একটা গল্প দিয়ে আজ শুরু করা যাক! কিছুক্ষন আগে গল্পটা আমার ব্যাটারী আমাকে শুনালেন! মানুষের খাচিয়ত (!) নিয়ে এই গল্প শুনে আমি হাসছিলাম, এখন আপনাদের হাসাতে পারি কি না, দেখে নেই! এখন তিনি অন্য রুমে চলে গেলেন।
লেখার সময় আমি বলি, প্লিজ টিভি দেখুন। কেহ চেয়ে থাকলে লেখা লেখি করা যায় না। মনে হয় ভুল হচ্ছে, আবার এটাও মনে হয়, যা লিখছি তা নিয়ে তিনি কি ভাবছেন। আবশ্য লেখা শেষ হলে, প্রকাশের পূর্বে মাঝে মাঝে আমি আমার লেখা ব্যাটারী সাহেবানীকে পড়তে দেই, তাও যদি দেখি ঊনার মুড ভাল! হা হা হা… আগে তিনি আমার লেখা পড়তেন না এবং এখন পড়েন, উৎসাহ দেখান! আগে তিনি ভাবতেন, কি আর লিখে! পাতা লতা, ছাগলের খাবার! এখন তিনি মনে হয় বুঝতে পারেন, লেখালেখি সবার কাজ না! সবাইকে লেখালেখি হয় না। যাক, এই সব নিয়ে অন্য কোনদিন কথা হবে। আরো ডিটেইলস জানাবো! গল্পটা শুরু করা যাক!
একজন গ্রামের গরীব বৃদ্ধ লোক, কোন মতে দুপুরের খাবার খান। এর কাছে ওর কাছে চেয়ে তার দিন চলে। দুপুরের খাবার কখনো ঠিক সময়ে হয় না। এদিকে গ্রামের এক বিবাহিত মেয়ে অনেক দিন ধরে এই গরীব বৃদ্ধের অবস্থা দেখে আসছে। তার মনে দয়া হল, পিতার বয়সী লোকটাকে হেল্প করার জন্য সে বলল, প্রতিদিন দুপুরের ভাত সে রান্না করে দেবে এবং আযানের আগেই সে যেন ভাত নিয়ে যায়। এভাবে প্রতিদিন গরীব বৃদ্ধ লোকটার দিন চলছিল। মেয়েটাও তাকে হেল্প করতে পেরে আনন্দিত হচ্ছিল। এই কথা মেয়েটা তার স্বামী সহ কাউকেই বলে নাই।
একদিন কি কারনে বাড়ীতে মেয়েটার স্বামী ছিল এবং নামাজের আগে পুকুরের গোসল করছিল। এদিকে বৃদ্ধ মেয়েটার কাছে ভাত চাইল, সে বলল আরো কিছু সময় লাগবে, তিনি গোসল সেরে ভাত নিয়ে যেতে পারবেন। বৃদ্ধ লোকটা তার এই কথায় বাড়ীর ধারের পুকুরে গেল এবং গোসল করছিল। সেখানে আগে থেকে মেয়েটার স্বামী গোসল করছিল! পুকুর ঘাটে বৃদ্ধ লোকটা দেখে স্বামী অনেক কথা জিজ্ঞেস করল। জিজ্ঞেস করল, কিভাবে প্রতিদিন খাবার জুটে! লোকটা খুব গর্ব ভরে বলল, কত চু____নি আছে রান্না করে দেবার!
এদিকে বৃদ্ধ লোকটা চলে গেল। স্বামী তখনো গোসল করছিল এবং গোসল শেষে বাড়িতে ফিরছিল। বৃদ্ধ লোকটা এসে মেয়েটার কাছে ভাত চাইল, তখনো ভাত হতে কিছু দেরী। এদিকে স্বামীও বাড়ী ফিরছিল, এবার বৃদ্ধ লোকটা বুঝতে পারল, এই লোকটাই এই মেয়ের স্বামী, যাকে সে গাল দিয়ে কথা বলেছিল! বৃদ্ধ বলল, যা হয়েছে মা তাই দাও। মেয়েটা ভাতের মাড় সহ গামছাতে দিয়ে দিল। বৃদ্ধ দ্রুত চলে গেল।
পথে মাড় পড়তে দেখে অনেকে তাকে জিজ্ঞেস করল, কেন এই অবস্থা! বৃদ্ধ বলল, ‘খাইচ্ছত দোষে গামছা বাইয়্যা ফেন পড়ে’!
দুনিয়া আসলেই একটা অদ্ভুত জায়গা! এখানে আমরা দুই দিনের মেহমান! এই দুনিয়াতে কখনোই আসলে খারাপ ব্যবহার করা চলে না! আপনার আশে পাশে কে কখন কি ভাবে আছে কে জানে?
