গ্যালারি

রেসিপিঃ লাউ শাক, শুঁটকী ও মাছ


মাছ ও শুঁটকীর কম্বিনেশনে যে কোন রান্নাই আমার কাছে বেশ ভাল লাগে। বিশেষ করে মাছ ও শুঁটকীর মিশ্র ঘ্রান একটা আলাদা আনন্দ মনে যোগায়! মাছ ও শুঁটকীর মিশ্রনের রান্না আমার আম্মা মাসে দুই/তিনবার করতেনই। কিন্তু তিনি নিজে কোন শুঁটকী খেতেন না! এখন ভাবি কেন তিনি এই কাজ করতেন? আসলে আমার বাবা, এই ধরনের রান্না খুব পছন্দ করতেন। ছোট বেলায় বাবার সাথে আমরাও বেশ খেয়ে এখন আমাদের কাছেও এই রান্না বেশ মজার হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে শুঁটকী, মাছ এবং লাউ শাক! এই ধরনের রান্নাও ছোট বেলায় খেয়েছি, এখনো মনে আছে। আমাদের জেনারেশনের অনেকেই এমন রান্না খেয়েছেন বলে মনে করি। আজকালকের জেনারেশন হয়ত এমন খাবার আর খায় না! যাই হোক, শুধু শুঁটকী দিয়েও এই রান্না করা যেতে পারে। স্বাদের কিছুটা তারতম্য হবে মাত্র।

দুই দিনের দুনিয়া! চলুন, রান্না দেখে ফেলি। আজ মরলে কাল কে মনে রাখবে? দুনিয়া চলবে দুনিয়ার মত করেই!

প্রয়োজনীয় উপকরনঃ
– লাউশাক (দুইটে ডাটা, কেটে কুটে যা হয়)

– আলু দুইটা (আলু হলে খেতে আরো ভাল লাগবে, না হলে নাই)
– দুইটা চ্যাপা শুঁটকী, দুই পিস রুই মাছের পেটি
– মাঝারি দুটো পেঁয়াজ কুঁচি
– কয়েকটা কাঁচা মরিচ
– এক চা চামচ রসুন বাটা
– হাফ চা চামচ হলুদ গুড়া
– হাফ চা চামচ মরিচ গুড়া
– তেল (পরিমান মত, কম তেলেই রান্না উত্তম)
– পানি (পরিমান মত)

প্রনালীঃ 

কড়াইতে তেল গরম করে সামান্য লবন যোগে পেঁয়াজ কুঁচি ও মরিচ ভাঁজুন এবং ভাল করে ধুয়ে নেয়া চ্যাপা শুঁটকী দিয়ে দিন। এবং ভাঁজার পর রসুন বাটা দিয়ে দিন, সামান্য ভেঁজে হাফ কাপ পানি দিয়ে দিন এবং আরো কষান।


এবার হলুদ ও মরিচ গুড়া দিন এবং কষাতে থাকুন।


ঝোল এমন হয়ে যাবে এবং শুঁটকী গলে যাবে।


এবার রুই মাছের পেটি দিয়ে দিন।


আরো হাফ কাপ পানি দিয়ে ঢেকে রাখুন মিনিট ১০, মধ্যম আঁচে। রুই মাছ নরম হয়ে গেলে তুলে নিয়ে কাঁটা সরিয়ে মাংস গুলো আলাদা করে রাখুন। ব্যস, ঝোল হয়ে গেল।


এবার ঝোলে লাউ শাক এবং আলু দিয়ে দিন। ভাল করে মিশিয়ে দিন।


মাছ গুলো উপরে বিছিয়ে দিন। আরো হাফ কাপ পানি দিন।


এবার ঢাকনা দিয়ে আরো মিনিট ১৫ হালকা আঁচে রাখুন। ঝোল কেমন রাখবেন তা আপনি ভেবে নিন। শেষের দিকে লবন দেখুন, লাগলে দিন, না লাগলে ওকে বলুন।


ব্যস, হয়ে গেল! পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত।


অসাধারণ রান্না! নিজের প্রশংসা জানি নিজের করতে নেই! তবুও না করেও উপায় নেই! হা হা হা…

