নেটে থাকলে দুনিয়ার নানান প্রকারের খাবার দাবারের প্রনালী ও ছবি দেখা আমার বিশেষ শখ। কোথায় কি করে সময় কেটে যায় তা আমি নিজেও টের পাই না! সারা বিশ্বের মানুষ কখনোই একই খাবার খায় না এবং তা যদি হত তবে বিশ্বের চেহারা ভিন্ন হয়ে পড়তো। পরিবেশ প্রকৃতি এবং খাবারের সহজলভ্যতা এক অঞ্চলের মানুষের কাছে এক রকম। এই অঞ্ছলে মানুষ এটা পছন্দ করে, ওই অঞ্চলের মানুশ সেটা পছন্দ করে বলে দুনিয়ার খাদ্য পরিস্থিতি মোটামুটিও ভাল অবস্থায় আছে!
যাই হোক, আমি এই সাইটে মোটামুটি বিদেশী রান্না বা মশ্লায় রান্না এড়িয়ে চলি। কারন, আমি আমার এই সাইট চালাই, যারা নুতন রান্না করেন তাদের জন্যই। আমি মনে করি, সহজ রান্না গুলো দেখে আগ্রহ হবে এবং একদিন অভিজ্ঞতায় যা খুশি তা রান্না করতে পারবেন এই সাইটের পাঠক/পাঠিকারা। সহজ করে বা সহজ রান্না গুলো নিয়েই আমি কাজ করতে পছন্দ করি।
যাই হোক, কিছু বিদেশী রান্না যে করি নাই তাও নয় তবে সেই রান্নাকে আমি আমাদের দেশী কায়দা এবং মশলা দিয়ে করিয়ে দেখিয়েছি যাতে করে রান্না আরো সহজ হয়ে আমাদের কাছে ধরা দেয়। গত কয়েকদিন আগে মার্ক উইন্স (আমার দেখা এই দুনিয়ার একজন সেরা খাদ্য টেষ্টার) এর একটা থাই বিফ সালাদ রেসিপি দেখেছিলাম। আজ কাল তিনি শুধু হোটেলে খেয়ে ছবি আপলোড দিচ্ছেন না, এখন তিনি নিজেও রান্না শুরু করে দিয়েছেন। তবে তার পেঁয়াজ বা অন্যান্য কিছু কাটার হাত দেখলে বুঝা যায় তিনি এখনো এই বিষয়ে আনাড়ি! রান্না হচ্ছে অভিজ্ঞতা, অভিজ্ঞতায় সব কিছু মিলে। যাই হোক, মার্কের এই বিফ সালাদের রেসিপি দেখি এবং যা মনে গেঁথে ছিল, আজ সুযোগ পেয়েই বানিয়ে নিলাম। বিফ সালাদ, থাই স্টাইল! তবে আমি আমাদের কিছু মশলা চালান দিয়েছি। খেয়ে আমার ব্যাটারী বুলেট খুশি হয়েছেন, নিজকে ধন্য লাগছে!
চলুন দেখে ফেলি। খুব কঠিন নয়, আমি মনে করি ছবি দেখেই বুঝে যাবেন। আশা করি পরিবারের সবার জন্য একদিন রান্না করবেন এবং খেয়ে মজা লুটবেন।
পরিমান ও উপকরনঃ
(বিফ মেরিনেটেড)
– বিফ, ৪০০ গ্রাম, হাড় ছাড়া, মোটামুটি এক বাটি হবে।
– হলুদ গুড়া, হাফ চা চামচ
– লবন, দুই চিমটি
– রসুন বাটা, এক চা চামচ
– আদা বাটা, এক চা চামচ
– টমেটো সস, দুই চা চামচ
– সয়া সস, এক চা চামচ (হলুদের সাথে এটা না দিলেও চলে, তবে দিতেও পারেন)
- তেল, পরিমান মত, বিফ ভাজার জন্য (কয়লার আগুনে পোড়ালে এই তেল লাগবে না)
(সালাদ প্রিপারেশন)
– কাঁচা মরিচ, কয়েকটা
– লেবুর রস, তিন চা চামচ
– লবন, পরিমান মত
– সরিষার তেল, দুই চা চামচ
– ধনিয়া পাতার কুঁচি, দুই চা চামচ
– পুদিনা পাতা, আপনি যে পরিমান স্বাদ নিতে পারবেন!
