গতকাল আমাদের গল্প ও রান্না’য় এগারলক্ষ হিট হল। বাংলা ভাষায় ওয়ার্ডপ্রেস ফ্রী সাইটে আমাদের এই সাইট এখন আপনাদের ভালবাসায়, ভাল লাগায় সবার উপরে অবস্থান করছে, এটা কম আনন্দের বিষয় নয়। দিনের পর দিন আপনাদের ভালবাসায় আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আপনারা প্রতিদিন ভালবেসে আমাদের এই সাইটে আসেন বলে আমরা আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আপনাদের এই ভালবাসা আমাদের চলার পথের পাথেয়। আপনাদের আমরা আমাদের প্রাণঢালা শুভেচ্ছা জানাই, ভাল থাকুন সবাই।
যাই হোক, এই আনন্দের দিনে আমি আমার ব্যাটারীকে জানালাম, একটা সাধারন ও সহজ মিষ্টির রেসিপি বের করে দাও। আমাদের পাঠক/পাঠিকাদের অনেকদিন মিষ্টিমুখ করানো হয় নাই। তিনি আমাদের রান্নাগুরু অধ্যাপিকা সিদ্দিকা কবিরের বই নিয়ে বসে গেলেন। হ্যাঁ, এই আজকের রেসিপিটা উনার বই থেকেই নেয়া হয়েছে এবং উনার জন্য আমরা সব সময়েই দোয়া করি। সত্য বলি, বাংলাদেশে রান্নার রানী যদি কাউকে বলতে হয় তবে অধ্যাপিকা সিদ্দিকা কবিরকেই বলতে হয়। আমি অনেক রেসিপির বই থেকে এটা সেটা নিয়ে রান্না করেছি, সত্য বলতে কি, একমাত্র অধ্যাপিকা সিদ্দিকা কবিরের বইয়ের রেসিপির পরিমান ও উপকরণ আমার কাছে সঠিক মনে হয়েছে। অন্য কারো রান্নার রেসিপি ফলো করলে সেটা আর খাওয়ার উপযুক্ত হয়ে উঠে নাই বা রান্নার মাঝেই ধরা পড়লে, সেটা চেঞ্জ করতে বাধ্য হয়েছি। আগে নানা রান্না করতে গিয়ে এমনো হয়েছে যে, রান্না করে খেতে পারি নাই। তাই পাঠক/পাঠিকাদের বলবো, রান্নার বই ফলো করতে হলে দেখে শুনে করবেন। তা ছাড়া মার্কেটে এমন রেসিপির বই আছে, যারা মুলত রান্না না করে অন্যের বই পত্র বা কোথায়ও দেখে রেসিপি দিয়ে বই বের করে ফেলেছেন, মুলত এইসব রান্না করলে আপনার মন খারাপ হয়েই যাবে। তারা না বুঝেই যে, পরিমান লিখে দিয়েছে তা দিয়ে রান্না করলে খাওয়া চলে না।
যাই হোক, এ দিক দিয়ে আমাদের রান্না ও রেসিপি গুলো অথেনটিক! আমরা ছবি সহ ধাপে ধাপে রান্নার প্রমান দিয়ে আপনাদের কাছে রেসিপি হাজির করি, মানে আমরা রান্না করেই আপনাদের জন্য পেশ করি, ভুল বা স্বাদ বা খাবার অযোগ্য হলে আমরা সেই রেসিপি আপনাদের সামনে হাজির করি না। কাজেই, নিশ্চিত মনে আমাদের রেসিপি আপনি ফলো করতে পারেন এবং এই টিক্সটাই মনে হয় আমাদের আপনাদের কাছে নিয়ে যায়। হা হা হা… হ্যাঁ পাঠক/পাঠিকা, আপনাদের ভালবাসাই কাম্য, আমরা আছি আপনাদের সাথে। তবে আমাদের রান্নাগুলো আন্তঃদেশী প্রবাসী, বিবাহিত ব্যচেলর, বিদেশী/প্রবাসী এবং ব্যচেলর ভাইবোনদের কথা বিশেষভাবে মনে রেখে করা হয়ে থাকে, যারা রান্না শিখতে চান। যারা চোখে দেখে রান্না করতে চান, অনুমানের উপর ভিত্তি করে নয়! আর যারা রান্না পারেন, তাদের আমরা শুধু স্বরন করিয়ে দিতে চাই।
চলুন, এই আনন্দের দিনে একটা মিষ্টির রান্না দেখে ফেলি। সহজ ও সাধারন, উপকরন আশা করি সব হাতের কাছেই আছে। হ্যাঁ, বুন্দিয়া। এমন কোন মিষ্টির দোকান নেই যে, এই বুন্দিয়া রাখে না। বিশেষ করে বুন্দিয়া দিয়ে আবারেক ধরনের নাড়ু করা হয়, যা খেতেও বেশ আনন্দ দায়ক।
তবে প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি, এটা আমরাও ঘরে প্রথম বানালাম (আপনারা যারা ঘরে চেষ্টা করবেন তারা আসলে আমাদের চেয়ে ভাল বানাতে পারবেন)। ফলে সামান্য কিছু সমস্যা হয়েছে, বুন্দিয়ার সাইজ সঠিক হয় নাই। তদুপরি আসলে এই বুন্দিয়া বানাতে যে, পরিবেশ লাগে তা আসলে ঘরে পাওয়া যায় না! বড় বড় কড়াই, অনেক তেলে বুন্দিয়া ভাঁজতে হয়, সেটা ঘরে করা যায় না। তাও, স্বাদের কমতি হয় নাই, দারুন।