বন্ধুরা, আপনারা কেমন আছেন? যা খাবেন, মজা করেই খান। কারন যিনি আপনার জন্য রান্না করেছেন, তিনি আপনাকে ভালবাসেন বলেই রান্নার মত কষ্টকর ব্যাপারটা তিনি সহ্য করেন। রান্নায় মাঝে মাঝে ভুল হতে পারে, মেজাজ মর্জি ভাল না থাকলে রান্না করা কঠিন ব্যাপার এবং সেই রান্না স্বাদের হয় না, এটা আমি রান্না করতে এসে বুঝতে পারছি। সুতারাং যদি কখনো দেখেন, রান্না স্বাদ হয় নাই, তবে আসল সমস্যা কোথায় তা খুঁজে বের করুন এবং যিনি রান্না করেন তাকে সে বিষয়ে হেল্প করুন। আমাদের মা, বোন, স্ত্রী, মেয়ে এদের আরো কাছে রাখুন এবং তাদের আরো বেশী বেশী হেল্প করুন। দেখবেন, প্রতি বেলাই আপনি ভাল খাবার খাচ্ছেন! তবে নিজেও মাঝে মাঝে রান্না করুন। কারন ছেলেদের রান্নায় মা, বোন, স্ত্রী, মেয়েরা বেশী খুশি হন। হা হা হা…।

15 responses to “রেসিপিঃ লাউ শাক, শুঁটকী ও মাছ

  1. খাবারের বর্ণনা শুনলেই জিভে পানি চলে আসে। দারুন লিখছেন ভাই।

    Liked by 1 person

  2. Ja dekhailen… ha! ha!
    Bhaijan, Peajer ja dam, would you pls post some recipe where no need Onion.

    Liked by 1 person

    • ধন্যবাদ রেদোয়ান ভাই,
      মশলা পাতির দাম দেখে এখন আর তরুতরকারীতে বেশি মশলা দেই না। পেঁয়াজ অনেক তরকারীর প্রান! কিন্তু তাও এখন আর বেশী দেই না। (একটু আগে পেঁয়াজ বেরেস্তা করছিলাম, যত কম দিয়ে করা যায়!)

      দামের জন্য অনেক অনেক রেসিপির ইচ্ছা থাকলেও দিতে পারছি না। কারন ভাবি মধ্যবিত্তের সেই খাবারের দরকার কি? মনের শান্তনা আর কি!

      পেঁয়াজ না দিয়েও রান্না চলতে পারে। স্বাদের কিছুটা কমতি হবে আর কি? হা হা হা…

      শুভেচ্ছা।

      Like

  3. এটা আমার কুম্ভকর্ণের খুবই প্রিয়। আমি পছন্দ না করলেও তাকে বুঝতে দেইনা। বাজারে লাউ শাক দেখলেই এক গাদা নিয়ে আসে।

    পেঁয়াজ ছাড়াও দিব্যি রান্না করা যায়। আমি তো এখন সর্ষে ইলিশ, থেকে শুরু করে ইলিশের তরকারী পেঁয়াজ ছাড়াই রান্না করছি। সবজি ভাজি, নিরামিশেও কোনো পেঁয়াজ দিচ্ছিনা। গরম তেলে কালোজিরা ও কাঁচামরিচ ফোড়ন দিয়ে মসলা বাটিতে গুলে ( হলুদ, মরিচ, জিরা, রসুন) তেলে কষিয়ে আলু+বেগুন, আলু+পটল্‌ জালি কুমড়া, শশা দিয়ে ইলিশ রান্না করে দেখতে পারেন।

    Liked by 1 person

  4. বেশ ভালই মনে হচ্ছে, ট্রাই করতে হয়।
    রেসিপির জন্য ধন্যবাদ।

    Liked by 1 person

  5. লাউ শাক ছাড়া অন্য কোনো শাক দিয়ে কি এই রেসিপি ভালো হবে মনে হয়?

    Liked by 1 person

  6. এটা প্রায়ই আমার বাসায় রান্না করা হয় । তবে আমার আম্মা শুটকি রান্নায় তেল দেন না এবং শুটকি পাতলা কাপড়ে বেঁধে দেন ।একটা ডেকচি তে সবগুলো উপকরন ( তেল বাদে ) দিয়ে চুলায় বসিয়ে দেন । সিদ্ধ হয়ে গেলে তখন রুই মাছ ভাজা দেন । এই শুটকি রান্না পেয়াজ ছাড়াও স্বাদের হয় । আমার আম্মা একবার শুটকি রান্না করার সময় ভুল করে পেয়াজ দেন নি । খাবারের সময় হটাত খেয়াল করলেন যে পেয়াজ দেয়া হয় নি কিন্তু স্বাদের কোন তারতম্য হয় নি ।

    Liked by 1 person

[প্রিয় খাদ্যরসিক পাঠক/পাঠিকা, পোষ্ট দেখে যাবার জন্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা। নিম্মে আপনি আপনার মন্তব্য/বক্তব্য কিংবা পরামর্শ দিয়ে যেতে পারেন। আপনার একটি একটি মন্তব্য আমাদের অনুপ্রাণিত করে কয়েক কোটি বার। আপনার মন্তব্যের জন্য শুভেচ্ছা থাকল। অনলাইনে ফিরলেই আপনার উত্তর দেয়া হবে।]