দেশ বিদেশের প্রিয় পাঠক/পাঠিকা, রেসিপি লাভার্স সহ সকল ভিজিটরদের শুভেচ্ছা জানাই। আপনাদের ভালবাসায় আজ আমাদের ‘গল্প ও রান্না’ সাইটের আঠার লক্ষ হিট পার হয়ে গেল। আপনারা সবাই ভাল থাকবেন, এটাই আমার চাওয়া। চলুন সামান্য গল্প করা যাক, মানে রান্না নিয়ে কিছু কথা হয়ে যাক এবং এর পরেই যথারীতি থাকছে একটা সধারন রান্না। আগেই বলে নেই এটি আমার মায়ের হাতের রান্না। কত কম সময়ে, কম মশলায় এমন একটা মজাদার রান্না করে ফেললেন তা না দেখলে বোঝানো যাবে না! রান্না পুরাই অভিজ্ঞতা এবং ভালবাসা!
অনেকদিন ধরে রান্না নিয়ে কাজকারবার করে আমি এটা পরিষ্কার করে বলতে চাই, যাদের রান্না করতে ইচ্ছা হয়, তারাই রান্না করুন, ইচ্ছা ও রান্নার প্রতি কঠিন মায়া না থাকলে রান্না ছেড়ে দিয়ে অন্য কোন কাজে নিজের সময় দিন! দায়সারাভাবে রান্না, যাদের জন্য রান্না করবেন তাদের কথা চিন্তা না করা, রান্নাঘরে সময় কাটাতে অপছন্দ করা, ধৈর্য ও ভালবাসা না থাকলে রান্না না করাই ভাল! আপনি ঠেকায় পড়ে রান্না করে যাচ্ছেন মানে আপনি আপনার চারপাশের ভালবাসার মানুষদের মেরে ফেলছেন! আপনার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালবাসার কারনে হয়ত উনারা আপনাকে কিছু বলছেন না, তবে মনে মনে কিছু একটা অভিশাপতো দিয়েই যাচ্ছেন, অবশ্য এটা বোঝার মত মানষিকতা আপনার থাকতে হবে, বিবেকবোধ থাকতে হবে!
রান্না সহজ কাজ আবার কঠিন কাজও বটে! যেনতেন ভাবে রান্না করা যায় বটে তবে কখনো স্বাদ হয় না বা সেই রান্না খেয়ে কেহ মজাও পায় না! রান্নায় অমনোযোগিতার কারনে এই মশলা, সেই মসলা কম বেশি, লবন কম বেশি, পানসে বা গুরু, পোড়ানো, ঝাল বেশি ইত্যাদি হয়ে যাবেই! সাধারন একটা ভুলে পুরো রান্না ফালতু হয়ে যায়, খেতে বসে এমনি একটা কিছু যারা বোঝেন তাদের কাছে এই খাবারের আর কোন মুল্য থাকে না! পরিবারের শিশু, কিশোর, জোয়ান, বৃদ্ধ সব বয়সী মানুষ থাকেন তাদের পেটের অবস্থা সমান নয়, ফলে রান্না করতে বয়সের কথা ভাবতে হয়! নিজের পছন্দের বা নিজের ভাল ভেবে রান্না করলে সেই রান্না অন্য কারো জন্য উপযুক্ত হয়ে উঠে না! আর সবার কথা মাথায় রাখলে কিছুটা হলেও তেল, ঝাল, লবন ভেবে চিন্তে দিলে সবাই খেয়ে আনন্দ পাবে এবং তাদের শরীর ভাল থাকবে!
যাই হোক, কত কথা মনে আসছে কিন্তু যা চাইছি তা লিখতে পারছি না, তবে কথা একটাই, রান্না করলে ভালবেসে করুন! আজকাল ভাবনা চিন্তা গুলো আর কাগজে বা অনলাইনে নিয়ে আসতে পারছি না! লেখালেখির আর কোন পরিবেশ পাচ্ছি না, আশে পাশের সবাই কেমন যেন আর সামান্য সহযোগিতা করতেও রাজি নন, রান্না বা রেসিপির চেয়ে কিংবা অনলাইনে একটা রেসিপি পোষ্টের চেয়ে মনে হয় এই সময়ে যদি কিছু অর্থ উপার্জন হত! টাকাই যেন সবকিছু! একজন মননশীল লোক যদি সারাদিন এভাবে অর্থের কথা চিন্তা করে, তাকে দিয়ে আর শিল্প সাহিত্যের কি হবে! মাঝে মাঝে এই ভেবে ভয় পাচ্ছি, মরার আগে মরে গেলাম না তো!
যাই হোক, এটাই হয়ত জীবন! কখনো নরম কখনো গরম! আপনারা মনে কিছু নেবেন না, চান্স পেলে আপনাদের সাথেই কিছু কথা বা গল্প করে যাই, এছাড়া আর কি করার আছে! আমি একটু প্রান খুলে শ্বাস নিতে চাই, প্রান খুলে রান্না করতে চাই! তবে কোন প্রশ্ন করে আমাকে বিব্রত করবেন না, বুঝদার লোকের কাছে ইশারাই যথেষ্ট! হা হা হা… চলুন রান্নার কথাই বলি, সকল দুঃখ তুলে রাখি! মন খারাপ হলে, ভাল খাবার খেলে কিছুটা মনের অবসাদ দূর হয় বলে আমার বিশ্বাস!
