বাংলাদেশে এখন মধু মাস। চারিদিকে নানা ফলের সমাহার। বিশেষ করে রাস্তায় রাস্তায় নানান ফল দেখা যাচ্ছে। গ্রামের বাড়িতে গাছে গাছে নানান ফল। বিষয়টা বেশ আনন্দের। ফল মানুষের জন্য উপরওয়ালার একটা বিশেষ রহমত। উৎপাদক, বিক্রেতাগণ এই ফলে ভেজাল না মিশালে দাম সাধারন মানুষের নাগালের মধ্যেই থাকে। ফল ফলাদিতে যারা ভেজাল মিশায় তাদের আমি কঠিন শাস্তি দাবী করি সব সময়েই। বিষয়টা নিয়ে এযাবৎ অনেক লেখা লিখেছি। সরকার বাহাদুর কঠোর না হলে এই বিষয়ে চলবে না। সরকার বাহাদুরদের আমি খাদ্যে ভেজালে কঠোর হতে বলি।
বাহাদুর শাহ পার্কের চারিদিকে এভাবে ফলফলাদি নিয়ে বিক্রেতারা বসে আছেন। দেখতে ভাল লাগে।
যাই হোক, চলুন আজ আমের একটা মুখরোচক খাবার দেখাই, আঁচার! তবে এটা একটা এক্সক্লুসিভ রেসিপি কারন এতে বোম্বাই মরিচ দেয়া হয়েছে, শুধু যারা ঝাল পছন্দ করেন তারাই এই আঁচার বানাতে পারেন। আর যারা ঝাল পছন্দ করেন না, তারা মরিচ না দিয়ে সাধাসিধা ভাবে বানিয়ে নিতে পারেন, মজা কম হবে না। এই আঁচার যে কোন অনুষ্ঠানে বা শাহী খাবার দাবারের সাথে পরিবেশন করতে পারেন, লোকে খেয়ে বাহাবা দেবে। তবে মশলাপাতি সাধারন আঁচারের, যা আপনার হাতের কাছেই আছে বলে আমরা মনে করি। সরিষা এবং পাঁচফোড়ন কিনে বাসায় ফিরুন, ওহ, সাথে নিন কাঁচা আম এবং বোম্বাই মরিচ!
চলুন দেখে ফেলি। এই ধরনের আঁচার আগেও দেখানো হয়েছে। এবার আরো পষ্ট এবং সুন্দর, যা নুতন আঁচার রান্নাকারীকে আরো বেশী হেল্প করবে।
উপকরন ও পরিমানঃ (পরিমান আপনি নিজেও করে নিতে পারেন)
– কাঁচা আম, ৩ কেজি *আটি আম হলে ভাল, এতে আঁচার ভাল দেখায়, কিছু আম ছিলে এবং কিছু আম চামড়া সহ নিতে হবে, তা হলে আঁচার মাখা মাখা হবে
– বোম্বাই মরিচ, ৩০ টা (ঝাল বেশি চাইলে আরো দিন তবে সাবধান বেশি দিলে আর কেহ খেতেই পারবে না!)
– রসুন বাটা, ২ টেবিল চামচ
– সরিষা বাটা, ১০০ গ্রাম
– হলুদ গুড়া, ২ চা চামচ
– পাঁচ ফোড়ন গুড়া, ২ টেবিল চামচ
– সরিষার তেল, হাফ লিটার একটু কম
– লবন, ৩ টেবিল চামচ কম বেশি
প্রনালীঃ
লেহার কড়াইতে সরিষার তেল গরম করে নিন।
প্রথমেই রসুন বাটা দিন এবং ভাঁজুন।
এবার আম দিন।
একে একে মশলা গুলো দিন। (পাঁচফোড়ন ছাড়া)
বোম্বাই মরিচ দিন, লবন দিতে ভুলবেন না।
ভাল করে মিশিয়ে নিন। আগুন পূর্ন আঁচে থাকবে।
চলুক।
আগুন মাঝারি আঁচে নিয়ে আসুন।
অন্য একটা কড়াইতে পাঁচ ফোড়ন ভাঁজুন এবং পরে বাটায় পিসে গুড়া করে নিন। এখানে গুড়া করা দেখানো হয় নাই এবং পাঁচ ফোডন বেশী আছে।
আঁচারের অবস্থা এমনি এসে যাবে।
এবার পাঁচ ফোড়নের গুড়া ছিটিয়ে দিন।
চমৎকার ঘ্রান বের হবে।
ভাল করে মিশিয়ে নিন। বেশী গলিয়ে ফেলার দরকার নেই। স্বাদ দেখুন, লবন হল কিনা দেখুন! সাবধানে ঝাল অনেক! ব্যস, চুলা বন্ধ করে ঠান্ডা হতে দিন।
ঠান্ডা হলে কোটায় ভরে নিন, সাধারন ফ্রীজের চেম্বারে রাখলেও অনেক দিন থাকবে, খেতে মন চাইলে নিয়ে নিন। তবে পরিস্কার চামচে নিবেন, হাত লাগাবেন না, মুখ লাগিয়ে রাখুন। অনেকে বলেন আঁচার বেশী দিন রাখলে ফাঙ্গাস পড়ে যায়, আসলে ফাঙ্গাস পড়ার নানা কারন আছে। তেল একটু বেশী হলে, আঁচারে হাত না লাগালে, স্বাভাবিক ফ্রীজের তাপ মাত্রায় রাখলে কখনোই ফাঙ্গাস পড়বে না।
পরিবেশনা, এই সামান্য আঁচার কয়েকজন খেতে পারবে! হা হা হা, ঝাল বলে কথা!
সবাইকে শুভেচ্ছা। আমাদের সাথে থাকুন, আমরা আসছি আরো আরো মজাদার রেসিপি নিয়ে।
কৃতজ্ঞতাঃ মানসুরা হোসেন
(রংপুর থেকে এক বোন কিছুদিন আগে আমার উপর একটু রেগে যান এই বলে যে, আমাদের আঁচারের পূর্বের রেসিপি গুলোতে আমরা উপকরণ ও পরিমান দেই নাই! হা হা হা, আসলে কয়েকটা রেসিপিতে ইচ্ছা করেই এমন করে থাকি, যাতে যারা রান্না করবেন তাদের আগ্রহ বেড়ে যায়! যাই হোক, আশা করি আমাদের এই বোনটি এই রেসিপি পেয়ে খুশি হবেন এবং আমাদের উপর থেকে রাগ কমিয়ে ফেলবেন।)
অনেক সুন্দরভাবে লিখেছেন । ধন্যবাদ ।
ইংরেজি গ্রামার বাংলায় শেখার এক মজার ওয়েবসাইট
LikeLike