বড়রা বাসায় যা থাকে তা খেতে পারে, আমার প্রিয় শিশুরা কখনোই তা করে না! হা হা হা, ঘরে এটা থাকলে বলে ওটা চাই, এটা থাকলে বলে সেটা চাই। আর ঘরে যদি একের অধিক শিশু থাকে তা হলে তো কথাই নাই! আপনাকে কেমন করে কাজ করতে হবে, কি কি খাবার যোগাড় করে বসে থাকতে হবে তা এই অভিজ্ঞতা যাদের আছে তারা ছাড়া আর কেহ বুঝবে না। তবে মানুষের জীবনে অতীত হয়ে যাওয়া সব কিছু সহজে ভুলে যাওয়া যায় বলেই মানুষ এগিয়ে চলে! ভুলতে না পারলে মানুষ বিবাহ করত না, সন্তানের মা বাবা হতে পারত না!
যাই হোক হাতে তেমন সময় নেই, দুই ছেলের বাবা হয়ে সময় হারিয়ে ফেলেছি, ঘরে থাকলেও একজনকে কোলে নিয়ে বসে থাকতে হয়, খেলাধুলা ও পাহারা দিতে হয়। নেটে বসা প্রায় কঠিন হয়ে পড়ছে। রান্নাঘরেও প্রবেশ সংকুচিত হয়ে পড়ছে। অন্যদিকে আজকাল অফিস যাওয়া ও আসায় অনেক সময় নষ্ট করে ফেলছি, যা আমাদের এলাকায় যানজট ও ফ্লাইওভারের কাজের জন্য হচ্ছে। জীবনের এই সময় কি আর ফিরে পাব! ভেবে অনেক কষ্ট পাই। দেশমাতা এখনো একজন ভাল সরকার প্রধান পেল না! আফসোস। এই প্রিয় মাতৃভূমিকে একটা সুন্দর অবস্থানে দেখে যেতে পারলাম না। দেশের অধিকাংশ মানুষ গরীব থাকার পিছনে এখন দায়ী শুধু সরকার!
যাই হোক, পালাবো কোথায়? এভাবেই এগিয়ে যেতে হবে। চলুন আজ এমনি একটা রান্না দেখি, বিকালের নাস্তায় ছেলে মেয়ে বুড়ো সবার জন্য!
বিফ ভেজিটেবল রোল। তিন ধাপের রান্না। ১) ময়ান বানিয়ে নেয়া ২) পুর তৈরী করে রাখা এবং ৩) রুটি বেলা, পুর ভরা ও তেলে ভাঁজা। ময়ান ও পুর আগের পোষ্ট গুলোতে দেখিয়ে দিয়েছি (এখানেও লিঙ্ক দেয়া আছে, তাই এখানে আর দেখানো হল না)। এখানে শেষ অংশটাই দেখিয়ে দিচ্ছি। চলুন।
উপকরণঃ
– ময়ান বা খামির (রেসিপিঃ ডো/খামির/ময়ান (নানা প্রকারের পুরি, রোল, সমুচা ও সিঙ্গারা বানাতে পারেন খুব সহজেই))
– পুর (রেসিপিঃ রোল বা সমুচা ফিলিং (পুর))
– ভাঁজার জন্য তেল
– আঠা (সামান্য এক/দুই চা চামচ ময়দা বা আটা কড়াইতে সামান্য পানি দিয়ে গরম করে এই আঠা বানাতে হয়, যা রোল বা সমুচায় মুখ জোড়া দিতে ব্যবহার করা হয়)
প্রনালীঃ
প্রথমে এই ধরনের খামির বানিয়ে নিন। লিঙ্ক উপরে দেয়া আছে বা রেসিপিঃ ডো/খামির/ময়ান (নানা প্রকারের পুরি, রোল, সমুচা ও সিঙ্গারা বানাতে পারেন খুব সহজেই)
এই রকম একটা পুর বানিয়ে নিন। লিঙ্ক উপরে দেয়া আছে বা রেসিপিঃ রোল বা সমুচা ফিলিং (পুর)
মুল রান্নাঃ
খামির থেকে ছোট গোলা নিয়ে এভাবে রুটি বেলে নিন।
পাশাপাশি তাওয়া গরম করে রাখুন, রুটি বেলেই তাওয়াতে দিয়ে সামান্য সেঁকে নামিয়ে রাখুন। (এটা রুটিকে একটু শক্ত এবং না লেগে যাবার জন্যই করা হয়ে থাকে, নিছে এই রূপ না সেঁকেও বানিয়ে দেখিয়ে দেয়া হয়েছে)
এর পর পুর দিন এবং ভাজটা দেখুন।
সাইডে ভাঁজ দিয়ে রোল করে ফেলুন।
পেঁচিয়ে নিন।
আঠা দিয়ে মুখ জোড়া লাগান।
ব্যস সাজিয়ে খোলা প্লেটে রাখুন। (এভাবে বানিয়ে ফ্রীজে রেখে কয়েকদিন পরেও ভেঁজে খাওয়া যায়)
এবার তেল গরম করে ভেঁজে ফেলুন, ডুবো তেলে ভাঁজতে হবে।
ভাঁজাটা কেমন মচমচে রাখবেন সেটা নিজেই সিদ্ধান্ত নিন। হলে তুলে গরম বা ঠান্ডা পরিবেশন করুন।
যে কোন সসের সাথে পরিবেশন করতে পারেন। শিশুরা বা মেহমানদের জন্য এটা একটা মজাদার রান্না। আশা করি ছেলে বুড়ো সবাই পছন্দ করবেই!
