টমেটো সস, একটা জনপ্রিয় সহযোগী মুখরোচক খাবার। প্রতিদিন সকাল বিকেলের নাস্তায়, শিশুদের টিফিনে আপনার হয়ত এই খাবারের প্রয়োজন পড়ে কিংবা আপনি যখন মাছ মাংসের কোন খাবার রান্না করেন তখন হয় আপনার এই খাবারের প্রয়োজন পড়ে, কিন্তু বাজার থেকে কিনে আর শান্তি পাচ্ছেন না, তদুপরি এই ধরনের সসে বাজারে পাওয়া প্রায় সব গুলোতেই ভেজাল এবং স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ নয়। তাই ঘরেই টমেটো সস বানিয়ে নিন, আর্থিকভাবে অনেক টাকা বেঁচে যাবে এবং পাবেন নিরাপদ সুস্বাদু সস। একবার বানিয়ে নিলে অনেক দিন চলে যাবে, ফ্রীজের নরমাল চেম্ভারে রেখেই অনেক দিন পার করে দিতে পারবেন।
রান্নাটা খুব সহজ তবে হাতে একটু সময় নিয়ে রান্নাঘরে প্রবেশ করতে হবে। চলুন দেখে ফেলি!
পাকা টমেটো এই রান্নার প্রধান উপকরণ। বাজার থেকে দেখে দেখে পাকা টমেটো কিনুন। (ছবিটা পূর্বের এক পোষ্ট থেকে নেয়া)
উপকরন ও পরিমানঃ (মোটামুটি ৭৫০ গ্রামের উপকরণ)
– টমেটো, ১ কেজি বা কম বেশী
– এলাচি, ৩/৪ টা * গুড়া করে দিলে ভাল
– দারুচিনি, ৩/৪ টুকরা * গুড়া করে দিলে ভাল
– লবন, এক চা চামচের কম (পরে স্বাদ দেখে আরো দেয়া যেতে পারে)
– চিনি, ৪/৫ উচু টেবিল চামচ * স্বাদ বুঝে কম বেশী
– মরিচ গুড়া, ১ চা চামচ
– ভিনেগার, হাফ কাপ
– পানি, হাফ কাপের বেশী বা কম
প্রনালীঃ (ছবি কথা বলে)
ছবি ১, টমেটো গুলো ধুয়ে কেটে পাত্রে নিন।
ছবি ২, হাফ কাপ পানি দিয়ে আগুন মাধ্যম আঁচে রাখুন। এলাচি ও দারুচিনি গুড়া বা চেঁছে এই সময়েই দিয়ে দিন।
ছবি ৩, ঢাকনা দিন।
ছবি ৪, মিনিট ৪০/৫০ চলুক, পানি শুকিয়ে টমেটো নরম হয়ে গেলে ঘুটনী দিয়ে ঘুটে নিন।
ছবি ৫, চুলা নিবিয়ে দিন, ঠান্ডা হয়ে যাক!
ছবি ৬, এই রকম চাকুনী বা অন্য কোন চাকুনী দিয়ে চেকে নিন।
ছবি ৭, শেষের দিকে এভাবে ছেঁকে নিন।
ছবি ৮, টমেটো পেষ্ট হয়ে গেল। এবার আবার চুলায় মাধ্যম আঁচে বসিয়ে দিন।
ছবি ৯, লবন দিন।
ছবি ১০, চিনি দিন।
ছবি ১১, মরিচের গুড়া দিন।
ছবি ১২, হাফ কাপ ভিনেগার দিন। ভাল করে মিশিয়ে নিন।
ছবি ১৩, ঢাকনা দিয়ে চুলার ধারে কাছেই থাকুন।
ছবি ১৪, কাঠের খুন্তি দিয়ে নাড়াতে থাকুন। পেষ্টের ঘনত্ব কেমন রাখবেন নিজেই নির্ধারন করুন। এই সময়েই স্বাদ দেখে নিন, লবন চিনির যদি প্রয়োজন হয় তবে তা দিন।
ছবি ১৫, ব্যস পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত। (ফ্লাস ছাড়া ছবি), আপনি চাইলে ঠান্ডা করে বোতলে ভরে রাখতে পারেন, ফ্রীজের সাধারন চেম্ভারে রেখে ইচ্ছা মত খেতে পারেন।
ছবি ১৬, ক্যামেরায় ফ্লাস দেয়া ছবি।
অসাধারন স্বাদ, ভেজাল বিহীন। আমাদের দেশের বাজারে পাওয়া এই ধরনের সসে নানা বিধ ভেজাল দিয়ে থাকে বলে জানি। আমি যা শুনেছি, টমেটর বদলে কুমড়া বা এই জাতীয় কিছু এবং মশলার বদলে নানান সুগন্ধি, রং উজ্জ্বল করার জন্য কাপড়ের রঙ, নষ্ট না হবার জন্য নানান ক্যামিকেল ব্যবহার করা হয়ে থাকে, যা খেতে ভাল লাগে কিন্তু শরীরের জন্য চরম ক্ষতিকারক হয়ে দাঁড়ায় এক সময়ে। কাজেই এড়িয়ে চলাই উত্তম, দুঃখের বিষয় এই যে, আমাদের এখনো একটা শক্তিশালী রাষ্ট্র প্রশাসনের জন্য আপেক্ষা করতে হচ্ছে, স্বাধীনতার এত বছর পরেও আমরা এখনো কোন কিছুতেই উৎরে উঠতে পারি নাই। তবে, খাদ্যে ভেজালের বিরুদ্ধে আপনার অবস্থান নিশ্চিত করুন, জেগে উঠুন, ভেজাল দেখলে প্রতিরোধ করুন, আশা করি একদিন দেশে সব খাদ্য ভেজাল মুক্ত হবেই।
