শিশুরা খাবার নিয়ে কত তালবাহানা করে। বাহানার আর শেষ নেই যেন! এটা দিলে বলে ওটা! প্রায় প্রতিদিনই তাদের জন্য নূতন নূতন খাবার দাবার তথা নাস্তা বানাতে হয়। খাবারের রং এবং স্বাদ একটু খারাপ হলে তো কথাই নেই, আমু আমি খাব না! আমার পেটে খিদা নাই! আপনি মেরে কি তাকে তক্তা বানিয়ে দিবেন! গালাগাল করবেন! আসলে যাই করেন না কেন লাভ হবে না! পরে বসে নিজে একা একা কাঁদবেন! আহ, আমি কি এটা কি করলাম! আসলে শিশুদের ভালবেসে তাদের মত করে বড় হতে দিন পাশাপাশি আপনি আপনার ভাল দিক গুলো তাদের সামনে তুলে ধরুন। দেখবেন, ওরা আপনার মত হয়েই গড়ে উঠছে।
আমি যদিও এই উপদেশ মার্কা কথা বলছি, আমি নিজেও সব সময় তা পারি না! তবে সময়ের মূল্য বলে যা আছে তা মেনে চলতে চেষ্টা করি। আমি আমার সন্তানের মেধা বুঝে তাকে তা করতে বা চলতে বলি। চাপ দিতে চাই না। আমার স্ত্রীকেও আমি বুঝাতে চাই, বলি। চিল্লাচিলি করো না, হালকা পাতলা নিজে সময় জ্ঞান মেপে কাজ করো। আমাদের সন্তান একটা তাই তাকে নিয়েই আমাদের দুনিয়ায় চলতে হবে। আমাদের চেষ্টা থাকবে, মানুষ হলে আমরা খুশি হব।
যাক যা বলছিলাম, শিশুদের মনের মত করে খাদ্য নির্বাচন। ঘরে যা আছে তাকেই একটু একটু ভিন্ন ভাবে তাদের কাছে উপস্থাপন করতে হবে। ওরা বুঝতে পারবে ওরা কত বিচিত্র খাবার খাচ্ছে! আসলে বাস্তবে তা নয়, মালমশলা একই, রান্না এবং পরিবেশনা শুধু আলাদা! স্বাদের পার্থক্য ও চেহারার ভিন্নতা দেখে ওরা খুশি হবে। আসুন আজকে একটা নুডুলস রান্না করি। খুব সাধারণ এবং সহজ। আমরা ঘরে থাকা কিছু সয়ামিট দিয়েছি, আপনাদের কাছে না থাকলে নাই। বাকী সব উপকরণ আপনাদের ঘরে আছে বলে আমি মনে কর। দুই প্যাকেট ম্যাগী নুডুলস নিয়ে রান্না ঘরে নেমে পড়ুন। চার জনের জন্য বেশ মজার নাস্তা হয়ে যাবে। ছবির সাথেই বলে দিচ্ছি কি করে কি করতে হবে! চলুন –
সয়ামিট বাজারে একটু বড় গ্রোসারিতে পাওয়া যায়। পানিতে কিছু সময় ভিজিয়ে নিন, এতে সয়া মিট ফুলে উঠবে। পরে পানি ঝরিয়ে হালকা তেলে ভেজে তুলে রাখুন। এই নুডুলসে এটা লাগবেই তা নয়, না থাকলে শুধু যেখানে এটা দেয়া হয়েছে তা না করলেও আপনি একটা ভাল নুডুলস রান্না পেয়ে যাবেন। সয়ামিটের জায়গায় আপনি ইচ্ছা হলে ফুলকপি মার্কা সবজিও দিতে পারেন! খালি আবিষ্কার, আর আবিষ্কার করুন!
দুই প্যাকেট নুডুলস (পরিমাণ আপনার ইচ্ছা) নিয়ে গরম পানিতে সামান্য লবণ দিয়ে সিদ্ব করুন (বেশী না, গলিয়ে ফেলেন না) এবং পানি ঝরিয়ে আলাদা করে রাখুন। কয়েকটা কাঁচা/পাকা মরিচ নিয়ে রাখতে পারেন।
কড়াইতে সামান্য তেল নিয়ে (কিংবা সয়ামিট ভাঁজার বেঁচে যাওয়া তেলে) তাতে কিছু পেঁয়াজ কুচি এবং আদা কুচি ভাজুন এবং নুডুলস এর প্যাকেটে থাকা মশলা দুটো দিয়ে দিন। সামান্য লবণ দিতে ভুলবেন না।
কষে গেলে এবার হালকা ভাজি হয়ে যাওয়া সয়ামিট গুলো দিয়ে দিন। ভাল করে আবারো কষান।
আহ কি সুন্দর!
