গ্যালারি

রেসিপিঃ লাউ শাক (উপরওয়ালার সেরা উপহার)


লাউ শাক আমাদের দেশের একটা জনপ্রিয় শাক। লাউ শাক পছন্দ করেন না এমন বাংলাদেশের বাঙ্গালী পাওয়া মুস্কিল হবে। আমার জানামতে লাউশাক মোটামুটি সব পরিবারেই রান্না হয়ে থাকে। লাউ শাক এমন একটা শাক যে, ছোট বেলা থেকেই আমরা দেখে আসছি। বাংলাদেশে আমরা শাক সবজি খাওয়া শিখেছি বেশী দিনের কথা নয়! চোখের সামনে আছে সব। ৮০ সালের আগেও শাক সব্জির প্রচলন তেমন ছিল না! হা, সেই সময়ের আগেও আমি লাউ শাক খেতে দেখেছি। আগে এমনটা মনে করা হত, লাউ শাক খাবে কেন, লাউ গাছে লাউ ধরবে, লাউ খাবার জিনিষ, লাউ শাক নয়!

যাই হোক, জনসংখ্যা বাড়াতে না অন্য কিছু বুঝতে পারছি না! আমার মনে হয় মানুষ অভাবে পড়েই শাক সবজি খাওয়া শিখে গেছে! হা হা হা… পরিবারের এত মানুষের খাবার যোগাড় করা সহজ নয়! এবং কাজে কাজেই সস্তায় পাওয়া এই শাক সবজি (এখন অবশ্য শাক সব্জির দামও কম নয়) দিয়েই এক সময় খাবার তৈরী হত! যা এখনো চলছে! আমাদের আগের জেনারেশনের কথা চিন্তা করলে অবাক লাগে, এমন কোন পরিবার ছিল না যে, ছেলে মেয়ে সদস্য সংখ্যা ১০ এর কম! আমরা এসে ৪/৫ এ নেমে গেছি! আর এখন ১/২! উপয় নাই গোলাম হোসেন! আবশ্য আজকাল অনেকে আর বিবাহ করতেই চাচ্ছেন না! আমি এদের অবশ্য এপ্রিসিয়েট করি! বংশ রেখে গেলেই বা কি, আর না রেখে গেলেই বা কি!

দুই দিনের দুনিয়া! চলুন, আজ লাউ শাক রান্না দেখি। কয়েকটা চিড়িং মাছ দিয়ে এই রান্না আশা করি আপনাদের সবার ভাল লাগবে।

প্রয়োজনীয় উপকরনঃ
– লাউশাক (তিনটে ডাটা, কেটে কুটে যা হয়)
– কিছু চিড়িং মাছ
– মাঝারি দুটো পেঁয়াজ কুঁচি
– কয়েকটা কাঁচা মরিচ
– এক চা চামচ রসুন বাটা
– হাফ চা চামচ হলুদ গুড়া
– হাফ চা চামচ মরিচ গুড়া
– তেল (পরিমান মত, কম তেলেই রান্না উত্তম)
– পানি (পরিমান মত)

প্রনালীঃ 

কড়াইতে তেল গরম করে তাতে সামান্য লবন যোগে পেঁয়াজ কুঁচি এবং চিড়িং মাছ দিয়ে ভাঁজুন। সামান্য ভাঁজার পর রসুন বাটা দিয়ে ভাল করে ভাঁজুন। এবার হাফ কাপ পানি দিন।


এবার হলুদ, মরিচ গুড়া দিন। কয়েকটা কাঁচা মরিচ দিয়ে দিন।


ভাল করে কষিয়ে ঝোল বানিয়ে নিন। তেল উঠে যাবে।


এবার লাউ শাক কেটে ধুয়ে রাখা কড়াই এর ঝোলে দিয়ে দিন।


ভাল করে মিশিয়ে মাধ্যম আঁচে কিছু সময়ের জন্য ঢাকনা দিয়ে রাখুন।


শাক নরম হয়ে আসবে। এবার হাফ কাপ পানি দিয়ে দিন। আর ঢাকনা দেয়ার দরকার নেই। শাকের রং নষ্ট হয়ে যাবে।


মাধ্যম আঁচে আগুন চলুক।


লাউ শাকের একটা চমৎকার ঘ্রান আছে, মন ভরে যায়। এবার ফাইন্যাল লবন দেখুন, লাগলে দিন না লাগলে ওকে বলুন।


ব্যস পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত। আহ…।


অপূর্ব, অসাধারন।

গাছপালা উপরওয়ালার দেয়া অশেষ নেয়ামত আমাদের জন্য! খাবার দাবারের জন্য আমরা সবাই গাছ পালার উপর নির্ভর তাই ‘লাউ গাছ’ হউক আর ‘মান্দার গাছ’ হউক সব গাছের যত্ন নিতেই হবে আমাদের, আমাদের প্রাণে বাঁচার জন্যই!

সবাইকে শুভেচ্ছা। সহজ রান্নার এই খাবারটা কে কে পছন্দ করছেন?

