শাপলা ফুল, আমাদের জাতীয় ফুল। এই শাপলা ফুলের ডাটা রান্না করে খাওয়া যায়, এটা আপনারা অনেকেই জানেন। আমি এই জীবনে শাপলা ডাটা মাত্র কয়েকবারই খেয়েছি। ছোট বেলায় তেমন একটা খেতে দেখি নাই এখন প্রায়ই বাজারে এই শাপলা ডাটা দেখি, হয়ত অনেকেই খেয়ে থাকেন। শাপলা ডাটা কিনে বাজার থেকে ঘরে ফিরে আসা এখন আর লজ্জার কারন নয়! হা হা হা। তবে আমি নিশ্চিত ধনীরা এই শাপলা ডাটা এখনো খাবার অযোগ্য হিসাবেই দেখে থাকেন এবং এই শাপলা ডাটা গরীবের খাবার হিসাবেই ধরে আছেন!
(ছবিটা ‘প্রজন্ম ফোরাম’ থেকে নেয়া হয়েছে, ফটোগ্রাফারের নাম পাওয়া যায় নাই, এই সাদা শাপলাই আমাদের জাতীয় ফুল। এর ডাটাই খেতে স্বাদ হয়ে থাকে।)
যাই হোক, আমি বাজারের যে দোকান থেকে প্রায়ই শাক কিনে থাকি আজ সকালে সেই দোকানের সামনে থেকে হেঁটে আসার সময় দোকানী আমাকে পেয়ে এই শাপলা ডাটা ধরিয়ে দিল, আমি নিতে চাই নাই তবুও তার পীড়াপীড়িতে নিতেই হল! অনেক দিন বা বছরের উপর তো হবেই, শাপলা ডাটা কিনি নাই তাই মনে মনে ভাবলাম নিয়েই ফেলি! এদিকে দিনে আর রান্না করা হয় নাই, বাসায় বলে গেলাম, কেটে সিদ্ধ করে রেখে দেয়ার জন্য, অফিস থেকে ফিরে রান্না করবো। কিছুক্ষন আগে রান্না করে আপনাদের জন্য পোষ্ট লিখতে বসে গেলাম। খুব সাধারণ রান্না তবে বাসায় নারিকেলের দুধ না থাকায় এই রান্নাটা আরো আরো সাধারণ হয়ে গেল। চলুন দেখে ফেলি।
উপকরনঃ
– ৩০০/৩৫০ গ্রাম (অনুমানিক) শাপলা ডাটা (প্রথমে সিদ্ধ করে নিতে হবে)
– হাফ কাপ চিংড়ি মাছ (খোসা ছড়ানো)
– পেঁয়াজ কুঁচি মাঝারি ৩ টা/৪টা হবে
– কয়েকটা কাঁচা মরিচ
– হাফ চামচ হলুদ গুড়া
– পরিমান মত লাল মরিচ গুড়া (ঝাল বুঝে)
– দেড় চা চামচ রসুন বাটা
– পরিমান মত লবন
– ১/৪ চা চামচ চিনি (এটা স্বাদ বাড়িয়ে দেয়, না দিলেও চলে)
– পরিমান মত তেল (কয়েক চামচ)
– পানি (পরিমান মত) [পানির বদলে নারিকেল দুধ দেয়া হলে আরো মজাদার হত, হাতে না থাকায় পানি দিয়েই চালিয়ে দিয়েছি]
* খুব সাধারণ রান্নাই এটা। এই রকম অনেক রান্না আপনাদের পূর্বেও দেখিয়েছি।
প্রনালীঃ
এভাবে শাপলা ডাটা নিয়ে সিদ্ধ করে রেখে দেয়া হয়েছিল এবং এভাবেই রান্নার জন্য প্রস্তুত করা হয়ে থাকে। তবে শাপনা ডাটা থেকে আঁশ উঠিয়ে (চামড়া) নেয়াটা একটা দেখার বিষয়!
