গ্যালারি

রেসিপিঃ ইতালিয়ান পাস্তা (সকাল বিকালের নাস্তায়, বিশেষ রান্না)


বিদেশী রান্নায় আমি উৎসাহিত নই কারনে দেশের কত রান্নাই তো এখনো বাকী। এখনো আমাদের দেশের নানান পদের রান্না করতে পারি নাই! হা হা হা, আমার ব্যাটারী জানালেন তাতে কি? আমাদের রেসিপির পাঠক পাঠিকা ভাই বোন বন্ধু যারা দেশের বাইরে আছেন তারা কি বিদেশী রান্না খাবে না বা খাচ্ছে না! বিশেষ করে কয়েকদিন আগে একটা চেইন গ্রোসারীতে গিয়ে আমি নিজেই ইতালীর এক প্যাকেট পাস্তা কিনে নিয়ে এসেছিলাম এবং সেটা রান্না করে খাব ভাবছিলাম। যাই হোক, চলুন পাস্তা রান্না দেখি। এই রান্নাটা আমার ব্যাটারী নিজেই করেছেন আমি সহকারী হিসাবে ছিলাম এবং আমি নিজেও শিখে নিয়েছি। আগামীতে আমি নিজেই পাস্তা রান্না করতে পারবো।

পাস্তা রান্নায় মোটামুটি পাচটি আছে।
১। পাস্তা রান্নার জন্য প্রিপারেশন (উপকরনঃ ইটালিয়ান পাস্তা ৪০০গ্রাম, সামান্য লবন, তেল ও পানি)
২। চিকেন প্রিপারেশন (উপকরনঃ বোনলেস চিকেন ৩০০গ্রাম,  আদাকুচি, দুই চিমটি গোল মরিচ গুড়া, কাঁচা মরিচ কুঁচি,  হাফকাপ দুধ, ওয়েষ্টার সস)
৩। হোয়াইট সস বানানো (নিম্মে আলাদা করে দেয়া হল কারন এটাই একটু বড় ধাপ, দেখুন)
৪। মুল রান্না (উপকরনঃ হোয়াইট সসের সাথে পাস্তা ও চিকেন মিক্স, ধনিয়াপাতা কুঁচি)
৫। পরিবেশনা (উপকরণঃ চিজ কুঁচি)

উপকরনঃ (হোয়াইট সসের আলাদা রেসিপি আগে দেয়া হয়েছে, এখানে)
মোটামুটি মাঝারি এক বাটি হোয়াইট সসের জন্যঃ
– বাটার, ৫ টেবিল চামচ
– ময়দা, ১/২ কাপ
– দুধ, দুই কাপ
– জয়ফল গুড়া, ১/৪ চা চামচ (বেশী হলে তিতে ভাব এসে যাবে)
– গোল মরিচের গুড়া, ১/২ চা চামচ
– টেষ্টিং সল্ট, ১/২ চা চামচ বা কম
– চিনি, ২ চা চামচ
– লবন, ১ চা চামচ (বা লাগলে পরে দেয়া যেতে পারে)
(এই রেসিপির উপকরন অধ্যাপিকা সিদ্দিকা কবীরের বই থেকে নেয়া হয়েছে)

প্রনালীঃ
১। পাস্তা প্রিপারেশনঃ

ছবি ১, পাস্তা গুলো গরম পানিতে সিদ্ধ করে নিন। এক চিমটি লবন যোগে।


ছবি ২, সিদ্ধ খুব বেশি নয়, বেশী করলে পাস্তা গুলো গলাগলা হয়ে যাবে। নরম হবে কিন্তু আকার ঠিক থাকবে।


ছবি ৩, চালুনিতে ঢেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।


ছবি ৪, সামান্য তেল দিয়ে মেখে নিতে হবে।


ছবি ৫, ঝর ঝরে পাস্তা রান্নার জন্য তেরী হয়ে গেল, এবার রেখে দিন।

২। চিকেন প্রিপারেশন (চাইলে প্রনও দিতে পারেন);

