গ্যালারি

রেসিপিঃ চিকেন ভেজিটেবল স্যুপ (নাস্তা বা ইফতারে)


ঘরে মাঝে মধ্যে স্যুপ রান্না করা উচিত বলে আমি মনে করি। কারন স্যুপ খেতে ছেলে বুড়ো সবাই পছন্দ করে। বিশেষ করে বিকালে বা সন্ধ্যায় বা কোন খাবার খেতে বসলে আগে স্যুপ খেতে বেশ ভাল লাগে। আর শরীর যদি অসুস্থ্য থাকে তা হলে তো কথাই নাই। রোগীদের কাছে স্যুপের গুনাগুন বলে শেষ করা যাবে না। স্যুপ কে বাংলাদেশী খাবার বলা না গেলেও আজ কাল বাংলার ঘরে ঘরে স্যুপ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছেই। গত কয়েক বছর আগেও রেডিমেট স্যুপের মাত্র একটা কোম্পানী থাকলেও এখন বাজারে অনেক গুলো কোম্পানী হয়ে গেছে। আপনি চাইলে এই সকল প্যাকেট স্যুপ কিনে এনে বাসায় খুব সহজে স্যুপ বানাতে পারেন। তবে প্যাকেট স্যুপ থেকে বাসায় নিজেদের রান্না করা স্যুপ বেশী ভাল।

স্যুপ নিয়ে অনেক অনেক মজার গল্প আছে, বছর পনর আগেও এমন আত্মীয় স্বজন দেখেছি যাদের নিয়ে চাইনিজ খেতে গেলে স্যুপ খেতে চাইত না। জিজ্ঞেস করলে বলত স্যুপে নাকি ব্যঙ্গ এর পা দেয়া হয়! ব্যঙ্গ বা পোকামাকড় না দিলে নাকি স্যুপ হয় না! কত কথা, আসলে আমাদের দেশে চায়নিজ রেষ্টুরেন্ট গুলোতেই স্যুপ পাওয়া যেত এবং সেটা সাধারন মানুষের বা পরিবারের নাগালের মধ্যে ছিল না বলেই এমন গুজব বাতাসে ভেসে বেড়াত। যাই হোক, এখন আর এমন ভাব বা ব্যাখ্যা নেই! সমাজ শিক্ষিত হচ্ছে, ভুল ধারনা কেটে যাচ্ছে প্রতি নিয়তই! কাটুক।

চলুন, খুব সহজ একটা স্যুপের রেসিপি দেখে ফেলি। চিকেন ভেজিটেবল স্যুপ। এটা সাধারন কিন্তু আমি মনে করছি পুষ্টি গুনে এটা বেশ হবে।

প্রয়োজনীয় উপকরনঃ
– মুরগীর বুকের মাংশ (দুই টুকরা)
– নানা প্রকারের কিছু সবজি (আমরা নিয়েছিলাম গাজর, পেঁপে এবং পেঁয়াজ। আপনি চাইলে আরো ভেজেটেবল যোগ করতে পারেন)
– সয়া সস, এক টেবিল চামচ
– লবন, পরিমান মত
– চিনি, হাফ চামচ
– টমেটো সস, দুই টেবিল চামচ
– কর্ন ফ্লাওয়ার, এক চা চামচ
– এক চিমটি গোল মরিচ গুড়া
– লেমন রাইন্ট (লেবুর খোসার সবুজ অংশ), সামান্য
– কাঁচা মরিচ কয়েকটা
– এক লিটার পানি

প্রনালীঃ

রান্নার পাত্র নিন এবং এক লিটার পানি দিয়ে তাতে সামান্য লবন যোগে গরম করুন। এবার সয়াসস দিন।


গরম হতে থাকুক। কয়েকটা কাঁচা মরিচ দিতে পারেন।


চিকেন নরম হয়ে গেলে তা উঠিয়ে নিয়ে হাড় ফেলে রোয়া রোয়া করে নিন। চিকেন স্টক এ আগুনের আঁচ চলুক।


এবার চিকেন স্টক এ সবজি দিয়ে দিন। ফুটতে থাকুক।


এবার চিকেন দিয়ে দিন।


টমেটো সস দিয়ে দিন। সবজি নরম হয়ে যাবে এই পর্যায়ে।


এবার একটা বাটিতে হাফ কাপ পানি নিয়ে তাতে কর্নফ্লাওয়ার, লেমন রাইন্ট, গোল মরিচ গুড়া এবং চিনি ভাল করে মিশিয়ে নিন।


এবার মিশ্রণটা স্যুপে ঢেলে দিন।


আরো কিছুক্ষন নিম্ম আঁচে গরম করুন এবং ফাইন্যাল লবন এবং স্বাদ দেখুন।


ব্যস হয়ে গেল, চিকেন ভেজিটেবল স্যুপ। যারা ঝাল এবং আরো টমেটো সস নিতে ইচ্ছা করবেন তারা তা নিতে পারেন।