– শুকনা মরিচ গুড়া, ঝাল কেমন করবেন এটা সেই পরিমানে দিতে হবে, শিশুদের জন্য হলে কম ঝাল দিতে হবে।(শুকনা মরিচ টেলে গুড়া করে নিতে হবে)
প্রস্তুত প্রনালীঃ (ছবি কথা বলে)
ছবি ১, বিফ পরিস্কার করে নিন। হাড় নিবেন না।
ছবি ২, উপরে বিফ মেরিনেটেড এ লেখা মশলা গুলো দিয়ে দিন।
ছবি ৩, ভাল করে মাখিয়ে নিন।
ছবি ৪, ফ্রিজের নরমাল চেম্বারে ঘন্টা খানেক রাখুন। ফাঁকে অন্যানা ভেজষ গুলো হাতের কাছে নিন।
ছবি ৫, কড়াইতে তেল গরম করে মেরিনেটেড করে রাখা বিফ গুলো ভাঁজুন। কম আঁচে সময় নিয়ে ভাঁজতে হবে। এটা মুলত কয়লার চুলায় (কাবাব তৈরীর) সেঁকে নেয়া দরকার ছিলো। কিন্তু এই চুলা যেহেতু হাতে নেই তাই এই বুদ্ধি কাজে লাগালো হয়েছে। স্বাদে তেমন হের ফের নেই! হা হা হা।
ছবি ৬, ঢেকে রাখুন, আগুন খুব কম আঁচে থাকবে। মাঝে মাঝে নাড়িয়ে দেবেন। উল্টা পাল্টা করে দিতে হবে।
ছবি ৭, ঘন্টা খানেকের মধ্য এই অবস্থায় এসে যাবে। এটাকে কাবাব বলা চলে, বিফ নরম হয়ে যাবে। আগুন নিবিয়ে দিন এবং কিছু ঠান্ডা হতে দিন।
ছবি ৮, এই হচ্ছে সালাদের অন্যান্য উপকরণ।
ছবি ৯, এবার বিফ গুলো তুলে নিয়ে কেটে আরো ছোট ছোট টুকরা করে নিন।
ছবি ১০, এবার একটা মিশ্রনের বাটিতে বিফ নিন এবং একে একে ভেজষ দিন।
ছবি ১১, পুদিনা পাতার স্বাদ ভাল লাগলে বেশী দিতে পারেন।
ছবি ১২, মরিচ গুড়া।
ছবি ১৩, পেঁয়াজ কুঁচি ও লেবুর রস।
ছবি ১৪, সরিষার তেল।
ছবি ১৫, এক চিমটি লবন, ব্যস মিশিয়ে নিন।
ছবি ১৬, পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত।
ছবি ১৭, রুটি দিয়ে বেশী আরাম পাবেন। পোলাউ বা সাদা গরম ভাতের সাথে পরিবেশন করতে পারেন। আশা করি আবালবৃদ্ধবনিতা সবাই পছন্দ করবেন। আমরা সবাই পছন্দ করে খেয়েছি, ভাল লেগেছে।
সবাইকে শুভেচ্ছা। আশা করি আমাদের সাথেই থাকবেন, আমরা আসছি আরো আরো মজাদার রান্না নিয়ে।
কৃতজ্ঞতাঃ মানসুরা হোসেন
লোভনীয় লাগছে। ট্রাই করবো ইনশাআল্লাহ।
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ বোন।
হ্যাঁ, এক বার সামান্য পরিমানে ট্রাই করে দেখতে পারেন। খেতে মন্দ নয়। যারা পুদিনা পছন্দ করেন তাদের জন্য এটা মজাদার আইটেম হবেই।
শুভেচ্ছা।
LikeLike