এবার নুডুলস গুলো দিয়ে দিন। এবং ভাল করে মিশিয়ে নিন। খুন্তি দিয়ে ভাল করে নেড়ে দিন। ফাঁকে একটা আলাদা বাটিতে একটা মিশ্রণ বানিয়ে নিন (হাফকাপ পানিতে চার চামচ টমেটো সস, হাফ চামচ চিনি, হাফ চিমটি গোল মরিচ গুড়া ভাল করে মিশিয়ে নিন)
এবার আপনার বানানো মিশ্রণটি ঢেলে দিন। এবং ভাল করে নাড়িয়ে মিশিয়ে দিন।
নুডুলস টাইপ রান্নাতে এই রকম চওড়া খুন্তি ব্যবহার করলে ভাল হয়। লবণ দেখে নিন।
হালকা আঁচে মিনিট ১০শেক ভাল করে ভাজুন। ভাল করে খুন্তি দিয়ে মিশিয়ে। তবে সাবধান, বেশী এলোমেলো করে নাড়াবেন না তাতে নুডুলস ভেঙ্গে যেতে পারে। যত নুডুলস বড় ও লম্বা থাকবে শিশুরা তত পছন্দ করবে।
ব্যস হয়ে গেল। সয়ামিট দিয়ে নুডুলস রান্না।
পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত।
সোনামণি/মানিকদের জন্য বলা হলেও এটা আমি মনে করি পরিবারের সবাই পছন্দ করবে। নাস্তায় কিংবা টিফিনে এটা বেশ মজার খাবার হতে পারে। শেষে বলে যাই, রাতে রান্না করে ঠাণ্ডা করে ফ্রীজে রেখে দিতে পারেন, পরদিন স্কুলে টিফিনের জন্য দিতে পারেন। তবে সেক্ষেত্রে আবার গরম করে নিতে হবে।
আশা করি এই রেসিপিটা আপনাদের ভাল লাগবে এবং চেষ্টা করে দেখতে পারেন একবার। তবে রেসিপি পড়ে মনে রেখে রান্নাঘরে গেলে ভুল হতে পারে। যে কোন রেসিপি দেখে রান্না করতে হলে রেসিপির একটা প্রিন্ট নিয়ে রান্নাঘরে যাওয়া দরকার। পরিমাণ আপনি চাইলে আপনি হেরফের করতে পারেন কিন্তু ধারাবাহিকতা ফলো করলে ভাল ফল পাবেন। আমি রেসিপি দেখে রান্না করার সময় রেসিপির প্রিন্ট নিয়ে রান্না ঘরে যাই এবং ভাল করি। শিক্ষার শেষ নাই, শিখতে লজ্জা নাই, শিক্ষার বয়স নাই। আমি রান্না শিখছি মাত্র।
কৃতজ্ঞতাঃ মানসুরা হোসেন
এটা খেতে খুবই সুস্বাদু হবে।
এই সয়াবিন আগে দেশে পাওয়া যেতোনা। ইন্ডিয়া থেকে আনাতাম। আর মাংস এর সাথে মিশিয়ে রান্না করতাম। খেতে মাংসের মতই লাগে বলে মাংসের সাশ্রয় হয়। এখন এই চড়া বাজারে এটা দিয়েই হাফ কেজি মাংসকে এক কেজি বানাতে হবে। মনে হয় বড় মাছের সঙ্গেও ভালো লাগবে।
LikeLike
ধন্যবাদ রান্নাতো আপা, কেমন আছেন? শরীর কেমন? আশাকরি ভাল আছেন। আপনার ইমেই নং টা আমাকে দিন আপনার জন্য একটা ওয়ার্ডপ্রেস ব্লগ বানিয়ে পাস ওয়ার্ড দিয়ে দিব। এতে আপনিও নিজেও ব্লগের মালিক হয়ে যাবেন।
ডাঃ নিয়াজ ভাই তার সুরঙ্গ ব্লগ নিয়ে এখন ববস প্রতিযোগিতায় ২য় স্থানে আছে।
আপনার লেখা গুলো জমিয়ে রেখেও আপনি একদিন চলে যেতে পারেন জার্মানী! হা হা হা…
সবার নিজের একটা ব্লগ থাকা দরকার, যেখানে সেই হবে তার মনের রাজা!
কমেন্ট করার জন্য শুভেচ্ছা। ভাল থাকুন। আপনার রেসিপি পাচ্ছি না অনেকদিন। চতুরে না হলে সামুতে দিন, আমি সামুতে ধুমাইয়া ব্লগিং করব বলে ভাবছি!
