গ্যালারি

রেসিপিঃ নোনা ইলিশ ভুনা


পরিস্কার মনে আছে, এখনো চোখে পড়ে সেই রান্নাটার কথা। পুরা রান্নার পাশে আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিলাম। তবে তখন আমি রান্না করতে পারতাম না, আগ্রহ থাকলেও রান্নায় এমন ভাবে জড়িয়ে যাব তা ভাবনাতেও ছিল না। হ্যাঁ, সেই রান্নাটা ছিল, নোনা ইলিশ রান্না। রান্নাটা আমি দেখেছিলাম আমাদের এই বন্ধুর বাগান বাড়িতে। আমাদের বন্ধুর বাগান বাড়িতে একজন কেয়ারটেকার ছিল, সে বাগান বাড়ীটা পাহারা দিত এবং আমার বন্ধুটা গেলে তাকে রান্না করে খাওয়াত, বিশেষ করে দুপুরের রান্না। একদিন বন্ধুর অনুরোধে আমরা কয়েকজন সেখানে গিয়েছিলাম (বছর ৭/৮ আগে) এবং যথারীতি আমাদেরও দুপুরের খাবার খেতে হয়েছিল। আমার অন্য বন্ধুরা যখন সবার সাথে আড্ডায় ব্যস্ত ছিল আমি তখন সেই রান্নাকারীর সাথে রান্নাঘরে কথা বলছিলাম, শুনছিলাম তার নানান অভিজ্ঞতার কথা। আমার সাথে কথার ফাঁকে ফাঁকে সে রান্না করে চলছিলো, আমিও দেখে যাচ্ছিলাম।


(এই ধরনের ইলিশ দেখলে কে না খেতে চাইবে!)

অনেক পদের রান্না করেছিলেন তিনি। বিশেষ করে রুই মাছ ভাঁজা এবং এই নোনা ইলিশ রান্নায় আমি তার সাথে পুরা সময়েই ছিলাম। তিনি কেন এই নোনা ইলিশ রান্না করছেন তা জানতে চাইলে তিনি জানিয়েছিলেন, তার বস (মানে আমাদের বন্ধুটা) এই রান্না খুব পছন্দ করে তাই তিনি এটা রান্না করছেন। সাথে যেহেতু আমরা তার বসের বন্ধুরা আছি, তাদের কেহ নিশ্চয় এই রান্না/শুটকী পছন্দ করবে।

গতকয়েকদিন আগে জোনাকী সিনেমা হলের সামনে একজন নোনা ইলিশ বিক্রেতা দেখে দুইটা মাঝারি নোনা ইলিশ কিনে ফেললাম এবং বাসায় এসে সেই রান্নাটা মনে করে রান্না করতে চেষ্টা করলাম। বলা চলে সফল হয়েছি! তবে স্বাভাবিক ভাবে আমি ঝাল কম দিয়ে রান্না করেছি। চলুন দেখে ফেলি।

উপকরনঃ (পরিমান আপনারাও করতে পারেন, ছবি দেখেই বুঝতে পারবেন)
– কিছু ইলিশ (আমি কম নিয়েই রান্না করেছি)
– পেঁয়াজ কুঁচি
– রসুন কুঁচি
– আদা বাটা
– কাঁচা মরিচ
– মরিচ গুড়া
– হলুদ গুড়া
– লবন (পরিমান মত, লবনের পরিমান শুরুতে কম দিয়েই শুরু করতে হবে)
– পরিমান মত তেল/পানি

পরিমান ও প্রনালীঃ

পানি গরম করে তাতে ইলিশ দিয়ে ভাল করে ধুয়ে নিন।


কড়াইতে তেল (শুঁটকীতে তেল একটু বেশী হতে হয়, আমি কম তেলেই চেষ্টা করেছি) গরম করে তাতে পেঁয়াজ, রসুন কুঁচি, কয়েকটা কাঁচা মরিচ চিরে ভেঁজে নিতে হবে। এক চিমটি লবন দিতে হবে (ইলিশে আগে থেকে লবন থাকে বলে কিছুতেই বেশী দেয়া যাবে না, তা ছাড়া লবন কম হলে তো পরে দেয়ার চান্স আছেই) এবং হাফ চামচ আদা বাটা দিতে ভুলবেন না।


ভাঁজা হয়ে গেলে ধুয়ে নেয়া ইলিশের টুকরাটা দিয়ে দিন।


খুন্তি দিয়ে আবারো ভাজুন এবং ইলিশ ভেঙ্গে ফেলুন এবং খুন্তি দিয়ে উলটা পালটা করে দিতে থাকুন।


