন্ট লিখে পোস্ট দিতেই ব্লগ থেকে হাওয়া হয়ে গিয়েছিলাম।

    ৫০০ লাইকের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

    ঐ যে বলেছিলাম ইলিশ কিনে ধরা খেয়েছিলাম? ঐটার ছবি আজ ফেবুতে দিয়েছি।
    জানলাম ওটা shad fish. নেটে সার্চ দিলেই দেখবেন। একেবারে ইলিশ, চেহারা ও গন্ধেও।

    আপনার ব্যানারটা খুবই সুন্দর হয়েছে। আমি এখনো এখানে ছবি দেয়াই শিখলাম না। 😦

    Like

    • ধন্যবাদ বোন। নেটে লাইন স্লো হলে যা হয় আর কি। আমিও অনেক সময় নানান সাইটে প্রবেশ করতে পারি নাই।

      ফেবুতে ওই মাছের ছবি দেখে টাস্কিত হয়েছি। এক চোহারা মনে হয়েছে।

      আপা, আমি নিজেও ভাল গ্রাফিক্স জানি না। অন্য বন্ধুদের থেকে করিয়ে নিচ্ছি।

      শুভেচ্ছা ও মাঝে মাঝে দেখে যাবেন বলে আশা করছি।

      Like

  3. চমৎকার বন্ধু,

    Like

  4. ডিম বিনে জগত চলেনি, চলবেও ও না। এ আমার অতি প্রিয় খাদ্য। গল্পে শোনা যায়, যখন আমার বয়স ছিল মাত্র চার বছর-তখন নাকি ১১টা সিদ্ধ ডিম একাই খেয়ে নিয়েছিলাম। সেই অভ্যেস আছে এখনও- তবে সচেতনতার কারণে একবারে যদিও একটার বেশি খাই না।

    Like

  5. ভালো লাগলো। উপর থেকে ৮নং ছবিটা দেখতে বেশি ভালো লাগলো। মনে হচ্ছে, এক বাটি ডিমের কারি দিয়েই কেবল ভাত কেয়ে নেয়া যাবে।

    Like

    • ধন্যবাদ বোন। হা, আমি যে কয়েকটা ভাল রান্না করতে পারি তার মধ্যে এটাও একটা। সকালে নাস্তার সাথে মাঝে মাঝে ডিম খাওয়া হয় বলে এভাবে ডিমের রান্না কম হয়। তবে ডিমকে সিদ্ব করে আর কি রান্না করা যেতে পারে। ডিমের সেকশনটায় আরো কিছু রান্না যোহ করতে হবে।

      শুভেচ্ছা।

      Like

  6. পিংব্যাকঃ এক নজরে সব পোষ্ট (https://udrajirannaghor.wordpress.com) | BD GOOD FOOD

[প্রিয় খাদ্যরসিক পাঠক/পাঠিকা, পোষ্ট দেখে যাবার জন্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা। নিম্মে আপনি আপনার মন্তব্য/বক্তব্য কিংবা পরামর্শ দিয়ে যেতে পারেন। আপনার একটি একটি মন্তব্য আমাদের অনুপ্রাণিত করে কয়েক কোটি বার। আপনার মন্তব্যের জন্য শুভেচ্ছা থাকল। অনলাইনে ফিরলেই আপনার উত্তর দেয়া হবে।]