প্রথমে না ভেঁজেও রোল বানানো যেতে পারেঃ দেখুন –
রুটি বেলে তাতেই পুর দিয়ে রোল করে নিতে পারেন।
রুটি প্রথমে তাওয়ায় সামান্য সেঁকে নিলে রোল ভাল হয়, না ভাজলেও চলে।
তবে সাথে সাথে না ভাজলে সংরক্ষনের জন্য রোল বানিয়ে তাও গরম তাওয়ায় সেঁকে নেয়া যেতে পারে। আর সাথে সাথে ভাজলে তো কথাই নেই।
একদিন বানিয়ে কয়েকদিন বের করে ভেঁজে ভেঁজে খাওয়া যেতে পারে।
দারুন স্বাদের এই খাবারটা আমি মনে করি একটু সময় সাপেক্ষ হলেও বাসায় করা দরকার। সামান্য বা এর চেয়েও কম পুর দিয়ে এমন একটা নন হাইজেনিক রোল দোকানে কমের পক্ষে ৪০ টাকা বা তারো বেশি দামে বিক্রী হয় অথচ ঘরে একটু সময় নিয়ে বানালে অনেক সাশ্রয় ও স্বাদের খাবার জুটে যেতে পারে।
* রোল গুলো ডিমের তরলে চুবিয়ে বেড্রক্রাম গুলিয়ে আরো ড্যাশিং রোল ভাঁজা যেতে পারে।
* বিফ না দিয়ে যারা নিরামিশ পছন্দ করেন তারা শুধু ভেজেটেবল দিয়ে বানাতে পারেন।
* শিশুদের স্কুলের টিফিনে একটা মজাদার আইটেম হতে পারে।
সবাইকে শুভেচ্ছা।
কৃতজ্ঞতাঃ মানসুরা হোসেন
আমি কখনোই বাসায় এর জন্য রুটি বেলি না, স্প্রিং রোল শীট দিয়ে কাজ চালিয়ে নেই, তবে একটা ভালো বুদ্ধি দিয়েছেন, এখন থেকে একসাথে বেশি করে বানিয়ে ডিপে রেখে দিব!!
অনেকে এই রোল এইরকম রুটি না বানিয়ে পাটিসাপটা পিঠার মত চাপাতি বানিয়ে সেটা দিয়ে বানান আর আমরা বাইরে যে ভেজিটেবল রোল খাই সেটা এই প্রসিডিউর এই করা হয়!!
দারুণ হইছে!! শুভেচ্ছা
(আমার আর ছয় মাস পরই এইচএসসি পরীক্ষা, এইজন্য এখন আর রান্নার সময় পাইনা, নেটেও বসতে পারি না, তাই ট্যাব দিয়ে সাইট দেখে গেলেও কমেন্ট করা হয়না, আমার জন্য দোয়া করবেন)
LikeLike
ধন্যবাদ ভাতিজা।
তোমার কমেন্ট গুলো সব সময়েই আমাকে অনুপ্রাণিত করে। যাই হোক, আগে পরীক্ষার ভাল প্রিপারেশন নাও, এখন আর ব্লগ বা ফেসবুকে না থাকাই ভাল। সময় নষ্ট না করাই মঙ্গল। একটা মার্ক বেশী পেলেও সেটা তোমাকে কয়েক হাজার ছাত্র থেকে তোমাকে এগিয়ে দিবে। সুতারাং আগে পড়াশুনা।
দোয়া করি। নেটে বেশি আসার দরকার নেই।
শুভেচ্ছা।
LikeLiked by 1 person
Good job brother. Nice.