ধুমাইয়া মানে প্রতিদিন ৩/৪টা ব্লগ পোষ্ট! হা হা হা, হুদা ভাইয়ের ফরমুলা।
ভাল থাকুন।
LikeLike
জিভে জল এসে যাচ্ছে…
LikeLike
ধন্যবাদ আমরা পারি ভাই।
আমার ব্লগে সাইটে আসার জন্য ধন্যবাদ।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
ধন্যবাদ ভাই। আমার ইমেইল আইডি দিচ্ছি। বানিয়ে দিন একটি ব্লগ। আমি এসব পারিনা। জার্মানী না যেতে পারলেও রেসিপিগুলো সংরক্ষন করতে পারবো।
সামু তো এখন কুরুক্ষত্রের ময়দান। কুম্ভকর্ণের শারীরিক অবস্থার জন্য লেখার মত মন মানসিকতা নেই। তাই চতুরে পোস্ট দেয়া হচ্ছেনা।
আমার ভাতিজা সহ আপনারা ভালো থাকবেন।
jamila.hasan@yahoo.com
LikeLike
ধন্যবাদ, আপনার জন্য একটা ব্লগ বানানোর কাজে লেগে পড়লাম… পাশ ওয়ার্ড জানিয়ে সকল কিছু মেইলে জানিয়ে দিব। নিজ ব্লগে পোষ্ট গুলে এনে রাখবেন… আশা করি একদিন জার্মানী চলে যাবেন… ডাক্তার নিয়াজ ভাইয়ের মত।
আর মাত্র ১ দিন বাকী নিয়াজ ভাইকে ভোট দিন…।
http://niazmowla.wordpress.com
এই লিঙ্কে গিয়ে নিয়াজ ভাইয়ের ব্লগ দেখুন…।।
LikeLike
আরও একটি সুস্বাদু পোস্ট। সয়ামিট কিন্তু স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভাল একটি খাদ্য। এর গুণাগুণ অনেক। শিশুদের নুডুলস বা পোলাওতে সয়ামিট দিলে বেশ ভাল হয়।
সময়োপযোগী পোস্ট এবং ভাল লাগা অবশ্যই।
LikeLike
ধন্যবাদ দাইফ ভাই। আপনার কমেন্ট এই পোষ্টকে আরো সন্মানিত করল। এক সময় আমাদের বাজারের দোকানে প্রচুর সয়া মিট পাওয়া যেত, এখন আর সব দোকানে পাওয়া যায় না…।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
কি বলে যে ধন্যবাদ দিব! আমার মেয়ে এটা খুব পছন্দ করে। কিন্তু ভাল করে রান্না করতে পারতেসিলাম না। আবার ধন্যবাদ।
LikeLike
ধন্যবাদ বোন। আপনার কমেন্ট পেয়ে আমরা সার্থকতা খুঁজে পেয়েছি।
শুভেচ্ছা আপনাকে, আশা করি সাথে থাকবেন। ছোট মা মনিকে আমাদের আদর দেবেন।
LikeLike
উদরাজী ভাই কেমন আছেন??
——-
আসলে ছবিতে এতই সুস্বাদু লাগছে, এতই সুস্বাদু লাগছে, কোন মতেই লোভ সামলাতে পারতেছি না! দেখি কাল সকালে রান্না করার চেষ্টা করব!
LikeLike
ধন্যবাদ নির্মক্ষিক ভায়া।
আপনাকে দেখেই ভাল লাগে। আপনি নিজে রান্না করেন জেনে পুলকিত হই।
হা হা হা… আমার রেসিপি গুলো ব্যচেলরদের জন্যই!
শুভেচ্ছা।
LikeLike
পিংব্যাকঃ রেসিপিঃ সয়ামিট ভুনা | রান্নাঘর (গল্প ও রান্না)
রেসিপি-টার জন্য অনেক ধন্যাবাদ ভাইয়া। আমি এটা কয়েকবার করছি, বাসার সবাই পছন্দ করেছে। রেসিপি নিয়ে আমার একটু প্রশ্ন আছে, যদি সম্ভব হয় জানাবেন-
instant noodles না দিয়ে, regular stick noodles দিয়ে করতে চাইলে মসলার পরিমান কিরকম হবে?
LikeLike
ধন্যবাদ বোন। উত্তর দেরীতে দেবার জন্য দুঃখিত।
instant noodles এ মশলা থাকে বলে মশলা ছাড়াই খাওয়া চলে বা প্যাকেটে মশলা থাকে যা দিয়ে রান্না করা যায়।
regular stick noodles এ মশলা থাকে না বলে সব কিছুই দিতে হয়।
তবে এই ধরনের রান্নায় regular stick noodles দিয়েই করা ভাল। (আপনি করতে পারেন, মশলা অবশ্যই কম বেশি করতে হবে)
শুভেচ্ছা।
LikeLike
আপনার ভিডিও ও রেসিপি গুলি মেইল করা বা অন্যকোন ভাবে দেওয়া যাবে?
LikeLike