গ্যালারি

রেসিপিঃ ভেন্ডি ভাঁজি (এই সাইটের প্রথম পোষ্ট, আজ ৭ম বর্ষে পড়ছে)


গল্প ও রান্না! আজ এই রেসিপি পোষ্টের ৭ বছর পুর্ন হল! আসলে আমি তখন নানান ব্লগে রেসিপি লিখতাম কিন্তু লক্ষ্য করলাম, কেহ কেহ যেন এই বিষয়টা নিয়ে একটু আতলামী করে, বিশেষ করে কিছু ছেলেকে দেখতাম রেসিপি পোষ্ট দেখলেই তাদের গা জ্বলত, এরা ঘরের খাবারের কোন ছবি ব্লগ বা ফেইসবুক, টুইটারে দেখলেই নেগেটিভ মন্তব্য করত! একটা ছেলে রেসিপি পোষ্ট লিখছে এটা তখন তারা ভাবতেই পারত না!(এদের বেশীর ভাগ ছিল নাস্তিক মাইন্ডেড এবং নিজদের প্রগতিশীল ভাবত, ব্লগ বা ফেইসবুকের পাতায় কেন রেসিপি বা খাবারের ছবি হবে এটা তারা মন থেকে মানতে পারত না! এখন অবশ্য এরাও স্ত্রী সন্তান নিয়ে খাবারের টেবিলে বসে পোষ্ট দেয়, স্ত্রীর হাতের রান্না চিংড়ি দিয়ে লাঊর ছবি এখন এরাও দিয়ে থাকে!)

মাঝে মাঝে এই সব ছাওয়ালদের সাথে মহা যুদ্ধে লিপ্ত হতাম এবং অনেক সময় মন খারাপ হলেও জিতে যেতাম, এদিকে ব্লগ ও ফেইসবুকে কয়েকজন বোন ছিল, যারা আমাকে সব সময়েই সমর্থন করত, ফলে একটা এডভান্টেজ পেতাম কারন এরা এই বোনদের কথার বাইরে যেতে সাহস করত না, কোন মহিলাকে নিয়ে এখনো আপনি যদি সামান্য উল্টা পালটা লেখেন তবে আপনার খবর হয়ে যাবে, এই নাস্তিকেরা তখন এটা বুঝত, ফলে ঝগড়া কমত। এদিকে আবার ব্লগ গুলোর মডারেটরদের দেখতাম, তারা ওদের পক্ষেই কথা বলছে! ফলে ওই সব ব্লগ থেকে মন উঠে যায় তবুও লিখতাম, আর এই দিকে এই ওয়ার্ডপ্রেস ব্লগে এনে একটা কপি রাখতাম, এই সাইট নিয়ে বলা চলে প্রথম ৩/৪ বছর তেমন প্রচার বা লিঙ্ক কোথায়ও পাবলিশ করি নাই! ব্যাকআপ রাখতে গিয়ে গিয়ে সাইটই এক সময়ে আমার প্রধান সাইট হয়ে গেল! আমি তখন বুঝে গেলাম, আমি যাদের জন্য লিখি তাদের আমি এই সাইটে আনতে পারবো এবং গুগল বেইজড সার্চ হলে আমি আমার এই সাইটেই তাদের নিয়ে আসতে পারবো। ফলে তখন থেকে এই গল্প ও রান্না’ই আমার প্রধান সাইট হয়ে গেল। আজ এই সাইটের প্রথম পোষ্টের (সাইটের জন্ম আরো আগে) ৭ বছর পার হতে চলল! এখন আর রেসিপি অন্য কোন বাংলা সাইটে লেখি না, এখানেই লিখি এবং আমি যাদের জন্য লিখি তারা এখানেই এসে দেখে যান! এযাবৎ প্রায় ১০০০ বেশি রেসিপি ও লেখা লিখে ফেলেছি!

