দুনিয়ার প্রতিটা মানুষের চোহারা যেমন আলাদা তেমনি তাদের বুদ্দি বিবেচনাও আলাদা। একজন যে ঘটনা যেভাবে ব্যাখ্যা দেন, অন্যজন সেটা আলাদা না করে দিলেও মোটামুটি আলাদা থাকেই। ঠিক যেমনি একটা অঙ্ক অনেক ভাবে করা যায়! যাক, উপরের কথা গুলো এমনি বলে গেলেও এর পিছনের কারন হচ্ছে, এই প্রবনতা আমার কাছে বাংলাদেশে একটু বেশী মনে হয়েছে। বাংলাদেশের প্রতিটা মানুষ শুধু ভিন্নই নয়, তারা বিপরীত মুখি! আমি যে কয়েকটা জাতি বা দেশ ঘুরে এসেছি তাতে আমার কাছে এটা প্রতিয়মান হয়েছে। নানান দেশের লোকজনের মধ্য অমিল হলেও সেটা যতটা কাছাকাছি, আমাদের দেশে সেটা আমার কাছে কয়েকশ মাইল মনে হয়েছে!
রান্না বান্না নিয়েও একই কথা। একই রান্না নানান প্রকারে, নানানভাবে করা যায়। কেহ এই মশলা আগে, কেহ ওই মশলা পরে দিয়ে থাকেন। একই মশলা দিয়ে রান্না এক এক জনের হাতে এক এক স্বাদের হয়ে থাকে। তার পর আসে আগুনের কারবার! আগুনের তার তম্য এবং কম বেশি ভাজা/কষানোর কারনেও খাবার স্বাদ নানান প্রকারের হয়ে যায়। তাই আমি বলি, প্রতিটা রান্নার নাম এক হলেও প্রতিটা রান্নাই ইউনিক রান্না। বিশেষ করে আমাদের বাসা বাড়ীতে যে রান্না হয়ে থাকে, তা তো বটেই! হা হা হা।।
চলুন, আজ আবার রোষ্ট রান্না দেখে ফেলি। তবে এটা একটু হালকা ঝাল করে রান্না হয়েছিল এবং কিছু লাল গুড়া মরিচ দেয়া হয়েছিল। খুব সহজ এবং সাধারন। মাখানো প্রদ্বতি! ভেজাল কম! সব কিছু মাখিয়ে চুলায় বসিয়ে দিলেই হল। মোরগের রোষ্ট কার না প্রিয়!
উপকরন ও পরিমানঃ
– মুরগীর মাংস দেড় কেজি (কিংবা ৭/৮টা লেগ পিস নিতে পারেন)
– জয়ফল (১টা ফল ১০ কেজির জন্য ব্যবহার হয়) সামান্য
– জয়ত্রী ১/২ চা চামচ
– চিনা বাদাম ৪ চা চামচ (বাটা বা গ্রাইন্ড করা)
– দারুচিনি – ৪ টুকরা (হাফ ইঞ্চি)
– এলাচি – ৩/৪ টা
– কিসমিস ১০/১২ টা
– তেজপাতা, ৩/৪ টা
– আলু বোখারা ৩/৪ টা
– আদা ১ টেবিল চামচ
– রসুন দেড় টেবিল চামচ
– ধনিয়া ১ চা চামচ
– জিরা ১ চা চামচ
– কাঁচা মরিচ পেষ্ট/ বাটা/ গ্রাইন্ড (ঝাল বুঝে) ২ টেবিল চামচ
– টমেটো সস ২ টেবিল চামচ
– টক দই এক কাপের অর্ধেকের কম
– চিনি ১ চা চামচ
– পরিমান মত লবন/পানি
– তেল পনে এক কাপ
– লাল মরিচ গুড়া, হাফ চা চামচ, ঝাল বুঝে!
