যাই হোক, জীবনের কথা বলে আর কি হবে? দুষ্টু একটা! তবে এই জীবনকে বাঁচাতে হলে খেতেই হবে, খাবারের পূর্বে রান্না করতেই হবে। রান্না না জানলে কিংবা টাকা না থাকলে এই জীবনকে বাঁচানো মুশকিল! তাই চলুন, আজকে একটা রান্না দেখি। এর চেয়ে সহজ রান্না আর কি হতে পারে। আগেই বলে নেই, এই রান্নাটা নুতন মোরগ/মুরগী রান্নাকারীদের জন্য দেয়া হয়েছে। কারন রান্না করতে গেলেই প্রথমে যে রান্না প্রয়োজন তা হচ্ছে মাংশের কোন একটা আইটেম, এই আইটেম না থাকলে খাওয়া চলে না! আর মশলা, খুব কম মশলা দেয়া হয়েছে এবং যা দেয়া হয়েছে তা নিশ্চয় আপনাদের কিচেনে বা ফ্রীজে আছেই আছে!
চলুন দেখে ফেলি! কি আছে এই জীবনে। যারা এখন রান্না করছেন না, আসুন, দেখুন রান্না কত সহজ এবং কত সুন্দর। কত সহজে রান্না করা যায়। আপনি প্রবাসী হলে উপকরণ গুলো যে কোন সাধারন গ্রোসারী থেকেই কিনে নিতে পারেন। মনে রাখুন, রান্না হচ্ছে ভালবাসা! আপনি যাকে ভালবাসেন তাকে এই ভালবাসা দিয়েও জয় করতে হবে!
প্রয়োজনীয় উপকরনঃ
– চিকেন, এক কেজি (কিছু কম বেশী হবে বলে মনে হয়েছিল)
– পেঁয়াজ কুঁচি, মাঝারি ৩/৪টা
– আদা বাটা, দুই টেবিল চামচ
– রসুন বাটা, দুই টেবিল চামচ
– জিরা বাটা, এক টেবিল চামচ
– গরম মশলা (এলাচি কয়েকটা, দারুচিনি, লং কয়েক পিস)
– মরিচ গুড়া, বুঝে এক চা চামচ
– হলুদ গুড়া, এক চা চামচ বা সামান্য বেশি
– লবন, পরিমান মত (দিতে হবে দুই দফায়)
– কয়েকটা আস্ত কাঁচা মরিচ, রান্নার মাঝামাঝি সময়ে দিতে হবে
– তেল, ৪/৬ টেবিল চামচ (কম তেলে রান্না ভাল, তা ছাড়া চিকেনেও কিছু তেল বের হবে)
– পানি (দেড় কাপ, আগুন কম হলে পানি তেমন একটা লাগে না)
প্রস্তুত প্রনালীঃ (ছবি কথা বলে)
ছবি ১, পাতিলে তেল গরম করে হাফ চামচ লবন দিয়ে পেঁয়াজ কুঁচি ভাঁজুন।
ছবি ২, গরম মশলা দিন। ভাঁজুন।
ছবি ৩, এবার আদা, জিরা, রসুন বাটা দিন। ভাঁজুন।
ছবি ৪, হাফ কাপ পানি দিন। এবার কষিয়ে নিন। আগুন মাঝারি আঁচে থাকবে।
ছবি ৫, এবার মরিচ গুড়া ও হলুদ গুড়া দিন। মশিয়ে নিন।
ছবি ৬, তেল উঠে আসবে (কম তেলে রান্না করলে চোখে পড়বে কম)।
ছবি ৭, এবার মোরগের মাংশ দিয়ে দিন।
ছবি ৮, ভাল করে নাড়িয়ে মিশিয়ে নিন।
ছবি ৯, আগুন নিন্ম আঁচে থাকবে।
ছবি ১০, ব্যস, ঢাকনা দিয়ে দিন। মাংশ শক্ত হলে সময় লাগবে, নুতবা মিনিট ২০/২৫ লাগবে, আগুন কম থাকলে। তবে চুলার ধার ছেড়ে চলে যাবেন না, মাঝে মাঝে নাড়িয়ে দিতে হবে।
ছবি ১১, মাংশ শক্ত থাকলে হাফ কাপ গরম পানি দিতে পারেন (ঠান্ডা দিলেও কিছু যায় আসে না, আগুনের কাছে সবই সমান!)
ছবি ১২, ব্যস এবার কাঁচা মরিচ গুলো দিয়ে দিন। মিশিয়ে নিন।
ছবি ১৩, ফাইন্যাল লবন দেখুন। লাগলে দিন, না লাগলে ‘ওকে’ বলে আগে বাড়ুন।
ছবি ১৪, ঝোল কেমন রাখবেন তা নিজেই ভেবে নিন। যদি ঝোল শুকাতে চান তবে ঢাকনা তুলে আগুন বাড়িয়ে দিন। কয়েক মিনিটেই ঝোল কমে যাবে। চুলার ধার ছেড়ে যাবেন না! সামান্য ভুলে রান্না পুড়ে যেতে পারে!
