তারেকুর মিঠু, আমার রেসিপির একজন ভাল পাঠক। মেধাবী এবং বর্তমানে নটরডেম কলেজের ছাত্র। তার রান্নার প্রতি আগ্রহ এবং ইনফরমেশন জানা আমাকে প্রায়ই অবাক করে দেয়। সম্ভবত নবম শ্রেণি থেকে সে আমার এই রেসিপি বল্গ দেখে আসছে এবং কমেন্ট করছে। যতদুর বুঝতে পারি, যে প্রথম মোবাইল থেকেই আমাদের রেসিপি ব্লগ দেখত। মোবাইল থেকে ফেবুতে থাকা বা এমন সব ব্লগ দেখা কঠিন কাজ। কিন্তু সে থেমে থাকত না। সম্ববত আমার এই আঙ্কেল বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে (আর একজন বোন আছে এটা বুঝতে পারি)। আমাদের বোন (ওর আম্মা) ওকে খুব ভালবাসেন এবং মজাদার রান্না করে খাওয়ান, বোনের হাতের রান্নার তারিফ আছে এটা বুঝা যায়। যাক, সেই থেকে আমি ওকে ভাতিজা ডাকতে শুরু করি, সেও আমাকে অঙ্কেল ডাকে! আমি তার ‘আঙ্কেল’ ডাক উপভোগ করি। এসএসসি পাশ দিয়ে নটরডেম কলেজে এখন ২য় বর্ষে পড়ছে, আমি তাকে নিয়ে গর্ব করি। আশা ও দোয়া করি সে একদিন তার পরিবারের নাম উজ্জ্বল করবে।
কয়েকমাস আগে আমার এই মেধাবী ভাতিজা আমার কাছে মেয়নেজ বানানোর রেসিপি জানতে ছেয়েছিল। আমার মনে থাকলেও আমার ব্যাটারী মানে ওর চাচী (রেসিপিটা আমার জানা না থাকাতে) কিছুতেই সময় পাচ্ছিলেন না (আগে বাসায় যতবার মেয়নেজ বানানো হয়েছে আমি খেয়াল করি নাই বা দেখার ইচ্ছা পোষন করি নাই বা বাইরে ছিলাম!) তাই মেয়নেজ বানানো আমিও শিখতে চাইছিলাম। কয়েকবার সব কিছু যোগাড় করেও মেয়নেজ বানানো যায় নাই। মেয়নেজ বানাতে ব্লেন্ডারের ব্যবহার একটু বেশী বলে এবং অনেক শব্দ হয় বলে, শব্দে ঘরে থাকা আমার ছোট ছেলের কথা ভেবেই বানানো হয় নাই। এছাড়া সময় মুল ব্যাপার ছিলো, ইচ্ছা হলেই এখন আর সব কিছু করা যায় না। অফিস ফিরে রাতে রান্না চলে, ব্লেন্ডার চালানো চলে না!
এদিকে কয়েক দিন আগে আমার আর এক রেসিপি প্রিয় দাইফ ভাই বন্ধু একটা কমেন্টে জানালেন, তিনি বাসায় মেয়নেজ বানিয়েছেন। কথাটা শুনে আর বসে থাকা চলে না! অফিস ফেরার পথে সিদান্ত নিলাম, আজ চেষ্টা চলবে। মেয়নেজ আমার বড় ছেলে বুলেটের প্রিয় একটা খাবার, যদিও আমি মেয়নেজ দিয়ে তৈরী খাবারে ওকে উৎসাহিত করি না!
চলুন মেয়নেজ বানানো দেখে ফেলি। খুব সহজ, তেমন কিছু না। আপনি চাইলেই ঘরে বানিয়ে নিতে পারেন। এবং মেয়নেজ সহযোগে মজাদার খাবার বানিয়ে সবাইকে চমক দিতে পারেন। চলুন, আর দেরী কি!
