গ্যালারি

ব্যাংকক আড্ডাঃ পর্ব ৫ (একটি আদর্শ রেস্টুরেন্ট, দুনিয়ার সবার জন্য!)


আমার বিদেশ ঘুরায় আমি নানা বড় বড় হোটেলে থেকেছি, খেতে চেষ্টা করেছি বড় হোটেল থেকে ফুটপাতের দোকানে। থাকা এবং খাবারে আমার কোন বাছ বিচার নেই, যেখানে রাত সেখানে কাত! প্রয়োজনে না খেয়েও থাকার অভিজ্ঞতা আছে! হা হা হা… সে ঘটনা বললে আপনারা আমাকে বেকুব বলতে পারেন। টাকা পয়সা ফুরিয়ে কি করে ইজিপ্ট থেকে ফিরে এসেছিলাম!

সে যাই হোক, এবারে ব্যাংককের যে রেস্টুরেন্ট/হোটেলে খেয়ে বেশ মজা পেয়েছি তা হচ্ছে সুকুম্ভিত, সয়াই ৩ এ অবস্থিত ‘বেম্বু বা বাম্বু’ রেষ্টুরেন্ট। দিন রাত ২৪ ঘন্টা এই হোটেল খোলা থাকে। আপনি যখন ইচ্ছা এই হোটেলে গিয়ে খাবার খেতে পারেন। তাদের খাবারের বাহার দেখলে আশ্চর্য হতে হয়। সাদাভাত, রুটি থেকে শুরু করে পুদিনা চা এবং সিসা (হুক্কা), সবই যখন যেটা ইচ্ছা আপনি অর্ডার দিলেই হাজির হয়ে যাবে। আমরা বের কয়েকবার এই হোটেলে গিয়েছি, ঘন্টার পর ঘন্টা আড্ডা দিয়ে কাটিয়েছি। এই হোটেলের পাশে তাদেরই একটা নাইট ক্লাব আছে, সেখানে চলে সারা রাত মাস্তি! এদের খাবারের বাহার এবং সারা দিনরাতে মানুষের আনা গোনা দেখে মনে হয়েছে সারা বিশ্বের যে কোন লোক গেলেই তাদের পছন্দের খাবার খেতে পারবে এবং পারছেও! আমি বসে বসে ভেবেছি কি করে এই কর্মযজ্ঞ চলে সারা বছর, বছরের পর বছর!

আমরা যে কয়েক বেলা খেয়েছি, তার দুই বেলার ছবি তুলেছি। আসুন আমাদের খাবার দাবারের ছবি গুলো দেখে ফেলি।


রেস্টুরেন্টের প্রবেশ পথ। কত রঙের মানুষের মেলা এই দুনিয়া! না দেখলে বুঝানো যায় না! বিশাল বড়, পরিবারের জন্য আলাদা কেবিন থেকে নন স্মকিং রুম আছে। আপনার যেখানে ইচ্ছা বসতে পারেন। ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকলেও তারা বলবে না, কি জন্য এতক্ষন বসে আছেন!


মেনু বুক, কিছু কিছু খাবারের ছবিও দেয়া থাকে, ইশারায় আপনিও খাবারের ওয়ার্ডার দিতে পারেন! নানান ভাষার ওয়েটার আছে, আপনি চাইলে আপনার ভাষায় কথা বলতে পারেন।


খাবারের ওয়ার্ডার দিলে এই সাজানো একটা সালাতের প্লেট আপনার টেবিলে চলে আসবে! আমরা প্রায় ৪/৫ বেলা খেয়েছি, আমি অবাক হয়েছি, ওর্ডার দেয়ার সাথে সাথেই হাজির। একেই বলে অতিথিয়তা!


ইয়েলো রাইস। এটা আসলে মার্টন বিরিয়ানীর মত। বাসমতি চালের সাথে মার্টন। খেতে অত্যান্ত সুস্বাদু লেগেছে।


চিংড়ি কাবাব। তাজা মাছ, মুরগী, মার্টন কিংবা দুম্বা, কিসের কাবাব চান! হাজির হয়ে যাবে।


ড্রিংক আপনার যা পছন্দ তা পাবেন। তবে রেস্টুরেন্ট এ হার্ড ড্রিংক নেই, সর্বোচ্চ বিয়ার পেতে পারেন।

আর একবারে ছবি………………।

মার্টন কাবার। এর স্বাদ এখনো আমার মুখে লেগে আছে।


চিকেন  কাবাব। না খেলে বুঝানো যাবে না!