প্রতিদিন না হলেও মাঝে মাঝে এই ধরনের স্যুপ পান করা ভাল। বেশ সুস্বাদু।

আমাদের আরো বেশ কিছু স্যুপের রেসিপি আছে, আপনাদের হাতে সময় থাকলে দেখে নিতে পারেন।
১। রেসিপিঃ সাধারণ চিকেন স্যুপ
২। রেসিপিঃ রেডিমেট স্যুপ
৩। স্যুপ নুডুলস (ছোট সোনামণিদের জন্য)

সবাইকে শুভেচ্ছা। সব সময় ভাল খাবার চলুক আমাদের জীবনে।

9 responses to “রেসিপিঃ চিকেন ভেজিটেবল স্যুপ (নাস্তা বা ইফতারে)

  1. আপনাদের ভেজিটেবল স্যুপটা ভালো লেগেছে। আমাদের বাড়িতে স্যুপের বেশ প্রচলন আছে। ভেজিটেবল আর মাশরুম স্যুপ মোটামুটি রেগুলার। তবে আমরা স্যুপ বলতে যা বুঝি অন্য দেশের মানুষেরা কিন্তু ঠিক সেটাই বোঝে, তা কিন্তু নয়। আমরা ঝোলের তরকারির বা যে ডাল খাই, সেটা কিন্তু বাইরের বিশ্বে স্যুপ বলেই পরিচিত। তার মানে আমাদের খাবারে প্রতিদিন কিন্তু স্যুপ থাকে!! হা হা… তবে বাইরের বিশ্বের স্যুপের মধ্যে তরলের ভাগটা অনেক সময় বেশ কমই থাকে। চিকেন, ভেজিটেবল, শ্রিম্প, পাস্তা, ইত্যাদি সলিড জিনিস দিয়েই পাত্র থাকে ভর্তি। আমাদের দেশের রেস্টুরেন্টে সুপের পানির মধ্যে মাঝে মাঝে অন্য কিছু মেলে!! 😀

    Liked by 1 person

    • ধন্যবাদ শরীফ ভাই। হা, আমাদের ডাল, টক রান্না তো স্যুপই! খাবার দাবারে আসলে আমরা এখনো অনেক পিছিয়ে আছি বিশ্বের নানান দেশের তুলনায়। তবে আবহাওয়া ভেদে খাবার খেতে হয় বলে আমরা যা খাচ্ছি তা খাওয়াই ভাল। শরীরের উপকার হয়।

      আপনারা মাঝে মাঝে স্যুপ খান/পান করেন জেনে ভাল লাগল। আমাদের খাবারে স্যুপ রেগুলার করে দেয়া উচিত।

      শুভেচ্ছা।

      Like

  2. অসাধারন। দেখে ভাল লাগলো। তবে এই ধরনের স্যুপ মধ্যপ্রাচের লোকেরাও বেশী খায়।

    Liked by 1 person

  3. পিংব্যাকঃ এক নজরে সব পোষ্ট (https://udrajirannaghor.wordpress.com) | BD GOOD FOOD

  4. Thanx….aj k koek din thekei khub soup khete issa hossilo kintu soup banate issa korsilo na.aj k apnar lekha pore thik korlam…..na r Alshemi noy, eibar soup banano shuru.

    Liked by 1 person

  5. ভাইয়া আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এতো এতো রান্নার রেসিপি সবসময় দেয়ার জন্য । আমার প্রবাস জীবনে আমি অনেক রান্না আপনার এই ওয়েব পেইজ থেকে শিখেছি কিন্তু কখনো আপনাকে ধন্যবাদ দেয়া হয়নি । আপানাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ সব রান্না এতো সুন্দর করে সহজ ভাবে গুছিয়ে লিখার জন্য এবং সাথে ছবি দেয়ার জন্য। ছবিগুলা অত্যন্ত কার্যকরী । মহান আল্লাহ আপনাকে এবং আপনার পরিবারকে সুখ ও শান্তি প্রদান করুন এই দুয়া করি। ধন্যবাদ ।

    Liked by 1 person

  6. বেবিদের আরও কিছু রেসিপি দেওয়া যাবে।আমার বাবু বয়স ১১মাস কিছু খেতে চায় না

    Like

  7. সহজ এবং উপাদেয়

    Liked by 1 person

[প্রিয় খাদ্যরসিক পাঠক/পাঠিকা, পোষ্ট দেখে যাবার জন্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা। নিম্মে আপনি আপনার মন্তব্য/বক্তব্য কিংবা পরামর্শ দিয়ে যেতে পারেন। আপনার একটি একটি মন্তব্য আমাদের অনুপ্রাণিত করে কয়েক কোটি বার। আপনার মন্তব্যের জন্য শুভেচ্ছা থাকল। অনলাইনে ফিরলেই আপনার উত্তর দেয়া হবে।]