খোলা ঝাই পিঠা! নামটা অন্য এলাকায় কি বলে তা আমার জানা নেই। তবে আমাদের আবহমান গ্রাম বাংলায় সকালের নাস্তায় এই খাবার খুব জনপ্রিয়। চালের গুড়া এবং ডিমের সাথে সামান্য লবণ দিয়ে এই পিঠা তৈরী করা হয়। এই পিঠার বিশেষত্ব হচ্ছে এটা খালি খাওয়া যায় এবং ইচ্ছা করলে শুধু চিনি, যে কোন তরকারি বা শুধু চা দিয়েও খাওয়া যায়। আমাদের শহরে মানুষেরা আমরা যেমনি রুটি বা পরোটা খেয়ে থাকি তেমনি গ্রামের মানুষের জন্য এই খাবার একটা আলাদা আমেজ নিয়ে আসে। শীতের সকালে খেজুরের রসের রাব দিয়ে এই পিঠার স্বাদ ভুলে যাবার মত নয়। যারা জীবনে একবার খেয়েছেন তারা আশা করি আমার সাথে একমত হবেনই!
যাই হোক, আগেই বলে নেই, এটা আমার মায়ের হাতের তৈরি। আমার তাড়া ছিল, নিমিষে তিনি বানিয়ে আমাকে দিয়েছিলেন এই বলে যে, বাইরে যাচ্ছিস কিছু একটা মুখে দিয়ে যা! আপনিও দেখুন এবং একবার চেষ্টা করে দেখতে পারেন। এত সহজ রান্না আর কি হতে পারে। শুধু মাটির খোলা থাকলেই হল। গ্রামে গেলে আপনিও এটা সংগ্রহ করে নিতে পারেন!
চলুন দেখে নেই! আশা করছি, এই রেসিপি দেখার পর আপনার এই পিঠা খেতে (যারা এখনো খান নাই) ইচ্ছা হবেই। (পূর্বে অবশ্য এমনি একটা রেসিপি দেখিয়ে ছিলাম)
উপকরন ও পরিমানঃ (আপনি নিজেও অনুমান করে নিতে পারেন)
– চালের গুড়া, হাফ কাপ বা সামান্য বেশি
– ডিম, মুরগীর হলে ভাল, একটা
– লবণ, দুই চিমটি
– পানি(সাধারন ও সামান্য গরম), সাধারন তাপমাত্রার পানি দিয়ে কাই করে পরে সামান্য গরম পানি (মানে কুসুম গরম পানি দিয়ে কাই করতে হবে, কাইয়ের ঘনত্ব পানি তরলের চেয়ে বেশী হবে)
প্রনালীঃ (ছবি কথা বলে, তবে মোবাইল ক্যামেরার তোলা ছবি বলে রান্নার রং সুন্দর আসে নাই, বাস্তবে আরো চমৎকার ছিল।)
ছবি ১, চালের গুড়া, ডিম, লবন এবং পানি দিয়ে কাই বানিয়ে নিন। (কুসুম গরম পানি দিয়ে কাই করতে হবে, কাইয়ের ঘনত্ব পানি তরলের চেয়ে বেশী হবে)
ছবি ২, খোলা গরম করে নিয়ে এভাবে এক চামচ কাই দিতে হবে।
ছবি ৩, তারপর খোলার দুই পাশ ধরে নাড়িয়ে এভাবে গোল করে নিতে হবে।
ছবি ৪, এত গোল করে ফেলাও অভিজ্ঞতা।
ছবি ৫, আগুন মাঝারি বা কম।
ছবি ৬, একটা ঢাকনা দিয়ে মাত্র কয়েক মিনিট।
ছবি ৭, ব্যস খুন্তি দিয়ে তুলে নিন।
ছবি ৮, এই রকম একটা বাসের (সঠিক নাম বলতে পারছি না) ঝাঁজরিতে রাখলে ভাল, কিছুটা ঠান্ডা হয়ে ফুরফুরে হয়ে যাবে।
ছবি ৯, ব্যস, এভাবেই অনেক গুলো জমে যাবে।
ছবি ১০, দেখেই প্রান ভরে যায়!
ছবি ১১, আহ।
ছবি ১২, খালি কিংবা যে কোন তরকারীর সাথে এই পিঠা চলে। আমি চা দিয়ে খেয়েছি!
ছবি ১৩, ঠিক এইভাবে! স্বাদ, বলে বুঝানো যাবে না! সুতারাং সেই চেষ্টায় আমি যাচ্ছি না!
সবাইকে শুভেচ্ছা। আমি আসছি আরো আরো নুতন নুতন রেসিপি নিয়ে, আশা করি সাথে থাকবেন। আপনাদের ভালবাসাই কাম্য।
কৃতজ্ঞতাঃ ফিরোজা বেগম (আম্মা)
ঝাই পিঠাই তেল দিতে হয় কিনা একটু বলবেন ননস্টিকে কি বানাতে পারি
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ চমৎকার এক চিতই পিঠার রেসিটা শেয়ার করার জন্য ।
ইংরেজি গ্রামার বাংলায় শেখার এক মজার ওয়েবসাইট ।
LikeLike
সেরকম মজা😋😋!আমিওগ্রামে খেয়েছি।টাউনে অনেক চেষ্টা করেছি,কিন্তুু পারি না।এবার নিশ্চয় হবে!
LikeLiked by 1 person