আপনারা হয়ত অনেকেই জানেন যে, কয়েকদিন আগে আমরা পরিবারের সবাই মিলে কক্সবাজার, সেন্টমার্টিন গিয়েছিলাম। সেন্টমার্টিন গেলে শুঁটকী নিয়ে আসবো না, তা কি করে হয়! বেশ কয়েক পদের শুঁটকী কিনে নিয়ে এসেছিলাম, আজ সুযোগ পেয়ে সেই শুঁটকী রান্না করলাম। তবে ঘরে কেহ নেই, আমি ছাড়া! সবাই বেড়াতে গিয়েছেন! নিজে রান্না করে নিজেই খেতে হল! গরম ভাতের সাথে সেই রান্না খেয়ে এই মাত্র বসছি, রেসিপি লিখতে!
তবে এই রান্না আমি আগেও আপনাদের দেখিয়েছি, এই শুঁটকী আলুর রান্না আমার প্রিয় রান্নার একটা, বার বার রান্না করলেও আমার কাছে প্রতিবারেই নুতন রান্না মনে হয়! এবং আসলেই প্রতিটা রান্নাই ইউনিক এবং সেজন্য একই রান্নার রেসিপি বার বার লিখতে কোন আলস্য নেই!
সেন্টমার্টিন আমার একটা প্রিয় জায়গা, সাগরের পানি কেটে এই দ্বীপে গেলে মন ভাল হয়ে যায়! হরানডা চায় দইজ্জাত হড়ি থাই!
চলুন রান্না দেখে ফেলি! হাতে সময় কম, বের হতে হবে!
উপকরনঃ
– লইট্ট্যা শুঁটকীঃ ১৫০/২০০ গ্রাম (টুকরা ছোট বা আপনার ইচ্ছা মত করে নিতে পারেন, ভাল করে গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে)
– আলুঃ ২০০ গ্রাম (পাল্লা পাথর নিয়ে বসার দরকার নেই)
– পেঁয়াজ কুঁচিঃ হাফ কাপ
– আদা বাটাঃ ১ চা চামচ
– রসুন বাটাঃ ২ টেবিল চামচ (বাটা না থাকায় আমি কুঁচি করে দিয়েছি)
– হলুদ গুড়াঃ ১ চা চামচের কম
– মরিচ গুড়াঃ ১ চা চামচ (বুঝে শুনে, ঝাল পরিমিত হওয়া জরুরী তবে শুঁটকীতে অনেকে ঝাল পছন্দ করলে বেশী দিতে পারেন)
– কাঁচা মরিচঃ ৫/৬ টা (ঝাল বুঝে)
– ধনিয়া পাতাঃ পরিমান মত কুঁচি
– লবনঃ পরিমান মত
– তেলঃ ৮/১০ টেবিল চামচ (শুঁটকীতে একটু তেল বেশি হলে ভাল হয় তবে আমি কমেই রান্না করেছি)
– পানিঃ পরিমান মত
প্রনালীঃ
কড়াইতে তেল গরম করে তাতে একে একে পেঁয়াজ, রসুন, কাঁচা মরিচ ও লবন দিয়ে ভাঁজুন।
আদা বাটা দিতে ভুলবেন না। ভাল করে মিশিয়ে ভেঁজে নিন।
পেঁয়াজ কুঁচির রঙ হলদে হয়ে এলে এক কাপ পানি দিয়ে আবারো কষিয়ে নিন।
এবার হলুদ ও মরিচ গুড়া দিয়ে দিন।
ঠিক এমনি হয়ে আসবে। এই সময়ে আগুন মাধ্যম আঁচে থাকবে, চুলার ধার ছেড়ে যাবেন না। খুন্তি দিয়ে নাড়িয়ে তেল উঠিয়ে নিন।
এবার আলু ও গরম পানিতে ধুয়ে রাখা শুঁটকী দিয়ে দিন।
ভাল করে মিশিয়ে মাধ্যম আঁচে মিনিট ১০ রাখুন।
এবার দুই কাপ পানি দিন। (হাতের কাছে গরম পানি থাকলে তা দিন, আমি গরম পানি দিয়েছি, না হলে নাই)
আগুন কমিয়ে নিন। মিশিয়ে নাড়িয়ে নিন।
এবার ঢাকনা দিয়ে আরো মিনিট ১৫ রাখুন, মাঝে মাঝে ঢাকনা তুলে নাড়িয়ে দিবেন, চুলার ধার ছেড়ে যাবেন না। এই সময়টাতে আলু ও শুঁটকী সিদ্ধ হয়ে যাবে।
আলু নরম হল কি না দেখে নিন। তবে খুন্তি দিয়ে আলু নাড়াতে সাবধানে, যাতে আলু শুঁটকী ভেঙ্গে না যায়। এবার ফাইন্যাল লবন দেখুন, লাগলে দিন। (লবন প্রথম দফায় কম দিয়েই শুরু করলে ভাল, এই সময়ে ফাইন্যাল লবন দেখে দিলেই ভাল)
সব কিছু ঠিক হলে ধনিয়া পাতার কুচি ছিটিয়ে দিন এবং মিশিয়ে নাড়িয়ে নিন। (যদি ঝোল বেশী মনে হয় তবে আগুন বাড়িয়ে নাড়িয়ে ঝোল কমিয়ে নিতে পারেন)
চুলা বন্ধ করে কিছু সময়ের জন্য ঢেকে রাখুন। ব্যস!
পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত।
অসাধারন। গরম ভাতের সাথে খেয়ে মনে হল, লাইফ ইজ বিউটিফুল! হা হা হা! না, আসলে লাইফ কখনোই বিউটিফুল নয়! তবে বর্তমান সময়ে মজা লুটে নিতে হয়!
সবাইকে শুভেচ্ছা। সাথে থাকুন, আমরা আসছি, আরো আরো মজাদার রান্না নিয়ে।
(যারা এখনো আমাদের সেন্টমার্টিন দ্বীপে ভ্রমন করেন নাই, অনুরোধ থাকবে, একবার ঘুরে আসুন, কি আছে এই জীবনে, দুই দিনের দুনিয়া!)
St.Martin really a nice place….Sukna sutki vorta besh moja….
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ রেদোয়ান ভাই। হ্যাঁ, আমি কয়েকবার গিয়েছি, ভাল লাগে। তবে এবার রাতে থাকতে পারি নাই, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে এসেছি!
শুভেচ্ছা।
LikeLike
শুটকি রান্না করছেন কিন্তু তাতে রসুন দেন নি?? 😮 আমার আম্মা বলেন, রসুন কোয়া শুটকীর স্বাদ বাড়িয়ে দেয়। আপনি কি বলেন?
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ ব্রাদার,
হ্যাঁ আপনার আম্মা সঠিক বলেছেন। শুঁটকী রান্নায় রসুন দিতেই হয়। আমিও দিয়েছি তবে কোয়া আকারে নয়, যেহেতু আলু দিয়ে রান্না করেছি সেজন্য রসুন কুঁচি করে দিয়েছি। উপকরণে দেখুন। আর যদি শুধু শুঁটকী রান্না করতাম তবে অবশ্যই রসুন কোয়া দিতাম।
খাল্লাম্মাকে আমাদের সালাম দিবেন। তিনি শুঁটকী পছন্দ করেন যেনে খুশি হলাম। আমার আম্মাও শুঁটকীতে কোয়া রসুন দেন এবং ভাতের সাথে মেখে খেতে অসাধারন লাগে।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
আমারও শুটকি খুব পছন্দের। এতই পছন্দের যে একবার ছোটবেলায় আম্মা ভর্তার জন্যে কিছু শুটকি টেলে রেখেছিলেন সেখান থেকে কয়েকটা টালা শুটকি খেয়ে ফেলেছিলাম। টালা শুটকি অনেক স্বাদ লেগেছিল। এখনতো প্রিয় খাবারটিকে খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিতে হচ্ছে এই ভেবে যে শুটকি খাচ্ছি না বিষ খাচ্ছি।
LikeLiked by 2 people
ধন্যবাদ প্রিন্স ভাই।
হ্যাঁ, টালা শুঁটকী বেশ মজাদার। আমিও খেয়ে দেখেছি।
ভেজালের জন্য এখন কত কিছুই আর খেয়ে দেখি না।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
Dear Shahadat Bhai, if you don’t mind , I suggest you not to buy dry fish from St. Martin dry fish market, and to buy those from Reajuddin Bazar which is just opposite of the Ctg. New Rail Station. I think variation and price will much more convenient for you in comparison with St. Martin. By the way! Would you try dry lakhkha ? This is the best one in my point of view.
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ ব্রাদার।
আমি রিয়াজ উদ্দিন বাজার থেকেও শুটকি মাছ কিনে থাকি।
সেন্ট মার্টিনে গিয়েছি বলেই। তবে এই বিক্রেতাদের বিশ্বাস করা মুস্কিল। আমি ভয় পাই ভেজালে।
শুভেচ্ছা।
LikeLike