অনেক কথা গল্প হল। এবার রেসিপিতে চলুন। আজকের রেসিপি তেমন কঠিন নয়, তবে এটা দেশী খাবার নয়। ইংলিশ ফুড! মাঝে মাঝে ভিন্ন দেশী খাবার খেলে মন্দ লাগবে না! তবে সহজ খাবার। আমাদের পোলাউ মাংসের সাথে এই সালাদ খুব ভাল জমে। আজকাল পিকনিক বা বিবাহের বড় খাবারেও এই সালাদ ব্যবহার করা হয়। খুবই মজাদার! চলুন দেখে ফেলি। আপনি চাইলে ঘরে বানিয়ে নিতে পারেন। মেয়নেজ টা আমরা অন্য একটা রেসিপিতে পরে দেখিয়ে দেব।
পরিমান ও উপকরণঃ
– মুরগীর বুকের মাংস, কিউব কাট, এক কাপ
– গাঁজর, এক কাপ, কিউব কাট
– আলু, এক কাপ, কিউব কাট
– ক্যাপ্সিকাম, হাফ কাপ, কিউব কাট (দাম বেশি বলে কম নয়! হা হা হা)
– শশা, এক কাপ, কিউব কাট
– আদা বাটা, আদা চা চামচ
– গোল মরিচ গুড়া, আধা চা চামচ
– চিনি, এক চিমটি
– লবন পরিমান মত
– মাখন, ২৫ গ্রাম বা আশে পাশে (সবজি টস* করতে যা লাগে)
– মেয়নেজ**, পরিমান মত (আপনার চোখের আন্দাজ মত)
* উচ্চ তাপে সামান্য সময়ের জন্য ভাঁজা বা স্টার ফ্রাই
** ঘরে বানানো হলে ভাল, দোকানের কেনা হলেও চলে তবে সে ক্ষেত্রে গোল মরিচের গুড়া, লেবু রস ও চিনি দিয়ে ভাল করে ফেটিয়ে নেবেন।
প্রনালীঃ
উপকরণ সাজিয়ে রাখলে দেখতে ভাল লাগে।
মুরগীর মাংসে আদা, লবন, চিনি, গোল মরিচের মিশিয়ে আধা ঘন্টার জন্য রেখে দিন।
একটা পাত্রে কয়েক কাপ পানি নিয়ে তাতে কিছু লবন দিন এবং গরম করুন। এবার একে একে সবজি গুলো সিদ্ধ (শশা বাদে, শশা সিদ্ধ করা হয় না) করে নিন। পানিতে লবন থাকার কারনে তাড়াতাড়ি সিদ্ধ হবে। তবে প্রথমে ক্যাপ্সিকাম, তার পর আলু, তার পর গাঁজর।
আলু। একই গরম পানিতে।
এবার গাঁজর।
সিদ্ধর পর এভাবে দেখাবে।
এবার একটা কড়াই গরম করে তাতে বাটার নিন এবং সবজি ভেঁজে নিন।
হাফ চামচ গোল মরিচের গুড়া দিন।
বেশি ভাঁজা নয়। ভাঁজা হয়ে গেলে তা তুলে রাখুন।
এবার ম্যরিনেটেড করে রাখা মুরগীর গোসত গুলোকেও সামান্য বাটার দিয়ে ভেঁজে নিন।
ভেঁজে সব কিছু এভাবে রাখুন।
এবার একটা বোলে কাঁচা শষা, সবজি গুলো এবং গোসত নিন।
মেয়নেজ (ঘরে বানানো তাই এতে লবন, লেবু, গোল মরিচ সব কিছু পরিমান মত দেয়া আছে) পরিমান মত নিন।
ভাল করে মিশিয়ে নিন। স্বাদ দেখুন – ঝাল (গোল মরিচ গুড়া), লবন লাগলে দিতে পারেন।
ব্যস পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত।
অদ্ভুত, অসাধারণ স্বাদ। আমাদের বাসায় সে দিন মেহমান এসেছিল, সবাই এই আইটেম বেশ পছন্দ করেছেন এবং তারিফ করেছেন।
সবাইকে শুভেচ্ছা।
কৃতজ্ঞতাঃ মানসুরা হোসেন
আর কোন রেসিপি দেন বা না দেন, মেয়নেজ এর রেসিপি আমার চাইইইইইইইই!!!!!!!!!!!!
সবজিগুলা জুলিয়ান কাট করে দিলে দেখতে আরও সুন্দর হত!!!!!! এমনিতেও দেখতে বেশ সুন্দর লাগছে।
এই সালাদটা আমার যা যা দিয়ে করার ইচ্ছা আছে তা হলঃ
পাতাকপি,পেপে,গাজর,শশা,লেটুস,ক্যাপ্সিকাম,পেয়াজ,লেমন রাইন্ড (অবশ্যই ভাল ঘ্রাণের লেবু এবং যেটার রাইন্ড তিতা না) লেবুর রস ………………………………সব কাঁচা 😀
আর চিকেন ( এটাও জুলিয়ান,সেদ্ধ করা ) চিংড়ি (ভাপিয়ে নেয়া) মেয়নেজ,টক দই(মেয়নেজ না থাকলে) ……………………এইতো!!!!!!!!!!!
সুন্দর রেসিপি!!!!!! শুভেচ্ছা !!!!!!! আর ভালোলাগা
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ ভাতিজা। হা, ইউ আর রাইট।
সবকিছু কাঁচা হলে আরো ভাল লাগতো। আমরা আসলে এটা একটা বেসিক রেসিপি দিয়েছি। এবার সবাই নিজের মত করে সাজিয়ে নিতে পারে। জুলিয়ান কাট হলেও চলবে। ব্রিক কাটেও ভাল লাগবে…। কিউব কাটে মুখে লাগে! হা হা হা…
মেয়নেজ রেসিপিটা আসছে, কয়েকদিনের মধ্যেই দিব ভাবছি।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
দারুন পছন্দের সালাদ!
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ রান্নাতো আপা। খুব মজার হয়েছিল।
LikeLike
Delicious!
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ বোন।
LikeLike
Nice রেসিপি
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ ফারুক ভাই।
হ্যাঁ, এটা আসলেই একটা মজাদার খাবার। আশা করছি একদিন বানিয়ে খাবেন।
শুভেচ্ছা।
LikeLike
Nice রেসিপি ……
LikeLiked by 1 person