গ্যালারি

রেসিপিঃ জাউ (বাংলাদেশী বাঙ্গালীর জীবনের শেষ খাবার)


জাউ, আমরা ছোট বেলায় সকালের নাস্তা হিসাবে খেতাম। আমার দাদু রান্না করতেন, আমার এখনো চোখে ভাসে। সবার ভাগে পড়ত এক প্লেট! সাথে থাকত চিনি, নারিকেল কোরানো কিংবা তরকারী। ছোটরা আমরা চিনি ছিটিয়ে খেতাম, মাঝারি বয়সিরা খেত নারিকেল কুরানো ও চিনি ছিটিয়ে, আর বয়স্করা খেতেন তরকারী দিয়ে। আমার দাদাকে প্রায়ই তরকারী দিয়ে খেতে দেখতাম, তিনি তরকারী পছন্দ করতেন।

ছোট বেলায় না জানলেও এখন জানি, বাংলাদেশী বাঙ্গালীদের জীবনের শেষ খাবার হচ্ছে এই জাউ। যদি কোন বাঙ্গালী স্বাভাবিক ভাবে বার্ধ্যকে চলে যান এবং মৃত্যুর জন্য আপেক্ষা করেন তখন তার শেষ খাবার হয় এই জাউ। আর এই ধারাবাহিকতায় কেহ কঠিন রোগে পড়লেও এই ঝাউ খেয়ে থাকেন। কারন এই জাউ সহজে হজম হয় এবং শরীরেও পুষ্টি যোগায়।

কিছুক্ষন আগে এই জাউয়ের ছবি ফেবুতে প্রকাশ করলে একজন ডাক্তার স্যার এই বিষয়ে বলেছেন। লিঙ্কে ক্লিক করে দেখে আসতে পারেন – জাউ, বাঙ্গালীর জীবনের শেষ খাবার! (ব্যাখ্যা লিখছি, গল্প ও রান্না’য়)

চলুন এই সহজ রান্না দেখি। খুব সহজ ও সাধারন রান্না, তবে একটু সময় লাগে এবং রান্নার সময় পুরোই চুলার ধারে থাকতে হয়। চলুন।

উপকরনঃ (সকালের নাস্তায় ৫ জনের জন্য, অনুমানিক)
– পোলাউ চাল, ২৫০ গ্রাম
– লবন, এক চা চামচ
– তেজপাতা, ২/৩ টা
– পানি, কম বেশি দুই লিটার (হাড়ির আকার বুঝে)

প্রনালীঃ

ছবি ১, পোলাউ চাল নিন।


ছবি ২, ভাল করে ধুয়ে নিন।


ছবি ৩, পানি দিন, এই সময়ে তেজপাতা দিয়ে দিন। (পানি শুরুতে কম দিয়ে শুরু করতে পারেন বা অনুমান ভুল হলে, হাতের কাছে গরম পানি রাখুন, লাগলে সাথে সাথে দিতে পারবেন তবে শুরুতে বেশি পানি দিলে জাউ বেশি গলা গলা হয়ে পড়বে।)


ছবি ৪, চুলার আগুন বাড়িয়ে দিন।


ছবি ৫, ঢাকনা দিয়ে দিন।


ছবি ৬, এই রকম হয়ে যাবে, এবার লবন দিন।


ছবি ৭, ভাল করে মাঝে মাঝে নাড়িয়ে দিন, চাল কিছু গলে যাবে, কিছু নরম হবে কিন্তু গলবে না।


ছবি ৭, ব্যস পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত।


ছবি ৮, ঠান্ডা পরিবেশন করুন।


ছবি ৯, পরিবেশনা।


ছবি ১০, তরকারী দিয়েও খেতে পারেন।

সবাইকে শুভেচ্ছা। আমাদের সাথে থাকুন, আমরা আসছি আরো আরো মজাদার রেসিপি নিয়ে।

(নেটে জাউয়ের রেসিপি এটাই প্রথম বলে মনে হল, আমি অনেক খুঁজে দেখেছি কোথায়ও জাউ রান্নার রেসিপি পাই নাই!)

10 responses to “রেসিপিঃ জাউ (বাংলাদেশী বাঙ্গালীর জীবনের শেষ খাবার)

  1. গুগল থেকে আপনার এই সাইটের খোঁজ পেয়েছি। দারুণ সাইট করেছেন। আমি নিজে রান্না করি। আপনার সাইট আমাদের কাজে লাগবে।

    Liked by 1 person

  2. আমি একবার ভাত রান্না করতে দিয়ে ঘুমিয়ে গেছিলাম , উঠে দেখি ভাতের এই অবস্থা 😛😛😛

    Liked by 1 person

  3. Kemon asen apni? Amake plz patla khichuri kivabe kore janaben…dhonnobad

    Like

  4. আমার খুব জানবার ইচ্ছা ছিল জাউ কেমন করে রান্না করে. কখনো করিনাই – একবার করে দেখব.

    Liked by 1 person

  5. আমি তখন ছোট ৮৮’র বন্যা। কৃষক পরিবার-এর সম্বল ক্ষেতের ফসল তলিয়ে গেলে জাউ খেতে হয়েছিল। স্যার আপনি সুন্দর পোলাও চালের জাউ-এর কথা ও রান্নার নিয়ম দিয়েছেন সেটি নয়। আমার ভাগ্যে যেই জাউ মিলেছিল সেটি আটার জাউ। অনেক কষ্ট করে খেতে হয়েছিল। পানি এমন অবস্থা ছিল উঠানকে বাঁধ দিয়ে রক্ষা করা হয়েছিল। সে সময় সরকার রিলিফ-এর কার্ডও দিয়েছিল। স্মৃতিগুলো আজও মনে পড়ে।

    Liked by 1 person

  6. ভাত তো জাউ হয়েই গেছে এখন এই ভাত ফেলে না দিয়ে কিছুকি বানানো যায় ?

    Liked by 1 person

[প্রিয় খাদ্যরসিক পাঠক/পাঠিকা, পোষ্ট দেখে যাবার জন্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা। নিম্মে আপনি আপনার মন্তব্য/বক্তব্য কিংবা পরামর্শ দিয়ে যেতে পারেন। আপনার একটি একটি মন্তব্য আমাদের অনুপ্রাণিত করে কয়েক কোটি বার। আপনার মন্তব্যের জন্য শুভেচ্ছা থাকল। অনলাইনে ফিরলেই আপনার উত্তর দেয়া হবে।]