গ্যালারি

রেসিপিঃ ইলিশ পোলাউ (স্পেশাল)


ইলিশ পোলাউ, আমাদের দেশের একটা নামকরা খাবার। আমি মনে করি এই খাবারটা আমরা সারা দুনিয়া ছড়িয়ে দিতে পারি এবং এই খাবারের প্যাটেন্ট বা কপি রাইট আমরা দাবী করতে পারি। ইলিশ মাছ যেহেতু আমাদের নিজস্ব মাছ তাই এই কাজটা আমরা সহজেই করতে পারি। সারা দুনিয়ার মানুষ ইলিশের স্বাদ জানবে, সেই সাথে জানবে আমাদের খাবারের বাহার।

ইলিশ, আমাদের সাদা সোনা!

চলুন কথা কম বলে ইলিশ পোলাউ রান্না দেখে ফেলি, আপনাদের যাদের পোলাউ রান্নার সামান্য অভিজ্ঞতা আছে, উনাদের জন্য এই রান্নাটা তেমন কোন ব্যাপার না!

উপকরনঃ
– ইলিশ মাছের ৬ টুকরা (ইলিশ যত বড় হবে তত স্বাদ লাগবে!)
– পোলাউ চাল, ৭৫০ গ্রাম

(বাটিতে নিন্মের মশলা গুলো মিশিয়ে নিন*)
– পেঁয়াজ বাটা, ২ টেবিল চামচ
– আদা বাটা, দেড় টেবিল চামচ
– রসুন বাটা, ২ চা চামচ
– বাদাম বাটা, ২ টেবিল চামচ
– জিরা গুড়া, হাফ চা চামচ
– জয়ত্রি বাটা, হাফ চা চামচের কম
– গোল মরিচ বাটা, ১ চা চামচ
– চিনি, হাফ চা চামচ

এবং
– টক দই, এক কাপ
– বেরেস্তা, হাফ কাপ
– কয়েকটা কাঁচা মরিচ

অন্যান্য
– লবন (পরিমান মত, প্রথমে কম, পরে যাছাই করে দিতে হবে)
– তেল (দুই ধাপে এক কাপের কম বা সামান্য বেশী)
– পানি (পরিমান মত)

প্রনালীঃ
রান্নার আগেই প্রয়োজনীয় উপকরণ হাতের কাছে নিয়ে নিনঃ

ইলিশ মাছের টুকরা এভাবে কাটুন, ভাল করে পরিস্কার করে টুকরা গুলোতে সামান্য হলুদ ও এক চিমটি লবন মিশিয়ে রাখুন।


* মশলা গুলো (উপরে পরিমান দেয়া হয়েছে) একটা বাটিতে নিয়ে রাখুন বা মিশিয়ে নিন।


টক দই হাতের কাছে রাখুন। (দই না থাকলে দুধ গুলে তাতে এক কর্ক ভিনেগার দিয়েও নিতে পারেন)


বেরেস্তা ভেঁজে হাতের কাছে রাখুন। যারা বেরেস্তা ভাঁজা দেখতে চান, রেসিপিঃ বেরেস্তা (সকল স্বাদের কাজী)

মুলা রান্নাঃ

যে কড়াইতে বেরেস্তা ভাজছেন, সেই গরম তেলেই মশলা গুলো দিয়ে দিন এবং ভাল করে ভাঁজতে থাকুন, হাফ চামচ লবন দিয়ে নিন।


মশলা ভাঁজা হয়ে গেলে তাতে ইলিশ মাছের টুকরা গুলো দিয়ে দিন। কয়েকটা কাঁচা মরিচ দিতে ভুলবেন না।


মাছের এপিট ও পিট করে দিন। তবে আগুন থাকবে মাধ্যম আঁচে।


এবার টক দই দিয়ে দিন।


ঢাকনা দিয়ে মিনিট ৬/৭ মাধ্যম আঁচে রাখুন।


এমন অবস্থায় এসে যাবে।


এবার ইলিশ মাছ গুলো সাবধানে তুলে রাখুন, মাছ যেন ভেঙ্গে না যায়।


মুলত মাছ রান্না হয়েছে, এভাবে মাছ খেয়ে দেখতে পারেন, দারুন। যাই হোক, রেখে এগুতে থাকুন।