প্রয়োজনীয় পরিমান ও উপকরনঃ (মোটামুটি এক বাটি মেয়নেজের জন্য)
– সয়াবিন তেল, এক কাপ
– ডিম, একটা
– সরিষা বাটা, হাফ চা চামচ
– সাদা গোল মরিচ গুড়া, হাফ চা চামচ বা সামান্য বেশি
– লেবুর রস, দুই টেবিল চামচ
– সিরকা, এক টেবিল চামচ
– চিনি, এক টেবিল চামচ (স্বাদ বুঝে কম বেশী)
– লবন, হাফ চা চামচ (স্বাদ বুঝে দেয়া যাবে)
– রসুন বাটা, হাফ চা চামচ (এটা স্বাদ বাড়িয়ে দেয়, ইচ্ছা হলে নাও দিতে পারেন তবে ৭ দিনের বেশী রাখতে চাইলে রসুন না দেয়াই ভাল)
প্রনালীঃ
পরিমান মত উপরে উল্লেখিত সব যোগাড় করে ফেলুন। মোটামুটি এক বাটি মেয়নেজ বানাতে যা যা লাগবে। (অনেকে শুধু ডিমের হলুদ অংশ ইওক দিয়েও মেয়নেজ বানিয়ে থাকেন, সেই ক্ষেত্রে দুটো ডিম লাগবে)
এবার সব কিছু ব্লেন্ডারে দিন।
ব্লেন্ডার রেডী করুন এবং মিনিট ৫ ব্লেন্ড করুন।
এবার ধারাবাহিক ভাবে প্রথমে এক চামচ এবং পরে দুই চামচ করে তেল দিন এবং মিনিট ৫ করে ব্লেন্ড করুন।
পর্যায়টা এই রকম হবে।
বার বার এক এবং শেষের দিকে দুই চামচ তেল দিন এবং ব্লেন্ড করুন। এভাবে কাপের তেল শেষ করতে হবে। তেল শেষ হয়ে গেলে ফাইন্যাল স্বাদ দেখুন, আপনি কেমন স্বাদ চান তার উপর নির্ভর করে আরো লবন, চিনি, লেবুর রস দিতে পারেন। প্রথম বার বানালেই আপনি বুঝে যাবেন, এর পরের বার নিশ্চিত আপনি আপনার মত স্বাদের মেয়নেজ বানাতে পারবেন। (বেশী গাঢ় মনে হলে দুই এক টেবিল চামচ গরম পানি দিতে পারেন এবং আবারো ব্লেন্ড করুন।)
ব্যস, এবার বাটিতে ঢেলে নিন। হয়ে গেল মেয়নেজ। ইচ্ছানুযায়ী আপনার পছন্দের খাবারের সাথে ব্যবহার করুন। এমন কি সামান্য আলু চিপস, ফেঞ্চ ফ্রাই বানালেও তার সাথে কয়েক চামচ পরিবেশন করতে পারেন।
গ্রীল, ফ্রাই বা যে কোন ধরনের ফার্ষ্টফুড, বার্গার, পাস্তা, নুডুলস, শর্মা, সালাদ প্রিপারেশনে এবং আরাবিয়ান খাবারের সাথেও খাওয়া যেতে পারে, বিশেষ করে শিশুরা মেয়নেজ খুব পছন্দ করে।
দোকানে কোটায় মেয়নেজ পাওয়া গেলেও দাম কম নয়। তাছাড়া আপনি ঘরে বানালে নিঃসন্দেহে সেটাই সেরা এবং বিশুদ্ধ। খুব সহজ এই খাবারটা বানিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন, মন চাইলে বের করে বসে পড়ুন।
সবাইকে শুভেচ্ছা। ধন্যবাদ ভাতিজা মিঠু, ধন্যবাদ দাইফ ভাই, ধন্যবাদ বুলেট, ধন্যবাদ ব্যাটারী!
মেয়নেজের পোষ্ট দিতে গিয়ে দেখলাম, ‘গল্প ও রান্না’ গতকাল চার লক্ষ হিট পার করে ফেলেছে। আপনাদের উৎসাহই আমাদের পথচলা। আপনারা আমাদের পছন্দ করেন বলেই আমরা সাহস পাই। আপনাদের আগ্রহই আমাদের ভালবাসা।
কৃতজ্ঞতাঃ মানসুরা হোসেন
thank u vi ya 🙂
LikeLike
BEto boro somman peye amr j ki anondo hocche seta vasay prokash kora somvob noy 🙂
Ami jar fan se-i ajk amake dedicate kore ekti whole recipe post korlen,beparta khubi sommanjonok.apnak ami shudhu mukhe thanks dibo na,amr mon theke ajk ai recipe bloger kache kritoggota prokash kortesi!! 🙂
Ar recipe er bepar a r ki bolbo! Oshadharon !!!
Arekta thanks karon apni amr 120tk bachay dilen jeta Mayo er sobthke picchi bottle er dam r kheteo valo na.
Thanks a lot uncle!!
(Btw amra 3 vai ek bon 🙂 r English e comments korlm cz akhon mobile e asi )
LikeLike
woow….eta banano etto sohoj…germany te milk er jinish khubi valo paoa jay..still basay baniye dekhte hobe…ebong ginipig hisebe jamai k test korate hobe…hiiihii..life e r ase ki??!!
LikeLike
Thanks Sahadat vai,
We are with u…
LikeLike
oh! so easy! I can do!
LikeLike
ছবি দেখেই তো বোঝা যাচ্ছে অনেক স্বাদের হয়েছে। দারুন পোস্ট সাহাদাত ভাই, সবাই এখন বাসায় বসেই তৈরি করতে পারবে মজাদার মেয়নেজ। স্বাদ পরিবর্তনের জন্য মাঝে মধ্যে ব্লেন্ডের সময় আধ চামচেরও অল্প গোলমরিচের গুঁড়ো দেয়া যায়।
অনেক ধন্যবাদ সাহাদাত ভাই সুন্দর এই রেসিপির জন্য। এই কিছুদিন আগে আবার ম্যাশড পটেটো তৈরি করেছিলাম বাসায়, আপনার কথা মনে হয়েছিল তখন।
LikeLike
Mayoneese e kacha dim dia banano hoy! Jody o dekhte bhalo hoyche..kintu amar ektu jany kemon lagche..
LikeLike
ধন্যবাদ অজ্ঞাত ভাই বা বোন।
বার বার ব্লেন্ডিং এর ফলে কোথায় কি যাবে! হা হা হা।। একবার বানিয়ে দেখার অনুরোধ জানিয়ে গেলাম। আশা করি খেয়ে দেখে জানাবেন।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
এই রেসিপির একটা নমুনা আমাদের ভাতিজা নিজেই দেখিয়ে দিলেন। দারুন।
https://www.facebook.com/groups/239520226183690/permalink/459312584204452/
LikeLike
ডিম টা কি কাচা খাওয়া হবে?
LikeLike