– পেঁয়াজ কুঁচি এক কাপ (বেরেস্তার জন্য, সামান্য লবন যোগে পেঁয়াজ ভেজে তুলে রাখলেই বেরেস্তা হয়ে যায়)
প্রনালীঃ
তেল ছাড়া বাকী সব মশলা দিয়ে মোরগের মাংস মিশিয়ে নিন এবং এভাবে আধা ঘন্টার জন্য রেখে দিন। লবন দিতে ভুলবেন না! (তবে লবন প্রথমে সব সময়েই কম দিয়ে শুরু করতে হয়)
যে পাত্রে বেরেস্তা ভাঁজা হয়েছিল (বেরেস্তা ভেঁজে আগেই উঠিয়ে রাখতে হবে), সেই পাত্রে তেল দেখে নিন এবং সেই তেলেই রান্না শুরু করুন। মাংস গুলে তেল গরম করে দিয়ে দিন।
মশলা গুলোও সব দিয়ে দিন। মশলার পাত্র ধুয়ে হাফ কাপ পানি দিতে ভুলবেন না।
ব্যস মুল কাজ শেষ, এবার ঢাকনা দিয়ে মাধ্যম আঁচে আধা ঘন্টা জ্বাল দিন। মাঝে মাঝে নাড়িয়ে দিতে ভুলবেন না।
ঠিক এমন অবস্থায় এসে যাবে। গোসত নরম হল কিনা দেখে নিন। যদি গোসত নরম না হয় তবে আরো কিছু ক্ষনের জন্য ঢাকনা দিয়ে জ্বাল দিন, পানি/ঝোল কমে গেলে প্রয়োজনে আরো কিছু পানি দিতে পারেন।
আগুনের আঁচ কম থাকবে, বেশি আঁচ হলে, ঝোল কমে পুড়ে যাবে! তাই সাবধান, চুলার ধারেই থাকুন। মাঝে মাঝে নাড়িয়ে দিন।
দেখেই লোভ লাগবে! ফাইন্যাল লবন দেখুন, লাগলে দিন।
বেরেস্তা গুড়া (হাত দিয়েই যা ভাংগা যায়) করে ছিটিয়ে দিন।
কয়েকটা আস্ত কাঁচা মরিচ দিতে পারেন, দেখার জন্য!
ব্যস, পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত!
বাংলাদেশের বাঙ্গালী রোষ্ট পছন্দ করে না, এমন আমি এ যাবত কাউকে পাই নাই! আর এই রোষ্ট এবং সাথে পোলাউ! আহ…। ঝাক্কাস!
রেসিপি পাঠক/পাঠিকা ভাই/বোন বন্ধুদের শুভেচ্ছা।
কৃতজ্ঞতাঃ মানসুরা হোসেন
রোষ্ট বিষয়ক পূর্বে আরো দুটো রেসিপি আছে। ইচ্ছা হলে দেখে নিতে পারেন।
রেসিপিঃ শাহী চিকেন রোষ্ট (দেশী মুরগী)
রেসিপিঃ ফুল মুরগী রোষ্ট
LikeLike
আহা রোষ্ট!!!!!!!!!!!!!!!! আমার খুবই প্রিয় একটা খাবার!!!!!!!!
দারুণ হয়েছে!!!!!! আসলে দেশি মুরগি ছাড়া রোষ্ট ভাল জমে না…………………
শুভেচ্ছা ও ভাললাগা
বাই দ্য ওয়ে আপনার ব্লগে ৮ অক্টোবার এর জন্য কাউন্টডাঊন দেখলাম, এটা কি কোন স্পেশাল দিন??? আমি আপনার ব্লগে আসার একদম শুরু থেকেই এই কাউন্টডাউন দেখছি।
ভাল থাকবেন !!! 🙂
LikeLike
ধন্যবাদ ভাতিজা।
আমি নিজেও চাই আমাদের রেসিপির সব চিকেন দেশী হউক। হা হাহা… টাকায় কুলায় না। দেশী একটার দামে দুইটা ফার্ম পাওয়া যায়। আর ফার্মের মোরগ দেখতে পুষ্ট! হা হা হা…
হা, ধন্যবাদ আবারো। এটা গত জানুয়ারী মাসে সেট করেছি। হা, এটা আশা করি আমার একটা বিশেষ দিন হবে। জানাবো, আগে দিনটা আসুক। হা হা হা…
শুভেচ্ছা।
LikeLike
ছবি কালেকশন এতোই মজার যে মন চায় কম্পিউটার এর ভিতর থেকেই উঠিয়ে এক টুকরা খেয়ে নেই। থ্যাংকস এডমিন।
LikeLike
ধন্যবাদ ব্রাদার।
আপনি চমৎকার ভাল মনিটর ব্যবহার করেন বলে মনে হচ্ছে। ছবি গুলো ভাল মনিটরে ভাল দেখায়।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
ফার্ম এর মুরগি দিয়ে হবে এটা?
