আজকাল রান্নার সময়, ইচ্ছা এবং কোন কিছুতেই আর মনোযোগ দিতে পারছি না! যে লক্ষ নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলাম, সেই লক্ষে আরো আগেই পৌছে যেতে পারতাম কিন্তু বিধাতার হয়ত সেই ইচ্ছা নেই! বাঙ্গালী মধ্যবিত্তের জীবন! এটা চাইলে সেটা হয়, সেটা চাইলে ওটা হয়, এইতো! এখন নিজকে শুধু টাকা রেজগারের মেশিন হিসাবেই ভাবতে পছন্দ করছি! অন্যদিকে এই মেশিন ভাবনা নিয়েও যে একটা সুখে আছি তা নয়, টাকা রুজি করতে গেলে যে সাধনা বা পরিশ্রম বা মনোযোগ সেটাও দিতে পারছি কোথায়? কোথায় যেন একটা বাঁধা এসেই পড়ে! স্ত্রী, পুত্ররা, আত্বীয় স্বজন বা কেহ না কেহ একটা বাঁধা নিয়েই আসছেই! এই বাঁধা গুলো এড়িয়ে সেই টার্গেটে পৌছাতে হলে সুপারম্যান হলেও সম্ভব নয় বলে এখন মনে হয়!
যাই হোক, আসলে আমি সাধাসিধা একটা জীবন ছেয়েছিলাম! মোটামুটি একটা মাঝারি অভাব ভাবনাহীন জীবন কাটিয়ে বৃদ্ধকালের আগেই গ্রামে চলে যাব এবং বাংলার রুপ দেখে দেখে সেখানেই পিতার কবরের পাশে শুয়ে পড়বো, এইতো! কিন্তু এখুনি আর হিসাব মিলে না, মিলাতে পারি না! মাঝে মাঝে মনে হয় সেই সাধারন ভাবনার কাছেও যেতে পারবো না, অকালে এই শহরেই আপনাদের ছেড়ে চলে যাব, সেই ঘিঞ্জি আজিমপুরের কবরের বস্তিতেই! সবই ভাগ্য!
আমি আসলে কি হতে ছেয়েছিলাম? যা হতে ছেয়েছিলাম, তা বললে এখন নিজেরই লজ্জা হয়! তবে আমি কখনো টাকাওয়ালা হতে চাই নাই এবং মন থেকে পছন্দ করি নাই, এটা চ্রম সত্য! আবার অভাবেও থাকবো এমন ভাবি নাই! কিন্তু এখন দেখি চাহিদার শেষ নেই, নিজের এবং চারিপাশের! তবে এখন এই বয়সে এসে মনে হয়, আমি এই মধ্যবিত্ত জীবন কখনো চাই না, অথচ এটাই ভাগ্যে লেখা আছে!
ওহ, আর একটা কথা আমি আসলে আপনাদের ভালবাসা ছেয়েছিলাম! শত বাঁধার মুখেও আমি সেটা পেয়েছি বলে যদি এখুনি মরে যাই তবে আফসোস অন্তত থাকবে না! সত্য বলে দেই, আমি আপাদমস্তক একজন লেখক হবার স্বপ্ন দেখেছি অন্তরে অন্তরে কিন্তু তার প্রতিফলন ফেলতে পারি নাই! রেসিপি লিখার ছলেবলে কিছু মনের কথা আপনাদের বলে যাবার চেষ্টাকে লেখক বলা যায় না, তবে প্রায় এই একহাজার (অদ্য পর্যন্ত) রেসিপি ও নানান খাবার সংক্রান্ত কাহিনীতে কিছু বলার চেষ্টাকে যদি আপনারা একটু ভিন্ন করে দেখেন তবে মনে কিছুটা শান্তি পাব!
প্রিয় রেসিপি প্রিয় পাঠক/পাঠিকা, ভাই/বোন, আপনাদের মন খারাপ করে দিলাম না তো? ভালবেসে যদি ক্ষমা করেন, তবে হাসুন, আনন্দ পাব! চলুন আজ, একটা মজার রান্না দেখি! খুব সাধারন এবং সহজ রান্না, তবে এমন রান্না আমাদের মধ্যবিত্ত ঘরে সাধারনত সব সময়ে হয় না, মাঝে মাঝে! যদি কখনো রান্নায় একটু বৈচিত্র চান, তবে এই রান্না করতে পারেন। গতকাল রাতে আমি রান্না করেছিলাম। পোলাউ, রুটি পরোটার সাথে আরাম করে খেতে পারেন!