ব্যস, এই তো, হাড়ি সহ টেবিলে নিয়ে চলুন। আপনার ঘর, আপনার সংসার, আবার আপনার রান্না, আপনাকে আবার কে কি বলবে? কার এত বুকের পাটা! না, রান্না ভাল হলে সবাই আপনার প্রসংসা করবেই। আর রান্না খারাপ হলে সামনে কিছু না বললেও পিছনে নিরবে একটা গাল দিবেই! হা হা হা, এটাই জগতের নিয়ম! ফলে রান্না ভালবাসুন এবং সুস্বাদু রান্না করুন। আমি আপনার সাথে আছি।
সবাইকে শুভেচ্ছা।
কৃতজ্ঞতাঃ মানসুরা হোসেন
হলুদ মরিচের মাপ ঠিক হয়নি ,এজন্যই মাংস ফ্যাকাসে হয়ে গেছে
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ রাফি ভাই।
এটা ক্যামেরা মানে লুমিয়া মোবাইলের দোষ! হা হা হা…
শুভেচ্ছা নিন।
LikeLike
Maybe due to lighting while taking the photo, the color of the curry seems to little bit mundane.
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ ব্রাদার।
আপনি সঠিক ধরেছেন। আমার ক্যামেরা নষ্ট হয়ে যাবার পর আমি এখন মোবাইল দিয়ে ছবি তুলি, ফলে ছবি গুলো ঠিক আসছে না। লুমিয়া সিরিজের ফোন, ফ্লাশ দিয়ে তুল্লে সব ছবি ফ্যাকাশে দেখা যায়, ফ্লাশ না দিলে হলদে হয়ে পড়ে।
শুভেচ্ছা নিন।
LikeLike
বেশ সুন্দর সহজ ভাষায় রেসিপি ! একদিন চেস্টা করতে হবে ,
(যেদিন বাসায় কেউ থাকবো না )
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ পাইলট ভাই।
আমি আপনার কাটুনের ভক্ত। আপনি দারুণ মজার মানুষ। রান্না জানলে আনন্দ আছে। আশা করি একদিন ট্রাই করবেন।
শুভেচ্ছা।
LikeLiked by 1 person
দারুন সহজ সরল রান্না । এই সপ্তাহের মধ্যেই রান্নাটা করব । তবে একটা কথা না বলে পারছি না –
আপনার প্রায় সব লেখাতেই একটা দুঃখের সুর জড়িয়ে থাকে । আপনার কষ্টটা অনুভব করতে পারি । কিন্তু এতটা হতাশ হবেন না । দেশে বিদেশে আপনার ও আপনার পরিবারের অনেক ভক্ত ছড়িয়ে আছে । সবাই আপনাকে মনে না রাখলেও অনেকেই আপনাকে মনে রাখবে চিরকাল । অাপনার এই ব্লগটার সন্ধান দিয়ে কলকাতায় অনেকের কাছ থেকে প্রচুর প্রশংসা কুড়িয়েছি (যার আসল প্রাপক কিন্তু আপনিই ।) । এমনকি অনেকে আপনার রন্ধন প্রণালী অনুসরণ করে দুর্দান্ত রান্না হয়েছে বলে আমাকে পেট পুরে খাইয়েও দিয়েছে । আপনার দৌলতে ফোকটে প্রচুর সাধুবাদ কুড়িয়েছে । তাদের বেশিরভাগ ই আমার মত বয়স্ক মানুষ ও কমপিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহারে সরগর নয । ফলে আপনার ব্লগে মন্তব্য করতে পারে না । তাদের অনেকেই নাতি-নাতনিদের বলে কয়ে আপনার ব্লগটা খুলিয়ে রন্ধনপ্রণালীটা মুখস্হ করে নেয় । বুঝতেই পারছেন কেন আপনার ব্লগে মন্তব্য এত কম ! আমি আপনার খুব সহজ সরল ও একান্ত মানবিকভাবে লেখার একজন ভক্ত । আপনার লেখা আরও অনেক অনেক লোক পড়ুক ও অনুসরন করুক ; এই কামনাই করি । আপনার পরিবারের সবার কুশল কামনা করি ।
LikeLiked by 2 people
ধন্যবাদ সমীর ভাই।
আপনার মন্তব্য পড়ে গত কয়েকদিন মন খারাপ ছিল তা এক মহুর্ত্তেই ভাল হয়ে গেল। আমি আসলে আমার কাজ করে যাচ্ছি, কোন কিছু পাবার জন্য নয়। আমি জানি বাংলাভাষায় এমন আর কোন সাইট নেই। বাংলাভাষাভাষি সারা দুনিয়া থেকে আমার এই সাইটে আসে, এটা আমাকে আনন্দিত করে। আমি তাদের জন্যই লিখি। আমার লেখা যদি কারো সামান্য কাজে লাগে তবে আমি ধন্য।
ওহ, হা, আমি হতাশাবাদীদের দলে নই। আমার হতাশা একটাই আমি আরো আরো লিখতে পারতাম, সেটা পারছি না বলেই। সময় বয়ে যাচ্ছে, অথচ আরো কত কি লিখার বাকী, এটাই আমাকে হতাশ করে দেয়। আমি একটু সময় চাই, যা চারদিকের পরিবেশ আমাকে দিচ্ছে না, এটাই আমাকে ভাবিয়ে তুলে। আমি এই বিষয়টাই তুলে ধরি, একটু ভিন্ন কৌশলে। হা হা হা… যাদের বলতে চাই, তারা বুঝতে পারে না। আমার সময় যে ফুরিয়ে যাচ্ছে, তাদের এটা মনে করিয়ে দিতে চাই।
আপনার এই কমেন্ট নিয়ে ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছি, আশা করি মনে কিছু নিবে না। আপনি যদি ফেসবুকে থাকেন, তবে আমাকে যোগ করে নিবেন।
আপনাদের মত ভাল মানুষদের দেখলে মন ভাল হয়ে যায়।
শুভেচ্ছা আপনাদের সবার জন্য। আমার চেষ্টা সার্থক তখনই, যখন কেহ রান্না দেখেই শিখে ফেলে। আবারো শুভেচ্ছা।
LikeLike