LikeLike
ধন্যবাদ।
হ্যাঁ, হবে। করে দেখতে পারেন।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
Chiken frie kore nile valo hoi..
LikeLike
ধন্যবাদ রেহমান ভাই।
হ্যাঁ আমি ভাঁজার ব্যাপারটা বিয়ের রান্নায় দেখেছি।
যাই হোক, আগামীতে দেখি ভেজেও একটা রেসিপি দেখিয়ে দেব।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
I just made this recipe on the day of Germany-Brazil game.We had this with khichuri,but it should go better with polao.Also the recipe was little bit on the salty side,maybe next time i have to add a little bit sugar.Thank you so much!!
LikeLike
ধন্যবাদ বোন।
আপনি রান্না করেছেন জেনে ভাল লাগলো। হ্যাঁ, পোলাউ হলে জমতো বেশ। খিচুড়ির সাথে ঝাল কিছু বা ডিম ভাঁজিই চলে! হা হা হা…
লবনের ব্যাপারটা আমার রেসিপি গুলো পড়লে বুঝতে পারবেন, আমি সব সময়েই বলি, শুরুতে কম লবন দিয়ে শুরু করবেন কারন শেষতো স্বাদ দেখে লবন দেয়ার সুযোগ থাকে। আমি প্রায় রেসিপিতে এটা বলি এবং মনে করিয়ে দিতে চাই। লবন কম বেশী হলে খাবারের মুল স্বাদ চলে যায়। হা হা হা।।
তবুও চেষ্টা চলুক। এটা যেহেতু অভিজ্ঞতা বিষয়ক ব্যাপার, একদিন বা পরের দিন ঠিক হয়ে যাবেই।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
আপনি এত সুন্দর করে রান্না করার ছবি দিয়েছেন যে , যে জীবনে কখনো রান্না করে নাই সে ও খুব সহজে রান্না করতে পারবে . এত দিন কেন যে আপনার রেচিপি খুঁজে পাই নাই !
LikeLiked by 1 person
Best Bengali Recipe Site Ever! আজ বাসায় ফিরে এই রেসিপি টা try করব 😋
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ বোন। আপনাদের আসা যাওয়াই আমাদের আনুপ্রনিত করে, আপনাদের কমেন্ট গুলো আমাদের গতি বাড়িয়ে দেয় কয়েক হাজার কোটি গুণ। আমাদের সাইট আপনার ভাল লাগলো বলে খুব খুশি হলাম। আশা করি আমাদের সাইট দেখে রান্না করবেন, সাথে যোগ করবেন আপনার ইম্প্রুভাইজেশন। ব্যস, এই তো। আমাদের এই সাইট নূতনদের কথা চিন্তা করেই তবে পাশাপাশি পুরানোদের রান্না মনে করিয়ে দেয়াও আমাদের লক্ষ্য। সারা দুনিয়ার ব্যচেলর বা বিবাহিত ব্যচেলরদের পাশে আছি আমরা। আশা করি আপনিও আমাদের সাথে থাকবেন।
শুভেচ্ছা নিন।
LikeLike
Reblogged this on suhridkhan.
LikeLiked by 1 person