শুভ জন্মদিন মানসুরা হোসেন। আজ আপনাদের পরিচিত মানসুরা হোসেনের জন্মদিন। তিনি আমার স্ত্রী তথা ব্যাটারী এবং বুলেট, ব্যালটের মা! সত্য কথা বলতে কি আমি দিনটার কথা প্রায় ভুলেই যাচ্ছিলাম। গতকাল সন্ধ্যায় আমার বড় ছেলে আমাকে জানালো, বাবা তুমি কিছু ভুলে যাচ্ছে! আমি আবার কি ভুলে যাচ্ছি! ওর দিকে তাকাতে জানালো আজ কিন্তু দশ তারিখ! আর তখনই মনে পড়লো সেই ঐতিহাসিক এগার জুলাই তারিখের কথা! হা হা হা, ছেলে আমাকে জানালো, আমাদের হয়ে একটা কেক নিয়ে এসো রাতে বাসায় ফিরার সময়।
জন্মদিনের কেক। ছেলেরা বড় হলে মায়েদের একটা বিরাট শক্তি হয়ে যায়!
কেক হাতে পোসপাস!
উৎসাহের কমতি নেই।
জন্মদিনের ব্যাপার গুলো শিশুদের জন্য আলাদা আনন্দ নিয়ে আসে।
ব্যালট কেক খায়!
এবার আরো কিছু কথায় আসি। আজ সকালে আমি অফিসে বের হব বলে সার্টপ্যান্ট পরে রেডি হলাম, তখুনি ব্যাটারী জানালেন তিনি ঘাড় ঘুরাতে পারছেন না। এবং অবস্থা এমন বেগতিক হয়ে পড়লো যে, আমি অফিসে যাওয়া বাদ দিয়ে উনার সেবার লেগে গেলাম। তিনি জানালেন, এক হাত নাড়াতেই পারছেন না, আমি পেশার চেক করে দেখলাম নরমাল আছে তাই ভড়কে গেলেও কিছুটা সময় নিয়ে মুভ ডলে এবং পেইন কিলার (আমাদের সামনের ডিস্পেন্সারির সহায়তায়) খাইয়ে উনাকে কিছুক্ষনের জন্য ঘুমাতে বললাম। এতে ধীরে ধীরে কাজ হয়েছে এবং ইফতারের কিছু আগে তিনি সুস্থ্য হয়ে উঠেন, মাসাআল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ।
যাই হোক, ছোট ছোট পরিবার গুলোতে এমন ঘটনা খুবই ভয়াবহ। আশেপাশে কাউকে কিছু বলাও যায় না আবার সহ্য করাও মুস্কিল। এদিকে এমন ঘটনায় হাসপাতালে নিয়ে যাবার মত অবস্থাও থাকে না। যাই হোক, পরে আমার ধারনা হল, কোন কারনে ঘাড়ের রগে টান খেয়েছে এবং সেটা সময়ে আবার ঠিক হয়ে গেছে।
উক্ত ঘটনায় আমাদের আজ তেমন কোন রান্না হয় নাই! আমি নিজে ভাতের চাল দিয়ে খিচুরি এবং আলু ঝোলে একটা মুরগী রান্না করেছিলাম মাত্র! এবং সেটাই ছিল আমাদের রাতের খাবার। এই দিনে আর একটু ভাল খাবার খাওয়া গেলে ভাল লাগত কিন্তু উপায় ছিল না! যাই হোক, চলুন আজকের রান্না গুলোর ছবি দেখি।
লেবু, পেঁয়াজ ও কাঁচা মরিচ (ফ্রিজ থেকে বের করা)
আমের আঁচার।
আলু মুরগী ঝোল।
খিচুড়ি!
আমাদের রাতের খাবার।
রাত বারটা এক মিনিটের ছবি।
এই হচ্ছে আমাদের একটা গ্রুপ সেলফি! কেকে কাটার আগ মুহুর্ত্ত্ব আমরা। সেলফির কৌশল জেনে একটা দিক ভালই হল, ছবি তুলতে কেহ বাদ পড়ছে না! অথচ ছবি তোলায় আগে কেহ না কেহ বাদ পড়ত কিংবা অন্য কাউকে ডেকে এনে ছবি তুলতে হত!
যাই হোক, আমি আসলে রান্নাঘরে টিকে আছি মানসুরা হোসেনের জন্যই। তিনি আমাকে সহ্য করে যাচ্ছেন বলেই আমি নিজেও শিখতে পারছি এবং রান্না গুলো আপনাদের জন্য সাজিয়ে দিতে পারছি। যেসব রান্না আমি নিজে করি সেই রান্না গুলোতেও তিনি সাহায্য করেন, সত্য বলতে লজ্জা নেই, আমি এখনো রান্নাঘরে অনেক কিছু খুঁজে পাই না! রান্না করা এবং সাথে ছবি তোলা এত সহজ কাজ নয়! তবে আমি অবশ্য এখন অভস্থ্য হয়ে পড়ছি! প্রতিদিন একটা রান্না না রান্না করলে আমি নিজেও মনে শান্তি পাই না! রান্না করা এখন আমার কাছে একটা নেশাও বটে!
