গ্যালারি

রেসিপিঃ পেঁয়াজ কলি ও মুশরের ডাল ভুনা (আখাউড়ার রান্না)


পেঁয়াজ কলি বা কালি নিয়ে কিছু দিন আগে একজন দুবাই প্রবাসী রেসিপি লাভার Mohammed Jobayer Hossain Miazi  ফেসবুকে আমার কাছে একটা রেসিপি জানতে চেয়েছিলেন, সাথে তিনি পেঁয়াজ কলির একটা ছবিও পাঠিয়েছেন। পেঁয়াজ কলি দিয়ে কয়েক পদের রান্না থাকলেও সেটা উনাকে সাজেশন না দিয়ে ভাবছিলাম, পেঁয়াজ কলি দিয়ে কি করে আর একটা রেসিপি দেয়া যায়। কয়েকদিন আগে বাজারে গিয়ে অনেক পেঁয়াজ কলি দেখলাম, যদিও এখন বাংলাদেশে পেঁয়াজ কলির সিজন শেষের দিকে। তবে দুনিয়ার অনেক দেশেই প্রায় সব স্ময়েই পেঁয়াজ কলি পাওয়া যায়। বিশেষ করে সারা বছর মধ্য প্রাচ্যে তো পাওয়া যায়ই।

পেঁয়াজ কলি নিয়ে বাসায় ফিরে আমার ব্যাটারী সাথে আলোচনা হল। তিনি জানালেন মুশরীর ডাল দিয়ে মাখা মাখা করে একটা রান্না হয় আখাউড়াতে, খেতে বেশ ভাল। ইচ্ছা হলে এই রান্নাটা করে দেখিয়ে দিতে পার। আমি আর অপেক্ষা করি নাই, কারন এটা আমার কাছে একটা নুতন কম্বিনেশনের রান্নাই মনে হয়েছে। আমি ব্যাটারী থেকে রেসিপি বুঝে কাজে লেগে পড়লাম। নিরামিষ রান্না, সব ধর্মের মেয়ে ছেলে বুড়ো বুড়ি সবাই খেতে পারবে!

চলুন কথা না বাড়িয়ে দেখে ফেলি। খুব সাধারন রান্না, আমাদের আগের অনেক রান্নাই এই রকম। যারা আমাদের রান্না দেখে আসছেন, ছবির দেখেই রান্না করে ফেলতে পারবেন বলে মনে করছি। তবুও ছবির নিচে বর্ননা ও পরিমান  যোগ করে দিলাম, খুব সহজ।


ভাল করে ধুয়ে এক কাপের মত পেঁয়াজ কলি এভাবে রিং এর মত করে কুচিয়ে নিন। হাফ কাপ মুশরীর ডাল ভাল করে ধুয়ে পানিতে ভিজিয়ে রাখুন।


কড়াইতে এক কাপের চার ভাগের এক ভাগ তেল (তেল একটু বেশি লাগে) গরম করে তাতে তিন/চার টেবিল চামচ পেঁয়াজ কুচি, এক চা চামচ রসুন বাটা, কয়েকটা কাচা মরিচ ফালি, হাফ চা চামচ মরিচ গুড়া (ঝাল বেশী হলে আরো কম), হাফ চা চামচ হলুদ গুড়া ও সামান্য লবন দিয়ে ভাল করে ভেজে নিন।


এর পর ভিজিয়ে রাখা মুশরী ডাল এবং পেঁয়াজ কলি রিং গুলো দিয়ে দিন।


খুন্তি দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে ভাজুন। আগুন মাধ্যম আঁচে থাকবে।


কিছুতেই নাড়ানো বন্ধ করবেন না।


ভাজা ভাজা করে ফেলতে হবে।


এবার এক কাপ পানি দিন, গা গা হিসাবে।  (বেশি দিলে আগুন বাড়িয়ে দিতে হবে, ঢাকনা চলবে না।)


এবার ঢাকনা দিয়ে মিনিট ১০ রাখুন, আগুন মাধ্যম আঁচে থাকবে। ডাল নরম হয়ে এলে, পানি শুকিয়ে গেলে ঢাকনা সরিয়ে নিন। তবে এভাবে ফেলে রান্নাঘর ছেড়ে যাবেন না, কারন তাতে তরকারী পুড়ে যেতে পারে।


ঠিক এই অবস্থায় এসে যাবে, ফাইন্যাল লবন দেখুন, লাগলে দিন, না লাগলে ওকে। ঠিক এই অবস্থায় আসলেই খুন্তি দিয়ে নাড়িয়ে কিছু ধনিয়া পাতার কুচি দিন এবং ভাল করে মিশিয়ে নিন।


ব্যস পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত।


গরম ভাতের সাথে খেয়ে দেখুন। আপনাকে আজ একটু বেশি ভাত খেতেই হবে! আমার চ্যালেঞ্জ!

ধন্যবাদ যুবায়ের ভাই, প্রবাসে আপনারা ভাল থাকুন, আনন্দে থাকুন। আমি জানি প্রবাসে রান্না একটা বিনোদন, রান্না একটা ভালবাসা, যারা রান্না জানেন না তাদের কি কষ্ট সেটা আমি নিজেই উদাহ্রন ছিলাম। আপনার বন্ধুদের আমাদের সালাম দিবেন। পেঁয়াজ কলির এই রান্নাটা সহ আরো পুরানো কয়েকটা রান্না আছে, আপনার যেটা ভাল লাগে সেটাই করুন। শুভেচ্ছা রেসিপি জানতে চাওয়ার জন্য। আমাদের রান্না গুলো বাংলাদেশী মধ্যবিত্ত পরিবারের উপযোগী এবং আমাদের মত করেই, অতিরিক্ত মশলা পরিহার এবং হাতের কাছের মশলা দিয়েই আমাদের প্রায় সব রান্না। আশা করি ভাল লাগবে। আমরা চাই, সবাই রান্না জানুক, রান্না না জানার জন্য কোন প্রবাসী, ব্যচেলর যেন কষ্ট না পান। রান্না একটা ভালবাসার নাম।

শুভেচ্ছা নিন প্রিয় রেসিপি প্রিয় বন্ধুরা।

কৃতজ্ঞতাঃ মানসুরা হোসেন (রেসিপি)

4 responses to “রেসিপিঃ পেঁয়াজ কলি ও মুশরের ডাল ভুনা (আখাউড়ার রান্না)

  1. খুব ভাল রান্না হয়েছে।

    Like

  2. আমি রান্না করলাম। খুব ভালো লাগলো এটা।

    Liked by 1 person

[প্রিয় খাদ্যরসিক পাঠক/পাঠিকা, পোষ্ট দেখে যাবার জন্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা। নিম্মে আপনি আপনার মন্তব্য/বক্তব্য কিংবা পরামর্শ দিয়ে যেতে পারেন। আপনার একটি একটি মন্তব্য আমাদের অনুপ্রাণিত করে কয়েক কোটি বার। আপনার মন্তব্যের জন্য শুভেচ্ছা থাকল। অনলাইনে ফিরলেই আপনার উত্তর দেয়া হবে।]