এক রাজকীয় মাছের নাম ‘কালিবাউস’। মাছের গায়ের রং কালো কিন্তু খেতে বেশ মজাদার এবং মোলায়েম, মুখে দিতেই যে মাছ সমস্ত মিলিয়ে যায় তাই হচ্ছে কালিবাউস। এত মজাদার মাছের নামটা কে কালিবাউস রাখল, তাকে পেলে জিজ্ঞেস করতাম অনেক কথা! হা হা হা… এখন শুরুতেই বলেন কে কে আপনারা রেসিপি পাঠক পাঠিকা বন্ধুগন এই কালিবাউস মাছ খেয়েছেন? আমার মনে হয় না বেশী বন্ধু হাত তুলতে পারবেন। কারন এই মাছটা খুব একটা বেশী বাজারে দেখা যায় না। আপনাদের কেনার ইচ্ছা থাকলেও কিনতে পারেন নাই। আর যারা শুধু কিছু নিদিষ্ট মাছ খেতে জানেন তাদের তো এই কালিবাউস খাবার প্রশ্নই উঠে না।
আজ যারা এই ব্লগ পড়ছেন তাদের কাছে অনুরোধ করবো, যদি সামনে কোনদিন বাজারে চোখে পড়ে তবে এই কালিবাউস কিনে নেবেন এবং আমার মত করে রান্না করবেন। আশা করি, খেয়ে আমার নামটা স্মরণ করবেন। আমি আশাবাদী মানুষ।
কালিবাউস মাছ হাতে আমাদের বুলেট! মাছটা নিয়ে বুলেটেরও অনেক কথা ছিল। কালো, মাথা ছোট আরো কত কি! তবে আমি মাছটা ভাল করে দেখে ওকে বুঝিয়েছি যে, এটা অনেক সুন্দর একটা মাছ, শুধু গায়ের রঙ কালো বাকী সব কিছুই সুন্দর! হা হা হা।।
চলুন দেখে ফেলি। রান্নাটা সিম্পল এবং ইজি। কালিবাউস মাছ রান্না এবং ঝোল!
উপকরনঃ (সাধারন মাছ রান্না)
– কালিবাউস মাছঃ পাঁচ টুকরা (পিঠের)
– পেঁয়াজ কুঁচিঃ হাফ কাপ
– মরিচ গুড়াঃ হাফ চা চামচ (ঝাল বুঝে)
– হলুদ গুড়াঃ হাফ চা চামচ
– আদা বাটাঃ ১ চা চামচ
– রসুন বাটাঃ ১ টেবিল চামচ
– কাঁচা মরিচঃ ৩/৪ টা (ঝাল বুঝে)
– লবনঃ পরিমান মত
– কাঁচা ধনিয়া পাতাঃ পরিমান মত
– তেলঃ সয়াবিন তেল হাফ কাপের চেয়ে কম
– পানিঃ পরিমান মত
– সামান্য লেবুর রস (স্বাদ বাড়াতে দেয়া হয়েছে, না হলে নাই)
(শুধু জিরা গুড়া বাদ দেয়া হয়েছে এবং সেটা ইচ্ছা করেই।)
প্রনালীঃ
লবন পানিতে মাছ গুলো ধুয়ে নিন।
কড়াইতে তেল গরম করে সামান্য লবন যোগে ভাঁজতে থাকুন। কয়েকটা কাঁচা মরিচ দিয়ে দিতে পারেন।
পেঁয়াজ ভাঁজার ফাঁকে আদা, রসুন বাটা দিয়ে আরো কিছুক্ষন ভাঁজুন এবং এক কাপ পানি দিয়ে ঝোল বানিয়ে তাতে মরিচ গুড়া এবং হলুদ গুড়া দিন এবং ভাল করে কষিয়ে ঝোল বানিয়ে নিন। তেল উঠে এমন হয়ে যাওয়া পর্যন্ত খুন্তি দিয়ে নাড়ান।
এবার কয়েক ফোটা লেবুর রস দিন।
তেল উঠে গেলে মাছ গুলো দিয়ে দিন এবং কষাতে থাকুন। মিনিট ১০এর পর আরো এক কাপ পানি দিয়ে মাছ গুলো ডুবিয়ে দিন।
তার পর একটা ঢাকনা দিয়ে আরো মিনিট বিশেক মাধ্যম আঁচে চুলায় রাখুন। মাঝে মাঝে নাড়িয়ে দিতে হবে। মাছ নাড়াতে সাবধানতা বজায় রাখতে হবে। মাছ ভেঙ্গে গেলে চলবে না।
ঝোল কমে চমৎকার অবস্থানে আসতে বেশী সময় লাগবে না। ঝোল কেমন রাখবেন তা আপনি নিজে ঠিক করুন। এই সময় ফাইন্যাল লবন দেখুন, লাগলে দিন।
ব্যস রেডী, তৈয়ার!