অন্য আর একটা ব্যাপার, আমরা বুন্দিয়ার রঙ বাড়াতে সামান্য কয়েক ফোটা ফুড কালার (ভাল মানের) ব্যবহার করেছি (এটা করা হয়েছে ফুড কালার দেখিয়ে দেয়ার জন্য), আপনাদের ইচ্ছা না হলে ব্যবহার না করেও বানাতে পারেন। স্বাদের হেরফের হবে না।
উপকরনঃ (মোটামুটি চার জনের জন্য, এক প্লেট)
শিরার জন্যঃ
– চিনি, এক কাপ
– পানি, দেড় কাপ
– এলাচ, ২টা
গোলার জন্যঃ
– বেসন, এক কাপ
– বেকিং পাউডার, এক চা চামচ
– লবন, এক চিমটি
– পানি, পরিমান মত
– ফুড কলার, দুই ধরনের বা আপনার ইচ্ছামত *
ভাঁজার জন্যঃ
– তেল, পরিমান মত ডুবো তেল
প্রনালীঃ (ছবি কথা বলে)
চিনির শিরা প্রস্তুতকরনঃ
ছবি ১
ছবি ২
ছবি ৩, শিরায় ময়লা থাকলে তা ছেঁকে নিন এবং আবারো পাত্র রেখে দিন।
বুন্দিয়ার কাই প্রস্তুতকরনঃ
ছবি ৪
ছবি ৫
ছবি ৬
ছবি ৭
ছবি ৮, কাই সঠিক হল কিনা, সেটা টেষ্ট করে দেখতে পারেন। একটা কাপে পানি নিয়ে তাতে সামান্য বুন্ধিয়া সাইজ ছেড়ে দিন, যদি ভাসে তবে কাই সঠিক হয়েছে। আর না ভাসলে, আরো মাখিয়ে নিন এবং আবারো টেষ্ট করুন।
রঙ্গীনকরনঃ (যারা খাবারের রঙ পছন্দ করেন না তারা এই অংশ টুকু বাদ দিতে পারেন বা ফুডকালার না থাকলেও বাদ দিয়ে কাজ চালিয়ে যেতে পারেন।)
ছবি ৯, মোটামুটি এক কাপ কাইর জন্য দুই ফোটা যথেষ্ট।
ছবি ১০, আমরা দুই রঙ্গের কাই বানিয়ে নিয়েছি।
তেলে ভাজাঃ
ছবি ১১, মুলত এই কাজে এক ধরনের ঝাঁঝরি টাইপ চামচ ব্যবহার করা হয়, আমাদের না থাকাতে আমরা এই ধরনের চালুনি ব্যবহার করেছি।
ছবি ১২
ছবি ১৩
ছবি ১৪
ছবি ১৫, ভাঁজাটা বেশী পোড়া করবেন না।
ছবি ১৬
ছবি ১৭, এভাবে দুই রঙের বুন্দিয়া ভেঁজে তুলে রাখুন।
চিনির শিরায় রান্নাঃ
ছবি ১৮, আগুম মাধ্যম আঁচে রাখুন। বুন্দিয়া গুলো দিয়ে দিন।
ছবি ১৯, ভাল করে মিশিয়ে নিন।
ছবি ২০, সামান্য সময়ের জন্য ঢেকে রাখুন, চুলার ধার ছেড়ে যাবেন না। যদি নরম করতে চান এবং শিরা কম মনে হয় তবে পানির ছিটা দিতে পারেন।
ছবি ২১, ব্যস, হয়ে গেল!
পরিবেশনাঃ
ছবি ২২, পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত।
ছবি ২৩, বিকেলের নাস্তায় অসাধারন। ছেলে বুড়ো সবাই পছন্দ করবেই। আর মেহমান এলে তো কথাই নেই! এমনি বানিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করলে, মেহমান খেয়ে আপনার নাম ডাক তাদের বাড়ী পর্যন্ত নিয়ে যাবে। এও বলতে পারে যে, জীবনে প্রথম ঘরে রান্না করা বুন্দিয়া আপনাদের বাসায়ই খেলাম। তার পর তো আপনি স্টার হয়ে পড়বেনই!
ছবি ২৪, কি আপনি নিজেই বলুন, কত সাধারন উপকরণে কত মজাদার মিষ্টি।
সবাইকে শুভেচ্ছা। সবাই ভাল থাকুন, আমাদের সাথেই থাকুন। আমরা আসছি আরো আরো মজাদার রেসিপি নিয়ে।
সার্বিক কৃতজ্ঞতাঃ মানসুরা হোসেন ও রেসিপির জন্য অধ্যাপিকা সিদ্দিকা কবির।
Lokho Lokho valobasa…………..@ Udraji Family’r jonno.
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ রেদোয়ান ভাই।
আপনাকে শুভেচ্ছা।
LikeLike
অভিনন্দন সাহাদাত ভাই ১১,০০,০০০ পেইজ হিটের জন্য।
বুন্দিয়া দিয়ে মিষ্টি মুখ করানোর জন্য অশেষ ধন্যবাদ। 🙂
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ সুখেন্দু ভাই।
আপনারাই আমাদের ভালবাসা।
শুভেচ্ছা।
LikeLiked by 1 person