গ্যালারি

রেসিপিঃ কচুর চড়া ভর্তা (মজাদার আইটেম)


অনেক দিন ধরে ভর্তা বানাই না! আজ কয়েকদিন ধরে এমনি একটা আলাদা কিসিমের ভর্তা খেতে ইচ্ছা হচ্ছিলো। কিন্তু কি দিয়ে কি করা যায়। কয়েকদিন আগে দেখলাম স্ত্রী চিংড়ি দিয়ে একটা ভর্তা বানিয়েছেন, যার রেসিপি আগে থেকেই আছে। ফলে নুতন এবং সহজ এবং স্বাদের কিছু খুঁজতে হল।

গতদিন রাতে বাসায় ফিরতে বাজারে চক্কর দিতে গিয়ে দেখলাম, কচুর অনেক ছড়া উঠেছে (এটাকে অনেকে কচুর মুখিও বলে থাকেন) এটা দিয়ে অনেক হোটেলে ভর্তা বানাতে দেখি (হোটেল গুলোতে অনেক প্রকারের ভর্তা হয় ফলে ছড়া দিয়েও এক প্রকারের ভর্তা বানাতে হয়) ফলে এক কেজি কিনে নিয়েছিলাম। আজকাল বাজারে তরুতরকারীর দাম আকাশ ছোঁয়া! এই সাধারন কচুর ছড়ার কেজি ৬০ টাকা! টাকা মনে হয় আজকাল গাছে ধরে এবং টাকা মানেই গাছের পাতা! পাঁচশত বা হাজারি নোট ভাঙ্গালেই আর নেই!

এক সময় ছিলো এই কচুর ছড়া কেহ খেতে চাইত না, এখন এটা হিট! যাই হোক আগেই বলে নেই ইলিশ মাছ কিংবা চিংড়ি মাছ দিয়ে এই ছড়ার ঝোল রান্না মারাত্বক সুস্বাদু! (রেসিপি আছে)


চমাড়া ছিলে ছড়া অবশ্যই যে কোন রান্নায় সিদ্ধ (ফুল সিদ্ধ) করে পানি ফেলে দিতে হয়। জংলী কচু হলে গলা ধরার চান্স থাকবেই, ফলে সিদ্ধ করে পানি ঝরিয়ে নিলে কচুর কষ বের হয়ে যায় এবং গলা ধরে না। তবে অবশ্যই জাতের কচুর ছড়া হতে হবে। দোকানীকে জিজ্ঞেস করেই কেনা ভাল।

যাই হোক, চলুন রান্না দেখে ফেলি! খুব সাধারন এবং সহজ করে দেখানো হয়েছে। এর চেয়ে সহজ করে আর কি করে দেখানো যায়! আমি মনে করি এই ভর্তা বানানো দেখে যে কেহই আজই রান্নায় আগ্রহী হবে এবং রান্নাঘরে প্রবেশ করবেই!

উপকরণঃ
– ৩০০ গ্রাম ছড়া (কেটে কুটে যা সিদ্ধ করে যা হয়, ৪/৫ জনের জন্য যথেষ্ট, ঝাল বেশি দিলে আরো অনেকেই খেতে পারবে!)
– পেঁয়াজ কুঁচিঃ মাঝারি দুইটা
– কাঁচা মরিচ কুঁচিঃ ঝাল বুঝে কয়েকটা, ঝাল চাইলে বেশি দিবেন নতুবা কম দিয়ে চালাবেন
– সরিষার তেলঃ তিন টেবিল চামচ (লাগলে সামান্য পরেও দেয়া যাবে)
– লবনঃ পরিমান মত (দুই ধাপে)
– ধনিয়া পাতার কুচিঃ ইচ্ছামতন!

প্রস্তুত প্রনালীঃ (ছবি কথা বলে)

ছবি ১, কড়াইতে তেল গরম করে তাতে সামান্য লবন যোগে পেঁয়াজ ও মরিচ কুঁচি ভেঁজে নিন।


ছবি ২, নাড়ান, আগুন মাঝারি।


ছবি ৩, ভাঁজুন।


ছবি ৪, পেঁয়াজ কুঁচির রং হলদে হয়ে আসবে।


ছবি ৫, এবার সিদ্ধ করে পানি ঝরিয়ে রাখা ছড়া গুলো দিয়ে দিন। (ছড়া সিদ্ধ হয়ে নরম হয়ে থাকবে)


ছবি ৬, মিশিয়ে নিন। আগুন কম থাকবে।


ছবি ৭, এবার ঘুটনি দিয়ে ভাল করে কড়াইতে ঘুটিয়ে মিশিয়ে নিন। আগুন কম হবে।


ছবি ৮, এবার প্লেটে তুলে নিন, ধনিয়া পাতার কুঁচি নিন।


ছবি ৯, মিশিয়ে নিন। হাতে মলে মিশাতে পারলে আরো স্বাদ হবে! তবে আপনি চাইলে চামচ দিয়েই কাজ চালিয়ে নিতে পারেন।


ছবি ১০, ভাল করে মিশান।


ছবি ১১, লবন স্বাদ দেখুন, লাগলে দিন। আমার কাছে একটু তেল কম মনে হওয়াতে সামান্য আরো সরিষার তেল যোগ দিয়েছি।


ছবি ১২, ব্যস পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত।


ছবি ১৩, গরম ভাতের সাথে অসাধারন লাগবে।


ছবি ১৪, যাই হোক, আমি সাদা ভাত না থাকায় ভাতের চালের খিচুড়ির সাথেই টেনেছি, মধ্যবিত্ত জীবন, চুপচাপেই দিন যায়! একবেলা পেট পুরে খেতে পারলে মুখে বলি, আলহামদুলিল্লাহ! দারুণ স্বাদ।

এবার রেসিপি দেখে আপনিই বলুন, এর চেয়ে আর সাধারন ভর্তা আর কি হতে পারে? কি একবার রান্না করে দেখবেন তো?

সবাইকে শুভেচ্ছা।

4 responses to “রেসিপিঃ কচুর চড়া ভর্তা (মজাদার আইটেম)

  1. দেখে অনেক ভালো লাগলো।
    বৌ গেছে দেশের বাড়ি।
    আমি চেষ্টা করে দেখি কেমন রান্না করতে পারি।

    Liked by 1 person

  2. কচুর চড়া রুই মাছ দিয়ে রান্না করবো কি kore

    Liked by 1 person

[প্রিয় খাদ্যরসিক পাঠক/পাঠিকা, পোষ্ট দেখে যাবার জন্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা। নিম্মে আপনি আপনার মন্তব্য/বক্তব্য কিংবা পরামর্শ দিয়ে যেতে পারেন। আপনার একটি একটি মন্তব্য আমাদের অনুপ্রাণিত করে কয়েক কোটি বার। আপনার মন্তব্যের জন্য শুভেচ্ছা থাকল। অনলাইনে ফিরলেই আপনার উত্তর দেয়া হবে।]