সাজিয়ে পরিবেশন করুন। আমি নিশ্চিত ঘরে যদি আপনার মেয়ে জামাই থাকে, তবে খেয়ে মাছের নামটা জানতে চাইবেই! আর হয়ত বলবে, কালিবাউস এত স্বাদের মাছ তা আগে জানা ছিল না! জীবনে এই প্রথম খেলাম!
সবাইকে শুভেচ্ছা। ভাল থাকুন।
কালিবাউশ কোথায় পাব, পারলে একটা পাঠিয়ে দিন। দেখেই খেতে ইচ্ছে করছে। যদিও পাই (পাব কিনা জানিনা) তাও ২-৩ মাসের ফ্রিজার। যা অখাদ্যই বলা চলে !
LikeLike
ধন্যবাদ আমিন ভাই।
কালিবাউস মাছটা এখন বাংলাদেশেও রেয়ার হয়ে গেছে। সাধারণত পাওয়া যায় না। কয়েকদিন আগে আমি দেখে কিনেছিলাম। বেশ স্বাদের মাছ এবং আমাদের দেশের মিঠা পানির মাছ এটা।
হা, আপনারা পাবেন বটে তবে ফ্রীজের। যাই হোক দেশে আসলে মনে রাখবেন।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
দেখে পড়ে ক্ষিদা লেগে গেল। আসব নাকি বাসায়???
LikeLike
ধন্যবাদ আজাদ ভাই।
কালিবাউস প্রায় শেষের পথে! হা হা হা…
শুভেচ্ছা।
LikeLike
viea, ami kali bauash mash sylhet a bes kober khayachi. onak test. ami potato,tomato diya ranna korachi. amar husband r amar khub e posonder mas.amar husband ar abar sylhet posting hoisay. abar o khatay parbo in sha allah.
LikeLike
“ভাইয়া, আমি কালিবাউস মাছ সিলেটে বেশ কয়েকবার খেয়েছি। অনেক টেষ্ট। আমি আলু, টমেটো দিয়ে রান্না করেছি। আমার স্বামী ও আমার খুবই পছন্দের মাছ। আমার স্বামীর আবার সিলেটে পোষ্টিং হয়েছে, আবারো খেতে পারবো ইন্সাল্লাহ।”
– হা হা হা… এই প্রথম একজন বোন পেলাম যিনি এই কালিবাউস খেয়েছেন এবং বেশ পছন্দ করেন। কালিবাউস মিঠা পানির মাছ, চাষে এই মাছের সাফল্য নেই। পুকুরে, নদীতে এই মাছ এক সময় প্রচুর পাওয়া যেত এখন আর পাওয়া যায় না। সিলেটে পাওয়া যাবেই। আশা করি আপনার ইচ্ছা পূর্ন হবে।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
সুনামগঞ্জের হাওর অঞ্চলে এ মাছটি মোটামুটি দেখা যায়, সেখানে সবাই বেশ শখ করেই খেয়ে থাকেন। যদিও ইদানিং কমে আছে (আর সব মাছের মতই)।, আমার বাবা এই মাছের ভক্ত। ঢাকায় এই মাছ পাওয়া যায় দেখে ভালো লাগলো।
রুই জাতের আরেকটা মাছ হাওরে বেশ পাওয়া যায়, কিন্তু ঢাকায় মনে হয় দেখিনি—-সেটা হল ঘইন্যা মাছ, খেয়েছেন নাকি? কালিবাউশের মত সুস্বাদু নয় যদিও।
LikeLike
ধন্যবাদ রনি ভাই।
না ঢাকাতে ও কালিবাউস তেমন একটা পাওয়া যায় না। আমি হঠাত করেই একদিন পেয়ে গিয়েছিলাম। তবে দাম শুনে আমি কিনতে চাই নাই পরে ভাবলাম, কি আছে জীবনে। বেশ স্বাদের মাছ।