আমাদের দুই বন্ধুর জন্য এই খাবার অনেক বেশি হয়েছিল। সব শেষ করা যায় নাই।


আমার প্লেট!

আর একদিন…………………।

চা, কফি, সিসা আপনি ওর্ডার দিলেই হাজির!

রেস্টুরেন্টটার প্রশংসা না করলেই নয়। আমি একটা ব্যাপার দেখেছি, এরা কোন কিছুতেই কিপটামি করে না। পরিমান এবং কোয়ালিটিতে আমি কোন আপোস দেখি নাই! অতিথিয়েতায় এদের জুড়ি নেই! রেষ্টুরেন্টের শেফ থেকে সাধারন কর্মচারি সবাই সবার কাজ করেই যাচ্ছে! লেবাননি এক নারী শেফের সাথে দেখা হয় (সে সিগারেট চা খেতে ভিতর থেকে আমাদের পাশের টেবিলে এসে বসেছিল), আমি অবাক হয়ে তাকে দেখছিলাম। আমাদের দেশে যে কোন রেস্টুরেন্টের শেফ এভাবে বসে সিগারেট টানলে নিশ্চিত চাকুরী চলে যাবে!

বিদেশ না দেখলে দেশের অবস্থা বুঝা যায় না!

8 responses to “ব্যাংকক আড্ডাঃ পর্ব ৫ (একটি আদর্শ রেস্টুরেন্ট, দুনিয়ার সবার জন্য!)

  1. শসার চেহারা এমন কেন??
    আর বাকি খাবার গুলো অনেক ভাল্লাগসে

    অনেকদিন পর এলাম

    Like

  2. আংকেল, প্রাথমিক মনোনয়ন তালিকায় চান্স পেয়েছি নটরডেম এ। দোয়া করবেন যেন ফাইনাল তালিকায় ও থাকতে পারি। কালকে সকাল ৮টায় পরীক্ষা।

    এখন প্রস্তুতি বাদ দিয়ে ব্রাউজিং করছি। 😀

    Like

    • ধন্যবাদ ভাতিজা। তোমার জন্য দোয়া থাকবেই। ইন্টারভিউ আশা করছি ভাল দিবে এবং ভাইবাতে বেশ স্মার্ট হয়ে যাবে, হাটা চলা ফেরার একটা আলাদা ভাব (ভাল অর্থে) থাকা চাই। নটরডেমে সব সময় ভাল ছাত্র এবং স্মার্ট চেয়ে থাকে।

      আশা করি তুমি পারবে। শুভেচ্ছা থাকল।

      Like

  3. যা হওয়ার তাই হল। পরীক্ষা খুব একটা ভাল হয়নাই।তবুও আশা করছি হয়ে যাবে।

    ১৩তারিখে রেজাল্ট দিবে, দোয়া করবেন

    Like

    • ধন্যবাদ ভাতিজা। আমিও দোয়া করছি হয়ে যাক। ভাল কলেজে পড়ার মজা আলাদা, ভাল ভাল বন্ধু পাওয়া যায়, শেষে এদের নিয়ে গর্ব করা যেতে পারে। বন্ধু ভাল না হলে জীবন ভাল হয় না। কলেজের বন্ধুরা অনেকদিন টিকে থাকে, স্কুলের বন্ধুরা হারিয়ে যায় এক সময়!

      দোয়া থাকলো।

      Like

[প্রিয় খাদ্যরসিক পাঠক/পাঠিকা, পোষ্ট দেখে যাবার জন্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা। নিম্মে আপনি আপনার মন্তব্য/বক্তব্য কিংবা পরামর্শ দিয়ে যেতে পারেন। আপনার একটি একটি মন্তব্য আমাদের অনুপ্রাণিত করে কয়েক কোটি বার। আপনার মন্তব্যের জন্য শুভেচ্ছা থাকল। অনলাইনে ফিরলেই আপনার উত্তর দেয়া হবে।]