উপকরণ ও পরিমানঃ (পরিমান আপনি নিজেও করে নিতে পারেন)
– নুতন ছোট আলু
– ডিম
– পেঁয়াজ কুঁচি
– রসুন বাটা
– হলুদ গুড়া
– জিরা গুড়া
– কাঁচা মরিচ
– লবন
– পানি
– তেল
– পাকা টমেটো
– ধনিয়া পাতার কুঁচি
– এলাচি, এক/দুইটা (ইচ্ছা)
– দারুচিনি, ১/২ টুকরা (ইচ্ছা)
প্রনালীঃ
আলু সিদ্ধঃ
ছবি ১, ময়মনসিংহের ছোট আলু।
ছবি ২, সিদ্ধ করার আগে আলু গুলো ধুয়ে নিন এবং এক চিমটি লবন দিয়ে পানিতে সিদ্ধ করুন। মাঝারি সিদ্ধ, না বেশী না কম!
ছবি ৩, সিদ্ধ হয়ে গেলে ঝাকুনিতে আলু রেখে ঠান্ডা হতে দিন।
ছবি ৪, ঠান্ডা হলে আলুর খোসা ছড়িয়ে নিন।
আলু ডিম সিদ্ধ দিয়ে কিছু কাজ করে নেয়া ভালঃ
ছবি ৫, অনুমান আপনি নিজেই করে নিন। দ্রব্য মুল্যের সাথে ব্যবহার চিন্তা করাও এক ধরনের কাজ এবং এটা একজন রান্নাকারীর বৈশিষ্ট্য হতেই হবে! (ডিম সিদ্ধ করার ছবি গুলো বাদ দেয়া হয়েছে, এটা নিজেই মাথায় তুলে নিন)
মুল রান্নাঃ
ছবি ৬, সামান্য লবন যোগে তেল গরম করে পেঁয়াজ কুঁচি ভাঁজুন, পেঁয়াজ কুঁচি হলদে হয়ে এলে রসুন বাটা দিন। এলাচি, দারুচিনি দিয়ে দিন।
ছবি ৭, রসুন মিশে গেলে জিরা গুড়া দিন।
ছবি ৮, কম আঁচে ভাঁজুন।
ছবি ৯, এবার হলুদ গুড়া দিন। ভাঁজুন।
ছবি ১০, এবার সিদ্ধ করে খোসা ছাড়িয়ে রাখা আলু গুলো দিয়ে দিন।
ছবি ১১, আগুন মাঝারি, ভাল করে মিশিয়ে ভাঁজুন সামান্য সময়।
ছবি ১২ম এবার এক/দেড় কাপ পানি দিন।
ছবি ১৩, আগুন কিছুটা বাড়িয়ে দিতে পারেন।
ছবি ১৪, এবার টমেটো দিন।
ছবি ১৫, সামান্য সময়ের জন্য ঢাকনা দিতে পারেন।
ছবি ১৬, এই রকম সুন্দর আলু ঝোল হয়ে যাবে! কয়েকটা কাঁচা মরিচ দিন, যেহেতু মরিচ গুড়া দেয়া হয় নাই, ফলে কেমন ঝাল রাখবেন সেটা ভেবেই কাঁচা মরিচ দিতে পারেন।
ছবি ১৭, আগুন মাঝারি রেখে এবার সিদ্ধ ডিম ফালি করে ছিটিয়ে দিন।
ছবি ১৮, ধনিয়া পাতার কুঁচি দিন।
ছবি ১৯, আগুন বাড়িয়ে দিলে ঝোল শুকিয়ে যাবে, তবে এটা আপনার ইচ্ছা। এই পর্যায়ে ফাইন্যাল লবন স্বাদ দেখুন, লাগলে দিন! চুলা বন্ধ করে কয়েক মিনিট ঢাকনা দিয়ে রাখুন, এতে তেল ভেসে যাবে, দেখতে সুন্দর লাগবে!
ছবি ২০, সরাসরি বাটিতে ঢেলে পরিবেশনের জন্য টেবিলে নিয়ে যেতে পারেন।
ছবি ২১, ছবি দেখে নিশ্চয় বুঝতে পারছেন, এই সাধারন রান্নাটা কত ভালবাসা দিয়ে করা হয়েছে! স্বাদের কথা কি বলবো, অপূর্ব!
সবাইকে শুভেচ্ছা। আশা করি সাথে থাকবেন, আমি আসছি আরো আরো মজাদার রান্না নিয়ে।
কৃতজ্ঞতাঃ ফিরোজা বেগম (আম্মা)
thanks
2015-11-20 1:44 GMT+06:00 “রান্নাঘর (গল্প ও রান্না) / Udraji’s Kitchen
(Story and Recipe)” :
> Shahadat Udraji (সাহাদাত উদরাজী) posted: “দেশ বিদেশের প্রিয় পাঠক/পাঠিকা,
> রেসিপি লাভার্স সহ সকল ভিজিটরদের শুভেচ্ছা জানাই। আপনাদের ভালবাসায় আজ আমাদের
> ‘গল্প ও রান্না’ সাইটের আঠার লক্ষ হিট পার হয়ে গেল। আপনারা সবাই ভাল থাকবেন,
> এটাই আমার চাওয়া। চলুন সামান্য গল্প করা যাক, মানে রান্না নিয়ে কিছু কথা হয়ে
> য”
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ বোন।
আপনারা আমাদের ভালবাসেন বলে আমরাও আছি আপনাদের সাথে। আশা করি আগামীতেও আমাদের সাথে থাকবেন। শুভেচ্ছা নিন।
LikeLike
শীতকালটা আসলেই ভালো কত রকম মজার সবজি আর নতুন আলু পাওয়া যায়।ধন্যবাদ ভাইয়া 🙂
LikeLiked by 1 person
আপনাকেও শুভেচ্ছা। হ্যাঁ, শীতের সময়টা আমাদের জন্য উপভোগ্য। ধন্যবাদ।
LikeLike