মানুষের জীবন বড় অদ্ভুত! বেঁচে থাকলে খেতে হবেই! মরা মানুষকে সামনে রেখেও খেতে হয়, উপায় নেই! না খেয়ে বেঁচে থাকার এই দুনিয়াতে কোন ব্যবস্থা নেই! একমাত্র মরে গেলেই খাদ্যের আর প্রয়োজন নেই! অবশ্য দুনিয়াতে মানুষ নয়, প্রায় সকল প্রানীর ক্ষেত্রেই একই কথা প্রযোজ্য, প্রান আছে এমন সবারই কোন না কোনভাবেই খাদ্য গ্রহন করতে হয়!
আমি আমার ছোট বেলায় একটা সাধারন দুর্ঘটনা দেখে আমি বেশ কয়েক দিন আমার স্বাভাবিক খাবার খেতে পারি নাই! বড় হতে হতে দেখলাম, এটা কোন ব্যাপার না! যারা খুব বাজে ময়লা সাফ করেন কিংবা একজন ডাক্তার এই মাত্র কোন রোগীর অপারেশন করলেন, তিনি বা তারা সেই হাত ধুয়েই খেতে বসেন! উপায় নাই পাশাপাশি মানুষ ঘটনায় অভ্যস্থ হয়ে পড়ে।
যাই হোক, আজ আমার মনে অনেক দুঃখ। দুঃখের এই সময়েও রেসিপি তথা খাবার নিয়ে ভাবছি! এগিয়ে যেতেই হবে, এভাবে খেয়ে দেয়ে যে আরো কিছুদিন বেঁচে থাকতে হবে! আজ আপনাদের আমি একটা সাধারন তরকারী রান্না দেখিয়ে দেব, আমি আশা করি এই তরকারী বা এই কম্বিনেশনের খাবার আপনারা সবাই খেয়েছেন। চলুন দেখে ফেলি, মলা মাছ, আলু এবং টমেটো রান্না।
উপকরনঃ
– মলা মাছ, এক কাপ
– আলু, মাঝারি দুইটা
– টমেটো, মাঝারি দুইটা
– পেঁয়াজ কুচি, হাফ কাপ
– মরিচ গুড়া, হাফ চা চামচ (ঝাল বুঝে)
– হলুদ গুড়া, এক চা চামচ
– রসুন বাটা, এক চা চামচ
– কাঁচা মরিচ, কয়েকটা
– লবন, পরিমান মত (এক চা চামচের কমই লাগবে)
– তেল, ১/৪ কাপ
– পানি, পরিমান মত (এক কাপ)
– ধনিয়া পাতার কুচি, দুই টেবিল চামচ (বা কম)
প্রনালীঃ
রান্না শুরু করার আগে এভাবে প্রতিটা প্রয়োজনীয় বা উপকরণ হাতের কাছে যোগাড় করে রাখা দরকার, তা হলে রান্নায় সময় নষ্ট হয় না, অযথা এদিক ওদিক যেতে হয় না, রান্নার প্রতি মনোযোগ থাকে, রান্না পুড়ে যায় না এবং সর্বপরি রান্না সুস্বাদু হয়।
তেলে সামান্য এক চিমটি লবন যোগে পেঁয়াজ কুচি ভাজে সোনালী করে ফেলুন।
এবার একে একে উল্লেখিত সব মশলা দিয়ে ভাজতে থাকুন। মিনিট ৬/৭ মাধ্যম আঁচে ভাঁজার পর এতে হাফ কাপ পানি দিন এবং আবারো কষাতে থাকুন। তেল উঠে যাবে।
এবার আলু এবং টমেটো দিয়ে দিন এবং কষাতে থাকুন।
এককাপ পানি দিয়ে কিছুক্ষনের জন্য ঢাকনা দিয়ে রাখুন। আগুন মাধ্যম আঁচে থাকবে। মাঝে মাঝে ঢাকনা তুলে নাড়িয়ে দিতে হবে।
আলু সিদ্ধ হল কি না দেখুন, ঠিক এমন একটা অবস্থায় এসে যাবে।
এবার মলা মাছ দিয়ে দিন। মাধ্য আঁচে মাছ গুলো হতে থাকবে, মাঝে মাঝে নাড়িয়ে বা মিক্স করে দিন।
কয়েকটা কাঁচা মরিচ চিরে দিতে পারেন। মলা মাছ সময় বেশি নেয় না, তাড়াতাড়ি সিদ্ধ হয়ে যায়।
এবার ফাইন্যাল লবন দেখুন এবং পরিমান মত দিয়ে ওকে করুন। এই সময়ে ধনিয়া কুচি দিয়ে দিতে হবে। ধনিয়া পাতার কুচি দিয়ে বেশি ক্ষন রাখা চলবে না! মিনিট ৩/৪, আগুন বাড়িয়ে!
ব্যস, পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত। কি এমন ধরনের তরকারী খেয়েছেন কি! মলামাছ না খেলে আর কি খেলেন? আপনি আরো জানেন কি, এই মলা মাছ আমাদের দেশে এখন খুব কম পাওয়া যায়, যা পাওয়া যায় তাও বিদেশে চলে যাচ্ছে। বিদেশে আমাদের প্রবাসী বাংলাদেশীরা এখন এক্সপোর্ট করে নিয়ে যাচ্ছেন। অধিক দামে কিনে খাচ্ছেন কারন আর কিছু নয়, এই স্বাদ কি ভুলে থাকা যায়!
আমার দাদু এই তরকারী দেখলে বলতেন, ‘আহ মরি মরি, কে কোথায় আছিস, আমাকে এক প্লেট গরম ভাত দে’! হা হা হা।
রেসিপি প্রিয় সব ভাই বোন, বন্ধুদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। ভাল খেয়ে, মজা করে আনন্দে সময় কাটুক আমাদের।
ওহ!!! আমার প্রিয় মাছের তরকারী। মলা মাছ আর কাচকি মাছ আমি অসম্ভব ভালবাসি!আলু হলে তো কথাই নেই!!!
আঙ্কেল, মলা মাছের শুটকি খেয়েছেন? ঐটাও অসাধারণ
শুভেচ্ছা
LikeLike
ধন্যবাদ ভাইয়া, আমি পছন্দ করে খাই। তবে আজকাল বাজারে এমন মাছ পাওয়া যায় না।
LikeLike
Yummm love it.looks delish. .
LikeLike
ধন্যবাদ রেহমান ভাই।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
আমার মা কে দেখতাম এই তরকারিটা রান্নার সময়, একেবারে সব উপকরন দিয়ে মাখিয়ে চুলায় বসিয়ে দিতেন, সেটাও ভাল লাগে খেতে। আমার অসম্ভব পছন্দের একটা তরকারি। অনেক মজার হয়েছে নিশ্চই……
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ বোন।
হ্যাঁ, এই তরকারীটা আমরাও ছোটবেলায় অনেক খেয়েছি। এখন আর সেই রকম মাছ পাওয়া যায় না।
শুভেচ্ছা নিন।
LikeLike