LikeLike
ধন্যবাদ বোন।
আমরা আছি আপনাদের সাথেই। আশা করি আপনিও আমাদের সাথে থাকবেন।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
অনেক ভাল, আমি বাসাই চেষটা করে দেখবো।
LikeLike
আমি একটা বিদেশী প্রতিষ্ঠানে কাজ করি,আমার রান্নার করার অনেক শক তাই আপনার সাইতের এক জন নিয়মিত পাঠক,আমি মনে করি আপনার রেসেপি বর্ননা,এবং ছবি সহ পরিবেশনা এটা আসলেই আমাদের মত যারা আনারি তাদের জন্য, নেটে যত রান্নার সাইট আছে তার মধ্য সেরাদের সেরা!!!!!!
LikeLike
ধন্যবাদ ভাই।
আপনি আমার প্রচেষ্টা সঠিক ধরেছেন। আমি এক সময়ে প্রবাসী ছিলাম, রান্না না জানার কারনে অনেক আজে বাজে খেয়েছি বা না খেয়েও থেকেছি!
হ্যাঁ, আমার ধারাবাহিক ছবি এবং বর্ননা আশা করি সবাইকে হেল্প করবেই।
শুভেচ্ছা, আশা করি মাঝে মাঝে দেখে যাবেন।
LikeLike
সাহাদাত ভাই,আমিও অনেক দিন প্রবাসী ছিলাম,আপনার মত রান্না না জানার কারনে অনেক আজে বাজে খেয়েছি,নিজের রান্না নিজে না খেতে পেরে, নিজের রান্না করা খাবার ফেলেও দিয়েছি,কত রাত পাউরুটি খেয়ে কাটিয়েছি তার কোন হিসাব নেই,তারপর ও রান্না শিখতে পারি নাই,কিন্তু এখন আপনার সাইট রান্না ও গল্প ফলো করার পরে মনে হয় রান্না করা অনেক সহজ,ভাই আমার প্রবাস জীবনের সময় যদি এমন একটা রান্নার সাইট থাকত তবে আমার প্রবাস জীবন আরও সুন্দর হত।
ধন্যবাদ আপনার এই প্রচেষ্টাকে,সেলুট!!!!!!!!
LikeLike
ধন্যবাদ তামিম ভাই,
আমার মাথায় এটা সারাক্ষনই কাজ করে। প্রবাসী ছাড়া আমাদের দেশে ব্যচেলর ও মেসে থাকা ছেলে মেয়েদেরও এই একই সমস্যা হচ্ছে। এদিকে না খেয়ে থাকা যায় কিন্তু কাউকে আবার কিছু বলাও যায় না! তবে আমি মনে করি রান্না ছেলে মেয়ে সবার জানা দরকার, অনেকটা সাঁতার বা ড্রাইভিং জানার মত। খাবার যেহেতু নিজের জন্যি তাই রান্নাও নিজে করা দরকার। অন্যের হাতের বাজে খাবার খাওয়ার চেয়ে নিজে চেষ্টা করে দেখলে মন্দ কি!
আসলে রান্না শুধু চায় ভাল্বাসা এবং ধৈর্য! রান্নাকে ভাল্বাস্লে রান্না ভাল হতে বাধ্য।
হ্যাঁ, আমিও যদি প্রবাসে এমন একটা সাইট পেতাম হয়ত এখনো প্রবাসী হয়েই থাকতাম! হা হা হা…
শুভেচ্ছা নিন। আশা করি এবার রান্না জম্বে।
LikeLike
Dont know why I found this site so late. However, I followed this recipe & it was WOW! Simply WOW! Thank You so much!
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ বোন।
আমাদের আনন্দ হচ্ছে এই ভেবে যে, আপনি আমাদের দেখতে পেয়েছেন। এখন পর্যন্ত প্রায় ৯০০ রেসিপি বা রান্না বিষয়ক গল্পে আপনাকে পেয়ে আমরাও আনন্দিত। আশা করছি আগামীতে আমাদের সাথে থাকবেন।
যে কোন বাংলা খাবারের নাম লিখে সার্চ দিলে নেটে আমাদেরই দেখিয়ে দেয় এটার পিছনে আপনাদের ভালবাসাই!
শুভেচ্ছা নিন।
LikeLike