হাফ চামচ হলুদ গুড়া এবং হাফ চামচ মরিচ গুড়া দিয়ে দিন। ভাল করে মিশিয়ে নিন। আগুনের আঁচ মাধ্যম থাকবে। এবার এক কাপ পানি দিয়ে দিন।


ব্যস, এই রকম দেখাবে।


ঢাকনা দিয়ে কিছুক্ষনের জন্য ঢেকে দিন। তবে চুলা ছেড়ে যাবেন না। খেয়াল রাখতে হবে যেন কড়াইয়ের তলায় না লেগে যায়।


ঠিক এই অবস্থায় এসে যাবে। ঝোল শুঁকিয়ে যাবে। এবার ফাইন্যাল লবন, স্বাদ দেখুন। লবন লাগলে দিন, না লাগলে ওকে বলুন।


ব্যস, পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত।

রান্না করার পর আমার মনে হয়েছিল, এত কম রান্না করা উচিত হয় নাই। দারুন হয়েছিল। আসলে খাওয়ার মানুষ ছিল না বলেই আমি আমার নিজের জন্য রান্না করেছিলাম তাই কম রান্না করা হয়েছিল। বুলেট এবং আমার ব্যাটারী শুঁটকী তেমন পছন্দ করে না।  ভাবছি আর একদিন আবার রান্না করবো এবং তাদের খাওয়াতে চেষ্টা করবো।

সবাইকে শুভেচ্ছা।

* এই রকম একটা রান্না আমার আম্মাও করতেন, আশা করছি আম্মা থেকে উনার রেসিপিটা সংগ্রহ করতে পারবো আগামীতে।

5 responses to “রেসিপিঃ নোনা ইলিশ ভুনা

  1. গরম পানিতে ধুয়ে মাছ থেকে কাঁটা বেছে নিলে খেতে আরো ভালো লাগবে। আমারও প্রিয়।

    Like

  2. vaiya dekhen…amar mone hocce apnar ei recepi ta churi kore niyece
    http://www.fooddelight.tk/2014/03/blog-post_20.html?spref=fb

    fb te ei page e dekhen Jannatul Ferdous diyece
    https://www.facebook.com/groups/banglarecipes/
    theke link pelam

    Like

    • হা হা হা, ধন্যবাদ বোন।
      পুরাই চুরি! তবে প্রথম ছবিটা গুগল থেকে নিয়েছে পরের ছবিটা এডিট করছে! বাকী বর্ননা পুরাই কপি করে দিয়েছে! হা হা হা, থাক, দেখে এসেছি। মেয়েটা লজ্জা পাবে! কিছু বলার দরকার নেই।

      তবুও ভাল থাকুক। সামান্য কৃতজ্ঞতা স্বীকারে যাদের মন নেই তাদের আর কি বলব? কাউকে সন্মান করলে নিজেরই সন্মান বেড়ে যায় এটা এরা বুঝলো না!

      চুরি করা রেসিপি/পোষ্ট দিয়ে এরা কি করে গ্রুপ এর মেম্বার ধরে রাখে, আমার মাথায় ধরে না।

      যাই হোক, এমন চুরি ফেবুর অনেক এডমিন করেই যাচ্ছে। গ্রুপে কিছু বলেই ব্যান করে দেয়। কি লজ্জাহীন এরা। এখন আর মোটেও প্রতিবাদ করি না। বেশ কয়েকটা গ্রুপ আমাকে ব্যান করে রেখেছে!

      আপনার জন্য শুভেচ্ছা থাকল। আর নুতন নুতন কি রান্না করলেন।

      Like

  3. ফেরদৌস প্রিন্স

    আপনার কথা সঠিক। আমি যখন রান্না করি আমার পরিবারের সবাই খুশি হয়।আমার ওয়াইফ ভাল রাঁধুনি তারপর ও আমার রান্না মজা করে খায়।ধন্যবাদ আপনাকে। আজ এই রেসিপি টা করালাম ওয়াইফ কে দিয়ে আশা করি খেতে ভাল হবে।একটা কথা আপনার সাইটের এপিকে অ্যাপ টা ডাউনলোড করতে পারছি না। দয়া করে লিংক টা আপডেট করুন।

    Liked by 1 person

[প্রিয় খাদ্যরসিক পাঠক/পাঠিকা, পোষ্ট দেখে যাবার জন্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা। নিম্মে আপনি আপনার মন্তব্য/বক্তব্য কিংবা পরামর্শ দিয়ে যেতে পারেন। আপনার একটি একটি মন্তব্য আমাদের অনুপ্রাণিত করে কয়েক কোটি বার। আপনার মন্তব্যের জন্য শুভেচ্ছা থাকল। অনলাইনে ফিরলেই আপনার উত্তর দেয়া হবে।]