আমি ভাল মাছ রান্না করতে পারি এবং মাছ রান্না আমার কাছে সব চেয়ে সহজ বলে মনে হয়। মাছ রান্নায় সময় কম লাগে আর মোটামুটি সব মাছের একই উপকরন দিয়ে রান্না চলে। গরম ভাতের সাথে এমনি মাছের এক টুকরা এবং একটু ঝোল দিয়েই খাবার খেয়ে উঠা যায়। যে কোন ধরনের মাছ বা মাছের টুকরা দিয়ে এভাবে রান্না করতে পারেন। তাজা মাছের স্বাদ, ঘ্রান (প্রত্যেক মাছের একটা আলাদা স্বাদ ও ঘ্রান আছে) যে কোন বাংলাদেশীকেই আনন্দ দিবে। মাছ খান না এমন বাংলাদেশী এই দুনিয়াতে খুব কমই আছে! তবে ছোট বেলা থেকেই মাছ খাবার অভ্যাস করতে হয়। কম কাঁটার মাছ দিয়ে শিশুদের আগ্রহী করে তুলতে হয়। এই রেসিপি সাইটে আমার বাংলাদেশে পাওয়া প্রচুর মাছের রান্না ও ফ্রাই আছে এবং সেটার দুটো ক্যাটাগরী আছে। আপনি চাইলে ক্যাটাগরী অনুসারে সেই সব রান্না ও ভাঁজা দেখতে পারেন। নতুবা আপনার পছন্দের মাছের নাম লিখে (বাংলা বা ইংরেজীতে) সার্চ দিয়েও বের করে দেখে নিতে পারেন।
১। মাছ ভাজি ও বেক (হরেক রকমের মাছ)
২। মাছ সমূহ রান্না
যাই হোক, আমার রেসিপি সাইটের একজন প্রিয় ব্যাচেলর পাঠক চট্রগ্রাম থেকে লিখেছেন, “উদরাজী ভাই মাছ রান্না করতে ভয় পেতাম, এখন চমৎকার স্বাদের মাছ রান্না করতে পারি শুধু আপনার রেসিপির কারনেই”। আমিও বলি, মাছ রান্নায় ভয় নেই, শুধু প্রথমে ঝোলটা বানিয়ে নিলেই হল, ব্যস! তার পরে বাকী কাজ শুধু নাড়া ছাড়া!
চলুন মাছ রান্নার ঝোল আবারো দেখে নেই। খুব সহজ, তবে মাধ্যম আঁচে একটু সময় নিয়ে করবেন।
প্রয়োজনীয় উপকরনঃ
– যে কোন মাছ (রান্না শুরু করার আগেই মাছে কেটে বা পরিস্কার করে রেখে দিবেন)
– মাঝারি চারটে পেঁয়াজ কুঁচি (পেঁয়াজ একটু বেশী হলে স্বাদ বাড়বে)
– কয়েকটা কাঁচা মরিচ,
– এক টেবিল চামচ আদা বাটা,
– এক টেবিল চামচ দেশী রসুন বাটা,
– ঝাল বুঝে হাফ চামচ মরিচ গুড়া (ঝালের ব্যাপারটা খেয়াল রাখবেন সব সময়েই)
– হাফ চা চামচ হলুদ গুড়া,
– তেল (কম তেলে রান্না করতে চাইলে পানি একটু বেশি দিয়ে দিবেন)
– পানি (মাছ রান্নায় দুই দফা পানি লাগে, ঝোলের সময় একবার, মাছ কষিয়ে নিয়ে আর একবার)
– লবন (যে কোন রান্নায় কম লবন দিয়েই রান্না শুরু করবেন কারন রান্না শেষের আগে আবারো লবন দেয়ার চান্স মিলে, রান্নায় লবন কম বেশি হলে রান্নার মুল স্বাদ মাটি হয়ে যায়)
মাছ রান্নার পরে নিম্মের যে কোন দুটোর একটা ব্যবহার করতে পারেন।
– হাফ চা চামচ জিরা গুড়া (শেষে ব্যবহার হবে)
আরো দিতে পারেন
– দেশী/বিদেশি ধনিয়া পাতার কুঁচি
বিশেষঃ রান্না তুলে নেয়ার আগে কয়েকটা আস্ত কাঁচা মরিচ দিতে পারেন। মাছ রান্না বাটিতে তুলে নিলে দেখতে ভাল দেখাবে বা যারা ঝাল বেশি পছন্দ করেন তারা তা খেতে পারেন।
প্রনালীঃ
কড়াইতে তেল গরম করে তাতে সামান্য লবন যোগে পেঁয়াজ কুঁচি ভাঁজতে থাকুন।
পেঁয়াজ কুচি নরম এবং হাল্কা হলদে রঙ হয়ে এলে কাঁচা মরিচ, আদা, ও রসুন দিন এবং আরো কিছু সময় ভাঁজুন।
এবার প্রয়োজনীয় পানি দিয়ে দিন এবং নাড়ুন।
এবার হলুদ গুড়া ও মরিচ গুড়া দিন এবং ভাল করে মিশিয়ে কম আঁচে রাখুন।
দেখুন সব ভেজষ মিলে মিশে একটা আলাদা ঘ্রান বের হয়ে আসছে এবং তেল উপরে উঠে আসবে। ব্যস হয়ে গেল মাছ রান্নার ঝোল।
