গ্যালারি

রেসিপিঃ আটার রুটি (সকালের নাস্তায় প্রিয় খাবার)


কয়েকদিন আগের কথা, ফেবুর মেসেজে একজন রেসিপি লাভার বোন আমাকে জানালেন, “ভাইয়া আমি নুতন সংসার করছি, অনেক কিছু রান্নাই আপনার সাইট দেখে করেছি, সামান্য কিছু অভিজ্ঞতা ছিল এবং আপনার সাইট দেখে এখন বেশ ভাল রান্নাই করতে পারি। তবে সকালের নাস্তায় প্রায় পাউরুটি খেয়ে দিন কাটাচ্ছি, যদি আপনি রুটি বানানোটা দেখিয়ে দিতেন তবে খুশি হতাম”।

কানাডা থেকে আর এক বোন জলি লিখেছিলেন, “ভাইয়া এখানে যদিও হাতে রুটি বানানোর কথা চিন্তা হয় না তবুও মাঝে মাঝে ইচ্ছা হয়। আশা করি রেসিপিটা দেখিয়ে দেবেন। খুশি হব”।

এর আগে এক বোন কমেন্টেও রুটি বানানো দেখিয়ে দেয়ার রিকোয়েষ্ট করেছেন, কমেন্ট খুঁজে এই বোনটাকে বের করতে হবে (রুটি বানানোর রেসিপি দিতে এটাই সম্ববত প্রকাশ্য রিকোয়েষ্ট)। রুটি বানানো রেসিপিতে দিতে হবে এটা আমি ভাবি নাই, তবে থাক না, সব কিছুরই রেসিপি থাক, মন্দ কি। কারো না কারো কাজে লাগবেই। এই দুনিয়ার একজন মানুষের কাজে লাগলেও এই পোষ্ট সার্থক বলে মনে করবো।

আমরা ঘরে সকালের নাস্তায় যে সাধারন রুটি খাই তা আসলে তেমন কোন কঠিন কাজ নয় বটে! তবে রুটি বেলা মানে গোল করে তোলাটাই হচ্ছে মুল ব্যাপার। আমি মনে করি, রান্না যেমন একটা অভিজ্ঞতা তেমনি রান্নার এই সকল কাজও সেই রকম। আপনি আজ করছেন, হচ্ছে না, ওকে! কাল করলে দেখবেন ঠিক হয়ে গেছে। তবে প্রতিটা কাজে একটা নিয়ম বা তরিকা আছে, সেটা বুঝে গেলেই হল! আমি নিজেও এখনো রুটি বেলে গোল করতে পারি না, মানে অন্যকাজ করি কিন্তু বেলার কাজটা করি না, আগামীতে আরো ভাল করে শিখে নেব।

চলুন দেখে ফেলি, যদিও সাধারন এবং তবে ব্যাপারটা হচ্ছে ভালবাসার! তবে রুটি এখন আর গরীবের খাবার নয়, ধনীদের খাবার!

উপকরণঃ
– আটা, পরিমান মত (কাপ হিসাবে নিতে পারেন)
– লবন, পরিমান মত (এক কাপে এক চা চামচের চার ভাগের একভাগের মত লাগে, তবে কমেই শুরু করে পরে কাই হয়ে গেলে মুখে দিয়ে লবন ঠিক করে নিতে পারেন।)
– পানি, পরিমান মত (কুসুম গরম)

প্রনালীঃ (ছবি দেখেই আশা করছি সব চোখের সামনে চলে আসবে)

আটা নিন। লবন দিয়ে দিন।


কুসুম গরম পানি আস্তে আস্তে দিন এবং একটা দজি (কাঠের বা অন্য চামচ টাইপের হলেও চলবে) দিয়ে নাড়াতে থাকুন। (অনেকে অবশ্য ঠান্ডা পানি দিয়েও করে থাকেন)


এভাবে নাড়াতে থাকুন আর পানি দিন। কিছুটা ঠান্ডা হয়ে গেলে হাত দিয়ে মলে মিশিয়ে নিন।


যত ভাল মিক্স হবে রুটি তত ভাল হবে। (আজকাল এই কাজের জন্য ছোট বড় মেশিন পাওয়া যাচ্ছে)


এবার প্রয়োজনীয় সাইজের টুকরা করে নিন।


এভাবে আরো মিলিয়ে গোল করে আটার গুড়া দিয়ে, বেলুন দিয়ে বেলে নিন।


অভিজ্ঞতা থাকলে গোল হবে নতুবা কিছু এদিক সে দিক হতে পারে। ব্যাপার না!


এবার তাওয়া গরম করে তাতে রুটি শেকে নিতে হবে।  রুটি উল্টাতে খুন্তি ব্যবহার করতে হবে।


এক পিট সামান্য হলে অন্য পিট উলটে দিতে হবে।


কাপড় দিয়ে এই রকম একটা বল বানিয়ে চাপ দিলেই ফুলে উঠবে। কাজটা করতে সামান্য সাবধানতা জরুরী। (তবে দুই চুলা হলে অন্য এক চুলায় লোহার তৈরি গ্রীল থাকলে তা দিয়েও রুটি শেকে ফুলিয়ে নিতে পারেন।)


ব্যস।


হয়ে গেলে তুলে জমিয়ে নিন।

* এমন করেও কাজ চালাতে পারেন! (চোরাই পদ্ধতি! হা হা হা)

ছবি দেখে বুঝে নিন।


ছবি কথা বলেছে!


আগের মতই!


আহ!


কি দারুন দেখতে!


টেবিলে নিয়ে চলুন। যা ইচ্ছা তা দিয়ে খেতে পারেন, ডিম পোস থেকে শুরু করে কষা গোশত!