ছবি ৬, কয়েক চামচ তেল গরম করে আদা কুঁচি ভেঁজে নিন। হলদে ভাব নিয়ে আসুন।


ছবি ৭, এবার চিকেন দিয়ে দিন, দুই চিমটি গোল মরিচ দিন।


ছবি ৮, দুই চা চামচ ওয়েষ্টার সস দিন।


ছবি ৯, এবার হাফ কাপ দুধ দিন।


ছবি ১০, কাঁচা মরিচ কুঁচি দিন (এটা না দিলেও চলে কিন্তু একটু ঝাল স্বাদের জন্য দেয়া হল)


ছবি ১১, মাধ্যম আঁচে নাড়িয়ে রান্না করুন।


ছবি ১২, ব্যস চিকেন রেডি হয়ে গেল এবং তুলে রাখুন।

৩। হোয়াইট সস প্রিপারেশনঃ

ছবি ১৩, কড়াই গরম হলে তাতে মাখন দিন।


ছবি ১৪, মাখন গলে যাবে, লবন দিন।


ছবি ১৫, মাখন গলে গেলে প্রথমে ময়দা দিন। ভাল করে নাড়িয়ে দিন, নাড়ানো থামাবেন না।


ছবি ১৬, আগুন কম থাকবে।


ছবি ১৭, এবার দুধ দিন। নাড়ান।


ছবি ১৮, গোল মরিচের গুড়া এবং জয়ফলের গুড়া দিন। নাড়ুন।


ছবি ১৯, এবার চিনি দিন।


ছবি ২০, আগুন মাঝারি বা কমে থাকবে। নাড়ান। একটা বলক (এই শব্দের সঠিক বাংলা আমার জানা নেই) উঠলেই আগুন থামিয়ে দিন।


ছবি ২১, ব্যস হয়ে গেল, হোয়াইট সস।

৪। মুল রান্নাঃ

ছবি ২২, হোয়াইট সসে প্রথমে প্রিপারেশন করা পাস্তা দিন।


ছবি ২৩, ভাল করে নাড়িয়ে মিশিয়ে নিন।


ছবি ২৪, এবার প্রিপারেশন করা চিকেন দিয়ে দিন এবং ভাল করে মিশিয়ে নিন।


ছবি ২৫, ধনিয়াপাতার কুঁচি দিন।


ছবি ২৬, ভাল করে মিশিয়ে নিন এবং লবন স্বাদ দেখুন। যদি মনে হয় লবন লাগবে তবে দিয়ে আবার নাড়িয়ে নিন।

৫। পরিবেশনাঃ

ছবি ২৭, বাটিতে পাস্তা রান্না তুলে রাখুন।


ছবি ২৮, কিছু চিজ কুঁচি করে ছিটিয়ে দিন।


ছবি ২৯, চিজ গলে ক্রিমের মত হয়ে যাবে।


ছবি ৩০, ব্যস! হয়ে গেল ইটালিয়ান পাস্তা!

আমি ইচ্ছা করেই এই রান্নায় বেশী ছবি ও ধাপ বাড়িয়ে দিয়েছি কারন যাতে আপনাদের বুঝতে সুবিধা হয়। আসলে তেমন কঠিন কাজ নয়। একের পর এক কাজ গুলো করে গেলেই আপনা আপনি এমন সুন্দর এবং স্বাদের পাস্তা পেয়ে যাবেন।

তবে আমাদের দেশে এই রান্না গুলো করা হয় না কারন এই সব খাবার আমাদের দেশের আবহাওয়ার সাথে ও আমাদের শরীরের সাথে সঠিক ভাবে খাপ খায় না। উপরি বাটার, চিজ, পাস্তার দামও অনেক। এই রকম একবাটি পাস্তা ঘরে বানাতেই মোটামুটি ৬০০ টাকার মত খরচ পড়ে! তবুও বছরে বা ছয় মাসে একবার তো রান্না করা যেতে পারেই!