এবার শুধু আপনি আপনার পছন্দের মাছ ছেড়ে দিন। ভাল করে মিশিয়ে ঢাকনা দিয়ে রাখুন। প্রায় সব মাছ থেকেই পানি বের হয় এবং এই পানিতেই মাছ রান্না হয়ে যায়, যদি ঝোল বেশি রাখতে চান তবে আরো এক কাপ পানি দিতে পারেন। শেষে ফাইন্যাল লবন স্বাদ দেখে জিরা গুড়া বা ধনিয়া পাতার কুঁচি ছিটিয়ে নামিয়ে পরিবেশন করুন।
একবার মাছ রান্না শিখে গেলে আপনাকে আর কে ঠেকায়? তবে রান্না হচ্ছে প্যাক্ট্রিক্যাল বা অভিজ্ঞতার ব্যাপার। আপনি যত রান্না করবেন, রান্নায় আপনি ততই দক্ষ হয়ে উঠবেন। আমার কাছে রান্না হচ্ছে ভালবাসা, এই ভালবাসা থেকে কেন নিজকে বঞ্চিত করবেন! রান্না করে প্রিয় কাউকে খাই দেখুন না।
নমুনাঃ
আইড় মাছ রান্না
চিংড়ি মাছ রান্না
রুই মাছের পেটি রান্না
সামুদ্রিক কাইক্যা মাছ রান্না (এই মাছ গুলো আগে সামান্য ভেঁজে নেয়া হয়েছিল, কিছু মাছ ভেঁজে নিয়েও রান্না হয়, তবে তাজা মাছ কখনো ভাঁজার দরকার আঁচে বলে আমি মনে করি না)
গজার মাছ রান্না।
ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা বন্ধুরা। আশা করি রান্না করবেন। রান্না একটা গুণের না, নারী বা পুরুষ কোন ব্যাপার নয়। যিনি ভাল ও স্বাদের রান্না করবেন, সবাই তাকে ভালবাসবেই। আর একবার রান্না শিখে গেলে আজীবন আপনি ভালবাসা পেয়েই যাবেন।
সবাই ভাল থাকুন।
জনাব শহদাত উদরাজী, আপনার মাছের রেসিপি পড়লাম ও দেখলাম। খুব ভাল লাগল। তবে আমার মনে হয় মাছ আগে হালকাভাবে ভেজে নিয়ে করলে ও সব শেষে গরম মশলার গুঁড়ো দিলে আরও বেশি ভাল সাদ হত।
আপনার ইমেল পেলে খুশি হব।
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ বোস ভাই, অবশ্যই আরো স্বাদ হবে। আমি সাধারন বেসিক দিক দেখিয়ে দিলাম এবার ইনোভেশনের পালা আপনার!
শুভেচ্ছা নিন। (দেরীতে উত্তর দেয়ার জন্য দুঃখিত)
LikeLike
খুব সুন্দর । আপনা কে জানায় অনেক ধন্যবাদ ।
LikeLiked by 1 person
আপনাকেও শুভেচ্ছা জানাই।
LikeLike
ধন্যবাদ
LikeLike
আমি জানতে চাই এখন কাঁচা মাছের উপর যে সব খারাপ মেডিসিন দেয় তা রান্নায় আগে কি ভাবে নষ্ট করবো প্লিজ একটু বলবেন
LikeLiked by 1 person
বোন, এই সব বিষয়ে কাথা বলতে বলতে এখন বোবা হয়ে আছি। যে কোন প্রানীর খাদ্যে মানুষ কি করে ভেজাল বা এমন কিছু মিশাতে পারে তা ভাবতেই গা শিহরে উঠে! কি নিষ্ঠুর ব্যাপার। তবে সরকার এই সকল বিষয়ে কিছুটা সচেতন হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। এখন নাকি মাছে বা এমন দ্রব্যে ফরমালিন দেয়া হয় না বা এটা আমদানীতে বিশেষ সতর্কতা আনা হয়েছে। তবে মেডিসিন দেয়া সহজে নষ্ট করা যায় না! মাছ তাজা পেলেই কিনুন, এছাড়া আমি আর কোন উপায় দেখি না! এখন কত মাছা আর কিনি না বা খাই না। কি করবো?
শাক সবজি যাই কিনেন, বাসায় এনে ভিজিয়ে রাখুন অনেক ক্ষন।
খুবই দুখের ব্যাপার।
LikeLike
সুন্দর একটি মাছের রেসিপির জন্য অনেক ধন্যবাদ
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ ব্রাদার। আশা করি চেষ্টা করবেন। শুভেচ্ছা নিন।
LikeLike
Facebook:SiamVS Moster
LikeLike
Thanks
LikeLiked by 1 person
আপনাকেও শুভেচ্ছা।
LikeLike
রিঠা মাছ ভুনা করার নিয়ম
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ। যে কোন মাছ এভাবে রান্না করা যায়, এই ঝোলে। শুভেচ্ছা। (অনেকে আগে সামান্য হলুদ লবন মিশিয়ে মাছ সামান্য ভেঁজে নেন, সেটাও মন্দ নয়, তবে তাজা মাছ আমি ভাঁজি না, মাছের ঘ্রান পেতে চাই)
LikeLike