কড়াইতে তেল গরম করে লবন যোগে পেঁয়াজ ও মরিচ ভাঁজুন।
পেঁয়াজ নরম হয়ে এলে রসুন বাটা দিয়ে দিন এবং ভাল করে নাড়িয়ে ভাঁজুন এবং শেষে হাফ কাপ পানি দিয়ে দিন।
এবার হলুদ মরিচ গুড়া দিন। ভাল করে মিশিয়ে নিন।
এবার চিংড়ি মাছ গুলো দিয়ে দিন।
তেল উঠে যাবে। (আমি কম তেলে রান্না করি)
এবার সিদ্ধ করে রাখা শাপনা ডাটা গুলো দিয়ে দিন।
ভাল করে মিশিয়ে নিন এবং আরো হাফ কাপ পানি দিয়ে দিন (এই পানির বদলে নারিকেলের দুধ দিতে পারলে আরো ভাল স্বাদ হত।)
ঢাকনা দেয়ার আগে চিনি ছিটিয়ে দিন (ইচ্ছা)। ঢাকনা দিয়ে মিনিট ১৫ মাধ্যম আঁচে রাখুন। মাঝে মাঝে নাড়িয়ে দিতে ভুলবেন না এবং রান্নাঘর ছেড়ে যাবেন না।
এই অবস্থায় এসে যাবে, প্রতিটা ডাটাতে মশলা প্রবেশ করা চাই।
ঝোল কেমন রাখবেন তা আপনি নিজেই ঠিক করুন তবে এই পর্যায়ে ফাইন্যাল লবন দেখুন, লাগলে দিন না লাগলে ওকে বলে আগে বাড়ুন।
ব্যস, পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত।
মাঝে মাঝে এমন রান্না করে না খেলে আর কি খেলেন? স্বাদ নিজে খেয়ে দেখুন!
সবাইকে শুভেচ্ছা। আশা করি আগামীতে এমন আরো নানান রান্না নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হতে পারবো।
Bhaiya, Bideshe shapla pabo koi!
LikeLike
ধন্যবাদ বোন।
হ্যাঁ, বিদেশে শাপনা না পাওয়া যাবারি কথা।
আসুন দেশে আসলে, আমিই রান্না করে খাওয়াবো।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
খুব ভাল লাগল, আমার বিবাহিত ব্যাচেলর জীবনে এই রেসিপি গুলো ট্রাই করে দেখতে হবে!
LikeLike
ধন্যবাদ রাসেল ভাই,
আমি তো আপনাদের জন্য আছি! বিবাহিত ব্যচেলর দের কষ্ট আমি বুঝি! হা হা হা…। রান্না করলে সময় যেমন ভাল কাটে তেমনি ভাল খাবারও জুটে!
চলুক আমাদের চেষ্টা।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
Dear Shahadat Bhai , your this nice recipe helps me to recall my childhood memories.
LikeLike
ধন্যবাদ ব্রাদার/সিষ্টার।
আমিও হাতে গোনা কয়েকবার এই রান্না খেয়েছি। শাপলা দেখলে সেই সব খাবারের ও দিনের কথা মনে পড়াই স্বাভাবিক।
কমেন্ট করার জন্য আবারও ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।
LikeLike
By the way Shahadat Bhai , accordingto the photo of your dish the curry soup are seems a little bit more in comparison with the dish of my childhood memory , and so far I recall my memory my mother add some mustard pest also with this dishes .
LikeLike
ধন্যবাদ ব্রাদার/সিষ্টার,
হ্যাঁ, আমি নিশ্চিত সরিষা বাটা যোগ করলে আরো আরো স্বাদ হতে। ঘরে আমাদের সরিষা বাটা ছিল, কিন্তু সময় মত মনে না হওয়াতে দেয়া যায় নাই। নেক্সট টাইম, আবার যদি কোনদিন শাপলা ডাটা রান্না করি তবে সরিষা বাটা দিয়েই করবো।
শুভেচ্ছা নিন। আমরা আমাদের আগের রান্না গুলো হারিয়ে যেতে বসেছি।
LikeLike
I miss all this special food’s
LikeLike
ধন্যবাদ ব্রাদার/ সিস্টার।
শাপলা মজাদার খাবার।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
ভারী চমৎকার বর্ণনা করেছেন ভাই । আজ আমিও প্রথম বার কিনে আনলাম । তবে ফুল গুলি কি করি ? বিক্রেতা বলল যে বড়া বানানো যায় । আমাদের কাজে মেয়েটা বলল ওই রকম সে জীবনে দেখেনি । বিক্রেতা ভুজুং দিয়ে থাকতে পারে । তবে ডাঁটা অতি উপাদেয় হয়েছে।
— কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায়
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ ব্রাদার।
শাপলার ফুল খাওয়া যায়, এটা আমি এখনো শুনি নাই। তবে এই দুনিয়াতে কিছুই ফেলনা নয়।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
খুব ভালো লাগলো এই রান্না টি, একটু নতুনত্ব লাগলো।এই প্রথম বার শাপলা টা রান্না করলাম খুব ভালো লাগলো।এই রকম কিছু রান্না রেসিপি দেখতে চাই। আর যদি নিরামিষ ভাবে শাপলা রান্নার কোনো রেসিপি থাকে অবশ্য ই দেবেন আমাকে।
খুব ভালো থাকবেন আপনি, সুস্থ থাকুন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ আপনার ভালো করুক 🙏🙏🙏। জয় শ্রী কৃষ্ণ।
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা আপনাকেও, ভাল থাকুন বোন।
LikeLike