রাজধানী রেষ্টুরেন্ট, বাংলাদেশী মালিক, স্বামী স্ত্রী মিলে হোটেল চালান, স্ত্রী থাই। মালিক ভদ্রলোকের বয়স হয়েছে, শুনেছি এই হোটেলের বাংলা খাবার গুলো উনার থাই স্ত্রীর তত্ত্বাবধানে তৈরী হয়, যৌবনকালে তিনি তার থাই স্ত্রীকে বাংলা রান্না শিখিয়েছিলেন! ব্রামুনগ্রাদ হাসপিটালের সাথে বলে বেশি চলে, হসপিটালে আসা রোগীর সাথের ভিজিটররা এই সব রেষ্টুরেন্টেই খাবার খেয়ে থাকে। গতবারের থাই ভ্রমনেও আমি এই হোটেলে খেয়েছিলাম, সেবারে খাবার ভাল লাগে নাই তাই এবার এই হোটেলে খাবার খেতে চাই নাই। কিন্তু বিদেশে বসে হোটেলের সাইন বোর্ডে বাংলা লেখা দেখলে প্রবেশ না করে কি পারা যায়!
আমাদের থাকার হোটেলের খুব কাছেই এই খাবার হোটেল। আমরা হেঁটেই রাওয়ানা হয়ে যাই, এই শহরে রাস্তায় হাঁটার একটা বিশেষ আনন্দ আছে।
হোটেলে প্রবেশ করে ঠান্ডা পানি নিয়ে বসে পড়ি। মেনু না দেখেই বাংলাদেশী ওয়েটার দেখে মুখে মুখেই খাবারের ওয়ার্ডার দিয়ে দেই।
সালাদ দেখুন! পূরাই বাংলা কায়দা!
পালং শাক ভাজা দিয়ে আমাদের খাবার শুরু করি।
এই হচ্ছে কোরাল মাছ ভুনা! (আমার কাছে আবর্জনাই মনে হয়েছিল!)
পাতলা ডালের নয় ঘন ডাল! কবে রান্না হয়েছিল, আল্লাহ মালুম!
হুমায়ুন আহমেদের মাখামাখি দেখুন! ওস্তাদ মনে হয়, বিদেশে এই বাংলা খাবারের লোড নিতে পারছিলেন না!
আমি সিদান্ত নিয়েছি, যদি আর কখনো ব্যাংকক যাই তবে রাস্তার ধারের খাবার খাব তবুও এই হোটেলের খাবার খাব না! ভিন দেশী কোন মানুষ এই হোটেলে বাংলাদেশের খাবার খেলে হয়ত সে তার বাকী জীবন বাংলাদেশের খাবার নিয়ে ভুল ধারনা পোষন করেই যাবে।
অনেক হোটেলে খেলেও কখনো হোটেলের বিলের কপি রাখি নাই। রাগে দুঃখে এই হোটেলের বিলের কপি রেখে দিয়েছি এবং পরে এই ছবি তুলে নিয়েছি। খাবারের দাম দেখুন – গলাকাটা বটেই!
সাদা ভাত (ছোট এক বাটি) – ২০ বাথ (পরিমান আমার কাছে বেশ কম মনে হয়েছে)
পুই শাক ভাজি (ছোট এক বাটি) – ১০০ বাথ (মাশাআল্লাহ!)
কোরাল মাছ ভুনা – ১৫০ বাথ পার পিস (সাইজ আহমারি নয়)
ডাল এক বাটি – ৬০ বাথ (মাশাআল্লাহ!)
পানি এক বোতল – ১০ বাথ
(শেষের ১০ বাথ মনে হয় আর একটা পানির দাম, যেটা হয়ত লিখতে ভুলে গিয়েছিল প্রথমে!)
এই হোটেলে দুই বার খাবারের অভিজ্ঞতায় বলতে পারি, ঢাকার সাধারন মানের হোটেলেও এর চেয়ে ভাল রান্না হয়! বিদেশে সুযোগ আছে, সব জিনিষ ভেজাল মুক্ত এবং তাজা পাওয়া যায় সুতারাং ভাল করার সুযোগ বেশি। এই সুযোগ যিনি কাজে না লাগিয়ে মানুষকে বোকা বানাচ্ছেন তার প্রতি করুনা করা যায় বটে! এটা উচিত নয়! দেশের ভাবমর্তি নষ্ট হয়।
আপনারা হয়ত বলতে পারেন, আমি ব্লগে বলছি মাত্র! আমি উনাদের ওয়েটার এবং আরো খেতে আসা লোকজনদের সামনেও বলেছি, খাবারের মান উন্নত করার জন্য এবং পাশাপাশি পরিমানেও ভাল দেয়ার জন্য।
সবাইকে শুভেচ্ছা।
পিংব্যাকঃ থাইল্যান্ডঃ আল-হোসাইন রেস্টুরেন্ট, ব্যাংকক (বাংলাদেশীদের মিলন মেলা!) | রান্নাঘর (গল্প ও রান্না)
ভাইয়া, খাবারের রঙ দেখেই কিছুটা অনুমান করতে পারছি।
LikeLike