পরিশেষে আর কি বলা যায়, ভদ্রতার খাতিরেও অনেক কিছু এই দুনিয়াতে গোপন রেখে যেতে হয়! স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক এই দুনিয়ার একটা জটিল সম্পর্ক, অনেক কথা যায় না বলা, আর অনেক কিছুই হজম করে যেতে হয়। বলে ফেললেই অনেক কিছু শেষ হয়ে যায়। তবে আমার মনে হয়, স্বামী স্ত্রী হিসাবে একে অন্যকে ছাড় দিলেই সংসার সুখের হয়ে থাকে। ভালবাসাটার অর্থ পাওয়া নয় দেয়া, সেটা যাই হোক না কেন! সময়, অর্থ, ত্যাগ বা অন্য কিছু। দুই দিনের দুনিয়া, আজ মরলে কাল দুই দিন!
রেসিপি পাঠক/পাঠিকা ভাই বোন বন্ধুদের সবাইকে আমাদের শুভেচ্ছা। আমাদের জন্য দোয়া/আর্শিবাদ করবেন, আমরা যাতে আরো আরো সুখি এবং সুন্দর করে জীবন কাটাতে পারি।
শুভজন্মদিন মানসুরা হোসেন, বেঁচে থাকুন ভালবাসায়।
শুভ জন্মদিন ভাবী। আপনাদের সুখী জীবনের জন্য দোয়া করি। সবাই ভাল থাকুন।
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ বোন। আপনিও ভাল থাকুন।
LikeLike
খুব ভালো লাগলো এই হাসি-খুশি পরিবারটি দেখে। আপনাদের সবার সদা সুখী জীবন কামনা করি। ভাবীকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা।
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ রহমান ভাই, আপনার জন্যও থাকল আমাদের শুভেচ্ছা। আপনিও ভাল থাকুন। আগামী দিন গুলোতে আমাদের সাথেই থাকবেন বলে আশা করি।
LikeLike
আন্টির সাথে কখনই আমার সরাসরি যোগাযোগটা করা হয়নি কিন্তু আমি বুঝি এই ব্লগের পিছনে ওনার অবদান ঠিক কতটা। একা একজন সংসার সামলে একটি ব্লগকে সময় দেয়া, এটা মোটেও কম কিছু না। আসলে রান্নাঘরে বা সংসারে মহিলাদের কাজকে আমরা ঠিক কাজ মনে করি না। এইজন্যই অনেক নারী হারিয়ে যান কালের গর্ভে।
কিন্তু আপনাকে ধন্যবাদ আপনি তার এই অবদানকে উপেক্ষা না করে বরং সবার কাছেই ওনার অবদানের কথা বলেছেন। তাই আপনি অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার।
আন্টিকে আমার সালাম ও শুভেচ্ছা জানাবেন।
ধন্যবাদ 🙂
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ ভাতিজা,
আমি সব সময়েই বলে আসছি, তিনি আমাকে কষ্ট করে রান্নাঘরে সহ্য করেন বলে আমিও টিকে আছি। এটা সত্যি কঠিন ছাড়। আমার স্বামীর হাতের রান্না খেয়ে তারিফ করাও কঠিন, তিনি এই কাজটা করে থাকেন। আমার রান্না খারাপ হলেও কিছু বলেন না। তবে আমি প্রায় সব রান্নাই উনার কাছ থেকে শিখেছি, এখন অনেক কিছু হাতের কাছে পাই বলে অসুবিধা হয় না। তবুও তিনি থাকেন।
সত্য হচ্ছে মাঝে মাঝে নানা রান্নায় মতের অমিল হয়ে উঠে তবে আমি চুপ থেকে তা পার করে দেই। হা হা হা…
শুভেচ্ছা আপনাকে এবং আপনাদের পরিবারকে। আপনি এই সাইটের নিয়মিত পাঠক হিসাবে অনেক কমেন্ট করেছেন সেজন্য কৃতজ্ঞ। আপনাদের ভালবাসাই আমাদের চলার পথের পাথেয়।
ভাল থাকবেন। আপনি আপনার আম্মাকে রান্নাঘরে সাহায্য করেন এটা আমার কাছে ভাল লাগে। প্রত্যেক ছেলের এমন করা উচিত।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
Mashallah! Ooonek sundor r sukhi akta poribar. Ooonek ooonek doa r shuvo kamona thaklo apnader jonno. R vabiji je janacchi jonmodiner shuveccha r sathe sobar sustho o dirghayu kamnay biday!
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ বোন।
আপনার জন্যও আমাদের শুভেচ্ছা থাকল।
আপনিও ভাল থাকুন।
LikeLike
শুভ জন্মদিন ভাবী।
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ বোন।
আপনিও ভাল থাকুন।
LikeLike
ধন্যবাদ বন্ধুরা।
আপনারা জেনে থাকবেন যে, এই ব্লগের সব লেখা গুলো মানসুরা হোসেন নিজেও পড়ে থাকেন, অনেক সময় পোষ্ট লিখার সময় তিনিও বসে থাকেন আর কমেন্টের উত্তর দেয়ার সময় প্রায় তিনি কাছেই থাকেন।
আপনাদের কমেন্ট গুলো পড়ে তিনি খুশি হয়েছেন।
সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
ভাল থাকুন সবাই।
LikeLike