গ্যালারি

আড্ডাঃ শেফ’স টেবিল, মাদানী এভিনিউ, বেরাইদ (Chef’s Table, Madani Avenue, Beraid)


হোটেল রেষ্টুরেন্টে খেতে কে না পছন্দ করে! এর উপর যদি একই তলায় বা একই আঙ্গিনায় যদি নানান প্রকারের খাবারের ৩০/৫০টা খাবারের দোকান থাকে এবং একই সাথে সব খোলা এবং একই রকমের সার্ভ, তবে তো জমে উঠেই! পরিবারের সবাই যদি আলাদা আলাদা মেনু পছন্দ করে তাতে কারো আপত্তি থাকে না, খেতে যেয়েও স্বাধীনতা! আহ, এমন পরিবেশ দেখলে বলতে ইচ্ছা হয়, ‘বাহ সেলেমান বাহ’! জ্বী আপনাকে অবশ্য ‘বাহ সেলেমান বাহ’ বলার দরকার নেই, এখন দিন পালটে যাচ্ছে, এই ঢাকা শহরেই এখন এমন অনেক ক্যাম্পাস বা ফুড কোর্ট গড়ে উঠেছে, আপনি আপনার পরিবার পরিজন নিয়ে এই সব ফুড কোর্টে যেতেই পারেন এবং পরিবারের সবাইকে বলেই পারেন, খেয়ে নে সেলেমান, যা পারিস! তবে শর্ত একটাই, আপনার পকেটে টাকা থাকতে হবে, সাধারন যে কোন ডিশ বা রেগুলার মিল ভ্যাট দিয়ে ৬৫০ বা আশে পাশে হবে আর যে কোন প্লটার নিলে সেটা ভ্যাট সহ ২০০০ টাকা বা আশে পাশে থাকবে! এক প্লেট দই ফুচকাও তিনশত টাকার আশে পাশে হবে, কম না!

যাই হোক, খাবারের দাম এবং সরকারের ভ্যাট নিয়ে গত ১০/১২ বছরে অনেক লিখেছি, কাজের কাজ কিছু হয় নাই। যারা আমাকে চিনেন, তারা নিশ্চিত মনে করতে পারবেন। আমাদের দেশে খাবারের দাম পরিমান এবং গুনের চেয়ে সব জায়গাতেই অনেক বেশি, প্লাস আমরা খাবার খেয়ে পনর পারসেন্ট হারে যে ভ্যাট দেই তাও সরকার পুরো পায় কি না আমি এই বয়সেও নিশ্চিত হতে পারি নাই। আমরা যে ভ্যাট দেই তা সরকারের কোষাগারে সম্পূর্ন যায় কি না বা কিভাবে যায় তা আমি এখনো নিশ্চিত নই। তবে এই ভ্যাটের টাকা যে প্রকাশ্যে এই দোকান মালিকেরা আমাদের থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে তা বুঝতে বাকী নেই, ওনাদের লাভের উপর লাভ, ফলে বছর ঘুরতেই উনারা নুতন দোকান খুলতেই পারেন! সরকারের যদি লজ্জা থাকে তবে নিশ্চয় কোন উপায় বের করে আমাদের নিশ্চিত করবে যে, আমাদের দেয়া টাকাটা সরকার নিশ্চিতভাবেই পাচ্ছে! আর যদি সেটা না করতে পারে তবে সরকার যেন এই টাকা আর না নেয়! সম্প্রতি কোটি কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকির কথা পত্রিকায় দেখেছি, ঢাকা চট্রগ্রামের হোটেল, রেশটুরেন্ট্র খবর নিশ্চয় আপনারাও দেখেছেন। বলার যেন আমাদের আর কিছুই এই!আফসোস!

যাই হোক, মন খারাপের কথা মনে না করেই চলি। চলুন আমাদের শহরের উত্তরে গড়ে উঠা নুতন শহরের কথাই বলি! বসুন্দরা আবাসিক এলাকার পিছনে, নুতন বাজার থেকে মাদানী এভিনিউ নামের একটা বড় রাস্তা আজ বেশ কয়েক বছরে বেশ জমে উঠেছে, এটা ১০০ফিট রাস্তা নামেও পরিচিত। এই এলাকা আমার কাছে নুতন নয়, আগে থেকেই চিনি, বেশ কয়েক বছর আগেও গিয়েছি। ঢাকা শহরের কাছে গ্রামীন এলাকা বা ইউনিয়ন পরিষদ হলেও এখন আর সেই আগের চেহারা নেই। মানুষ খাল বিল ভরাট করে এপার্ট্মেন্ট বানিয়ে নিচ্ছে, পাশাপাশি আবাসিক এলাকা হিসাবেও গড়ে উঠছে! নানান আবাসন কোম্পানী গুলো প্লট বানিয়ে দারুন ব্যবসা করে যাচ্ছে, বিশেষ করে বসুন্দরা বিরাট মেলা বসিয়েছে। আমি নিজেও এই সব এলাকা বেশ পছন্দ করি, শান্ত এবং নিরিবিলি জীবন যাপনে এই সব এলাকা মন্দ নয়! এমন কোন শান্ত এলাকাতে আমিও বসবাসের জন্য চলে যেতে পারি একদিন!