সবাইকে শুভেচ্ছা।
কৃতজ্ঞতাঃ মানসুরা হোসেন
দেখেই মন ভরে গেল 😀
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ শরীফ ভাই। হ্যাঁ, দারুন রঙ লাগছিল, স্বাদেও চমতকার হয়েছে। শুভেচ্ছা।
LikeLike
দারুন বানাচ্ছি
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ গরম কফি ভাই।
আশা করছি, সফল হয়েছেন এবং সবাই পছন্দ করছেন। তবে রান্না হচ্ছে অভিজ্ঞতার ব্যাপার, রান্না করতে করতেই হাত ও চোখ খুলে যায়। শুভেচ্ছা থাকলো।
LikeLike
ভিনেগার বা সিরকা মুলত কি? এটা না দিলে কি টমেটোর সস হবে না জানতে চাই।
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ ব্রাদার।
ভিনেগার প্রসঙ্গে জানতে এই লিঙ্কে ক্লিক করতে পারেন।
Vinegar is a liquid consisting of about 5-20% acetic acid (CH3COOH), water and other trace chemicals, which may include flavorings. The acetic acid is produced by the fermentation of ethanol by acetic acid bacteria.[1] Vinegar is now mainly used as a cooking ingredient. Historically, as the most easily available mild acid, it had a great variety of industrial, medical and domestic uses, some of which (such as its use as a general household cleanser) are still promoted today.
https://en.wikipedia.org/wiki/Vinegar
সিরকা ও ভিনেগার একই। সিরকা মনে হয় উর্দু বা হিন্দি শব্দ।
শুভেচ্ছা থাকলো।
LikeLike
আপনার রেসেপি গুলো বরাবরই অনেক হেল্পফুল হয়।বিশেষত আমার মত আনারি রাধুনিরা অনেক উপকৃত হয়।ধন্যবাদ আপনাকে।
LikeLike
ধন্যবাদ,ভালোই হলো বাচ্চারা যে পরিমাণ সস পছন্দ করে,ঘরে বানিয়ে দেওয়া যাবে।
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ বোন।
আশা করি একবার রান্না করে দেখবেন।
শুভেচ্ছা নিন।
LikeLike
বাহ চমৎকার। খুবই ইজি মনে হচ্ছে। আজ ৭০/- দিয়ে প্রাণের একটা সস কিনে আনলাম সিংগারা দিয়ে খাবার জন্য। এক্স. ডেট দেখেই কিনেছি তবুও খোলার সময় কেমন একটা গন্ধ লাগল। তাই ভাবলাম নিজেই বানানো যায় কিন?
কালই ট্রায় করবো।
আমার ইচ্ছা এই রেসিপির সাথে কিছুটা বিট লবন এবং সামান্য তেতুল যোগ করবো। সমস্যা হবে কি?
LikeLiked by 1 person
আমি কোনো রান্না জানি না plz half me
LikeLike
সহজ ভাবে, ছবি সহ দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ,,, আশা করি আপনাদের দেওয়া টিপস এ বাসায় তৈরি করতে পারবো এবং অনেক উপকৃত হব….
ধন্যবাদ
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ আপনাকে। সময় কাটুক আনন্দে। শুভেচ্ছা।
LikeLike