রুটি দিয়ে নাস্তা করে এক কাপ চা পান মনে দারুন আনন্দ দেয়!

সবাইকে শুভেচ্ছা। আনন্দে কাটুক আমাদের সবার জীবন।

কৃতজ্ঞতাঃ মানসুরা হোসেন

21 responses to “রেসিপিঃ আটার রুটি (সকালের নাস্তায় প্রিয় খাবার)

  1. আমার বাসায় কয়েক বছর আগে একটি মেয়ে এসেছিলো, যার বাবা মা কেউ ছিলোনা। শিশুবেলা থেকে অনাদর আর অবহেলার মধ্যে বড় হয়েছিলো, তাই সে শিক্ষার আলো থেকে অনেক দূরেভ ছিলো, গৃহকর্মীর কাজ করলেও তাকে কেউ রান্না বান্নার কাজ তেমন শিখায়নি। কাজেই সে রুটি বেলতে পারতোনা। সে যে রুটি বেলা জানেনা তাও কাউকে জানায়নি। শুধু আমার সন্তানদের মাকে বলেছিলো, আপনারা রুটি কেমন করে বানান আমাকে একবার দেখিয়ে দিন। একবার দেখলেও বানান ততো সহজ! তারপরো সে বানিয়েছে! একদিন ভোরে রান্না ঘরে গিয়ে দেখি সেও আপনার চোরাই পদ্ধতি ব্যবহার করছে! পরে অবশ্য শিখে ফেলেছিলো যেমন করে সবাই বানায়!

    Like

  2. kai ta makhanor somoy hate alpo ektu tel nie kichukkon moyan korle nile ruti belte kosto kom hoy,ruti ta sundor hoy.

    Like

  3. সুলতানা জামান

    আপনার এই রেসিপি পোষ্ট দেখে না হেসে পারলাম না।

    Like

  4. আটা মাখানোর মেশিন কোথায় পাওয়া যায়? জানালে উপকার হতো!

    Like

  5. উদ্রাজি ভাই, লোমশ হাতটা কার? 😀

    Like

  6. সুলতানা জামান

    আমার রুটি ফুলে উঠে কম, কি করলে সব রুটিই ফুলিয়ে তুলতে পারবো?

    Like

  7. এটা আমার শাশুড়ী মার style।আমি আটা গরম পানিতে সেদ্ধ করে নেই, রুটি নরম হয়।

    Liked by 1 person

  8. প্রেশাল রুটি মেকার।
    ১।প্রেশাল রুটি মেকাররে ইচ্ছে মত মোটা পাতলা,বড়,ছোট, করা যায়।২। সেদ্ব আঠা ও চালের রুটি খুব ভাল হয়।
    ৩।পুরি,লুচি ও নকশি পিটার রুটি খুব ভাল হয়।
    মূল তালিকাঃ মেহগু = ১৫০০৳ থেকে ২৫০০৳ পযন্ত। মহেগনি ও শিল কড়ই = ২০০০৳ থেকে ৩৫০০৳ পযন্ত।
    বিঃ দ্রঃ হোম ডেলিভারী দেওয়া হয়, (শুধু মাএ ঢাকা ও নারায়নগ্জ সিটিতে।র্চাজ = ঢাকা দঃ ১০০৳,ঢাকা উঃ১৫০৳, নারায়নগ্জ ১৫০৳।
    মোবাঃ01918035696,01768998251

    Liked by 1 person

  9. বিগত ৫ বছর হল আমি লন্ডনে থাকি। যখন আসি, তেমন কিছুই জানতাম না। ফাস্টফুড খেয়েই দিন পার করতে হত। উদারজীর এর সাইট আমাকে আজ প্রায় সকল রান্নায় পারদর্শী করে তুলেছে। আজ বিদেশের মাটিতে বসেও মায়ের হাতের স্বাদ পাই। অঙ্ক ধন্যবাদ আপনাকে ভাই। বেচে থাকুন আরও কোটি কোটি বছর।

    Liked by 1 person

  10. আচ্ছা রুটি কিভাবে নরমাল ফ্রিজে রাখলে তিন চার দিন পর খাওয়া যাবে

    Liked by 1 person

  11. ভাইয়া আমার রুটি অনেক শক্ত হয়…অনেক চেষ্টা করছি বাট নরম হয় না কি করব?

    Like

  12. মেসে থাকি ব্যাচেলর…… কিছুই রান্না করতে পারি নাহ……বেশিরভাগ সময় বাহিরের খাবার খেতাম…..
    কিন্তু ইতিমধ্যে এই সাইট দেখার পর…. একটু আদটু শিখছি……. Thanks a Lot……

    Liked by 1 person

  13. সত্যি ই অসাধারণ আপনি এবং আপনার হাতের কাজ।

  14. রুটি তৈরী করাটা বেশ ঝামেলার যখন সেটা ট্রেডিশনাল ভাবে বেলন পিড়ি দিয়ে তৈরী করা হয়।
    তবে এই ” ইজি রুটি মেকার” এ অনেক সহজে খুব কম সময়ে সুন্দর গোল রূটি তৈরী করা যায়। এটা অনেক বেশি সময় বাচায়।
    https://www.facebook.com/EasyRutiMaker

    Liked by 1 person

[প্রিয় খাদ্যরসিক পাঠক/পাঠিকা, পোষ্ট দেখে যাবার জন্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা। নিম্মে আপনি আপনার মন্তব্য/বক্তব্য কিংবা পরামর্শ দিয়ে যেতে পারেন। আপনার একটি একটি মন্তব্য আমাদের অনুপ্রাণিত করে কয়েক কোটি বার। আপনার মন্তব্যের জন্য শুভেচ্ছা থাকল। অনলাইনে ফিরলেই আপনার উত্তর দেয়া হবে।]