মাছ তুলে নেয়ার পর যে ঝোল থাকবে তাতে ধুয়ে রাখা পোলাউএর চাল দিয়ে দিন।


ভাল করে মিশিয়ে নিন।


এবার পরিমান মত পানি দিন। পানির পরিমাণটা এমন হবে যে, চালের উপরে এক ইঞ্চি তবে এটা নির্ভর করে পোলাউ চাল নুতন না পুরাতন তার উপর। এই পর্যায়ে ফাইন্যাল লবন দেখতে হবে, এই পানি গুলোর স্বাদ কটা (লবন একটু বেশী) হতে হবে, লবন দিন।


মাঝারি আঁচে ঢেকে রাখুন।


রান্নাঘর ছেড়ে যাবেন না, এবার তুলে রাখা মাছ গুলো দিয়ে দিন।


বেরেস্তা দিন।


চাল গুলো দিয়ে মাছ ঢেকে দিন।


এবার শহুরে দম দিন, মানে পাতিলের তলায় তাওয়া দিন এবং মাধ্যম আঁচে মিনিট ২০ রাখুন, তবে রান্নাঘরেই থাকুন। মাঝে মাঝে দেখুন, হল কি না, দুই একবার উল্টেও দিতে পারেন। যদি পানি কম হয়ে যায় এবং দেখেন চাল তেমন নরম হয় নাই তখন আরো পানি ছিটিয়ে দিতে পারেন এবং আবারও ঢাকনা দিয়ে রাখতে হবে।


অবশ্যই এমন পর্যায়ে এসে যাবে, বেচে থাকা কিছু বেরেস্তা উপরে ছিটিয়ে দিতে পারেন। পাতিল সহ পরিবেশন করতে পারেন, কারন এই পোলাউ গরম গরম খেতেই মজা। রান্নার পাতিলেই খাবার বেশিক্ষন গরম থাকে! হা হা হা।


বন্ধুরা, খাবেন নাকি!

সবাইকে শুভেচ্ছা। আমাদের সাথে থাকুন, আমরা আরো আরো মজাদার খাবার নিয়ে আসছি।

14 responses to “রেসিপিঃ ইলিশ পোলাউ (স্পেশাল)

  1. ekhoni iccha korce khai……darun

    Liked by 1 person

  2. Ami to ghran pachci. ….osadharon. ..👌😋

    Liked by 1 person

  3. দারুণ রেসিপি সাহাদাত ভাই। আমার মা মাঝে মাঝে আমাদের ইলিশ পোলাও রেঁধে খাওয়ান। ইলিশ পোলাও, চিংড়ি পোলাও, নিরামিষ (vegetable) পোলাও আমাদের সরাচর খাসী/ মুরগির পোলাও এর চেয়ে আলাদা একটা স্বাদের আমেজ এনে দেয়।

    শুভেচ্ছা রইলো সাহাদাত ভাই।

    Liked by 1 person

  4. রেসিপি দেখেতো জিবে জ্বল এসে যায়।
    সৌদি তে যে ইলিশ মাছ পাওয়া যায়,তা মুলত বার্মা থেকে আসে।এই মাছে দেশের মত স্বাধ নাই।তাই কি থেকে কি হয় এই চিন্তায় আছি।

    Liked by 1 person

  5. যেকোন রান্নার রেসিপি দেখার থাকলেই আপনার ব্লগে এসে ঢুকি, গত দুই বছর ধরে এমনই হচ্ছে। আপনি গল্পে গল্পে এমন সুন্দর করে রেসিপিটা দিতে থাকেন খুব ভালো লাগে। আর প্রত্যেকটা লেখা শুরুর আগে ছেলেবেলার স্মৃতি থেকে বা জনমুখে শোনা রান্নাটির বিশেষ আঞ্চলিক পরিচিতি দেন।
    তখন এটা শুধুই রেসিপি থাকেনা, It becomes much more.

    ওনেক অনেক সাধুবাদ আর শুভ কামনা।

    Liked by 1 person

  6. Amar Sasurike pathay dilam link ta ar bole diyechi next bar gele jeno redhe dey 😀

    Like

[প্রিয় খাদ্যরসিক পাঠক/পাঠিকা, পোষ্ট দেখে যাবার জন্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা। নিম্মে আপনি আপনার মন্তব্য/বক্তব্য কিংবা পরামর্শ দিয়ে যেতে পারেন। আপনার একটি একটি মন্তব্য আমাদের অনুপ্রাণিত করে কয়েক কোটি বার। আপনার মন্তব্যের জন্য শুভেচ্ছা থাকল। অনলাইনে ফিরলেই আপনার উত্তর দেয়া হবে।]