আবারো যাই হোক, আপনারা গুলশানে শেফ’স টেবিলের নাম শুনেছেন বা অনেকেই গিয়েছেন, ঢাকার মাঝারি মধ্যবিত্ত পরিবার গুলো এই সব খাবারের দোকানের খুব খবর রাখেন, সেই হিসাবে আমাদেরও এটা সেটার খবর রাখতে হয়! গত কয়েকদিন আগে বড় ছেলে জানালো, শেফস টেবিলের আর একটা শাখা বুরাইদে বা বেরাইদ এলাকাতে খোলা হয়েছে এবং বেশ সুন্দর পরিবেশ। কি আর করা, আজকাল তো আর তেমন কোথায় যাচ্ছি না, ফলে এমন খবর শুনলে মন তো যেতে চাইবেই! চলুন আমাদের সাথে আপনাদেরও নিয়ে যাই। অনেক ছবি থেকে বেছে বেছে কয়েকটা ছবি নিয়ে ব্লগ লেখা কঠিন কাজ, তবুও চলুন, ছবি দেখি, সাথে কথা তো আছেই।


ছবি ১, শুক্রবার বলে রাস্তাঘাটে ভিড় কম ছিলো, নুতন বাজারের ইউটার্ন দিয়ে এসেই মাদানী এভিনিউ বা ১০০ফিট রাস্তায় সোজা।


ছবি ২, আমাদের উবার চালক ভাইকে মানচিত্রে পারদর্শী মনে হল না, বুলেট তার মোবাইলে বলে বলে নিয়ে যাচ্ছিলো!


ছবি ৩, এমন স্থাপনার দেখে পরান জুড়ায়! হ্যা, এটা একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস, খোলামেলা জায়গা, বিরাট খেলার মাঠ। আহ, এই সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান ভাল হলে তো দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা কোথায় কোন আকাশে যেত! এটা সম্ভবত UIU, পুরা অর্থ জানতে হলে কিছু সময় দিতে হবে!


ছবি ৪, কোন ধনী ব্যক্তি এমন বাড়ী বানাচ্ছেন, এমন জায়গাতে! অসাধারন।


ছবি ৫, শেফস টেবিলের প্রবেশ!


ছবি ৬, দোতালায়!


ছবি ৭, মেনু সিলেকশন চলছে।


ছবি ৮, খাবারের অর্ডার চলছে।


ছবি ৯, এই কোর্ট সাইডের পাশে এমন খেলার মাঠ এবং একটা শিশুদের পার্ক দেখলাম। শিশুদের পার্কে প্রেবেশ ৩০০টাকা আর খেলার মাঠ পুরোই দিন হিসাবে ভাড়া দেয়া হয়। দেশের বিভিন্ন বড় বড় গ্রুপ গুলো ভাড়া নিয়ে আনন্দ করে। বিশেষ করে এমপ্লোইদের আনন্দে কোম্পানীর লাভ হয়, ওরা কাজে বেশী মনোযোগী হয়।


ছবি ১০, বুলেটের খাবার সে নিজেই পছন্দ করছে।


ছবি ১১, ছোট ছেলে ব্যালট আজকাল নিজেই খেতে পারছে।


ছবি ১২, বড় ছেলে বুলেটের খাবার।


ছবি ১৩, ম্যাডামের পছন্দ ছিলো বোনলেস চিকেন কাবাব, ভেজিটেবল ও রাইস। এই ডিসের আলাদা একটা নাম ছিলো, এখন মনে করতে পারছি না! আমার খাবার ছিলো পিজা, ছবি তুলতে ভুলে গেছি! হা হা হা…


ছবি ১৪, আইসক্রিম।


ছবি ১৫, সর্বশেষ দই ফুচকা।


ছবি ১৬, দই ফচকা, ইন্ডিয়ান খাবারের মেনুও আমাদের পছন্দের তালিকায় আসছে!


ছবি ১৭, বুলেট ব্যালট।


ছবি ১৮, হয়ত কোন কর্পোরেট অফিসের মধ্যকার ফুটবল খেলা চলছিলো। আহা, এমন মাঠে যদি নামতে পারতাম।


ছবি ১৯, নামফলক।


ছবি ২০, গুগল থেকে অনায়েসে আপনিও জায়গাটা বের করে নিতে পারেন। খুব চমৎকার জায়গা, সময় কাটাতে সারা দিনের জন্য চলে যেতে পারেন, যদি না তাড়া থাকে।


বিলের কাগজ গুলো এভাবে বাসায় নিয়ে এসে হিসাব করতে পারেন, কত টাকার খাবার খেলেন এবং কত টাকা ভ্যাট দিলেন! এবং ভ্যাটের টাকা গুলো সরকারের কাছে গেল কিনা ভেবে ভেবে সময় কাটাতে পারেন! ব্যস, এই তো!