আমি কাদের জন্য লিখি! আমার মুলত টার্গেট হচ্ছেন যারা রান্না শিখতে চান, প্রবাসী, ব্যচেলর ভাই বোন বন্ধুগন! আমি ছবি সাজিয়ে রান্না চোখের সামনে হাজির করতে চাই, ফলে তিনি যেন রান্না করতে পারেন! কিংবা বলা চলে আমি যারা রান্না করতে চান তাদের আগ্রহী করে তুলি! ব্যস! রান্না হচ্ছে ভালবাসা, আপনি যত রান্না করবেন ততই ভালবাসা বেড়ে যাবে এবং আপনার রান্না সুস্বাদু হতে বাধ্য! নিজের উপর উদাহরণ দেই, এখন আমাকে রান্না করতে আমার স্ত্রীই ডেকে নেন, বলেন, সব যোগাড় আছে রান্না বসাও! এই কথাটা কিন্তু তিনি একদিনে বলেন নাই, আমার চেষ্টা, রান্নার প্রতি ভালবাসা তাকে এই কথা বলতে বাধ্য করিয়েছে! যদিও স্বামী হিসাবে রান্নাঘরে টিকে থাকা আমার জন্য সহজ ছিল না! মুখ চোখ বন্ধ করে আমাকে টিকতে হয়েছে! হা হা হা…। দুনিয়া এত সহজ নয়! আমি প্রায় একটা কথা বলি, বাংলাদেশে ছেলেরা রান্নাঘরে প্রবেশ করতে চান না বা রান্না করেন না ইত্যাদি অভিযোগ আছে বটে তবে পাশাপাশি যদি স্ত্রী স্বামীকে ভালবেসে একটু সুযোগ দেয় তবে ঘর সংসার বা রান্নাবান্না মহব্বত হিসাবে ধরা দিতে বাধ্য! স্ত্রীরা, মায়েরা, বোনেরা এখনো ছেলেদের রান্নাঘরে পছন্দ করেন না বা সহ্য করেন না! যদি আমি ভুল না বুঝে বা দেখে থাকি!

যাই হোক, লাভ ইউ গাইস! এত দিন আপনারা আমার সাথে ছিলেন, আমাকে উৎসাহ দিয়েছেন। আপনাদের ভালবাসায় ধন্য আমি। আমার দারা যদি আপনার সামান্য উপকার হয়ে থাকে তবেই আমি ধন্য। আমি আপনাদের দোয়া চাই, আপনাদের ভালবাসা চাই! আপনাদের সবাইকে শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ।

প্রায় প্রতিদিন এখন আমি নিজেও আমার এই সাইটে আসতে পারি না অফিস বা কাজে ব্যস্ত থাকতে হয় তবুও আমি দেখি প্রায় প্রতিদিন পনর শত থেক্লে দুই/আড়াই হাজার ভিঊ হয়, যা খুব একটা সাধারণ ব্যাপার নয়! প্রতিদিন গড়ে ৪০০/৫০০ ভিজিটর এই সাইটে আসেন এটাও সাধারণ ব্যাপার নয়! লাভ ইউ গাইস!

চলুন সেই পুরাতন রান্না, নুতন করে দেখি। এখানে ভেন্ডি বলছি, সেখানে ঢেঁড়স ভাঁজি হিসাবে থাকুক।  চলুন। খুব সহজ ও সাধারন রান্না, এই সব রান্না করেই রান্নার প্রতি আগ্রহ বা ভালবাসা জমাতে হয়। একবার ভালবাসা জমাতে পারলে, দুনিয়া জয় হয়েই যায়।

রান্না খুবই সহজ কাজ। দুনিয়াতে খাওয়া দাওয়ার উপরে আর কথা নাই। বেঁচে থাকলে খেতে হবেই! গত কয়েকদিন আগে ঢেঁড়স ভাজি দেখেছিলাম/করেছিলাম। ভাজি ভুজি রান্না করা সহজ কাজ। করলা ভাজির মতই। চলুন ছবি দেখি শিখে ফেলি। প্রবাসী ভাইদের জন্য এটা একটা চরম উপদেয় খাবার হতে পারে।

P1060758
ছবি ১, ধুয়ে ঢেঁড়স কেটে ঝুলিয়ে রাখুন। ঢেঁড়স কাটার দুই টেকনিক আছে সরাসরি (গোলাকার) কিংবা তেরচা (কোনাকুনি)। আপনার ইচ্ছা অনুযায়ী কাটুন।

