আমাদের দেশে মাছ দিয়ে নানান তরকারী রান্না হয়ে থাকে। বিশেষ করে ইলিশ মাছ দিয়ে অনেক তরকারী রান্না হয় যা খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু। মাছের ঘ্রানের সাথে সেই তরকারী মুখে লাগে! তবে উন্নত দেশে মনে হয় না এমনি রান্না হয়ে থাকে! আমাদের দেশের এই সব রান্না প্রাচীনকাল (!) থেকে চলে আসছে তবে আমার কাছে মনে হয় এই সব তরকারী সাথে মাছ, এই রান্না গুলো কিছুটা সময় বাচানোর কৌশল! এমনি রান্না করলে এক তরকারী দিয়ে ভাত খেয়ে উঠা যায়। তরকারীর ঝোলে ঝালে একবেলা পার করে দেয়া যায়। আমাদের বাসায় এমনি রান্না প্রায় হয়ে থাকে! গত কয়েকদিন আগে আমি এমনি সাধারণ রান্না করেছি, আমার স্ত্রী বললেন, রান্নাটা ছড়িয়ে দাও! অবশ্য এই ছোট ইলিশ গুলো তিনি নিজেই কিনেছিলেন! আমি এই ছোট ইলিশ কিনে বাসায় ফিরলে তিনি কি বলতেন জানি না! থাক, জেনে আর কাজ নেই! এমনিতে স্বামীদের অনেক কিছুর খোঁজ নিতে নেই!
চলুন ছবিতে দেখি, ছবির সাথের বর্ননায় আশা করি আপনারা পুরো রেসিপি পেয়ে যাবেন। মাছ কেটে পানি ঝরিয়ে রাখুন, আলু পটল কেটে ধুয়ে হাতের কাছে রাখুন। রান্না শুরু করার আগেই কিছু কাজ করে নিতে হয় ফলে, সময় বাঁচে। মশলা সহ ভেজষ আগেই হাতের কাছে নিয়ে নিতে হয়। রান্নার সময় চুলার ধার ছেড়ে যাওয়া উচিত নয়, মশলা ভুনার সময় সামান্য অমনোযোগিতায় রান্না খারাপ হয়ে যেতে পারে। আরো বলি রান্না অনেকটা অংকের মত, এক অংক যেমন অনেকভাবে সমাধানে আসা যায়, রান্না তেমনি! আপনি এটা আগে, সেটা পরে দেন, ব্যাপার না। স্বাদ হবেই! তবে রান্না আপনার মনোযোগ চায়, ভাল রান্না চাইলে আপনাকে কৌশলী হতেই হবে, রান্না ভালবাসতেই হবে!
প্রণালীঃ ছবির বর্ননা দেখুন
ছবি ১, মাছ কেটে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন এবং সামান্য লবন এবং হলুদ গুড়া দিয়ে মাখিয়ে সামান্য সময় রেখে দিন।
ছবি ২, এবার একটা কড়াইতে তেল (বেশী তেলে নয়) গরম করে মাছ গুলো ভেঁজে নিন।
ছবি ৩, যে কোন ভাজিতে অধিক সতর্কতা দরকার। চুলা এবং মাছ থেকে একটা দূরে দাঁড়ান। এক পিট হয়ে গেলে অন্য পিট উলটে দিন।
ছবি ৪, হালকা ভাঁজা, এভাবে ভেঁজে তুলে রাখুন এবং চলুন মুল রান্নাতে যাই!
মুল রান্নাঃ
ছবি ৫, যে কড়াইতে রান্না হবে তাতে কয়েক টেবিল চামচ তেল নিয়ে গরম করে তাতে পেঁয়াজ কুঁচি, রসুন বাটা, কয়েকটা কাঁচা মরিচ দিয়ে ভাঁজুন। দুই চিমটি লবন দিতে ভুল্বেন না। লাগলে পরে দেয়া যাবে।
ছবি ৬, পেঁয়াজ কুঁচি হলদে হয়ে এলে মরিচ গুড়া এবং হলুদ গুড়া দিন এবং ভাঁজুন। মরিচের ঝাজ উঠার আগেই চুলা কমিয়ে দিন এবং
ছবি ৭, এক কাপ পানি দিন।
ছবি ৮, এবার মাঝারি আঁচে জ্বাল দিন। তেল উপরে উঠে আসবে। চুলার ধার ছেড়ে যাবেন না।
ছবি ৯, এবার আলু, পটল (যা আগেই কেটে রাখা হয়েছিল) দিন।
ছবি ১০, মিশিয়ে নিন। আরো এক কাপ পানি দিন, যা পরে ঝোল হয়ে যাবে।
ছবি ১১, এবার আগুন মাঝারি করে ঢেকে রাখুন।
ছবি ১২, মাঝে মাঝে তুলে নাড়িয়ে দিন কিংবা পাত্রের হাতল ধরে নাড়িয়ে দিতে পারেন।
ছবি ১৩, এবার সামান্য ভেঁজে রাখা মাছ দিয়ে দিন।
ছবি ১৪, আগুন মাঝারি আঁচে।
ছবি ১৫, ফাইন্যাল লবন দেখুন, ঝোল কেমন রাখবেন, সেটা আপনার ইচ্ছা। ব্যস, হয়ে গেল!
পরিবেশনাঃ একজনের জন্য!
ছবি ১৬, গরম ভাতের সাথে দারুন।
ছবি ১৭, আমি অবশ্য এই সব তরকারী রুটির সাথেও খেতে পারি!
সবাইকে শুভেচ্ছা। সাথে থাকুন, আমরা আসছি আরো আরো রান্না নিয়ে।
কৃতজ্ঞতাঃ মানসুরা হোসেন