গ্যালারি

রেসিপিঃ পালং শাক রান্না (ঝোলে)


বাংলাদেশের বছরে প্রায় প্রতিটা দিনই দুঃখের দিন, কোথায়ও না কোথায়ও দুঃখের কিছু ঘটেই যাচ্ছে বা ঘটে গিয়েছিল! আমি আর কোন আশার আলোও দেখি না, প্রতিদিন রাস্তায় বের হলে শুধু মনে হয় যা ছিল তাও যাচ্ছে এবং এক সময়ে এর শেষ কি হবে! বিশৃংখলা, নৈরাজ্য, আইনের প্রতি বোধহীনতা, বিচারহীনতা, মানুষের নির্মমতা সব কিছু মিলিয়ে কোন কিছু আর অবশিষ্ট আছে বলে মনে হয় না! তবে আমি সব কিছুর জন্য সাধারন মানুষকে দায়ী করি না, দায়ী করি সরকারে থাকা শাসক গোষ্টীকে, যারা চোখের সামনে যা চাইছে তা করছে বটেই কিন্তু এমন ভাল কিছু করছে না, যা দেখে পুরা জাতি কিছুটা হলেও সভ্য হয়!

রেসিপি পোষ্ট করতে গেলে আমি নিজেই শরমিন্দা হয়ে পড়ি, তেমন একটা সেজে গুজে খাবারের ছবি তুলতে চাই না, যা দেখে আমাকে আপনারা ভুল বুঝতে পারেন, চেষ্টা করি কম টাকার সাধারন খাবার গুলোই আপনাদের সামনে হাজির করতে আর আমার উদ্দেশ্য তো আপনারা জানেনই, আমি চাই বাংলাদেশী সকল পুরুষ নিজেরা রান্না জানুক, রান্না করুক। যাই হোক, দেশের বেশীর ভাগ মানুষ ভাল খাবার খেতে পারছে না বা পায় না, মানুষ হিসাবে দুনিয়ার নানান দেশের মানুষ কি খাচ্ছে আর আমরা কি খাচ্ছি! আমাদের খাবার গুলো শুধু আমাদের বাঁচিয়েই রাখছে মাত্র! শরীরের জন্য যে পুষ্টি প্রতিদিন দরকার তা কি আমরা পাচ্ছি! না না না! ফলাফল, আমরা কোনমতে পঞ্চাশ পার করে রোগে, দুঃখে, শোকে প্রায় শেষ হয়ে পড়ছি! এই অবস্থা থেকে উন্নতির জন্য আমাদের দারিদ্রতা থেকে মুক্তি দরকার, সেটা কি হচ্ছে? আমি তো বাস্তবে সেটা চোখেই দেখি না! কাকে কি বলব! দুনিয়াতে কত দেশ দেখলাম, কত জাতি দেখলাম, এই দুঃখিনী বাংলা মায়ের মনে শান্তি দেখতে পেলাম না! এটা একটা আফসোস থেকে যাবে!

তবুও আমি বলে যাব, যতদিন বেঁচে আছি, আপনাদের মাঝে! কেহ আমার সাথে থাকুন আর নাই বা থাকুন! আমাদের শাক সবজি বেশি বেশি খাওয়া উচিত। সুযোগ পেলেই শাক সবজি রান্না করুন নিজ হাতে। পেট পুরে চারটে ভাত খান! মাছ মাংশ না পেলে কি! চলুন রেসিপি দেখে ফেলি!

উপকরনঃ (মাঝারি এক বাটি)
– শাক, দুই মুট (কেটে কুটে যা হয়, তবে শাক বাসায় নিয়ে কিছুক্ষন পানিতে ভিজিয়ে রাখা উত্তম, এতে পোকা মাকড় ও ধুলো বালি ঝরে যাবে তার পর পানি ঝরিয়ে বেছে নিন)
– চিংড়ি মাছ, এক মুট বা বেশী, আপনার ইচ্ছা
– পেঁয়াজ কুঁচি, মাঝারি তিন্টে, কম বেশী
– রসুন বাটা, এক চা চামচ
– মরিচ গুড়া, হাফ চা চামচ
– হলুদ গুড়া, হাফ চা চামচ
– লবন, পরিমান মত
– পানি, সামান্য বা হাফ কাপ
– তেল, ৬/৭ টেবিল চামচ, কম তেলেই রান্না ভাল।
– কয়েকটা কাঁচা মরিচ।

প্রস্তুত প্রনালীঃ (ছবি কথা বলে)

ছবি ১, শাক পরিষ্কার করে কেটে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে রাখুন। এই কাজটা রান্নার শুরুতেই করে ফেলুন।


ছবি ২, রান্নার পাত্রে তেল গরম করে তাতে সামান্য লবন যোগে পেঁয়াজ কুঁচি ভাঁজুন। কয়েকটা কাঁচা মরিচ দিন। পেঁয়াজ হলদে হয়ে এলে রসুন বাটা দিন এবং ভাঁজুন। এর পর সামান্য পানি দিন।


ছবি ৩, পানিতে হলুদ ও মরিচ গুড়া দিন এবং ভাল করে কষিয়ে  নিন।


ছবি ৪, এবার চিংড়ি মাছ দিন। (মাছ ছাড়াও রান্না করে দেখতে পারেন, মন্দ হবে না, মাছ না থাকলে রান্না করবেন না, এমন ভাবাই উচিত নয়)


ছবি ৫, মাধ্যম আঁচে রেখে তেল উঠিয়ে নিন।


ছবি ৬, এবার পালং শাল দিন।


ছবি ৭, ভাল করে মিশিয়ে নিন।


ছবি ৮, কম আঁচে মিনিট ১০/১২ রাখুন, শাঁকের রঙই বলে দিবে হল কিনা! এই অবস্থায় ফাইন্যাল লবন স্বাদ দেখুন, লবন লাগলে দিন। শাঁকের ঝোলটা কেমন রাখবেন সেটা আপনি নিজেই নির্ধারন করুন। ঝোল কমাতে চাইলে আগুন বাড়িয়ে দিন। তবে কিছুতেই চুলার ধার ছেড়ে যাবেন না!


ছবি ৯, ব্যস পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত।


ছবি ১০, অসাধারন। গরম ভাতের সাথে দারুণ আরাম লাগবে। যারা রুটি খেয়ে থাকেন, তারা রুটি দিয়েও চালান দিতে পারেন, ব্যাপার না!

সবাইকে শুভেচ্ছা। আমরা আসছি আরো আরো মজাদার এবং সহজ রান্না নিয়ে, আমাদের সাথেই থাকুন।

কৃতজ্ঞতাঃ মানসুরা হোসেন

1 responses to “রেসিপিঃ পালং শাক রান্না (ঝোলে)

[প্রিয় খাদ্যরসিক পাঠক/পাঠিকা, পোষ্ট দেখে যাবার জন্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা। নিম্মে আপনি আপনার মন্তব্য/বক্তব্য কিংবা পরামর্শ দিয়ে যেতে পারেন। আপনার একটি একটি মন্তব্য আমাদের অনুপ্রাণিত করে কয়েক কোটি বার। আপনার মন্তব্যের জন্য শুভেচ্ছা থাকল। অনলাইনে ফিরলেই আপনার উত্তর দেয়া হবে।]