শেফ’স টেবিল গুলশানের খাবার দাবারের এবং নানান কথার পোষ্ট দেখতে এখানে ক্লিক করে পোষ্ট দেখতে পারেন। সব সময়েই আমন্ত্রন জানাই আপনাদের, আপনাদের ভালবাসার অপেক্ষায় থাকি সব সময়েই! শুভেচ্ছা ও ভালবাসা জানবেন। এবং এই আশা করি, আমি যেমন একটা আনন্দের জীবন যাপন করি আপনারাও সবাই এমন একটা আনন্দের জীবন যাপন করবেন।

আবারো শুভেচ্ছা ও সালাম।

এই স্থানের ভিডিওতে আমন্ত্রন। আমার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবক্রাইব করে পাশে থাকার জন্য অগ্রীম ধন্যবাদ জানাচ্ছি। শুভেচ্ছা নিন।

5 responses to “আড্ডাঃ শেফ’স টেবিল, মাদানী এভিনিউ, বেরাইদ (Chef’s Table, Madani Avenue, Beraid)

  1. খুব সুন্দর আয়োজন। যারা ব্যাচেলর জীবনযাপন করেন তারা বেশি বেশি রেসিপি গুলো আয়ত্ত করতে পারেন। অনেজ অনেক রেসিপি আছে, আছে মজার মজার রান্নার ছবি।

    Liked by 1 person

  2. যাই হোক, খাবারের দাম এবং সরকারের ভ্যাট নিয়ে গত ১০/১২ বছরে অনেক লিখেছি, কাজের কাজ কিছু হয় নাই। যারা আমাকে চিনেন, তারা নিশ্চিত মনে করতে পারবেন। আমাদের দেশে খাবারের দাম পরিমান এবং গুনের চেয়ে সব জায়গাতেই অনেক বেশি, প্লাস আমরা খাবার খেয়ে পনর পারসেন্ট হারে যে ভ্যাট দেই তাও সরকার পুরো পায় কি না আমি এই বয়সেও নিশ্চিত হতে পারি নাই। আমরা যে ভ্যাট দেই তা সরকারের কোষাগারে সম্পূর্ন যায় কি না বা কিভাবে যায় তা আমি এখনো নিশ্চিত নই। তবে এই ভ্যাটের টাকা যে প্রকাশ্যে এই দোকান মালিকেরা আমাদের থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে তা বুঝতে বাকী নেই, ওনাদের লাভের উপর লাভ, ফলে বছর ঘুরতেই উনারা নুতন দোকান খুলতেই পারেন! সরকারের যদি লজ্জা থাকে তবে নিশ্চয় কোন উপায় বের করে আমাদের নিশ্চিত করবে যে, আমাদের দেয়া টাকাটা সরকার নিশ্চিতভাবেই পাচ্ছে! আর যদি সেটা না করতে পারে তবে সরকার যেন এই টাকা আর না নেয়! সম্প্রতি কোটি কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকির কথা পত্রিকায় দেখেছি, ঢাকা চট্রগ্রামের হোটেল, রেস্টুরেন্টে খবর নিশ্চয় আপনারাও দেখেছেন। বলার যেন আমাদের আর কিছুই এই! আফসোস! তবে বিলের কাগজ গুলো এভাবে বাসায় নিয়ে এসে হিসাব করতে পারেন, কত টাকার খাবার খেলেন এবং কত টাকা ভ্যাট দিলেন! এবং ভ্যাটের টাকা গুলো সরকারের কাছে গেল কিনা ভেবে ভেবে সময় কাটাতে পারেন! ব্যস, এই তো! যারা উদাহরণটা বুঝেন না, তাদের জন্য বলি, আপনি পরিবার পরিজন নিয়ে ধরি ৪০০০/-টাকার খাবার খেলেন, এতে আপনাকে ভ্যাট হিসাবে ১৫% হারে আরো ৬০০/- টাকা দিতে হবে (সার্ভিস চার্জ ধরলাম না, এটা কোথায় নেয় কোথায় নেয় না তবে যারা নেয় তাঁরা ১০% হারে নেয়, যেমন কেএফসি), মানে আপনি বিল দিবেন ৪৬০০/-টাকা। প্রতিদিন এভাবে প্রতিটা নাগরিক হাজার হাজার কোটি কোটি টাকা এরা নিচ্ছে কিন্তু সরকার পাচ্ছে কিনা তা জানার উপায় কোন উপায় নেই! আমার তো মনে হয় এই টাকা গুলো সঠিকভাবে নিতে পারলেই দেশ এমনিতেই ধনী রাষ্ট্রে নাম লিখিয়ে ফেলত!😞
    “https://www.facebook.com/udraji/posts/10215991578497231

    Like

[প্রিয় খাদ্যরসিক পাঠক/পাঠিকা, পোষ্ট দেখে যাবার জন্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা। নিম্মে আপনি আপনার মন্তব্য/বক্তব্য কিংবা পরামর্শ দিয়ে যেতে পারেন। আপনার একটি একটি মন্তব্য আমাদের অনুপ্রাণিত করে কয়েক কোটি বার। আপনার মন্তব্যের জন্য শুভেচ্ছা থাকল। অনলাইনে ফিরলেই আপনার উত্তর দেয়া হবে।]