রান্না কি আসলে সহজ কাজ! আমি বলি ‘হ্যাঁ’! তবে এই ‘হ্যাঁ’ তে কিছু কথা আছে! এই হ্যাঁ’তে আপনার থাকতে হবে রান্নার প্রতি ‘ভালবাসা’ এবং ‘ধৈর্য’। আপনি যদি রান্নাকে ভালবাসেন এবং রান্নার প্রতি ধৈর্য থাকে তবেই রান্না আপনার কাছে ‘সহজ’ ব্যাপার হয়ে ধরা দিবে। রান্নায় প্রথম জটিলতা হচ্ছে আপনি কি রান্না করবেন তা মনস্থির করা, মনস্থিরের পর আপনি রান্নার উপকরন গুলো হাতের কাছে যোগাড় করে নেবেন। রেসিপি যোগাড় করে বুঝে নেয়াও কাজের একটা ধাপ। রেসিপি দেখে রান্না করলে আপনি তা আগেই প্রিন্ট করে নেবেন কিংবা বই বা পেপার হলে তা নিয়ে দেখে নেবেন, সময়ে বা রান্না শুরু হলে যেন সমস্যা হলে দেখতে পারেন সে ব্যবস্থা করতে হবে। এদিকে মোবাইল, ট্যাব বা নোটবুক হলে তা নিয়ে রান্না ঘরে চলে যেতে পারেন। টিভি বা মোশান মিডিয়া হলে তা দেখে নোটে তুলে নিতে ভুলবেন না।
কোন কোন রান্নায় সময় লাগে এবং রান্নার সময় চুলার ধার বা রান্নাঘর ছেড়ে চলে যাওয়া চলে না। এখানেই ধৈর্য দেখাতে হয়। চুলার জ্বালের উপর রান্নার স্বাদ বা রান্নার উপকরণ নরম/কঠিন হয়ে থাকে, কাজে কাজেই রান্না ছেড়ে অন্য কোথায় চলে গেলে এবং সময় মত নাড়া ছাড়া ও আগুনের পরিমান কমানো বাড়ানো না করলে রান্না স্বাদ হয় না। অন্য দিকে আপনি রান্নাঘর ছেড়ে গেলে, রান্না পুড়ে যেতে পারে এবং এতে বিরাট বিপদ আসতে পারে!
রান্নায় আপনার ভালবাসা এবং ধৈর্য থাকলে এক সময় রান্নাই আপনাকে ভালবেসে ফেলবে, রান্না যেহেতু অভিজ্ঞতার ব্যাপার, এই অভিজ্ঞতার কারনেই আপনি ইশারাতেই রান্নার গোপন কথা বুঝতে পারবেন। তার পর আপনার যা ইচ্ছা, নাড়া ছাড়া করলেই রান্না আপনার মনের মত হয়ে যাবে! হা হা হা…
ইলিশ হাতে মডেল বুলেট!
চলুল আজ আর একটা ইলিশের রান্না দেখে ফেলি। খুব সহজ এবং সাধারন। ইলিশের ঘ্রান ঠিক রেখেই এই রান্না। ইলিশ মাছ এমন এক স্বাদের মাছ যে, মাঝে মাঝে মনে হয় কাঁচাও খাওয়া যেতে পারে। ইলিশ যেভাবেই রান্না হউক না কেন, খেতে মজাই মজা।
উপকরন ও পরিমানঃ
– ইলিশ মাছের ৫ টুকরা
– আদা বাটা (হাফ চা চামচ)
– দুইটা মাঝারি পেঁয়াজ কুঁচি
– কয়েকটা কাঁচা মরিচ
– হাফ চামচ হলুদ গুড়া
– হাফ চামচ বা তার কম লাল মরিচ গুড়া, ঝাল বুঝে
– টক দই এক কাপের কম
– এক চিমটে গোল মরিচের গুড়া
– চিনি (হাফ চামচের কম)
* (টক দইয়ের সাথে গোল মরিচের গুড়া এবং চিনি মিশিয়ে নেবেন)
– লবন, পরিমান মত, শুরুতে কম দিয়েই রান্না শুরু করা উচিত, লাগলে পরে দিতে পারবেন।
– পানি, পরিমান মত
– তেল, পরিমান মত, আমি কম তেলে রান্না করতে পছন্দ করি।
প্রনালীঃ
কড়াইতে তেল গরম করে সামান্য লবন যোগে পেঁয়াজ কুঁচি ও কাঁচা মরিচ ভাঁজুন। পেঁয়াজ হলদে হয়ে গেলে আদা বাটা দিয়ে দিন এবং আরো সামান্য সময় ভেঁজে পানি দিয়ে দিন।
পানি দেয়ার পর এমন দেখাবে।
এবার হলুদ ও মরিচ দিয়ে দিন, এমন ঝোল হয়ে যাবে। আগুনের আঁচ কম রাখুন। তেল উঠে আসবে।
এবার ইলিশ মাছের টুকরা গুলো দিয়ে দিন, হালকা আঁচে মাছের এপিট ওপিট করে দিন।
মিনিট ৭/৮ এর জন্য ঢাকনা দিয়ে রাখতে পারেন। মাছের পানি বের হয়ে যাবে।
এবার টক দই (যাতে চিনি ও গোল মরিচের গুড়া ছিল) দিয়ে দিন। মাঝারি আঁচে আগুন চলবে, এবং আরো হাফ কাপ পানি দিন।
এবার ঢাকনা দিয়ে দিন। মাঝারি আঁচে আগুন জ্বলবে।
দ্রুত ঝোল কমিয়ে ফেলতে আগুনের আঁচ বাড়িয়ে দিতে পারেন। তবে কেমন ঝোল রাখবেন তা আপনি নিজে নির্ধারন করুন। সামান্য ঝোল না হলে, চলে কি করে! তবে এবার ফাইন্যাল লবন দেখে ফেলুন। লাগলে দিন, না লাগলে ‘ওকে’ বলুন।
ব্যস হয়ে গেল দই দিয়ে ইলিশ রান্না, দই ইলিশ।
জাষ্ট, অসাধারণ*। খেয়ে আপনাকে বলতেই হবে, ‘মানুষের রাজা পুলিশ, মাছের রাজা ইলিশ’!
