সময় পেলেই মাছ বাজারে একটা চক্কর দিয়ে আসা আমার রুটিনের মধ্য পড়ে গেছে! টাকা থাকুক আর নাই থাকুক, এটা আমি প্রায়ই করে থাকি। মাছ বাজারে আমার বিশ্বস্ত মাছ বিক্রেতা বিশু আছে সেই গত ১৫ বছর থেকে। ওর কাছ থেকে বেশীর ভাগ মাছ কিনলেও যারা বড় মাছ বিক্রি করেন তারাও আমাকে চিনে গেছেন! বড় মাছ দেখলে কাছে গিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মাছ দেখেও আমি আনন্দিত হই।
আমার ব্যাটারী আমাকে প্রায় বলেন, বড় মাছের লোভ ছাড়! আমি আসলে এই লোভ কখনো ছাড়তে পারবো না! বড় মাছ কিনে বাসায় আনতে পারলে মনে যে শান্তি পাই তা কাকে বুঝাবো (রেসিপি লিখতে গেলে একটু বড় মাছ না হলে কি চলে?)। বড় মাছের টুকরা রান্না করে প্রিয়জনদের পাতে তুলে দিতে যে আনন্দ, সেই আনন্দ আর কিসে মিলবে! আমার রেসিপি প্রিয় বন্ধুদের বড় মাছ দেখাতেও আলাদা আনন্দ আছে! অবশ্য টাকার কথা চিন্তা করে এই লোভ সামলাতেই হবে! রুজির তুলনায় ব্যয় বেশী করলে জীবন আর জীবন থাকবে না! বুঝি, কিন্তু পারি না! যাই হোক, আল্লাহ মহান। উপরওয়ালা দিলে কতক্ষন লাগে! ক্ষমতায় থেকে পাঁচ বছরে পাঁচ দশ হাজার কোটি টাকা রুজি করা এই দেশে কোন ব্যাপার না! হা হা হা…
অনেকে বলেন বা ভাবেন, আমি কেন রাজনীতির কথা বলি! আমি দুই টাকার রেসিপি লিখি বা রান্না করি, তাই নিয়ে বসে থাকলেই হয়। এই রকম ভাবা মানুষদের বলি, আমি রাজনীতি নিয়ে কথা বলি এই জন্য কারন আমি নিজ হাতে বাজার করি, নিজের টাকা নিজে রুজি করি এবং সেটা কষ্ট করেই। তাই আমার গায়ে লাগে, আমার রক্তের কষ্টের টাকা যখন দেখি ব্যবসাহীরা হাতিয়ে নিয়ে নিচ্ছে তখন কষ্টের সীমা থাকে না। যখন দেখি আমার ঘাম ঝরানো টাকা দিয়ে আমি ভেজাল বা ফরমালিন কিনে বাসায় নিয়ে আসছি তখন আমার দুঃখের সীমা থাকে না। যখন দেখি, আমি ফলের দোকান থেকে ফল কিনতে পারছি না, বিষাক্ত ক্যামিক্যালে সব ভরে আছে তখন আমি না বলে থাকতে পারি না! কাজে কাজে আমাকে বলতে হয় এবং যে সরকার থাকবে আমি তাদের বিরুদ্ধেই লিখে যাব। যতদিন না এই ভেজাল বা দ্রব্যমুল্যের ব্যাপার চলবে ততদিন আমি লিখেই যাব! পরিস্কার কথা সাফ করে জানিয়ে দেই, এই সব ভেজাল এবং দ্রব্যমুল্যের জন্য সব সময়েই সরকার দায়ী। সরকার যথাযত ব্যবস্থা নিচ্ছে না দেখেই আজ বাজারের এই অবস্থা, ভেজালকারীদের এত স্পর্ধা। আমি সরাসরি ভেজালকারীদের ফাঁসি চাই। হাজার হাজার মানুষ, পরিবার যারা ধীরে ধীরে মেরে ফেলছে তাদের ক্ষমা নাই, ক্ষমা হতে পারে না।
(গজার মাছটা জ্যান্ত কিনে ছিলাম, জ্যান্ত মাছ কিনতে চাই শুধু ভয়ে, শুধু যদি ফরমালিন একটু না থাকে। আফসোস হয়, এটা দুনিয়ার কোন দেশ!)