সিলেটে ছোট বেলায় খেয়েছি হয়ত। এখন মনে নেই। হা হা হা…। ঘইন্যা মাছ ঢাকাতে পাওয়া যায় কিনা আমি জানি না। নামটাও আমার কাছে নুতন।
আমি অচেনা মাছ পেলেই কিনি। এবার এই মাছের নাম ধরে খুঁজে দেখব। পেলেই কিনবো।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
ঘনিয়া / ঘইন্যা মাছ সিলেটের বাজারে এখনো পাওয়া যায়। এটার আশ অনেক ছোট ছোট আর কাটাও বেশী। তবে খেতে সুস্বাদু। ঘনিয়ার কল্লা খুবই মজার/
LikeLike
আপা, ঘনিয়া মাছের একটা ছবি দিতে পারবেন। মাছটা দেখতে খুব ইচ্ছা হচ্ছে। ছবি দেখে বুঝতে পারবো খেয়েছি কি না। আর না খেলে ছবি দেখে কিনতে পারবো।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
সিলেটে এই মাছকে কালিয়ারা বলে। এটা আমার খুব প্রিয়। এ মাছের একটি নিজস্ব গন্ধ আছে, যেটা আমার ভালো লাগে। আবার যারা অপছন্দ করেন তারা এই গন্ধের কারনেই করেন। আমি আলু বেগুন দিয়ে এই মাছ রান্না বেশী পছন্দ করি।
LikeLike
ধন্যবাদ আপা,
হাতে কালিবাউসের পেটি, মাথা এবং লেজ এখনো আছে। আলু বেগুন দিয়ে রান্না করতে চেষ্টা করবো। আগামী কাল দিনে বা রাতে। হ্যাঁ, মাছটায় সামান্য ঘ্রান আছে তবে মাছের পেশী গুলো বেশ মোলায়েম। আমার কাছে ভাল লেগেছে।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
onek dami macch, ekmas na 6 mas por por khawa jete pare
LikeLike
ধন্যবাদ জিলানী ভাই। হ্যাঁ, দামী মাছ। এখন আর বাজারে তেমন একটা চোখে পড়ে না।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
Eta sylhet a pawa jai….amra sylheti ra mach kwai ebong kinai ustad bolte paren Allah r rohmote prai shob mach e kayechi ..tobubo amr dadi bolen unara ja kayechen tate shad beshi chilo! Apni kichuta sylheti type manush…:)
LikeLike
হা হা হা,
আপনার কথা পড়ে হাসতে হাসতে পড়ে যাচ্ছি। আপনার দাদী সঠিক বলেছেন।
আমি জন্ম সুত্রে সিলেটী, আমার জন্ম সিলেটের শ্রীমঙ্গলে।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
যাদের কালিবাউশ মাছ দরকার তাদের জন্য সুখবর
মেঘনা নদীর ছোপের কালিবাউশ মাছ পেতে নিচের দেয়া ঠিকানায় যোগাযোগ করুন।
সোনার বাংলা মার্কেট (দাউদকান্দি মৎস্য আড়ৎ) যাএাবাড়ি ঢাকা
প্রয়োজনে : ০১৯৭০০১১০০৭/০১৭১১১৩৫০৭৪
LikeLike
ধন্যবাদ ব্রাদার।
আশা করি অনেকেই যোগাযোগ করবে এবং কালিবাউসের মত স্বাদের মাছ খেয়ে মন ভরাবে।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
পিংব্যাকঃ এক নজরে সব পোষ্ট (https://udrajirannaghor.wordpress.com) | BD GOOD FOOD