না, মানুষের রাজা পুলিশ নয় কিছুতেই! বিশেষ করে আমাদের দেশের পুলিশতো নয়ই!
রেসিপি প্রিয় পাঠক/পাঠিকা ভাইবোনদের শুভেচ্ছা। আপনাদের যদি কোন কাজে লাগি তবেই আমাদের এই প্রচেষ্টা সার্থক। একবার রান্না করেই দেখুন না!
* ইলিশ কেনার সময় পদ্মার ইলিশ দেখে কিনবেন। পদ্মার ইলিশে একটা আলাদা ঘ্রান আছে, যা ভুলে যাবার নয়।
দই দিয়ে গরুর গোশত ভুনা খেয়েছি । কখনো মাছ রান্না করি নি । দেখে মনে হচ্ছে টেস্টি হয়েছে রান্না টা ।
LikeLike
ধন্যবাদ বোন,
দই দিয়ে মাছ রান্নাও স্বাদের হয়ে থাকে। ভালই লাগে। একবার রান্না করে দেখতে পারেন।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
Aponar ei ranna amra korechi, valo lagcha…. thank you.
LikeLike
ধন্যবাদ বোন।ভাই।
আশা করছি আগামী কমেন্টে আপনি আপনার নাম লিখবেন এবং আমাদের জানাবেন, কেমন করে আমাদের এই ব্লগের ঠিকানা পেলেন।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
দই ইলিশ আসলেই মজার।
ঢাকার নবাব বাড়ীর লোকেরা দই ইলিশ, দই রুই রান্না করে। তবে হলুদ দেয়না!
LikeLike
ধন্যবাদ আপা।
দই দিয়ে কখনো রুই রান্না করি নাই। ঘরে কিছু রুই মাছ আছে, টক দই আছে, হলুদ না দিয়ে একদিন রান্না করে দেখবো। বিশেষ কিছু খেয়াল রাখতে হবে না তো?
শুভেচ্ছা।
LikeLike
না। যে ভাবে ইলিশ মাছ রান্না করেছেন ঐ ভাবেই করবেন। মসলা- আদা, রসুন, জিরা। আর নামানোর আগে কয়েকটা কাঁচামরিচ।
ইলিশ মাছ অনেকেই আনারস কুরিয়ে রান্না করেন। আমিও করি। কিন্তু মিষ্টি তরকারী খেতে ভালো লাগেনা।
আরেকটি রুই মাছ রান্নার কথা বলি। গরম তেলে ১ চা চামচ মেথি ভেজে সব মেথি তুলে নিয়ে ঐ তেলে মাছ ভুনা করলে ভালো লাগে। অনেকে মেথির গন্ধ পছন্দ করেনা।
শীতে ঢাকার বাজারে মেথি শাক পাওয়া যায়। সেটা ভাজি খাবেন। আর কিছু শাকের পাতা রোদ শুকিয়ে বোতলে ভরে রাখবেন। যে কোনো মাংস ভুনা, বড় মাছ ভুনা নামানোর আগে ঐ শুকনো মেথি শাক ১ চা চামচ দিয়ে নামিয়ে খেয়ে দেখবেন।
LikeLike
ধন্যবাদ আপা,
আপনার রান্না দুটো এবং মেথি শাকের কথা আমার নোটে তুলে নিলাম। আশা করছি আগামীতে কাজে লাগবে।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
ভাইয়া, কাতল মাছের একটা রেসিপি দিবেন প্লিজ
LikeLike
আমার ধারনা কাতল মাছের অনেক রেসিপি আছে, কারন আমি আমার জীবনে সব চেয়ে বড় মাছ কিনেছি কাতল মাছ। দাঁড়ান লিঙ্কটা খুজে বের করি।
LikeLike
osadharon ekta link.onek kicui sekha jay.r tar sathe mojar mojar golpo to ace e.
LikeLike