P1060757
ছবি ২, কড়াইতে তেল দিয়ে পেঁয়াজ কুচি ও কয়েকটা কাঁচা মরিচ দিয়ে ভাল করে নাড়তে থাকুন। হালকা সোনালী রঙ এসে গেলে ঢেঁড়স ঢেলে দিন।

P1060759
ছবি ৩, খুন্তি দিয়ে ভাল করে উলট পালট করে ভাজতে থাকুন। আগুন মাঝারি আঁচে থাকবে।

P1060761
ছবি ৪, এই ফাঁকে পরিমান মত লবণ ছড়িয়ে দিন। এই ধরনের ভাজিতে লবণ পরে দেয়া ভাল। তাতে সব্জিতে মেখে যায় দ্রুত এবং মিশে ভাল।

P1060764
ছবি ৫, আপনি পোড়া পোড়া ভাজি না হালকা ভাজি চান এটা আপনার ইচ্ছার উপর নির্ভর শীল।

P1060766
ছবি ৬, ব্যস রেডী। ধোঁয়া উঠা ঢেঁড়স ভাজি।

P1060770
ছবি ৭, সহজে বেশ সুস্বাদু ভাজি। রুটি, পরোটা বা গরম ভাতের সাথে বেশ লাগে!

সবাইকে শুভেচ্ছা। আরো আরো রেসিপি নিয়ে আসছি, সাথে থাকুন।

কৃতজ্ঞতাঃ মানসুরা হোসেন

6 responses to “রেসিপিঃ ভেন্ডি ভাঁজি (এই সাইটের প্রথম পোষ্ট, আজ ৭ম বর্ষে পড়ছে)

  1. ফেবুতে এক বন্ধু যা লিখেছেন তা এখানে কপি করে রাখছি!

    Moontasir Bin Mostafa আজ থেকে ৮ বছর আগে নুডুলস ছাড়া কিছু পারতামনা বানাতে। সেসময় অসাবধানতা বশত ধোয়াওঠা গরম তেলের কড়াই নামাতে গিয়ে , তেল ফেলে হাত ভয়ানকভাবে পুড়িয়েছি। সুস্থ হয়ে ভয় না পেয়ে উল্টো রান্নাতে মনোনিবেশ করেছি। যখন ২০১১ তে প্রথম ঢাকায় এলাম তখন হরেক পদের রান্না ভয়ানক মিস করতাম। মা কে ফোন করে রেসিপি নিয়ে রান্না করতাম। এরকম সময়ে নেট ঘেটে একদিন আপনার সাইট দেখলাম। এরপর আর কষ্ট হয়নি তেমন। রান্নার প্রতি ভালোবাসা এতটাই বেড়ে গেলো যে চার্টার্ড একাউন্টেন্সি/ বিজনেস ট্র্যাক ছেড়ে এখন রান্নার উপর পড়ালেখা করছি!!

    পরিবর্তন কিন্তু হচ্ছে ভাই, অনেক ছেলেরাই এখন রান্নাকে পেশা হিসেবে নেয়ার চিন্তা করছে। তবে এই প্রো শেফ রা তাদের বাসার রান্নাঘরে আধিপত্য বিস্তার করতে পারেকিনা বলতে পারছিনা!! 😂

    Liked by 1 person

  2. Healthy and obviously testy .

    Liked by 1 person

  3. ভাইয়া আপনার গল্প ও রান্না দুটোই অসাধারণ লাগে… বিশেষ করে রান্নার ছবিগুলো..ছবিগুলোর কারনে আপনার সাধারণ রান্নাও অসাধারন লাগে…আমি‌ অনেক রান্না শিখেছি আপনার এখান থেকে… অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ভাই..

    Liked by 1 person

[প্রিয় খাদ্যরসিক পাঠক/পাঠিকা, পোষ্ট দেখে যাবার জন্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা। নিম্মে আপনি আপনার মন্তব্য/বক্তব্য কিংবা পরামর্শ দিয়ে যেতে পারেন। আপনার একটি একটি মন্তব্য আমাদের অনুপ্রাণিত করে কয়েক কোটি বার। আপনার মন্তব্যের জন্য শুভেচ্ছা থাকল। অনলাইনে ফিরলেই আপনার উত্তর দেয়া হবে।]