উপকরন ও পরিমানঃ (এক বাটি)
– হাড় ছাড়া চিকেনঃ ৩০০ গ্রাম (অনুমানিক)
– রসুনঃ কোষ ১০০ গ্রাম
– গাঁজরঃ মাঝারি একটা (সামান্য সিদ্ধ করে নিতে হবে)
– ক্যাপ্সিকামঃ বড় একটা
– হলুদ গুড়াঃ আধা চা চামচের কম
– আদা বাটাঃ হাফ চা চামচ
(এক বাটি/হাফ কাপ মশলা)
– সয়াসসঃ এক টেবিল চামচ
– ওয়েষ্টার সসঃ এক টেবিল চামচ
– টমেটো সসঃ দুই টেবিল চামচ
– গোল মরিচ গুড়াঃ হাফ চা চামচ বা কম
– পানি (কয়েক চামচ)
(সাধারন অন্য কিছু)
– কাঁচা মরিচঃ ঝাল চাইলে বেশি দিতে পারেন
– লবনঃ পরিমান মত, দেখে শুনে
– তেলঃ কম তেলে রান্না করলে বেশি মনোযোগ লাগবে।
প্রনালীঃ
চিকেন ও গার্লিক প্রিপারেশন-
ছবি ১, হাড় ছাড়া চিকেন ছোট করে কেটে ধুয়ে নিন, এর পর কিছু রসুনের কোষ নিন, সাথে আদা বাটা ও হাফ চামচ হলুদ এবং এক চিমটি লবন দিন।
ছবি ২, ভাল করে মেখে কিছু সময়ের জন্য রেখে দিন।
মুল রান্নাঃ
ছবি ৩, তেল গরম করে নিন।
ছবি ৪, এবার চিকেন ও রসুন গুলো ভেঁজে নিন।
ছবি ৫, তেল একটু বেশী হলে ভাঁজাতে কোন টেনশন থাকে না!
ছবি ৬, ভাঁজুন।
ছবি ৭, ভাঁজাটা ভাল হলে চিকেনের স্বাদ বাড়বে!
ছবি ৮, এবার হাল্কা সিদ্ধ গাঁজর দিন এবং ভাঁজুন।
ছবি ৯, আগুন মাঝারি আঁচে রাখুন।
ছবি ১০, ভাঁজুন।
ছবি ১১, চিকেনের স্বাদ বা কেমন হল দেখে নিন।
ছবি ১২, এবার মশলা/ভেজষ দিয়ে দিন এবং মাঝারি আঁচে কিছুক্ষন রাখুন।
ছবি ১৩, এবার ক্যাপ্সিক্যাম দিয়ে দিন।
ছবি ১৪, কয়েকটা কাঁচা মরিচ চিরে দিন।
ছবি ১৫, মিশিয়ে নিন।
ছবি ১৬, সামান্য কয়েক মিনিটের জন্য ঢেকে রাখতে পারেন।
ছবি ১৭, ব্যস, ফাইন্যাল লবন স্বাদ দেখুন। লবন লাগলে দিন আর না লাগলে এগিয়ে চলুন। আগুন বাড়িয়ে ঝোল শুকিয়ে নিতে পারেন।
ছবি ১৮, পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত।
ছবি ১৯, আহ, কি মজাদার! পোলাউ, রুটি, পরোটার সাথে পরিবেশন করুন।
ছবি ২০, একবার বানিয়েই দেখুন না!
সবাইকে শুভেচ্ছা। আসছি আরো আরো মজাদার রান্না নিয়ে, আশা করি আমাদের সাথেই থাকবেন।
Bhaijan……….er rannar nam ফেব্যুলিয়াসো keno holo??
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ রেদোয়ান ভাই।
এটা আমার ছেলের দেয়া নাম, সে খেয়ে এই নামটা দিয়েছে! হা হা হা, আম নিজেও জানি না!
শুভেচ্ছা।
LikeLike
onek joss
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ সৌরভ ব্রাদার।
আশা করি মাঝে মাঝে এসে দেখে যাবেন।
শুভেচ্ছা নিন।
LikeLike
Vaia, etto recipe diachen j akhon r notun recipe pawar tagid nei….akhon wait kori apnar golpo gulor jonno 🙂
Lopa
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ বোন,
আসলেও আমিও এমন সমস্যায় পড়ছি, আর কি কি রান্না করা যেতে পারে, প্রায় সাড়ে আটশত রেসিপি, যাতে আমাদের বাসাবাড়ীর প্রায় সব রান্নাই হয়ে গেছে।
তবে বোন, আজকাল আর তেমন লিখতেও পারছি না, সময় এবং আর্থিক রুজির চিন্তায়। সারাক্ষন শুধু মাথায় টাকার চিন্তা! হা হা হা, সাহিত্য বা গল্প চিন্তা আর মাথায় আসেই না!
যাই হোক, তবুও চেষ্টা চলবে।
LikeLike
আজকে বানালাম। ছেলে আর তাঁর মা দুজনেই পছন্দ করসে। এটা আমার মনে হৈসে সস না মেশাইলেও টেস্ট হইতো। আমি প্রথমে চিকেন আর গার্লিকের সাথে কোরিয়েন্ডার স্টক মিশাইসিলাম।
LikeLiked by 1 person