গ্যালারি

রেসিপিঃ ছোট কাতলা মাছের টুকরা ভাঁজি (সাধারণ)


মাছের সাইজ এখন কোন ব্যাপার নয়, কোন সাইজের মাছ কিনলাম তাতে কিছু যায় আসে না! আমি এখন বাজার থেকে মাছ কিনতে চেষ্টা করি বা ভেবে দেখি, মাছটা জ্যন্ত কি না! জ্যন্ত মাছ ছোট হলেও ভাল। অফিস ফেরার পথে মহল্লার গলিতে নেমেই দেখি ছোট সাইজের জ্যন্ত কাতলা মাছ বিক্রি হচ্ছে, আর অপেক্ষা কি, দুই কেজি কিনে বাসায় নিয়ে আসি! দুই কেজিতে সাতটা মাছ হয়েছিল। ছোট মাছের কাঁটা আছে, মজাও আছে তবে আমি মনে করি এই ধরনের মাছের টুকরা ভাজিতেই উত্তম এবং মাথা, লেজ দিয়ে নানান তরকারী রান্না করা যেতে পারে, বিশেষ করে বেগুন, পেঁপে সহ নানান তরকারী মাথা, লেজ দিয়ে রান্না করা যেতে পারে।

যাই হোক, চলুন আজ আর একটা সহজ এবং সুস্বাদু ভাঁজি দেখা যাক, অনেকটা জগ থেকে পানি গ্লাসে ঢেলে খাবার মত ব্যাপার! সামান্য ধৈর্য এবং রান্নার প্রতি ভালবাসাই এই ভাঁজি হয়ে যাবে বলে আমি মনে করি।

পরিমান ও উপকরনঃ
– আট টুকরা মাছ
– হাফ চা চামচের কম হলুদ গুড়া
– সামান্য মরিচের গুড়া (এক বা দুই চিমটি, ঝাল বুঝে)
– হাফ চা চামচের কম জিরা গুড়া (জিরা টেলে গুড়া করা)
– এক কর্ক হোয়াইট ভিনেগার
– দুই চিমটি লবন (বুঝে শুনে)
– ভাজার জন্য পরিমান মত তেল (চাইলে ডুবো তেলেও ভাঁজতে পারেন)

– সামান্য কিছু পেঁয়াজ কুঁচি

প্রস্তুত প্রনালীঃ

মাছ কেটে ভাল করে পরিস্কার করে নিন।


এবার হলুদ, মরিচ, জিরা গুড়া দিন। লবন দিতে ভুলবেন না!


কর্কে করেই মেপে ভিনেগার দিন।


ভাল করে মেখে নিন।


আধা ঘন্টার জন্য ফ্রীজের নরমাল চেম্বারে রাখুন।


এবার বের করে নিন।


তেল গরম করে ভাঁজুন। যে কোন ভাজিতেই সাবধানে। এই ধরনের টুকরা ভাঁজতে হলে এক সাইড করে ভেঁজে নিতে হয়।


এক সাইড হয়ে গেলে উল্টে দিন। আগুন মাধ্যম আঁচে থাকবে।


এবার পাশাপাশি সাইড ভেঁজে নিন। একটু সময় নিবে, ধৈর্য হারা হলে চলবে না! তবে বেশি মচমচে ভাঁজার দরকার নেই।


মাছ মেরিনেটেড করার পাত্রে কিছু পেঁয়াজ কুঁচি দিয়ে মেখে নিন এবং সেই পেঁয়াজ কুঁচি মাছ ভাঁজার সাথে দিয়ে সামান্য ভেঁজে নিন।


আগুন খুব কম থাকবে। মিশিয়ে নিন, ব্যস হয়ে গেল!


পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত।


এই ভাঁজির মাছের ভিতরটা থাকবে জুসি এবং সফট, খেতে দারুন লাগে। আপনি যে কোন মাছ (রুই, কাতলা, মৃগেল, তেলাপিয়া সহ) এভাবে ভেঁজে দেখতে পারেন, আশা করি ভাল লাগবে।

সবাইকে শুভেচ্ছা।

কৃতজ্ঞতাঃ মানসুরা হোসেন

4 responses to “রেসিপিঃ ছোট কাতলা মাছের টুকরা ভাঁজি (সাধারণ)

  1. মাছভাজির মত মজার আর সুস্বাদু, অথচ সহজ জিনিস পৃথিবীতে কমই আছে, বিশেষত মাছটা যদি তাজা মাছ হয়! অনকে দেখেছি মাছ খুব কড়া করে ভাজেন, আমার কাছে সেটার থেকে আপনার এই স্টাইলই ভালো লাগে, তাতে ভেতরটা নরম থাকে।

    আমার প্রথমদিকে মাছ ভাজতে গিয়ে ভালো হতনা, মাছ ফ্রাইপ্যানের তলায় লেগে যেত, মাছের গায়ের মশলা আলাদা হয়ে যেত—আরো কত কী! এখন বেশ কয়েকটা জিনিস ফলো করি, ভাবলাম আপনার এখানে দিয়ে যাই, নতুন শেফদের যাতে আরেকটু সুবিধা হয় 🙂

    নতুন শেফদের জন্য:

    ১। মাছে মশলা দেয়ার আগে মাছের টুকরাগুলিকে যথাসম্ভব পানিমুক্ত করুন, দরকার হলে কিচেন টাওয়েল/কিচেন টিসু দিয়ে মুছে নিন। ডিপফ্রিজ থেকে বের করা মাছে এটা আরো জরুরী, ডিফ্রস্ট হলেই সেটা থেকে প্রচুর পানি বের হয়। মাছ মুছে শুকনো করে, তারপর গুঁড়ো মশলা দিন (বাটা মশলা এড়িয়ে চলুন)। মশলা মাখিয়ে ফ্রিজে রাখলেও বেশ ভালো, সেটাতেও ভেজা ভাব কমে।

    ২। ননস্টিক প্যান হলে মাছ তলায় লাগে কম, তবে স্টীল বা অন্য পাতিলেও সুন্দর ভাবে মাছ ভাজা যায়, সেটার একটাই রহস্য—-মাছ তেলে ছাড়ার পর বেশ কিছুটা সময় মাছ না নাড়ানো। স্টীলের প্যানে তেল দিয়ে গরম করে তাতে মাছ ছাড়ুন, এবং সেখানেই কমসেকম ৩ মিনিট ভাজা হতে দিন, খুন্তি দিয়ে কোনো খোচাখুচি করবেননা। এরপর দেখবেন মাছে সুন্দর বাদামী রং ধরে খুব সহজেই প্যান থেকে উঠে আসবে। আর আপনি যদি অধৈর্য্য হয়ে মাছ ছাড়ার ৩০ সেকেন্ড পরেই উল্টিয়ে দেখতে যান, তাহলেই কম্ম সাবার, কারণ মাছ তখনও প্যানের গায়ে লেগে আছে, তাই মাছ যাবে ভেঙে।

    Liked by 1 person

[প্রিয় খাদ্যরসিক পাঠক/পাঠিকা, পোষ্ট দেখে যাবার জন্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা। নিম্মে আপনি আপনার মন্তব্য/বক্তব্য কিংবা পরামর্শ দিয়ে যেতে পারেন। আপনার একটি একটি মন্তব্য আমাদের অনুপ্রাণিত করে কয়েক কোটি বার। আপনার মন্তব্যের জন্য শুভেচ্ছা থাকল। অনলাইনে ফিরলেই আপনার উত্তর দেয়া হবে।]