বেশ কিছু দিন বিয়ের দাওয়াত নাই, মাসে এক দুইটা না থাকলে ভাল লাগে না! আসলে বিয়ের খাবার বলে একটা কথা আছে, সেই খাবার মুখে না লাগলে আর চলে না! খাবারের রুচি একবার চড়ে গেলে আর নামানো যায় না! তবুও এমনি অবস্থার ভিতর দিয়ে একটা দাওয়াত পেয়ে ছিলাম অনলাইনে কিন্তু দাওয়াত আবার পিছিয়ে গেল! নাম বললে চাকুরী থাকবে না! কার বিয়ে, কোথায় বিয়ে! হা হা হা……। তবে বিবাহ তারিখ পিছিয়ে যাওয়াতে অবশ্য অংশ গ্রহনের ভাল সুযোগ পাওয়া গেল, যদি অন্য কোন ভেজাল না থাকে কিংবা ভুলে যদি না যাই! আমি মনের ভুলে বেশ কয়েকটা দাওয়াত খেতে পারি নাই! ঘটনা সত্য!
যাই হোক, এমনি একটা অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলাম। গতকাল রাতে রেল্গেইট পার হতে হতে কিছু কথা শুনলাম। আমার পিছনে হেঁটে আসা ভদ্রলোকেরা এমনি কথা বলে যাচ্ছিলেন। এক ভদ্রলোক জানালেন, এই মাসে বিয়ে খেতে তার সাড়ে চার হাজার টাকা গিয়েছে, উপহার এবং যাতায়ত ভাড়া মিলে। আমি কান খাড়া করে শুনে যাচ্ছিলাম! আমি আমার যুবকবেলা পর্যন্ত খালি হাতে অনেক বিয়ে খেয়েছিলাম (উপহারের টাকা না থাকায়) কিন্তু এখন কি আমার পক্ষে খালি হাতে উপহার ছাড়া বিয়ে খাওয়া সম্ভব? আসলে সময়। যাই হোক, তবে ধনী পরিবারের বিবাহে যেতে আমি আনন্দবোধ করি, কারন এখন কিছুটা হলেও ধনীরা আর উপহার চান না বা আগেই বলে দেন উপহার নয়, উপস্থিতি কাম্য! ধনীদের কাছে ভেড়ার জন্য উনারা এই সুযোগ দিয়ে থাকেন। এমনি এমনি ধনী আত্মীয়দের কাছে গেলে উনারা মনে করেন টাকা ধার চাইতে এসেছে, ফলে তেমন আর যাওয়া হয় না! আমি নিজে আমার ধনী আত্মীয়দের কাছ থেকে এমনিতেই দূরে থাকি, ভয়ে, যদি অসন্মানিত হই! অন্যদিকে আমি আমার সমমনা বন্ধু বা আত্মীয়দের বিয়েতে প্রয়োজনীয় উপহার নিয়ে সময় মত হাজির হই, এটাকে আমি দায়িত্ব মনে করি!
যাই হোক, পুরানো কিছু ছবি আজ হাতে পেলাম, তাই দিয়ে আজকের এই ব্লগ। গত কয়েক মাসে দুটো বিয়ে খেয়েছিলাম কিন্তু এই বিয়ে দুটো নিয়ে কোন ব্লগ লিখতে পারি নাই! ছবি গুলো পরেই আছে, আজ হাতে সময় পেলাম, আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম!
বিয়ে বাড়ির এভাবে সারি সারি রান্নার পাত্র দেখার মজাও আলাদা।
অনেক লোকের খাবার বিলি বন্টন খুব একটা সহজ কাজ নয়, প্রতিটা মুহুর্তেই এভাবে সাজিয়ে রাখতে হয়। ব্যবস্থাপকদের অনেক দুরদৃষ্টি থাকতে হয়।
টেবিলে টেবিলে একজন করে সাহায্যকারী রাখতেই হয়। এক সাথে পাঁচ শত লোকের খাবার সার্ভে অনেক বেশি ততপর হতে হয়।
এক বন্ধু আরেক বন্ধুকে খাবার তুলে দিয়ে সাহায্য করার নাম আন্তরিকতা!
আজকাল বিয়ে বাড়ির খাবার তেমন একটা খাওয়া যায় না, কিন্তু কেন? আমি এই প্রশ্ন অনেক শেফ/বাবুর্চী ভাইদের করেছি, তেমন ভাল উত্তর পাই নাই। হেসে কেটে পড়েন!
বিবাহের অনুষ্ঠানে আড্ডা একটা চমৎকার ব্যাপার, পুরানো বন্ধুদের দেখা হয়, নানান কথা হয়, এটার মধ্যে একটা আনন্দ আছে! আজকাল যে জীবন আমাদের, আমরা কি আর সেই সময় পাই!
বাংলাদেশে বিয়ের খরচটা কমানো দরকার! নাইলে এক সময় বাংলাদেশটা সৌদিআরব হয়ে পড়বে, ছেলে আছে টাকা নাই, বিয়েও নাই! তখন মেয়েরা গরীব ছেলে ধরবে এবং মেয়ে তার বাবা থেকে টাকা নিয়ে ছেলেকে দিবে এবং সেই টাকা আবার মেয়ের বাবার কাছেই আসবে/চলে যাবে! বাংলাদেশে অবশ্য সেই টাকা মেয়ের বাবার কাছে আর ফিরে আসবে না, ডেকোরেটরওয়ালা, বিদ্যুত বিলে কিংবা খানাপিনায় চলে যাবে!
আবার বিয়ে খেলে বিয়ের খাবারের ব্লগপোষ্ট লিখবো। দিন কাটুক সবার আনন্দে। সময় থাকতে বিয়ে করুন, বিয়ে না করলে আপনাদের অনেকের চাপাবাজী কমবে না! বিবাহিতরাই বুঝো বিবাহিতের ঝালা! কি যে দুনিয়া!
সবাইকে শুভেচ্ছা।
আজকাল বিয়েবাড়ির খাবার তেমন একটা খাওয়া যায়না বলছেন, কারণ হতে পারে দুটো ।
হয় খাবারে ঘি একটু বেশি দেয়া হয়েছে আর নয়তো বয়েসবাড়ছে তো, গুরুপাক খাবার আর কত সইবে এ শরীর !!
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ। হ্যাঁ, বয়স মানুষের জীবনে বড় ফ্যাক্টর। আমি সেই ফাঁদেই পড়েছি! তবে বিয়ের খাবার বলে কথা! এর মধ্যে একটা আলাদা আনন্দ আছে। শুভেচ্ছা নিন।
LikeLike