21 responses to “রেসিপিঃ লাউ শাক (উপরওয়ালার সেরা উপহার)

  1. লাউ শাক দিয়ে শুটকির ঝোল রান্না খেতে খুব পছন্দ করি । লাউশাকের স্বাদ সত্যি অসাধারণ আর চিংড়ী দিয়ে তো আরও মজা সেটা বুঝতে পারছি ।

    Like

    • ধন্যবাদ বোন। হা, আপনি সঠিক খাবারের নাম বলে দিয়েছেন। লাউ শাক দিয়ে শুঁটকী রান্নাও বেশ জমে। অনেকদিন আগে খেয়েছিলাম, এখনো মনে আছে। যাই হোক, দেখি আগামী কোনদিন এই ব্যবস্থাটা করে ফেলতে পারি কি না। শুভেচ্ছা।

      Like

  2. সিলেটে অল্প পরিমানে লাউ শাক ও প্রচুর পানি দিয়ে শুটকির শিরা রান্না করে। সেটা সিলেটের খুবই জনপ্রিয় খাবার। আমি অবশ্য কখনো খাইনি, বা রান্না করিনি। কুম্ভকর্ণ লাউ, লাউশাক খুবই পছন্দ করে। লাউশাক, অল্প আলু দিয়ে মাখা মাখা শুটকি ( ইলিশের মাথা কিংবা চিংড়ি দিয়ে) ভাজিও ভালো লাগে।

    Like

    • ধন্যবাদ বোন, সিলেটের শিরার কথা আমার এখনো মনে আছে। আমার সিলেটী খালার বাসায় খেয়েছি। কত খাবার যে এখনো বাকী।

      কুম্ভ ভাইয়ের পছন্দ বেশ।

      শুভেচ্ছা।

      Like

    • আপা এটা আমাদের বাসায়ও ( লাউ শাক ও প্রচুর পানি দিয়ে শুটকির শিরা রান্না ) করা হয় । আমি আর আমার আব্বা ছাড়া এটা আর কেউ পছন্দ করেন না ।

      Like

      • হা হা হা…।। আহ, ঘরে মাত্র দুইজন এই খাবার পছন্দ করেন!
        আসলেই প্রতিটা মানুষের পছন্দই আলাদা আলাদা। কি যে দুনিয়া! সে জন্য আমি সব সময় মা দের প্রশংসা করি, কি করে উনারা এই সব মেনেজ করেন। রান্নার আগে এই ব্যবস্থাপনা করা অনেক কঠিন কাজ। অথচ সব কিছুই উনারা চালিয়ে নিচ্ছেন।

        শুভেচ্ছা।

        Like

  3. এত সহজ!!!! আমি কালই রান্না করব ।

    Like

  4. খুব সুন্দর একটা রেসীপি,
    প্রবাসে থেকেও এই রেসিপিটা মিস করি না,বাবুর্চি মশায় এসব কাটতে চান না,আমরা দোকানে কাজের ফাঁকে কেটে রেডি করে দেই,আর ওনি রান্না করেl

    Like

  5. আগে তেল দিয়ে পেয়াজ মরিচ কষিয়ে ঝোল বানিয়ে নিব তারপরে কি লাউশাক কাটতে বসব, নাকি আগেই কেটে নিব।

    Like

    • ধন্যবাদ রবিন ভাই।
      যে কোন সবজি রান্না শুরু করার আগেই কেটে ধুয়ে রেখে রান্না শুরু করাই উত্তম। সে হিসাবে লাউ শাক আগেই কেটে ধুয়ে রেখে রান্না শুরু করবেন।

      শুভেচ্ছা। আশা করি মাঝে মাঝে আমাদের দেখে যাবেন।

      Like

  6. কেমন আছেন?? অনেকদিন পর আজকে আপনার ব্লগে কমেন্ট করছি। যদিও প্রায় প্রত্যেকদিন একবার করে হলেও আপনার ব্লগ দেখে গিয়েছি। আসলে পড়ালেখার চাপে এখন আর সেভাবে আপনার ব্লগে নিয়মিত কমেন্ট করা হয় না।

    লাউ শাক কে আমি শাকের মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ শাক হিসেবে মনে করি। আমাদের বাসায়ও শাকের মধ্যে এটাই বেশি চলে। এই রান্নাটা সুন্দর হয়েছে। একদিন লাউ শাক,আলু ও সিম দিয়ে ভাজি করে দেখবেন।দারুন লাগে।

    বাই দা ওয়ে আপনি রেসিপিতে চিড়িং মাছের কথা বলে চিংড়ি মাছ ব্যবহার করেছেন। চিড়িং আরেক ধরনের মাছ

    Like

  7. রেসিপিটা মগজে ছিল, আজ টুকে নিলাম।
    কাল হবে টেরাম টেরাম যুদ্ধ।

    Like

  8. onek valo laglo ami aj ata ranna korbo

    Like

  9. পিংব্যাকঃ এক নজরে সব পোষ্ট (https://udrajirannaghor.wordpress.com) | BD GOOD FOOD

[প্রিয় খাদ্যরসিক পাঠক/পাঠিকা, পোষ্ট দেখে যাবার জন্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা। নিম্মে আপনি আপনার মন্তব্য/বক্তব্য কিংবা পরামর্শ দিয়ে যেতে পারেন। আপনার একটি একটি মন্তব্য আমাদের অনুপ্রাণিত করে কয়েক কোটি বার। আপনার মন্তব্যের জন্য শুভেচ্ছা থাকল। অনলাইনে ফিরলেই আপনার উত্তর দেয়া হবে।]