যাই হোক, আপনাদের মনের দুঃখে অনেক কথা বলি। তবে যে কোন অবস্থায় আমি খাদ্যে ভেজাল চাই না। আপনারা মনে দুঃখ নেবেন না। এই বাংলাদেশ আমার, আপনার সবার, আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি, প্রান প্রিয় বাংলাদেশ। এখানে আমাদের সবার বেঁচে থাকার অধিকার আছে। আপনাদের কাছে না বললে কার কাছে বলব?
চলুন মাছ রান্না দেখে ফেলি। প্রবাসী, ব্যচেলর এবং নুতন রান্নায় আগ্রহীদের জন্য এই চেষ্টা। রান্নার অপর নাম ভালবাসা। আপনি যাকে ভালবাসেন তাকে নিজ হাতে রান্না করে খাওয়ান, দেখুন কি করে ভালবাসা বেড়ে যায়। হা হা হা…
প্রয়োজনীয় উপকরনঃ
– চার টুকরা বড় মাছ (গজার)
– মাঝারি তিনটে ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ কুঁচি
– কয়েকটা কাঁচা মরিচ
– এক কাপ মশলা/ভেজষ মিক্স (এক টেবিল চামচ ইন্ডিয়ান আদা বাটা, এক চা চামচ দেশী রসুন বাটা, ঝাল বুঝে হাফ চামচ মরিচ গুড়া, হাফ চামচ হলুদ গুড়া, এক চিমটি জিরা গুড়া, এক চিমটি ধনিয়া গুড়া এবং সামান্য পানি দিয়ে এই মিক্সটা বানানো হয়েছে)
– সামান্য ধনিয়া পাতার কুঁচি
– তেল (পরিমান মত, কম তেলেই রান্না উত্তম)
– পানি (পরিমান মত)
প্রনালীঃ (ছবি দেখেই বুঝতে পারবেন বলে আশা করছি, ছবি কথা বলছে)
ছবি ১
ছবি ২
ছবি ৩
ছবি ৪
ছবি ৫
ছবি ৬
ছবি ৭
ছবি ৮
ছবি ৯
ছবি ১০
ছবি ১১
ছবি ১২
স্বাদ, অসাধারন। গজার এবং শোল মাছের স্বাদ খুব কাছাকাছি বলে আমার মনে হয়। তবে গজার মাছের স্বাদ শোল মাছের চেয়ে কিছুটা উন্নত! হা হা হা…
সবাইকে শুভেচ্ছা। খাদ্যে ভেজাল দেখলেই আশা করি প্রতিবাদ করবেন। আমরা আমাদের সামান্য শক্তি নিয়ে সরকারকে বলতে চাই, আমাদের প্রজন্ম ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। বিষয়টা নিয়ে কঠিনভাবে ভাবুন এবং যাবতীয় ব্যবস্থা নিন। সামান্য কিছু ভেজালকারীকে সামলাতে পারলেই আমরা একটা সুন্দর জীবন পেতে পারি এবং ভেজাল না থাকলে দ্রব্যমূল্যও কমতে বাধ্য। আশা করছি আপনাদের সুমতি হবে, জনগণকে ভালবাসুন। জনগণ আপনাদের ভালবাসবেই!
খুব ভালো লাগলো …
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ তুহিন ভাই।
শুভেচ্ছা। সময় পেলে মাঝে মাঝে আমাদের দেখে যাবেন।
LikeLike
আমিও গজার মাছ খাই। গজার মাছ ও কাচা মরিচের ভর্তা ভাল লাগে।
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ সাইফুল আলম ভাই।
LikeLike
এই একটি মাছ জীবনেও খাইনি।
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ আপা। আপা আমিও যে বেশী খেয়েছি তা বলা যাবে না। তবে এই নিয়ে কয়েকবার খেয়েছি। গজার মাছ নিয়ে অনেক কথা শুনি। হা হা হা… কেনার সময় সেই কথা গুলো মনে থাকে নাই। শুভেচ্ছা।
LikeLike