সবাইকে শুভেচ্ছা। আমাদের চেষ্টা চলবেই।

কৃতজ্ঞতাঃ অধ্যাপিকা সিদ্দিকা কবীর ও মানসুরা হোসেন

9 responses to “রেসিপিঃ ইতালিয়ান পাস্তা (সকাল বিকালের নাস্তায়, বিশেষ রান্না)

  1. দারুণ হইছে!! 😀

    উপরে কি ঢাকাই পনির নাকি মোজারেলা চিজ দিলেন??

    মুলত এই রেসিপিটাকে ম্যাক এন্ড চিজ বলে,আমি মাঝে মাঝে এটা তৈরি করি 🙂
    হ্যা,খরচ হয় কিন্তু খরচ টা অবশ্যই বাইরে খাওয়ার থেকে কম
    যখন বাইরে হোয়াইট সস পাস্তা খেতাম পিজ্জা হাটে,তখন অল্প পরিমাণের পাস্তার দাম তারা ৩৫০টাকা রাখত!!! এখন অবশ্য বাসায় বানিয়ে খাই

    যাই হোক, এই ব্লগটা আস্তে আস্তে সমৃদ্ধ হচ্ছে দেখে দারুণ খুশি হলাম।

    তবে আঙ্কেল, ইন্টারন্যাশনাল রেসিপির কথা আন্টি যেটা বললেন,তার ব্যাপারে আমার কথা হল,আমি ব্যক্তিগতভাবে আপনার সহজ দেশী রান্নার জন্যই আমি আপনার রেসিপি সাইট পছন্দ করি ও ফলো করি। বিদেশী রান্নার জন্য আমি কখনোই বাংলাদেশী বা ভারতীয় কোন সাইট ফলো করি না। এমনকি হোয়াইট সস রান্নাটাই আমি ইউটিউব থেকে শিখেছি। তবে দেশী রান্না আমি করি না, এর জন্য আম্মুকে আপনার অথবা সিদ্দিকা কবির এর রেসিপি দেখাই। বিদেশী রান্না খরচসাপেক্ষ, তাই আমার মতে দেশী রান্না দিয়ে আপনার ব্লগ আরো সমৃদ্ধ করাটাই ভালো হবে।

    শুভেচ্ছা ও ভালোলাগা

    Liked by 1 person

    • ধন্যবাদ ভাতিজা।
      শেষে যে চীজ ব্যবহার করেছিলাম তা হচ্ছে অমুল চিজ, ইন্ডিয়ান। আমাদের দেশে যে চিজ পাওয়া যায়, দাম দেখলে মাথা ঘুরে। কি করে এই সকল চীজ খাবো। সামান্য এক টুকরা সাড়ে তিনশত থেকে ছয়শত টাকার মধ্যে।

      দামের কথা চিন্তা করে অনেক সময়েই কেনা হয় না, আফসোস লাগেও বটে।

      যাই হোক, দেখা যাক সামনে কি আছে কপালে।

      শুভেচ্ছা।

      Like

  2. (function(d, s, id) { var js, fjs = d.getElementsByTagName(s)[0]; if (d.getElementById(id)) return; js = d.createElement(s); js.id = id; js.src = “//connect.facebook.net/en_GB/all.js#xfbml=1”; fjs.parentNode.insertBefore(js, fjs); }(document, ‘script’, ‘facebook-jssdk’));Post by Arzuman Cooking- রান্না/ রেসিপি.

    Liked by 1 person

  3. আমি পাস্তা বেশ পছন্দ করি। বিভিন্নরকম রান্না ও ট্রাই করা শখ আমার। আচ্ছা ঘরে যে চিজ বানানো যায় সেটাকি ব্যবহার করা যাবে?

    Liked by 1 person

[প্রিয় খাদ্যরসিক পাঠক/পাঠিকা, পোষ্ট দেখে যাবার জন্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা। নিম্মে আপনি আপনার মন্তব্য/বক্তব্য কিংবা পরামর্শ দিয়ে যেতে পারেন। আপনার একটি একটি মন্তব্য আমাদের অনুপ্রাণিত করে কয়েক কোটি বার। আপনার মন্তব্যের জন্য শুভেচ্ছা থাকল। অনলাইনে ফিরলেই আপনার উত্তর দেয়া হবে।]